ভাষণ লেখার নিয়ম

ভাষণ লেখার নিয়ম

ভাষণ লেখার নিয়ম  : ভাষণ শব্দটির প্রচলিত অর্থ বক্তৃতা। বিশেষ কোন উপলক্ষ্যে আয়োজিত জনসমাবেশে বা অনুষ্ঠানে উপস্থিত জনগণকে সম্বোধন করতে বক্তা যে বক্তব্য প্রকাশ করেন, তাই বক্তৃতা। ভাষণ সাধারণ পূর্ব নির্ধারিত হয়। তাই এর সুচিহ্নিত খসড়া আগে থেকে রচনা করা যায়। তবে ভাষণ যুক্তিপূর্ণ ও তথ্যবহুল হলেই হয় না, বক্তার উপস্থাপনা কৌশলে বক্তব্য/ভাষণ প্রাণবন্ত ও জীবন্ত হয়ে ওঠে।

ভাষণকে বিশ্লেষণ করলে এর ৫টি অংশ লক্ষ্য করা যায়। নিচে এগুলো আলোচনা করা হল।

১. সম্ভাষণ বা সম্বোধন: ভাষণের সূচনায় বা আরম্ভে সভার সভাপতি, প্রধান অতিথি এবং সভায় উপস্থিত সকলকে সম্ভাষণ বা সম্বোধন জানাতে হয়। সাধারনত মাননীয় সভাপতি বা সম্মানিত সভাপতি, শ্রদ্ধেয় বা শ্রদ্ধাভাজন প্রধান অতিথি, উপস্থিত ভদ্রমন্ডলী বা ভদ্রমহোদয় ও ভদ্রমহিলাগণ ইত্যাদি সম্বোধন করতে হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সভা হলে, মাননীয় প্রধান শিক্ষক বা মাননীয় অধ্যক্ষ, মাননীয় শিক্ষকবৃন্দ ও আমার সতীর্থ ভাই ও বোনেরা বা সতীর্থ ছাত্রছাত্রীরা ইত্যাদি সম্বোধন করা যায়। সভায় উপস্থিতজনকে আকৃষ্ট করার জন্য বক্তা আন্তরিক সম্ভাষণ করে থাকেন।

২. প্রস্তাবনা বা বিষয় পরিচিতি : সভা বা অধিবেশনের প্রসঙ্গকথা যদিও পূর্বেই ঘোষিত থাকে তবুও বক্তার বিশেষ বক্তব্য ও দৃষ্টিভঙ্গি জানা থাকে না। তাই সম্ভাষণের পরেই বক্তা তাঁর বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি মূলকথা বলার প্রস্ততি হিসেবে প্রাসঙ্গিক প্রস্তাবনা করেন। কোন কোন বক্তা এ সময় বক্তব্য রাখার সুযোগ দেবার জন্য সভায় আয়োজনকারীদের ধন্যবাদও জানান।

বাংলায় ই-মেইল লেখার নিয়ম

৩. মূলবক্তব্য : বিষয় প্রস্তাবনার পরেই আসে মূল বিষয়। মূল বক্তব্য উপস্থাপনায় একটির পর একটি পয়েন্ট এভাবে আসে যাতে সহজেই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়। দীর্ঘ ভাষণ কোন শ্রোতারই পছন্দ হয় না। বক্তব্য অহেতুক দীর্ঘ না করা ও একই কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে না বলা বাঞ্ছনীয়। অনেকের কথা বলার সময় মুদ্রাদোষ লক্ষ্য করা যায়। মুদ্রাদোষ পরিহার করতে হবে।

৪. সারাংশ: মূল বক্তব্য শেষ হয়ে গেলে বক্তা প্রাঞ্জল একটি সারাংশ বলবেন। এতে শ্রোতাবর্গের কাছে মূল বক্তব্য বুঝতে সহজ হয়। সারাংশ অবশ্যই সংক্ষিপ্ত হবে।

৫. উপসংহার : উপসংহারে বক্তা কিছু আবেদন রাখতে পারেন অথবা যে বিষয়টি আলোচিত হল সে প্রসঙ্গে করণীয় কাজের কথা বলতে পারেন। সুন্দর কথা যেমন মানুষকে আকৃষ্ট করে তেমনি সুন্দর বক্তৃতা ও ভাষণ মানুষকে আকৃষ্ট করে। কথা ও ভাষণের বিষয়কে যেমন সুন্দর করে তোলা যায় তেমনি উপস্থাপনার কৌশল বক্তৃতার ভঙ্গি, চমৎকার উচ্চারন, ভাষণদানকারীর ব্যক্তিত্ব সব কিছু মিলিযে ভাষণকে একটি শিল্পে পরিণত করতে পারে। চমৎকার ভাষণ প্রদান তাই অনুশীলনের যোগ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *