‘প্রতিবেশীরা যেন আমাদের অন্য নজরে না দেখেন’: করোনা বিজয়ী আলম
জাতীয় টুডেঃ করোনাকে জয় করলেন রংপুরের শাহ্ আলম (৫০)। বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল আইসোলেশন ইউনিট থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। ২৬ দিন যুদ্ধে শেষে সুস্থ হওয়ার পর আজ সকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বিদায় জানিয়েছেন।
জানা যায় , রংপুরের ধাপ মর্ডাণ মোড়ের শাহ্ আলম ঢাকার কারওয়ান বাজারে একটি আড়তের কর্মচারী ছিলেন । গত ২৮ মার্চ রাতে ট্রাকে বাড়ি ফিরছিলেন। ২৯ মার্চ সকালে তার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে তাকে বগুড়ার শিবগঞ্জের মহাস্থান স্ট্যান্ডে নামিয়ে দিয়ে যায় চালক ও হেলপার। দীর্ঘদিন তিনি সেখানে পড়ে থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেননি।
পরে স্থানীয় এক সাংবাদিকদের মাধ্যমে খবর পেয়ে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ শাহ্ আলমকে রিকশা ভ্যানে তুলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে হৃদরোগী হিসেবে অ্যাম্বুলেন্সে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের করোনারী বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সেখানে দু’দিন চিকিৎসার পর করোনা সন্দেহে ওই ব্যক্তিকে মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল আইসোলেশন ইউনিটে পাঠানো হয়। পরে তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে রামেক হাসপাতাল পিসিআরে পাঠানো হয়। সেখানেই করোনাভাইরাস পজিটিভ ধরা পড়ে। অবশেষে চতুর্থ পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। এছাড়া শাহ আলমের সঙ্গে এক সপ্তাহ থাকা স্ত্রী সাজেদা বেগমর (৪০) রিপোর্টও নেগেটিভ হয়।
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, পঞ্চম রিপোর্টেও শাহ্ আলমকে নেগেটিভ বলা হয়েছে। এরপরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে শুক্রবার সকালে তাকে ছাড়পত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
তিনি আরো জানান, বগুড়ায় শনাক্ত হওয়া প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। শাহ্ আলমকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বলা হয়েছে।
অ্যাম্বুলেন্সে বাড়ি ফেরার আগে করোনা বিজয়ী শাহ্ আলম সাংবাদিকদের জানান, আল্লাহর রহমতে আমি সুস্থ হয়েছি। এ জন্য হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও অন্যদের কৃতজ্ঞ। তবে তিনি প্রত্যশা করেন, বাড়ি ফেরার পর এলাকার লোকজন যেন তাকে অন্য চোখে না দেখেন।
ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বিদায়ের সময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এটিএম নুরুজ্জামান সঞ্চয় ও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শফিক আমিন কাজল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।