সাপ-মশার আতুড়ঘর ইবি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান

সাপ ও মশার উপদ্রব নিয়ে স্বাস্থ্য শঙ্কায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তীব্র তাপদাহ ও মশার উপদ্রব শিক্ষার্থীদের ঘুম হারাম করেছে, এরই মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে সাপের বিচরণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠ, হলের বাগান, মফিজ লেকসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে দেখা মিলছে সাপের। ফলে ক্যাম্পাসে অবস্থানরত সকলের মাঝে একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। দায়িত্বে অবহেলা করে সময়মতো ঝোঁপঝাড় পরিষ্কার না করায় সাপ এবং মশার উৎপাত বেড়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

এরই মধ্যে সাপের উপদ্রব এবং মশা নিধনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি ৷ নিয়মিত পরিষ্কার না করায় হলের পিছনে, লেকে এবং আবাসিক এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঝোঁপঝাড় থেকে বিভিন্ন সময় সাপ বেড়িয়ে আসতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হঠাৎ করেই গরম বাড়ায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে যখন তখন সাপের দেখা মিলছে। এতে বিভিন্ন সময় অনেকে ভয় পেয়ে যায় শিক্ষার্থীরা। এছাড়া হলে মশার উপদ্রব বেড়েছে ব্যাপকভাবে। ফলে তীব্র গরমে মশারি টানালেও গরমে ঘুমানো যাচ্ছে না। এদিকে মশারি না টানালে মশার কামড়ে ঘুমানো যাচ্ছে না। এ যেনো এক উভয়সংকটে আছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, যত্রতত্র ময়লার স্তুপ এবং প্রশাসনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের উদাসিনতাকেও দায়ী করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হল, জিয়াউর রহমান হল এবং লালন শাহ হলের চারপাশে অনেক ঝোঁপঝাড় চোখে পড়ার মতো। এছাড়া মেয়েদের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল এবং খালেদা জিয়া হলের মাঝামাঝি জায়গাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট খেলার মাঠ সংলগ্ন পেয়ারা বাগান যেনো ঝোঁপঝাড় দিয়ে আচ্ছাদিত হয়ে আছে। এছাড়াও ফুটবল খেলার মাঠের পূর্বপাশে, শিক্ষার্থীদের সময় কাটানোর জন্য মফিজ লেকসহ আবাসিক এলাকায় ঝোঁপঝাড় চোখে পড়ার মতো। ফলে রাস্তাঘাটে হাঁটতে বা রাত্রে মাঠে বসে আড্ডা দিতে গিয়েও দেখা মিলছে সাপের। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের মফিজ লেক, এস্টেট অফিস, কেন্দ্রীয় দুটি খেলার মাঠ, আবাসিক এলাকা, বঙ্গবন্ধু হল পুকুর পাড়সহ বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি সাপ মারা পড়েছে।

প্রভোস্ট কাউন্সিল সভাপতি ও সাদ্দাম হোসেন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, সব হলের প্রভোস্টের সাথে আলোচনা করবো এই বিষয়টি নিয়ে। সবগুলো হলের চারপাশ নিয়মিত পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করি। তবে আমাদের পরিচ্ছন্ন কর্মীর কিছু সংকট আছে। ভাড়াকরা লোকদের দিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হয় ফলে অনেকসময় টাইমলি করা হয়ে উঠে না। এই সিন্ডিকেটে নিয়োগের কথা ছিলো কিন্তু নিয়োগ হয়নি এখনো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের পরিচালক সামছুল ইসলাম জোহা বলেন, আমরা ইতিমধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু করেছি। খুব তাড়াতাড়িই ক্যাম্পাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে। তাছাড়া আগামীকাল থেকেই ফগার মেশিন দিয়ে মশা নিধনের কার্যক্রম চলবে।

চিফ মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. সিরাজুল ইসলাম জানান, সাপের উপদ্রব ইদানিং আমাদের মেডিকেল সেন্টারেও দেখতে পারছি। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ছাড়া এর বিকল্প নেই। তবে যদি কাওকে সাপে কামড়ায় তাহলে অবশ্যই সাথে সাথে মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের এখানে এন্টি ভেনমসহ সকল ধরনের চিকিৎসা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সাপের কামড়ের পর আমরা যদি দুটি দাঁতের চিহ্ন দেখতে পাই তবে বুঝতে হবে সেটি বিষাক্ত। তাই কাউকে সাপে কামড়ালে সাথে সাথে তার উপর শক্ত রশি দিয়ে বেঁধে ফেলতে হবে। তারপর মেডিকেল সেন্টারে আসলে আমরা চিকিৎসা যতটুকু দরকার করতে পারবো। আমাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে।

Scroll to Top