সরকারি বিদ্যালয়ের জমি দখল করে ভবন নির্মাণ

সারাদেশ টুডে:বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠি ইউনিয়নের বাগদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে পাকা ভবন। নজরুল ইসলাম নামের একজন ব্যক্তি এ নির্মাণ কাজ করছেন বলে জানা যায়।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ফরিদা ইয়াসমিন জানান,করোনা সংকটের কারণে ১৭ মার্চ থেকে বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এ সুযোগে বিদ্যালয় সংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বিদ্যালয় ভবনের পাশেই তার নিজস্ব পাকা ভবন নির্মাণ করেছেন। ২১ মে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পর এ নির্মাণ কাজ তিনি দেখতে পান। এমনকি বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ দখল করে পরিবার নিয়ে থাকছেন দখলকারী নজরুল ইসলাম।

ভবন নির্মাণের শেষ পর্যায়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন লিখিতভাবে জানালে গত শনিবার থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। গত ৭ জুন বিষয়টি তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে সবকিছু জানানো হয়েছে। উপজেলা ভূমি অফিসের আমিন গিয়ে জমির মাপ ঠিক করে দেবেন। ভবন নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে জমি দখলের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে নজরুল ইসলাম বলেন, তার বাবাসহ মোট আটজনের দানের জমিতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। তার বাবা দান করেছেন আট শতাংশ জমি।কিন্তু বিদ্যালয়ের দখলে রয়েছে তার চেয়েও বেশি। তিনি তাদের বেহাত হওয়া জমিতেই ভবন নির্মাণ করছেন। তিনি দাবি করেন, জমি নিয়ে তার সঙ্গে বিরোধ থাকায় স্থানীয় একটি চক্র প্রধান শিক্ষককে চাপ প্রয়োগ করে ঊর্ধ্বতন মহলে জমি দখলের অভিযোগ জানিয়েছে। বিদ্যালয় কক্ষে পরিবার নিয়ে থাকা প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম বলেন, ওই কক্ষটি পরিত্যক্ত। তিনি আগে ভাইয়ের বাড়িতে থাকতেন। ভাই জমি বিক্রি করে দেওয়ায় তিনি পরিত্যক্ত কক্ষে আশ্রয় নিয়েছেন।

নজরুল ইসলামের এ বক্তব্যের বিপরীতে প্রধান শিক্ষিকা ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, নজরুল ইসলাম প্রায় বছর খানেক আগে থেকেই সেখানে ভবন নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কয়েকটি ইটও গেঁথেছিলেন। করোনা সংকটের কারণে বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেলে সেই সুযোগে কাজ করে তিনি ভবন নির্মাণ প্রায় শেষ করেছেন। বিদ্যালয় থেকে অনেক দূরে বাস করায় বিষয়টি তার জানা ছিল না। স্থানীয়রাও তাকে কিছু জানায়নি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জসিম আহমেদ বলেন,প্রধান শিক্ষক অভিযোগ জানাতে দীর্ঘ সময় নেওয়ার সুযোগে ভবন নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে- এ প্রসঙ্গে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, তার গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই কাজ বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। আমরা সরকারি আমিনের মাধ্যমে জমি পরিমাপ করার উদ্যোগ নিয়েছি।

ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পথেই। তাই প্রায় শেষ হওয়া এই ভবনটি ভেঙে জমি উদ্ধার হবে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনগণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *