মেসভাড়া মওকুফের প্রস্তাব হাবিপ্রবি প্রশাসনের

তানভির আহমেদ, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: করোনা পরিস্থিতিতে দেশের চলমান অবস্থা কারোরই অজানা নয়। ছোট শিশু হতে বয়োবৃদ্ধ, সবাই আজ ঘরের চারদেয়ালে বন্দি। বন্ধ আছে প্রায় সব শ্রেনী পেশার মানুষের কাজ। এরই মধ্যে চরম বিপাকে পড়েছে অস্বচ্ছল পরিবার থেকে উঠে আসা হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

উত্তরবঙ্গের এই শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠতে এগারো হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। যাদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত, নিন্ম-মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা। দেশের এই অঘোষিত লকডাউনে বন্ধ হয়ে গেছে পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তির আয়। মাথার উপর দেখা দিয়েছে অভাবের সংসারে মেস ও বাসা ভাড়ার কালো মেঘ। আবাসন সুবিধার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী শহর এবং ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকার মেসে থাকেন। কেউ কেউ বাসা বাড়ির রুম ভাড়া নিয়েও থাকেন। টিউশনি চালিয়ে ও পরিবার থেকে যতসামান্য অর্থে লেখাপড়া ও মেস ভাড়া চালিয়ে আসছিলেন এসব শিক্ষার্থীরা।যা আজ পুরোপুরি বন্ধ। কিন্তু মেস ভাড়া থেমে নেই। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি সহ বিভিন্ন গ্রুপে শিক্ষার্থীরা মেস ভাড়া মওকুফের দাবী করে আসছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এহেন দাবির প্রেক্ষিতে মেস মালিক সমিতির কাছে সাধারন ছুটিকালীন সময়ে মেস ভাড়া মওকুফ এবং পরিশোধ এর সময়সীমা বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়েছেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড.ইমরান পারভেজ।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, গত ২৫/৪/২০২০ ইং তারিখ মেসভাড়া মওকুফ ও পরিশোধের সমসীমা বৃদ্ধির জন্য মেস মালিক সমিতির কাছে মাননীয় ভিসি স্যারের সম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব দেয়া হয়।সেই প্রেক্ষিতে তাঁরা আলোচনায় বসার জন্য সম্মত হলেও কোন এক অজ্ঞাতকারনে পরে আর তাঁরা বসেনি।
আমরা মেস মালিক সমিতিকে নিম্নোক্ত ৪টি প্রস্তাব দিয়েছি-
(১)যে সকল ছাত্র-ছাত্রীরা টিউশনি বা অন্য কোন উপায়ে নিজস্ব উপার্জন এর মাধ্যমে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে, তাদের ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস এর প্রার্দুভাব জনিত কারনে বিশ^বিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন সময়ের মেস ভাড়া মওকুফ প্রদান।
(২) যে সব ছাত্র-ছাত্রীদের অভিবাবকগণের আয় এর উৎস্য করোনা ভাইরাস এর প্রার্দুভাব জনিত কারনে বন্ধ রয়েছে, তাদের মেস ভাড়া ৫০% মওকুফ করা।
(৩)যেসব ছাত্র-ছাত্রীদের উপরে ১ ও ২ নং এ উল্লেখিত সমস্যাসমূহ নেই তাদের ক্ষেত্রে নিয়ম মাফিক ভাড়া আদায়।
(৪)যেহেতু ছাত্র-ছাত্রীগণ আপনাদের মেসেই অবস্থান করে, তাদের আর্থিক অবস্থার কথা, এমনকি তাদের বাবা-মা/অভিবাবকগণ সম্পর্কেও আপনারা অবগত আছেন। বিধায় কোন ছাত্র-ছাত্রীর অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন, তা আপনারা অবগত আছেন। তথাপি, প্রকৃত অসচ্ছল ছাত্র-ছাত্রীকে এই আপদকালীন সুবিধা প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং মেস মালিকগণ স্ব স্ব মেসে বসবাসকারীদেরকে যাচাই-বাছাই করে পদক্ষেপ নেবেন। প্রয়োজনে সবার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরে একটি যাচাই-বাছাই কমিটি করা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সকলের, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা কেউ আমাদের সন্তান তুল্য,আবার কেউ বা ভাই-বোন তুল্য, একটি পরিবারের মতো। পরিবারের সমস্যা যেমন আমরা সবাই মিলে সহযোগিতার মাধ্যমে সমাধান করি, করোনা সৃষ্ট প্রার্দুভাবের ফলে ছাত্র-ছাত্রী এবং মেস মালিকগণ উভয় পক্ষকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সমস্যাটি মোকাবিলার জন্য অনুরোধ করা হলো।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ

Leave a Comment