মেস মালিকদের কাছে উপেক্ষিত হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের দাবি

মেস মালিকদের কাছে উপেক্ষিত হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের দাবি

তানভির আহমেদ, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি


করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ইতিমধ্যেই স্থবির হয়ে পরেছে পুরো দেশ। লকডাউন হচ্ছে একের পর এক জেলা। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে লাশের সারি। বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না অনেক শ্রেণি পেশার মানুষ। ওষ্ঠাগত হয়ে গেছে খেটে-খাওয়া মানুষের জীবন।

এই যখন বাস্তবতা, তখন কাজ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন অস্বচ্ছল ও দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। টিউশন বন্ধ থাকায় এসব শিক্ষার্থীরা তাই শঙ্কায় প্রহর গুনছেন মেস ভাড়া পরিশোধ নিয়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক নির্ভর বিভিন্ন গ্রুপ ও সাংবাদিক সমিতি অফিশিয়াল গ্রুপে মেসভাড়া মওকুফের দাবি উত্থাপন করেছেন হাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এ ব্যাপারে নেতিবাচক সাড়া দিয়েছেন মেস মালিকেরা, উপরন্তু চাপ দিয়ে যাচ্ছেন মেস ভাড়ার পরিশোধের জন্য।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংকট থাকায় অনাবাসিক শিক্ষাথীরা শহর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে বিভিন্ন মেস ও ভাড়া বাসাবাড়িতে বসবাস করে আসছেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ক্যাম্পাস। কবে খুলবে জানিনা। ততদিন পর্যন্ত কি মেস ভাড়া বহন করতে হবে আমাদের? পেটে খাবার নেই, তার উপর মেসভাড়া!’ মেসে না থেকেও যা পরিশোধ করতে হবে আমাদের’। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের কারণে মেসগুলো চলে, বৈশ্বিক মহামারীর মতো এমন দুঃসময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে এভাবে টাকা নেওয়া একেবারেই অনুচিত ও অমানবিক। করোনার এ সময়টাতে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের মেসভাড়া মওকুফ করা দরকার’।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফিশারিজ অনুষদের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের জেলা লকডাউন ঘোষণা করেছেন জেলা প্রশাসন প্রায় একমাস আগে। দিনমজুর বাবার হাতে নেই কোন কাজ। বাড়িতে থাকা সঞ্চয়ও প্রায় শেষের দিকে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে কারো কাছে হাতও পাততে পারিনা। এদিকে বারবার ফোন দিচ্ছে মেস মালিক’ ।

কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম ফাহিম ফেসবুকে একটি গ্রুপ খোলেন ‘করোনা মোকাবিলায় হাবিপ্রবিয়ানের পাশে হাবিপ্রবিয়ান’! যার মাধ্যমে প্রায় অর্ধশতাধিক দরিদ্র শিক্ষার্থীকে উপহার সামগ্রী পৌঁছিয়েছেন। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক, অধ্যয়নরত ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠন এমনকি হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির উদ্দোগেও এ সহযোগিতা কার্যক্রম চলমান আছে।

এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা যখন অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন ঠিক সে মুহূর্তে মেস মালিকদের ভাষ্য জানতে মেস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মামুন কে শিক্ষার্থীদের দাবির ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘একেবারে ছাড় দিতে রাজী নয় কোন মেস মালিক, তবে একান্ত যাদের সহযোগিতা প্রয়োজন তাদের হেল্প করবে।

উক্ত বিষয়ে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. ইমরান পারভেজ বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে অবগত হয়েছি শিক্ষার্থীদের এসমস্যার বিষয়ে। আমরা ডিসি মহোদয় এর সাথে একটা মিটিং করতে যাচ্ছি শীঘ্রই এবং সে আলোকে মেস মালিকদের এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হবে। আশাকরি খুব দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *