শাহ্ সুলতান কলেজে একদিন
মো. রাকিবুল হাসান
ঘরবন্দীরা ভাবে দেশে চলছে লকডাউন। তবে বাহিরের চিত্র একদম ভিন্ন। চার মাস পরে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু মুঠোফোনে জানাল ‘আমি আসতেছি তুই বের হ’। অনেকদিন বের হইনা তাই হ্যাঁ বলে দিই।
বাহিরে গিয়ে দেখি শহরের রাস্তাগুলোতে লকডাউনের কোনো অস্তিত্ব নেই। বরং মানুষের গাদাগাদি শহর জুড়ে। বন্ধু’র সঙ্গে অনেক দিন পরে দেখা। সেই ক্যাম্পাস খোলা থাকতে শেষ দেখা হয়েছিল।
গল্প করার জন্য নির্জন এলাকা খুঁজতে থাকলাম। সেরকম জায়গা না পেয়ে বগুড়া সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজে ঢুকে পড়লাম দু’জন।
অনেক দূরে এক দুইজন মানুষের দেখা মিলল। বাঁকি কলেজ প্রাঙ্গণ ফাঁকা। আজ ০৫ আগস্ট হওয়ায় কলেজের অফিস কক্ষ খোলা দেখতে পেলাম।
আমার বন্ধু আসাদুর রহমান। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি এক হাসপাতালে চাকরি করে। তাই করোনাকালীন সময়ের হাসপাতালের গল্প শুনতে শুনতে কলেজের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে গেলাম।
প্রখর রোদে কলেজের নতুন গেট ঝকমক করছে। তবে গেটে এখনও কলেজের নাম লেখা হয়নি। আসাদ এ কলেজে প্রথমদিন এসেছে।
সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজ বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।এটি বগুড়া শহরে অবস্থিত। এ কলেজ বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। এটি বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
কলেজের মূল ফটক থেকে একাডেমিক ভবনের পাশ দিয়ে হেঁটে মাঠের দিকে এগুলাম। তবে মাঠে ঢুকতে পারিনি। মাঠের সামনে রটের লোহার তালাবন্দী করে রাখা। করোনা’র কারণে মাঠে কেউ যেতে পারে না। স্বাভাবিক সময়ে সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকে মাঠটি।
এ কলেজে উচ্চমাধ্যমিক, অনার্স ও মাস্টার্সদের ক্লাস হয়ে থাকে।উচ্চমাধ্যমিকদের জন্য আলাদা ভবন বানানো হয়েছে তা আগে খেয়াল করিনি। টুই মেরে ভবনটিও ঘুরে এলাম। নতুন বানানো হয়েছে। এখনও ক্লাস শুরু হয়েছে বলে মনে হল না।
কলেজের প্রাণ কেন্দ্রে রয়েছে শহীদ মিনার৷ তবে সেখানে যাবার এখন কোনো পথ নেই। কলেজ বন্ধে উঁচু উঁচু ঘাসে চারপাশ ভরে গেছে। বৃষ্টির পানিতে মাটি পিচ্ছিল হয়ে আছে।
একাডেমিক ভবনগুলোতে কয়েকটি কক্ষ খোলা থাকলেও বেশির ভাগ কক্ষে তালা ঝুলছে। যেখানে দিনভর শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় ভরপুর থাকত সেখানে আজ নেই প্রাণের স্পন্দন।
বন্ধুর সাথে গল্প ও হাঁটার ফাঁকে ফাঁকে কয়েকটি ছবি তুলে নিলাম। এরপর আমি বাড়ি ফিরে এলাম। বন্ধু গেল তার মামার বাড়ি।
লেখক: শিক্ষার্থী, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।