৭২ বয়সী বৃদ্ধাকে মারধর, লুঙ্গি গেঞ্জি ছেঁড়া ভিডিও ভাইরাল

৭২ বয়সী বৃদ্ধাকে মারধর, লুঙ্গি গেঞ্জি ছেঁড়া ভিডিও ভাইরাল

সারাদেশ টুডেঃ ৭২ বছর বয়সী নুরুল আলমকে মারধর করছেন কয়েকজন যুবক কিল-ঘুষি মেরে তার পরনের লুঙ্গি-গেঞ্জি টেনে ছিঁড়ে ফেলছেন, সঙ্গে চলছে অকথ্য গালাগালি।সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এমনি এক অমানবিক নৃশংসতার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

বৃদ্ধের বসবাস করেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায়। দেখা যায়- উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ছয়কুড়িটিক্কা পাড়া এলাকায় তাকে এমন অমানবিক নির্যাতন করেন কয়েকজন যুবক যার নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় সন্ত্রাসী আনছুর আলম ও তার সহযোগীরা। আলমের ছেলে আশরাফ হোসাইন এ ঘটনায় বাদী হয়ে চকরিয়া থানা একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহার আমলে নিয়ে ঘটনার তদন্ত করছে থানা পুলিশ।

মামলার আসামিরা হলেন- ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ছয়কুড়িটিক্কা পাড়া এলাকা বদিউল আলম (৫৫) ও তার ছেলে মিজানুর রহমান (২৮), আনছুর আলম (৩৫), শাহ আলম (৫২) ও তার স্ত্রী আরেজ খাতুন (৪৮), রিয়াজ উদ্দিন (৩২), জয়নাল আবেদিন (৩০) এবং মো.রুবেল (২৮)।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৪ এপ্রিল তার বাবা নুরুল আলম ঈদের বাজার করে ঢেমুশিয়া স্টেশন থেকে টমটম গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে আনছুর আলমের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী টমটম থেকে তার বাবাকে নামিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে পরনের লুঙ্গি- গেঞ্জি ছিঁড়ে ফেলে। তাকে কিল-ঘুষি দিয়ে মারধর করে। অকথ্য গালি-গালাজও করে তারা। এলাকার কয়েকজন যুবক এ ঘটনা মোবাইলে ধারণ করে। তার বাবা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকে।

এজাহারে আরও বলা হয়, এ ঘটনা জানার পর তার ছোট ভাই সিএনজি চালক সালাহউদ্দিন স্থানীয় লোকজনসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বাবাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। বাদি এজাহারে দাবি করেন, ঘটনার সময় তার বাবার ব্যবহৃত একটি মোবাইল সেট ও পকেটে থাকা নগদ সাড়ে সাত হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়
নুরুল আলমকে প্রথমে চড় থাপ্পড় দিচ্ছেন আনছুর আলম। এ সময় তার অন্যান্য সহযোগীরা আশপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিল। এক পর্যায়ে নুরুল আলমের লুঙ্গি খুলে ফেলেন তিনি। এ সময় বাধা দিতে গেলে তার গেঞ্জি টেনে ছিঁড়ে ফেলেন আনছুর আলম। এরপর অনবরত তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। আনছুরকে নুরুল কিছু একটা বোঝাতে চাইলেও তিনি মানছিলেন না। আঙুল তুলে শাসিয়ে গালি-গালাজ করে কথাবার্তাও বলেন আনছুর আলম।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আশরাফ হোসাইন বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে আমার বাবার উপর অমানবিক ঘটনাটি ঘটিয়েছে সন্ত্রাসী আনছুর আলম।’ তার দাবি, আনছুর আলম স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। এমন কোনো অপকর্ম নেই যা সে করে না।

চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কাজী মো. মতিউল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টা আমি ফেসবুকে দেখেছি। যারা এই ভিডিওটি ফেসবুকে আপলোড করেছে- মোটেও ভালো কাজ হয়নি। ঘটনার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি ওসিকে নির্দেশ দিয়েছি। যারা এই ঘটনাটি ফেসবুকে ভাইরাল করেছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে প্রশাসনের কাছে বিচারও দাবি করেছেন বৃদ্ধের ছেলে আশরাফ হোসাইন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *