৬ষ্ঠ শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এসাইনমেন্ট উত্তর | Class 6 Assignment Answer

৬ষ্ঠ শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এসাইনমেন্ট উত্তর | Class 6 Assignment Answer

৬ষ্ঠ শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এসাইনমেন্ট ৫ম সপ্তাহ । ৬ষ্ঠ শ্রেণির এসাইনমেন্ট । Class 6 Assignment Answer | 5 week assignment answer / solution.

১। সমাজে ন্যায় বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমরা হযরত উমর (রাঃ) এর খিলাফত থেকে কী কী শিক্ষা লাভ করতে পারি? তােমার পাঠ্য বইয়ের আলােকে বিশ্লেষণ কর:

উত্তরঃ  হযরত ওমর (রা.)-ছিলেন মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় খলিফা। ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বক্কর সিদ্দিক (রা.)-এর ইন্তেকালের পরে তার অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী হযরত ওমর (রা.)-৬৩৪ খ্রিস্টাব্দে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা নির্বাচিত হন, তা অধিকাংশ সমর্থন করেন।

তিনি ৫৮৩ খ্রিস্টাব্দে কুরাইশ বংশের আদি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম আবু হাফ্স, পিতার নাম খাত্তাব, মাতার নাম হানতামা। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি ফারুক(সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী) উপাধিতে ভূষিত হন। বাল্যকালে তিনি উট চরাতেন, যৌবনের শুরুতে যুদ্ধবিদ্যা, কুস্তি, বক্তৃতা ও বংশ তালিকা সম্পর্কে পারদর্শী ছিলেন।

হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর নবুয়তপ্রাপ্তির সময় কুরাইশ বংশের ১৭ জন ব্যক্তি লেখাপড়া জানতেন, তিনি তাঁদের মধ্যে ছিলেন অন্যতম। হযরত ওমর (রা.) খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পর মুসলিম সাম্রাজ্য বিস্তারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে।

এসময় রোম, পারস্য, সিরিয়া, মিশর ও ফিলিস্তিন মুসলিম সাম্রাজ্যভুক্ত হয়। তিনি রাজ্যশাসনে রাসুল (স.)-এর আদর্শ অনুসরণ করতেন। তিনি আইনের চোখে সকলকে সমান ভাবে দেখতেন। এমনকি মদপানের অপরাধে স্বীয়পুত্র আবু শামাকে শাস্তিদানে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি।

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন যেমন কঠোর, তেমনি মানুষের দুঃখ-কষ্টে ছিলেন অতি কোমল। তিনি সাধারণ প্রজাদের অবস্থা জানার জন্য রাতের আঁধারে একাকী বের হয়ে পড়তেন। প্রয়োজনে তিনি নিজের কাঁধে খাদ্য সামগ্রী বহন করে গরিব-দুঃখী মানুষের মাঝে বিতরণ করতেন। হযরত ওমর (রা.)-এর সরলতা ও কর্তব্য জ্ঞান ছিল তাঁর জীবনাদর্শ।

ন্যায়-পরায়নতা ও একনিষ্ঠতা ছিল তার শাসনামলের মূলনীতি। তারমধ্যে কঠোরতা ও কোমলতার ব্যাপক সমন্বয় ঘটেছিল। আমরা হযরত ওমর (রা.)-এর মহান আদর্শ মেনে চলবো এবং সে অনুযায়ী জীবন গড়বো।

২) প্রজাহিতৈষী হিসেবে একজন শাসকের মূর্ত প্রতীক ছিলেন খলিফা উমর (রাঃ) ব্যাখ্যা কর

উত্তরঃ  ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমর (রাঃ) একদিকে যেমন ছিলেন কঠোর অন্যদিকে ছিলেন কোমল হৃদয়ের অধিকারী। তিনি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। তিনি ছিলেন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আদর্শে আদর্শিত এক মহাপুরুষ।

প্রজাহিতৈষী হিসেবে তিনি ছিলেন একজন মূর্ত প্রতীক অর্ধ পৃথিবী শাসন করা দ্বিতীয় খলিফা উমর (রাঃ) খুবই সহজ সরল ও অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন। খেজুর পাতায় ছিল তাঁর আসন এবং তার কোনো দেহরক্ষী ছিল না। জাগতিক লোভ-লালসা জাঁকজমকে তিনি কখনোই আসক্ত হতেন না।

তারমধ্যে কঠোরতা ও কোমলতার উভয়ের সমন্বয় ঘটেছিল। শাসক হয়েও তিনি রাতের আধারের প্রজাদের অবস্থা দেখার জন্য বের হতেন। খাদ্য সামগ্রী নিজ কাঁধে বহন করে তা প্রজাদের মাঝে পৌঁছে দিতেন। তার শাসনামলে রাজ্যে কোন অভাব ছিল না।

বায়তুলমাল থেকে প্রাপ্ত কাপড়ের সেই পরিবার গ্রহণ করতে যে পরিমাণ সকলের জন্য নির্ধারিত ছিল। কৃষি কাজে ব্যাপক উন্নতি সাধনের জন্য তিনি নিজ উদ্যোগে খাল খনন করেন।

বিচারের মঞ্চে তিনি ছিলেন অত্যন্ত কঠোর আর এ প্রকাশ ঘটে যখন মদ্যপানের অপরাধে নিজ পুত্রকে তিনি শাস্তি দিয়েছিলেন। জনকল্যাণে তিনি অসংখ্য মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন এবং সেই সাথে সেতু, সড়ক, হাসপাতাল নির্মাণ করার মাধ্যমে তিনি প্রজাদের অসুবিধা গুলো দূর করেছিলেন।

এত বড় শাসক হয়েও তিনি কখনো অহঙ্কার করতেন না আর এর প্রমাণ ঘটে জেরুজালেম যাওয়ার পথে যখন ভৃত্যকে উটের পিঠে চড়িয়ে নিজে উটের রশি ধরে টেনেছিলেন। সুতরাং আমরা বলতে পারি প্রজাহিতৈষী হিসেবে একজন শাসকের মূর্ত প্রতীক ছিলেন খলিফা উমর (রাঃ)।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *