হাবিপ্রবি ছাত্র-ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় আটকের অভিযোগ

মেস ভাড়া মওকুফের দাবি হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের; মালিকের ‘না’

তানভির আহমেদ, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি


করোনা ভাইরাস এর প্রকোপ ঠেকাতে অ-ঘোষিত লকডাউন চলছে দেশজুরে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সহ সকল গণপরিবহন। ব্যতিক্রম নয় দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)ও। গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়। যার ছুটি এখনো বলবৎ আছে।

এরই মদ্ধ্যে টিউশনি আর পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষমের টাকায় যাদের পড়াশোনা ও মেসভাড়া চলত সেইসব মধ্যবিত্ত ও নিন্ম মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। এপ্রিল মাস শুরু হওয়ার সাথে সাথে মেস ও বাসা ভাড়ার জন্য মালিক পক্ষ থেকে আসতে শুরু করেছে ফোন-কল।

দরিদ্র ও অস্বচ্ছল পরিবার থেকে উঠে আসা এসব শিক্ষার্থীদের চোখে মুখে তাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে অসহায়ত্বের ছাপ। হল সংকট থাকায় অনাবাসিক শিক্ষাথীরা শহর ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন মেস এবং ভাড়া বাসাবাড়িতে বসবাস করে আসছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কৃষি অনুষদের এক এক শিক্ষার্থী জানায়, ‘পাঁচ সদস্যের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আমার দিনমজুর বাবা। এখন বাবা রাস্তায় বেরও হতে পারছেন না, ঘরে চাল-ডালও শেষ। অনেক কষ্টে চলতে হচ্ছে আমাদের। তার উপর মেসভাড়া দেওয়ার কথা চিন্তাই করতে পারছি না। নতুন ভর্তি হওয়া আরেক শিক্ষার্থী জানান, ‘ আমার বাবা নেই। তিনভাই বোনের মদ্ধ্যে আমিই বড়। ভর্তির সময় টাকা জোগাড় করতে না পারলেও এক সংগঠনের সহযোগিতায় তা জোগাড় হয়ে যায়। মহাবলিপুরের এক ছাত্রাবাসে আমি থাকতাম ও শহরে একটি টিউশনি করিয়ে সেই মেস খরচের টাকা মেটাতাম। আজ করোনার কারনে টিউশনিটা বন্ধ হয়ে গেছে। মেসের টাকা কিভাবে দিবো বুঝতে পারছি না’।

মেস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মামুন বলেন” আমরা মিটিং করেছি, এডিসি সাহেব ও ডেকেছিল আমাদের, আমাদের কেউ ছাড় দিতে রাজি না। সবাই অনেক লোন, বাঁকি, ধারে এসব বিল্ডিং করেছে। অনেকের শেষ সম্বল দিয়ে বাড়ি করেছে আর এটার ভাড়া দিয়ে সংসার চলে। ভাড়া ছাড় দিলে সে তো করোনা ধরার আগেই মরবে! আর মেসে সবাইকে ছাড় দিতে হবে কেন? কিন্তু যদি কেউ আবেদন করে আমাদের কাছে বা কোন মেস মালিক চায় তাহলে তারা করতে পারেন। মেস একটা ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, এখানে জোর করা চলে না। আমাদের দিকেও তো দেখতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছি”

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. ইমরান পারভেজ বলেন, ” শিক্ষার্থীদের এ সমস্যার বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে অবগত হয়েছি, দ্রুত মেস মালিকদের সাথে মিটিং করে তাদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হবে ”

দেশের এ দূর্যোগময় মূহুর্তে উভয় পক্ষকেই ছাড় দিয়ে অস্বচ্ছল ও আসল অভাবী শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার আহবান জানিয়েছেন সচেতন মহল ও সংশ্লিষ্টরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *