শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া ৭০% মওকুফ করলেন এক বাড়িওয়ালা

ডেস্ক রিপোর্টঃ দেশে করোনা পরিস্থিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের একটি মেস/বাড়ি ভাড়া ৭০% মওকুফ করে আলোচনায় এসেছেন কুমিল্লার এক বাড়িওয়ালা।

জানা যায়, নগরীর কান্দিরপাড় এলাকার টাওয়ার হাসপাতাল সংলগ্ন নীলোৎপল বাড়ির মালিক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোখলেছুর রহমান এমন মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

বাড়ির মালিকের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার প্রশংসা করছেন। সেই সাথে শিক্ষার্থীরা প্রত্যাশা করছেন, এই বাড়িওয়ালার মত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবস্থানরত বিভিন্ন মেসের মালিকরা এমন সিদ্ধান্ত নিবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লা জিলা স্কুলের সাবেক এ শিক্ষক চাকরি করার সময়ে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ৭ তলা বিশিষ্ট এ বাড়িটি নির্মাণ করেন। এতে শিক্ষার্থীদের কাছে ভাড়া দেন তিনি। যাদের থেকে মাসিক ভাড়া বাবদ দেড় লাখ টাকার অধিক আয় হতো তার। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে যাওয়ায় গত দুইমাস তিনি কোনও ভাড়ার জন্য তাগাদা দেননি।

১৩ জুন সন্ধ্যায় বাড়িতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের তার বাসায় ডেকে নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত বাড়ি ভাড়া কম নেওয়ার কথা বলেন।

বাসায় থাকা শিক্ষার্থীরা জানান, বাড়ির মালিক গত দুই মাসের (এপ্রিল, মে) ভাড়া ৭০ শতাংশ মওকুফ করে ৩০% নিবেন। এছাড়া যতদিন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে তত দিন শিক্ষার্থীদের ভাড়া ৬০ শতাংশ মওকুফ করে ৪০% করে নিবেন।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান। তিনি ৫ বছর ধরে এই শিক্ষকের বাসায় ভাড়া থাকেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা অন্য সবার থেকে বাসা ভাড়া নিয়ে বেশি চিন্তা করতাম। কারণ অন্যদের তুলনায় আমাদের বাসা ভাড়া অনেক বেশি। তাছাড়া আমাদের বাসা মালিককে খুব রাগী মনে হতো, কিন্তু তার ভেতরে যে এত সুন্দর মন লুকিয়ে আছে আমাদের জানা ছিলো না। আমরা কখনো ভাবতে পারিনি আমাদের বাসার মালিক সবমিলিয়ে মাসে ১ লক্ষাধিক টাকা ছেড়ে দিবেন।’

তিনি আরও বলেন, করোনার এই সময়ে আমাদের বাসা মালিকের কাজ সবার জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকুক। বাড়ির মালিকরা এটাকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াবে এটাই কামনা।’

প্রশংসিত বাড়ির মালিক মোখলেছুর রহমান বলেন, ’আমার বাসায় সবাই শিক্ষার্থী থাকে। করোনার সময়ে আমি যদি তাদের পাশে না দাড়াই তাহলে কে দাড়াবে? আমি হয়তো কষ্ট করে চলতে পারবো, কিন্তু শিক্ষার্থীরা কিভাবে বাসা ভাড়া দিবে। তাই তাদের বাসা ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত নেই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *