মেয়ে শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে বশেমুরবিপ্রবিতে দুই বিভাগের সংঘর্ষ, আহত ১৯

বশেমুরবিপ্রবি টুডে


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে কেন্দ্র করে দুই বিভাগের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত অন্তত ১৯ জন। এর মধ্যে গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দুজন এবং আইন বিভাগের তিনজন বর্তমানে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

রবিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টার পর থেকে দফায় দফায় মেইন গেটে এবং ক্যাম্পাসে আইন বিভাগ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার বেলা ১২ টার দিকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে কেন্দ্র করে আইন বিভাগের সাথে প্রথম দিকে কথাকাটি হয়, পরে এক পর্যায়ে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয় । তবে এ ঘটনায় কোন ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটে নি। পরবর্তীতে পরে দুপুর দেড়টার দিকে দুই বিভাগের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের লিপুজ ক্যান্টিনের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তাদের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি হয় এবং দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান, আইন অনুষদের ডিন মোঃ আব্দুল কুদ্দুস মিয়া, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মোঃ হাসিবুর রহমানসহ অন্যান্য শিক্ষকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। এরপর আবার দুই পক্ষের শিক্ষার্থীরা লাঠি নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস শোডাউন দেয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী অঙ্কিত জানান, গত ২৯ জানুয়ারি বাসে খুলনা থেকে ক্যাম্পাসে আসার সময় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শাওনের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে সে আমার কাছে আমার ফোনটি চায় এবং তার এক বান্ধবীকে কল দিয়ে কিছু সময় কথা বলে। পরবর্তীতে তার ওই বান্ধবী আমাকে পুনরায় কল দেয়। আমি সেই সময়ে ব্যস্ত থাকায় কল রিসিভ করতে পারিনি। পরবর্তীতে কল রিসিভ করলে সে আমার সাথে দেখা করতে চায়। আমি তাকে রবিবার দেখা করার কথা বলি। সে যখন আমার সাথে আমার সাথে দেখা করে তখন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দুজন শিক্ষার্থী এসে আমার পরিচয় জানতে চায় এবং আমি আমার পরিচয় দেয়ার পরপরই আমাকে মারতে শুরু করে। আমার সাথে থাকা সহপাঠী ঘটনাটি বিভাগের অন্যান্যদের জানালে তারা ঘটনাস্থলে যায়। পরে উভয় পক্ষের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মেয়েটির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনে ফোন কেটে দেন এবং ব্যস্ততা দেখিয়ে পরে আবার যোগাযোগ করা হলে ওই মেয়ে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আরেফিন রনি, ‘বিভাগের সামনে সে ওই মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছিলো। এ বিষয়টি সমাধানের জন্য আইন বিভাগের অঙ্কিতকে আমরা ডাকি। এসময় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা কোনো কারণ ব্যতীত আমাদের ওপর হামলা করে।’’ এসময় তিনি অভিযোগ করেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাজিউর রহমানের নেতৃত্বে হামলা হয়।’

এদিন বিকেলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেছেন এবং একাধিকবার রড লাঠি সহ প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান ফোনে বলেন, ইভটিজিং এর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রিণে আনার চেষ্টা করছি। এছাড়া ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Scroll to Top