ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে স্ট্যাটাস, আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার

ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে স্ট্যাটাস, আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পাদিত সাম্প্রতিক চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও বিএমএ খুলনা শাখার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলমকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

বুধবার (০৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ফরিদ আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এছাড়া কেন তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না তা জানতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে সেই কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে।



বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে দেশ মুক্তি পাক



সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী, সহসভাপতি ও সাবেক সাংসদ মোল্যা জালাল উদ্দিন, সহসভাপতি কাজী বাদশা মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামান বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

স্ট্যাটাসের বিষয়ে ডা. বাহারুল বলেন, “আমি মনে করি, নাগরিক হিসেবে, আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি আমার দেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রাখতে চাইব।”

এদিকে গত ৬ অক্টোবর বিকেল ৫টা ২৪ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘ভারত – বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বলা হলেও বাস্তবে একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত – বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ ও অধিকার চরম উপেক্ষিত’ শিরোনামে ডা. বাহারুল যে স্ট্যটাস দিয়েছেন,দ্য ক্যাম্পাস টুডে’ পাঠকদের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হলো-

“দুর্বল অবস্থানে থেকে বন্ধু-প্রতিম শক্তিধর প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে বৈঠকে-ফলাফল শক্তিধরের পক্ষেই আসে। বাংলাদেশ-ভারত উভয়-পক্ষীয় সমঝোতা স্মারক নাম দেওয়া হলেও বাস্তবে একপক্ষীয় সিদ্ধান্তই মেনে নিতে হয় দুর্বল রাষ্ট্রকে।

ভারত বাংলাদেশ থেকে তার সকল স্বার্থই আদায় করে নিয়েছে। বিপরীতে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে এখনো ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারেনি।

১. দীর্ঘদিনের আলোচিত তিস্তা নদীর পানি বণ্টন এবারের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় স্থান পায়নি।

২. ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে কিছু না বললেও তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হুংকার দিয়েছে নাগরিক পঞ্জীতে বাদ পড়া জনগণকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হবে। তারপরেও এবারের সমঝোতা চুক্তিতে ‘অভ্যন্তরীণ’ অজুহাতে বিষয়টি স্থান পায়নি।



আবরার হত্যা: বুয়েট ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহা গ্রেপ্তার



৩. বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ভারত কিছু বলেনি।

৪. তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে চুপ থাকলেও বাংলাদেশ অংশের ফেনী নদীর পানি ত্রিপুরা রাজ্যের পানীয় জল হিসাবে প্রতিদিন ১.৮২ কিউসেক টেনে নেবে ভারত। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সম্মত হয়েছে।



আবরারের ভাবিকেও পিটিয়েছে পুলিশ



৫. বাংলাদেশের জনগণের তরল গ্যাসের চাহিদা পূরণের ঘাটতি থাকলেও ভারতে তরল গ্যাস রপ্তানির সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং যৌথভাবে সে প্রকল্প উদ্বোধনও হয়েছে।

৬. চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ভারত কীভাবে ব্যবহার করবে, তা নির্ধারিত হলেও বাংলাদেশের জন্য ব্যবহারযোগ্য ভারতের কোনো বন্দর সেই তালিকায় ছিল না।

অমানবিক আচরণের শিকার হয়েও বাংলাদেশ পানি ও গ্যাস সরবরাহ দিয়ে মানবিকতার প্রদর্শন করেছে। বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ ও অধিকার উপেক্ষিত রেখে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষ হয়েছে।

শক্তিধর প্রতিবেশীর আধিপত্যের চাপ এতই তীব্র যে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বজায় থাকবে কিনা আশঙ্কা হয়। কারণ ভারতের চাপিয়ে দেওয়া সকল সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে মেনে নিতে হচ্ছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *