ভ্রমণ কাহিনী লেখার গুরুত্বপূর্ণ ১০ টিপস

ভ্রমণ কাহিনী লেখার গুরুত্বপূর্ণ ১০ টিপস

ভ্রমণ টুডেঃ ব্লগ, ফিচার ম্যাগাজিন বা অন্য কোথাও ছাপানো না হলেও নিজের ডায়েরিতে তুলে রাখতে পারেন। কিন্তু গৎবাঁধা গল্প লিখে গেলে পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। কিছু ধাপ মেনে লিখলেই ভ্রমণ কাহিনী হবে আকর্ষণীয় ও পাঠযোগ্য। জেনে নিন ভ্রমণ কাহিনী লেখার ১০ টিপস।

পরিষ্কার কাহিনীসূত্র: ভ্রমণ নিজেই একটি গল্প হতে পারে না। বরং ঘটনাবলীর ধারাবাহিকতা মাত্র। কোনো কোনো ঘটনা মজার আবার কোনোটা নাও হতে পারে। লেখার সময় সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন কোন ঘটনা আপনি বলতে চান এবং কোন ঘটনাবলী গল্পে তুলে ধরবেন। সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন ও ওয়েবসাইটে কোন ধরনের ভ্রমণ কাহিনী প্রকাশ হয় দেখে নিতে পারেন। প্রথমে নিজের মতো করেই লিখে ফেলুন। তারপর প্রয়োজনমতো সম্পাদনা ও সংক্ষিপ্ত করে নিন।

লক্ষ্য: কিছু ভ্রমণে আপনার শারীরিক উপস্থিতির বর্ণনা (কোনো পর্বতের চূড়ায় ওঠা, বিশাল নদী পার হওয়া ও বাঘ দেখা) থাকবে যেগুলো কাহিনীকে নির্দেশনা দেয় এবং একটি উদ্দেশ্য থাকে। এতে পাঠক গল্পের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত লেগে থাকে। কারণ তারা জানতে চায় লক্ষ্য অর্জিত হবে কিনা।

অভিজ্ঞতার কাঁটছাঁট: কাহিনীর চরিত্রের কথোপকথন, গতি, উদ্বেগ ও নাটকীয়তা থাকে। এ উপকরণগুলো পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখার মতো করে আনতে হবে ও সাজাতে হবে। ভ্রমণ কাহিনী এক থেকে দুই হাজার শব্দের মধ্যে লিখুন। প্যারা থাকবে ১০-২০টি।

প্রথম প্যারা হবে আকর্ষণীয়: পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে এমন কোনো ঘটনা দিয়ে শুরু করতে পারেন। কোনো নাটকীয় ঘটনা, কৌতুক, কথোপকথন বা এই তিনের সমন্বয়েও কাহিনী শুরু করা যায়। তবে প্রথম বাক্যে পাঠক ধরার ফাঁদ থাকতে হবে।

কথোপকথন: কথোপকথন ঘটনাস্থলকে জীবন্ত করে। ভ্রমণ সঙ্গীদের ব্যক্তিত্বকে গল্পে জায়গা দিন। কথোপথনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গল্পে তুলে ধরতে পারেন। যখন আপনি ঘুরতে যান সেখানকার লোকজন কী বলছে ও কীভাবে বলছে তার নোট নিতে পারেন।

দেখানো ও বলা: প্রত্যেক গল্পেই দেখানো ও বলা দুটো কৌশলই ব্যবহার করা হয়। কোনো চিন্তা না করেই আপনি এই কৌশল ব্যবহার করতে পারেন। যখন আপনার ঘটনার গতি কমিয়ে দেবেন এবং কোনো দৃশ্যের বিস্তর বর্ণনা দেবেন তখন তাকে দেখানো বলা হয়। আপনি কী দেখেছেন, শুনেছেন, অনুভব করেছেন- সেগুলো পাঠককে আপনার চোখ দিয়ে দেখাচ্ছেন। ঘটনার সঙ্গে বর্ণনা দেওয়া হচ্ছে বলা।

আনন্দ দেওয়া, প্রভাবিত করা নয়: নতুন লেখকরা প্রায়ই সাহিত্যিক ভাষায় লেখার চেষ্টা করেন। ভালো লেখকরা সাধারণত আর্নেস্ট হেমিংওয়ের উক্তি অনুসরণ করে থাকেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি কী দেখেছি ও কী অনুভব করি সেটাই সেরা ও সহজ উপায়ে কাগজে লিখে ফেলি। ’ তার মানে এই নয় যে আপনি হাস্যরস ও পরীক্ষামূলক কিছু তুলে ধরতে পারবেন না। তবে পাঠকের অবোধ্য কিছু লিখবেন না।

স্পষ্ট ভাষা: ভ্রমণ কাহিনীতে সাধারণত অর্থপূর্ণ শব্দ ও বাক্যাংশ থাকে। সুনির্দিষ্ট কোনো ভাষা ব্যবহারের চেষ্টা করুন। যে ভাষায় আপনি বর্ণনা করছেন সেটা যেন পাঠকের মনের চোখে ছবির মতো ফুটে উঠে।

পথ নির্দেশ: নতুন কোনো জায়গা বা দেশে ঘুরতে গেলে গাইডবই না নিয়ে গেলে সাধারণত পথ নির্দেশক ফলক অনুসরণ করা হয়। আপনার গল্পের মাধ্যমে পাঠকও সেই জায়গা ভ্রমণ করেন। প্রত্যেক প্যারাতে তাদেরকে জানিয়ে রাখুন এরপর আপনি কোথায় যাচ্ছেন। আপনার চূড়ান্ত লক্ষ্য তাদের মনে করিয়ে দিন।

অবশেষে লেখা শেষ করতে সময় নিন: অধিকাংশ ভ্রমণ কাহিনীই দ্রুতগতির ট্রেনে হঠাৎ ব্রেক কষার মতো করে শেষ হয়। পড়া শেষে পাঠক দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েন। তাই শেষ প্যারাটি লেখার ক্ষেত্রে সময় নিন।

দ্য ক্যাম্পাস টুডে

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *