স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

দ্যা ক্যাম্পাস টুডেঃ আগামী ২৯ মে পর্যন্ত দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বন্ধ ঘোষণা দেওয়া থাকলেও চলমান সরকারি বিধি-নিষেধের (লকডাউন) সময়সীমা ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ফলে ৩০ মে পর্যন্তই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে।এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও কিছুদিন বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকরা। জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। তবে তার আগেই করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে আগামী জুনের মাঝামাঝি সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে সরকারের।

এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতে পারে এসএসসি ও এইচএসসি ব্যাচ। তথ্য মতে, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ওই বছর ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দফায় দফায় তা বাড়িয়ে আগামী ২৯ মে পর্যন্ত করা হয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দেশের প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে শিক্ষাবিদ ও শিক্ষকরাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিগগির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

তারা বলছেন, বৈশ্বিক এই মহামারিটি শিগগির যাবে না। এটিকে নিয়েই সবার চলতে হবে। তাই শিক্ষার গতিপথ ফিরিয়ে আনতে সরকারকে এ বিষয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। এদিকে, দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সোমবার (২৪ মে) বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

শিক্ষার গতিপথ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানোগ্রাফি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মুসলেম উদ্দিন মুন্না বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সময় কখনো আসবে না।

যেহেতু এটি একটি বৈশ্বিক মহামারি তাই এটি আজ-কালের মধ্যে চলে যাবে ব্যপারটি এমন না। এটিকে নিয়েই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। এমন চিন্তায় যদি আমরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারি তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন নয়?

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখলেও সুরক্ষা ব্যপারটা তো আর থাকছে না। যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে না তারা কি আর বের হচ্ছেনা? স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছু খোলা রাখা হয়েছে এবং আমরাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে জীবনযাপন করছি।

একইভাবে স্বাস্থ্যবিধি যেন সবাই মানে সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা উচিত। আমি মনে করি, এ প্রজন্মকে ধরে রাখতে হলে ও শিক্ষার গতিপথ ফিরিয়ে আনতে সরকারকে গভীরভাবে ভাবতে হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, সভ্য দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে। সরকার চাইলে বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে পারতেন। সরকার সেটি করেননি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়াছে কিনা, এ প্রসেঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এই মুহূর্তে ছুটি অল্প কিছু বাড়াতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি কয়দিন বাড়ছে, এখন সুনির্দিষ্ট করা বলা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা এখনও দেওয়া যায়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন ৬ লাখ টিকা আসছে, শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দিয়ে দিতে। সেটা দিতে কিছু সময় লাগবে। আমরা কী কী করছি বুধবার (২৯ মে) বলতে পারবো।

 

Scroll to Top