যবিপ্রবি’র মসিয়ূর রহমান হলে একাধিক চুরির অভিযোগ

যবিপ্রবি প্রতিনিধি


যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) একমাত্র ছাত্র হল শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে একাধিকবার চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) ছাত্র হল থেকে কম্পিউটার চুরির অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগকারী ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৪১৪ নং রুমের বাসিন্দা। এর আগেও করোনাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে ছোটখাটো জিনিস চুরি হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবির হাসান বলেন, ‘আমি গতকাল আনুমানিক দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি হল থেকে আমার গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিস ও কম্পিউটার নিতে। কিন্তু রুমে প্রবেশ করতে গিয়ে দেখি ভেতর থেকে দরজা লাগানো এবং জানালা দিয়ে দেখি পেছনের দরজা খোলা। পরে হল কর্তৃপক্ষ পাশের রুমের দরজা খুলে দেয়।

আরও পড়ুনশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ ছুটিতে অপরাধপ্রবন হয়ে উঠছে শিক্ষার্থীরা

এরপর পেছনের বেলকুনি দিয়ে রুমে প্রবেশ করে দেখি পুরো রুমের জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় আছে এবং আমার কম্পিউটারটি নেই। কেউ একজন পেছনের দরজা খুলে চুরি করেছে এবং ভেতর থেকে সামনের দরজা লাগিয়ে দিয়ে গিয়েছে। এই ঘটনার পরে আমি হল প্রভোস্টের নিকট চুরির একটি লিখিত অভিযোগ দেই।’

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট ড. নাজমুল হাসান বলেন, ‘গতকাল চুরির অভিযোগ আসার পরপরই আমরা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি এবং তাদের ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

আরও পড়ুনশেকৃবিতে প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে উপাচার্যের দায়িত্ব, প্রতিবাদ জানিয়েছে বাকৃবি শিক্ষক সমিতি

এছাড়াও আমরা হলের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দিয়েছি এবং পুরো হল সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় আনার জন্য আরও ৩০টি সিসিটিভি ক্যামেরা সংযোজনের জন্য আবেদন করেছি।’

এছাড়াও চুরির বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হল বন্ধের আগেই নোটিশ দিয়েছিলাম সবার রুম থেকে মূল্যবান সামগ্রীগুলো নিয়ে যেতে। এরপরে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে হলের দরজা জানালার ক্ষতি হওয়ার কারণে সবাইকে বলা হয়েছে হল অফিসে এসে নিজ নিজ রুমের চাবিগুলো জমা দেওয়ার জন্য ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য।

কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষার্থী এখনও তা করে নাই। এই চুরির ঘটনার জন্য ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের জন্য আমার সমবেদনা রইল। খুব দ্রুত আমরা এর তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্থিকভাবে কোনো সহযোগিতা করা হবে কি-না, এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার কোনো সু্যোগ আমাদের নেই। যেহেতু আমরা আগে থেকেই কয়েকবার নোটিশ দিয়েছি, যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের মূলাবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।

এরপরও যদি তারা সেগুলো না নিয়ে যায় এবং আমাদের অবহিত না করে রুমে কম্পিউটারের মতো মূল্যবান জিনিস রেখে যায়, সেই দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নয়। এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেই বিষয়ে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’

হলে চুরির বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি, তাদের রিপোর্ট আসলেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

আরও পড়ুনইন্টারনেট সেবার বাইরে থেকে যাচ্ছে গ্রামের ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী

এছাড়াও হলের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করার সাথে সাথে আমরা শিক্ষার্থীদের মূল্যবান জিনিসপত্র তাদের সাথে নিয়ে যাওয়ার নোটিশ দিয়েছি। এরপরেও কেউ যদি তার মূল্যবান জিনিসপত্র না নিয়ে যায়, তার দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে।’

এছাড়াও দায়িত্বরত গার্ডদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি-না, এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সঠিক জানি না যে ঠিক কবে এই চুরি হছেয়ে। আর যেহেতু একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর দায়িত্বরত আনসারদের দায়িত্ব পরিবর্তন হয়, তাই আমরা এই ব্যাপারে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।

এছাড়াও যদি কোনো আনসার এর সাথে জড়িত থাকে, সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে না। আমাদের প্রশাসন যেটা পারবে, তা হলো তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হেডকোয়ার্টারে দেওয়া, বাদ বাকিটা তাদের দায়িত্ব।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ

Leave a Comment