সাংবাদিকদের কন্ঠ রোধের চেষ্টা, ফেসবুক জুড়ে তীব্র সমালোচনা

বেরোবি প্রতিনিধিঃ


বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের নিয়ে উদ্ভট ও মনগড়া মন্তব্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা আর নিন্দার মুখোমুখি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি সংগঠন।’নব প্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ’ নামে এই সংগঠনের অধিকাংশ শিক্ষক প্রভাষক যাদের ক্যাম্পাসে যোগদানের সময় দেড়-দুই বছরের মধ্যে।

শুক্রবার নব প্রজন্ম শিক্ষক পরিষদের পক্ষ থেকে আহবায়ক সুমাইয়া তাহসিন হামিদা এবং সদস্য সচিব মোঃ খালিদ হাসান রিয়েল এ বিবৃতি দেন।

‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদদাতা হিসেবে দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন প্রসঙ্গে’ এই শিরোনামে তারা বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “লোকপ্রশাসন বিভাগের মাহফুজুল ইসলাম বকুল (বাংলানিউজ২৪.কম) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের রাব্বি হাসান সবুজ (যুগান্তর) লোকপ্রশাসন বিভাগের ইভান চৌধুরী (মানবজমিন/ঢাকা টাইমস) এবং বাংলা বিভাগের মোবাশ্বের আহমেদ( ইত্তেফাক)-এর ক্যাম্পাস সংবাদ সংবাদদাতা হিসেবে পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম জব করছে।”

“কিন্তু এরা সকল সংবাদ কেন্দ্রীয় অফিসকে অবহিত করে না এবং এদের কাছ থেকে কোন গঠনমূলক রিপোর্ট পাওয়া যায় না এরা এই দায়িত্বের অপব্যবহার করছে। এতে করে তারা কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের ও নিজেদের ক্ষতি করছে।”

“সম্প্রতি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুরের তিন কর্মকর্তা যারা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর মামলার আসামি, তাদেরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রশাসন।”

“দৃশ্যত এরকম একটা ‘স্পর্শকাতর’ বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট পত্রিকাগুলোর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি হিসেবে কেন্দ্রীয় অফিসে অবহিত করেনি। এ ব্যাপারে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই যা অনভিপ্রেত একটি ঘটনা এবং উদ্দেশ্যমূলক। তাই নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদের সংশ্লিষ্ট পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এরকম ব্যক্তিদের ক্যাম্পাস সংবাদদাতার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার জন্য। নব প্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এদের আসল মদদদাতাদের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।”

শিক্ষকদের এমন মন্তব্যকে হীন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া বলেন,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে কখনো কোন শিক্ষক “এরা” “এদের” দিয়ে সম্বোধন করতে পারেন না।এতে করে নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদের সদস্যবৃন্দের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন থেকে যায়। অবিলম্বে তাদের বক্তব্য সংশোধন করতে হবে।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও জাগোনিউজ এর সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সজীব হোসাইন বলেন,শিক্ষকদের এ ধরণের বিবৃতিতে মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় স্পষ্টত দৃশ্যমান। একইসাথে গণমাধ্যমে তা প্রেরণ ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের জন্য রীতিমতো মানহানিকর।

তাই শিক্ষকদের উচিত শিক্ষক সুলভ আচরণ দেখানো। সমালোচনা অবশ্যই কাম্য তবে ছাত্র-শিক্ষদের সম্পর্কের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি না করে সৌহার্দপূর্ণভাবে। তাছাড়া শিক্ষকদের একাংশের নয়া সংগঠনের এমন বিবৃতি শিক্ষক সমাজের হীনমন্যতার বহিঃপ্রকাশ।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম সজীব জানান,একজন সাংবাদিক কি নিউজ প্রকাশ করবে,আর কি করবে না,সেটি তার বিবেক,চিন্তা ও মননশীলতার দ্বারা বিচারিক প্রক্রিয়া মাধ্যমে সে যাচাই করেই প্রকাশ করবে।এখানে কারো হস্তক্ষেপ করা রীতিমতো অপরাধ।

তিনি বাংলাদেশ সংবিধানে ৩৯ নং অনুচ্ছেদের উপধারা (খ) উল্লেখ করে বলেন,
নব প্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ এই অনুচ্ছেদ লংঘন করেছে।যেখানে রাষ্টের সংবিধান সাংবাদিকদের চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান করেছে।সেখানে এই তেজবাজি করার জন্য প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে গঠিত ভিত্তিহীন সংগঠনটি হস্তক্ষেপ করে নোটিশ দেয়।এই নোটিশের মাধ্যমে সংবিধানকে অবমাননা করা হয়েছে।সংবিধান অবমাননার দায়ে এদের শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *