১১৭ দিন পর মাঠে ফিরছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

মো মিনহাজুল ইসলাম
বিশেষ প্রতিনিধি


আগামীকাল বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪ টায় সকল বিধিনিষেধ মেনেই ম্যানচেস্টারের( ইংল্যান্ড) ওল্ডট্রাফোর্ডে তিন ম্যাচ সিরিজের ১ম টেস্ট খেলতে নামবে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল।

ক্রিকেট, অনেকের কাছে ভালোলাগা – ভালোবাসার অপর নাম এই ক্রিকেট। শিশু- কিশোর থেকে শুরু করে যুবক- বৃদ্ধ , প্রায় সকলেই নিজ দেশের বা প্রিয় দলের খেলা দেখার জন্য মুখিয়ে থাকে। আর সেই ক্রিকেট আন্তর্জাতিক ভাবে মাঠে গড়ায়নি টানা ১১৭ দিন!

করোনা শুরুর আগে প্রায় প্রতি মাসেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতো। প্রতিনিয়তই চলতো রেকর্ড ভাঙা গড়া। তবে করোনায় সব থমকে গেলেও ক্রিকেটকে মাঠে ফেরাতে একের পর এক উদ্যোগ নিয়ে যাচ্ছে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) যার প্রথম ধাপ আগামীকালের ছেলেদের টেস্ট ম্যাচটা।

তবে গত ১৪৩ বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে সবাই ক্রিকেটের যে চিরাচরিত রূপ দেখে এসেছে , তাতে আসছে অনেক বিধিনিষেধ ও নতুন নিয়ম । দেখা যাক খেলোয়াড়রা সেই নিয়মগুলোর সাথে নিজেদের কীভাবে মানিয়ে নেয়?

আর এতোসব নিয়ম কানুন সব কিছুই কিন্তু করোনার জন্য, আর বিধিনিষেধ গুলো আইসিসির পূর্ণ অনুমোদিত যেখানে খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা হচ্ছে সবার আগে।

খেলা শুরুর প্রথম শর্তই ছিল মাঠ জীবাণু মুক্ত রাখা, তাই এই বার গ্যালারিতে থাকবেনা কোনো দর্শক। সংবাদমাধ্যমের চলাচল থাকবে সীমিত আর ম্যাচ পূর্ববর্তী ও শেষের সাক্ষাৎকারের ক্ষেত্রেও থাকছে অনেক বিধিনিষেধ। তবে সব চেয়ে বিপাকে পড়তে পারেন বোলাররা, কেননা বলে লালা মাখানোতে আছে নিষেধাজ্ঞা। তবে এটা যেহেতু খেলোয়াড়দের দীর্ঘদিনের অভ্যাস, তাই এ নিয়ে কিছু ছাড়ও থাকছে আইসিসির পক্ষ থেকে।

কেউ যদি মনের ভুলে একই ইনিংসে পর পর দুই বার বলে লালা মাখায় সেক্ষেত্রে মাঠের আম্পায়ার সেই খেলোয়াড়কে সতর্ক করবেন। কিন্তু, তৃতীয় বার যদি সেই একই খেলোয়াড় আবার বলে লালা মাখায় তাহলে ৫ রান পেনাল্টি হবে ( অর্থাৎ, ব্যাটিং করা দলের খাতায় ৫ রান যোগ হবে)। এক্ষেত্রে কেও বলে লালা মাখা মাত্রই তা জীবাণুমুক্ত করে তারপরে খেলা শুরু করবেন কর্তব্যরত আম্পায়ার।

থাকছে না বিদেশি আম্পায়ার। আগামীকালের ম্যাচে মাঠে আম্পায়ার হিসেবে থাকবেন ইংল্যান্ডের রিচার্ড কেটেলবরো ও মাইকেল গফ, অন্যান্য টিভি আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারিও সেই স্বাগতিক দলের। তবে এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার প্রশ্ন এসে যায়, এই সমস্যার সমাধানের জন্য টেস্টে প্রতি ইনিংসে এক দল তিন বার টিভি আম্পায়ারের সাহায্য নিতে পারবেন।

উইকেট পাওয়ার পরে হয়তো আগের মতোন উদযাপনও করতে পারবেন না ক্রিকেটাররা, পারবেনা একই সাথে বসে খাবার খেতে, প্রত্যেকের জন্য থাকবে আলাদা আলাদা টেবিল। অন্যদিকে খেলা চলাকালীন কোনো খেলোয়াড় করোনা পজিটিভ হলে থাকছে লাইক ফর লাইক সুবিধা ( প্রায় একই রকম খেলোয়াড় বদলি করার সুবিধা) অর্থাৎ, কোনো ব্যাটসম্যান আক্রান্ত হলে অন্য একজন ব্যাটসম্যানই বদলি হিসেবে নামবেন।
আবার ক্রিকেটারদের রাখা হচ্ছে মাঠের একেবারে নিকটবর্তী কোনো মাঠে।

এরপরেও ইসিবির চেষ্টার অন্ত নেই, প্রায় ১৫০০ থেকে ২০০০ বর্গফুটের মতো জায়গা জীবাণু মুক্ত ( বায়ো বাবল) পরিবেশের অধীনে থাকবে। এর অর্থ হলো এই জায়গার মধ্যে অল্প ও নির্দিষ্ট কিছু মানুষ চলাচল করতে পারবে।

মাঠের ক্রিকেটকে মাঠে ফেরানোর জন্য এতো উদ্যোগ, এখন শুধু দেখার পালা কতোটা সফল হয় ইসিবি। আর শুধু এক দিন, পুরোনো খেলা দেখে দেখে যারা সময় কাটাচ্ছিলেন তাদের আবার লাইভ খেলা দেখার সময় চলে আসলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *