বছরে একদিন একুশ নয়, একুশ হোক প্রতিদিন

২১শে ফেব্রুয়ারি, বাঙ্গালিদের জন্য বিশেষ স্মরনীয় এবং গৌরবোজ্জ্বল দিন। এই বিশেষ দিনটির পিছনে রয়েছে আত্নত্যাগের ইতিহাস। পাকিস্তান সৃষ্টির পর পরই তারা প্রথম আঘাত হানে ভাষার উপরই। যেহেতু ভাষাই হল সংস্কৃতির বাহক, তাই তারা জানত একটি জাতিকে ধংসের প্রথম ধাপই হল ভাষার বিনাশ।কিন্তু ভাষার মর্যাদা এবং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি রাজপথে নেমেছিল ছাত্ররা, তাদেরই রক্তে অর্জিত এই দিন।

ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই বাঙালি জাতীয়তাবাদ আন্দোলন বাংলার মাটিতে শক্তভিত্তি পায়। সাহসী বাঙালি আরও সাহসী হয়ে উঠে। আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং জীবনাচরণে ভাষা আন্দোলনের ঔজ্জ্বল্য ছড়িয়ে পড়ে। ভাষা আন্দোলনের বিজয় বাঙালিকে আরও বেশি কিছু পাওয়ার প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ করে।এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ৬৯ এর গণ অঅভ্যুত্থান, ও ৭১ এর স্বাধীনতা।

আর এই স্মরনীয় এবং গৌরবোজ্জ্বল দিন অমর একুশে নিয়ে মনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের মনের কথা তুলে ধরেছেন সাগর দে।

স্মার্টনেসের নামে ভাষার বিকৃতি হয়ে উঠেছে অনবদ্য

প্রথমত একটা জাতি বা একটি জনপদ তৈরি হয় নির্দিষ্ট একটি ভাষার পরিচয়ে। পৃথিবীতে যখন স্টেট এর কোনো ধারণা ছিল না তখন মানুষ কথা বলতে জানতো না। বিভিন্ন ইশারা-ইঙ্গিতের মাধ্যমে তারা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতো। আস্তে আস্তে যখন মানুষ ভাষার উদ্ভব ঘটালো এবং তাদের যোগাযোগ আরো বিস্তার লাভ করল, ঠিক তখনই মানুষ একতাবদ্ধ হওয়া শুরু করলো।

যার ফলে গঠিত হলো ভাষা ভেদে আলাদা আলাদা কমিউনিটি। এরপরই উদ্ভব সিটি স্টেট, স্টেট এর। যদিও স্টেট গঠনের পিছনে ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতির ভূমিকা রয়েছে তারপরেও ভাষার ভুমিকা অন্যতম।

এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হতে পারে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। ১৯৭১ এর আগে দেশ দুটি একটি দেশ থাকলেও তাতে সবচেয়ে বড় ভিন্নতা ছিলো ভাষায়। যার ফলে বায়ান্নর রক্তঝরা ফেব্রুয়ারি। আর এই চেতনাকে ধারণ করেই ছেষট্টি, ঊনসত্তর ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির লড়াই। আর সে লড়াইয়ে বিজয়ের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ। তাই আজো গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি ভাষা আন্দোলনের সেই বীর সন্তানদের।

কিন্তু এত রক্তঝরা এই ভাষার আজ এ কি করুণ অবস্থা! স্মার্টনেসের নামে ভাষার বিকৃতি হয়ে উঠেছে অনবদ্য বিষয়। প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বিদেশী ভাষা-সংস্কৃতির চর্চা। প্রশাসনিক, শিক্ষাক্ষেত্র ও পেশাগত জীবনে বাংলা ভাষার ব্যবহারে রয়েছে ব্যাপক সংকীর্ণতা ও উদাসীনতা। এসব সংকীর্ণতা কাটিয়ে প্রিয় মাতৃভাষার যথাযথ মর্যাদা দিতে পারলে তবেই সার্থকতা পাবে সালাম-রফিক-জব্বার এর বায়ান্নর সেই ত্যাগ।

আব্দুল ওহাব
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
বশেমুরবিপ্রবি


বাকস্বাধীনতা আমাদের মৌলিক অধিকার

আমরা জন্মলগ্ন থেকেই বাংলা ভাষা টা আয়ত্ত্ব করে ফেলি। আর সূচনা ঘটে মায়ের থেকেই। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাকে মায়ের ভাষাও বলা চলে। সেই ভাষা যদি কেও কেড়ে নিতে চায় তাহলে কান্ডারি হয়ে দাড়াতেই হয়। বাকস্বাধীনতা হলো মৌলিক অধিকার। সেই অধিকার কেও ক্ষুন্ন করবে এমন হতে দেওয়া যায় না।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ছিল এই বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার অকাতরে প্রাণ দিয়েছে এমন উদাহরন বাংলার ইতিহাস ব্যতীত বিরল। আমাদের আরো একটি বড় পাওনা হলো ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত প্রদান।

কিন্তু বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই ভাষার অপব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ইংরেজী ভাষার প্রাধান্য বাড়িয়ে দেওয়ায় বিভিন্ন অফিশিয়াল কাজে বাংলা ভাষাকে গন্য করা হয় না। এক ধরনের ভাষার বিকৃত হচ্ছে বলেই মনে করি আমি। আত্নত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত এই ভাষা, অর্জন পর্যন্ত থেমে গেলেই চলবে না, এই ভাষার মর্যাদা রক্ষা করাও উচিত। অর্জনের থেকে মর্যাদা রক্ষাই কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে বর্তমান প্রেক্ষাপটে। বাংলা ভাষার ব্যবহার বৃদ্ধি করে ভাষা বিকৃতিকরন এবং অপব্যবহার কমিয়ে আনা হোক এইটাই আমাদের সকলের কাম্য।

নুসরাত জাহান
ইতিহাস বিভাগ
বশেমুরবিপ্রবি


আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে আমরা হাসাহাসি না করি

“ফাল্গুণ মানে বর্ণ মালার খেলা
ফাল্গুণ মানে হাজার ফুলের মেলা”

কি মধুর এই সুর-বানী। কি হতো- যদি এই ভাষাটা না থাকত?এত কাব্য এত কবিতা কে লিখতো? ভালোবাসি এই মিষ্টি কথাটা কে বলত? মাকে এত মধুর সুরে কে ডাকত? হা এই বাংলা ভাষাকে রক্ষার জন্য যারা ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি ভাষার মাসে বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

এই ভাষার প্রতি আমাদের অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থাকা প্রয়োজন। তবে বর্তমানে দেখা যায় আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে আমরা হাসাহাসি করি কিন্তু এটা আমাদের মোটেই কাম্য নয়। আমাদের প্রত্যকের উচিত প্রত্যকের ভাষার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা । কারণ জন্মের পরই আমরা সবাই মায়ের মুখের ভাষা থেকেই মূলত কথা বলা শিখি।

শুধু যে কথাবার্তার চর্চায় এই আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার হয় বিষয়টা তেমন নয়।অনেক সাহিত্য, কবিতা, গান ও নাটকে যুগ যুগ ধরে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার হয়ে আসছে।সৈয়দ শামসুল হক, শামসুর রাহমানের মতো বোদ্ধারাও আঞ্চলিক ভাষায় অনেক সাহিত্য রচনা করেছেন।

আরমান সাগর
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ
বশেমুরবিপ্রবি


আমাদের উচিত বিশ্ব দরবারে বাংলা ভাষার মর্যাদা বৃদ্ধি করা

বাঙালির জীবনের একটি অতি তাৎপর্যপূর্ণ দিন হল একুশে ফেব্রুয়ারি । এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে সুপরিচিত। বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে এটি গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে কয়েকজন তরুণ শহীদ হন। এই মহান শহীদদের রক্তের বিনিময়েই বাংলা ভাষা তখন রাষ্ট্রভাষার সম্মান পেয়েছিল।

প্রতি বছর সম্মানের সহিত এই দিনটি উদযাপনের সাথে সাথে আমাদের উচিত বিশ্ব দরবারে বাংলা ভাষার মর্যাদা ও সুনাম বৃদ্ধি করার জন্য সর্বোচ্চ সচেস্ট থাকা ।

অলোক মল্লিক
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
বশেমুরবিপ্রবি


একুশ অসাম্প্রদায়িক

২১শে ফেব্রুয়ারি!আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।আসলে “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো ২১ শে ফেব্রুয়ারি।” সৌভাগ্যের বিষয় দিবসটি আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি পেয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে প্রত্যেকটি রাষ্ট্রে মাতৃভাষায় কথা বলার স্বীকৃতি প্রদান করেছে। তবে আজকের দিনে বেশকিছু বিরূপ ভাবনা আমাদের মনের কোনে উঁকি দেয়। কেননা যেভাবে আমরা সবাই ইংরেজি ভাষা গ্রহন করতে ইচ্ছুক,তাতে সত্যিকার অর্থেই বাংলা ভাষা আজ অনেকখানি বিপন্ন।একুশের ইতিহাস বাঙ্গালির চেতনায়,মেধা ও মননে তথা বাঙ্গালিকে কতটা সমৃদ্ধ করতে পেরেছে,সেটা সন্দিহান!

আজকের এই সংকটময় মুহূর্তে একুশ স্মরণের তাৎপর্য হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ গড়ে তুলতে এবং সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে রাজনৈতিক আন্দোলনের অভিমুখে ঠেলে দিতে একুশে স্মরণ খুব প্রয়োজন।আমরা মাতৃভাষার অধিকার পেয়েছি রক্তের অক্ষরে।আর এই মাতৃভাষা চর্চার মধ্যেই লুকিয়ে আছে আমাদের প্রাণ ভোমরা।তাই এই একুশের ঐতিহ্য বহন করে ব্যক্তি জীবনের সাথে সামাজিক তথা সাংস্কৃতিক চর্চাকে আরো নানাভাবে সমৃদ্ধ করতে পারি,সেটাই হোক আমাদের প্রতয়,আমাদের স্বপ্ন।

কাজের ভাষা হিসেবে বাংলা গুরুত্ব হারালেও সৃজনশীল সাহিত্যপাঠের অনুরাগী মন কিন্তু কমবে না।জীবনধারার সাথে সম্পর্ক রেখে ইতিমধ্যে অনুগল্প জনপ্রিয় হয়েছে। সময় কোথাও থমকে দাঁড়ায় না।মৈথিলী ভাষার বুক থেকে বাংলা বেরিয়ে এসেছে, কোনো এক সন্ধিক্ষণে বাংলার বুক থেকে আরও এক নতুন ভাষা বেরিয়ে আসবে সময়ের দাবি মেনে।

পরিশেষে বলব,একুশের জায়গাটা হচ্ছে উত্তরনের পথ।একুশ অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ।বছরে একদিন একুশ নয়,একুশ হোক প্রতিদিন।

নূপুর গোলদার
বাংলা বিভাগ
বশেমুরবিপ্রবি ।

ইবিতে জবি শিক্ষকের পিএইচডির ভর্তি আবেদন নিয়ে তুলকালাম

 

ইবি প্রতিনিধি


ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জাগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেরুন নেছার পিএইচডি আবেদন পত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা না বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ইংরেজি বিভাগে যোগাযোগ করলে কোন তথ্য দিতে পারেনি। বুধবার মুঠোফোনে প্রতিবেককে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক।

ভুক্তভোগী শিক্ষক সূত্রে জানা যায় , ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পিএইচডি প্রোগ্রামে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি আবেদন জমা দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক মেহেরুন নেছা। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহনের জন্য তারিখ ঘোষণা করে ইবি প্রশাসন। এতে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি আবেদনকৃত শিক্ষার্থীদের মোবাইলে ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে জানানো হয়। কিন্তু মেহেরুন নেছা নামের ওই শিক্ষক বাদ পড়ে যান।

এ বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক মেহেরুন নেছা বলেন,‘আমি যোগ্য না অযোগ্য বিভাগের পক্ষ থেকে আমাকে কোন কিছুই জানানো হয়নি। একজনের মাধ্যমে আমি জানতে পারি যে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। বিভাগে খোঁজ নিলে আমার নামে কোন আবেদন জমা হয়নি বলে জানানো হয়।’ ঘটনার পর বিভাগে জরুরী একাডেমিক কমিটির সভা ডাকা হয়। এতে মেহেরুন নেছাকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের জন্য ক্ষুদে বার্তা পাঠানোর সিন্ধান্ত হয়।

‘জরুরী সভা ডেকে বিভাগের পক্ষ থেকে এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সুরাহা করতে পারে না বিভাগ। এমনকি স্বয়ং উপাচার্যও এটা করতে পারে না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন।’

ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সালমা সুলতানা বলেন,‘করোনার মধ্যে এটা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বিষয়টি জানার পর আবেদনপত্র খুঁজে পাওয়া গেছে। তিনি পরীক্ষা দিতে পারবেন।’

গ্রাজুয়েট দম্পতির সফল উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প

উদ্যোগের ভাষায় একটা প্রবাদ আছে যে, উদ্যোক্তারা জন্মগত ভাবেই উদ্যোক্তা। কেউ কেউ জন্মগতভাবে উদ্যোক্তা না হলেও ভালবেসে বিয়ে করেও কেউ কেউ উদ্যোক্তা হয়।

তেমনি এক উদ্যোক্তা দম্পতি জি,এম-আদল এবং সিরাজুম মুনিরা। তাদের উদ্যোগের নাম আমার পিরোজপুর.কম।

পিরোজপুর জেলাকে ব্রান্ডি করাই আমাদের মূল লক্ষ্য এই স্লোগানে উজ্জীবিত হয়ে এই উদ্যগের যাত্রা শুরু। এটি জেলা পণ্য ব্রান্ডিং করার একটি ভিন্নধর্মী উদ্যোগ।

দুজন গ্রাজুয়েট। জি,এম-আদল এবং সিরাজুম মুনিরা। সম্পর্কে প্রথমে প্রণয়,বিয়ে এরপরে এখন তারা দুজন জীবনসঙ্গী।

আমার পিরোজপুর.কম এর সহ উদ্যোক্তা হিসেবে রয়েছে এই তরুণ দম্পতি ।

জি,এম-আদল ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে গ্রাজুয়েশন শেষ করে আর সিরাজুম মুনিরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসন বিষয়ে পড়াশুনা শেষ করেছেন।পড়াশুনা শেষ করে চিরাচরিত চাকরির পিছনে না ঘুরে তারা হয়েছেন উদ্যোক্তা।

আমার পিরোজপুর.কম এর যাত্রার শুরুর গল্প জানতে চাইলে এই উদ্যোক্তা দম্পতি জানান, “মাধ্যমিক,উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে গ্রাজুয়েশন করার উদ্দেশ্যে যখন আমরা ভার্সিটিতে যাওয়া শুরু করি তখন বন্ধুরা অন্যদের মত জিজ্ঞেস করত আমাদের জেলা কোথায়,তখন যখন পিরোজপুর এর নাম বলতাম অনেকেই একবারে সঠিকভাবে চিনত না।

তখন থেকেই নিজের জেলাকে সবার মাঝে পরিচিতি করার একটি স্বপ্ন ছিল। ভাবতাম নিজের জেলাকে নিয়ে এমন একটা উদ্যোগ নিব যার মাধ্যমে এক নামে সবাই পিরোজপুর জেলাকে চিনবে।এভাবেই আমার পিরোজপুর.কম এর শুরু।

একই জেলার মানুষ আমরা। দীর্ঘ প্রণয়ের পরে আমরা একে অপরকে ভালবেসে বিয়ে করি।যেহেতু প্রেম করে বিয়ে করেছি সেহেতু বিয়ের পরে সময়টা যথেষ্ঠ স্টাগেলিং ছিল।আমরা দুজনেই চাকরির জন্য দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জয়েন করি।

অনেক কিছুর মাঝেও ভালই চলছিল।তবে এই পরাধীন চাকরি খুব ভাল লাগছিল না।এরই মাঝে হঠাৎ করোনা ভাইরাস প্রোকট আকার ধারণ করে এবং লক ডাউনের পরে আমরা উভয়েই চাকরি হারাই। চরম সমস্যায় পরি।তবুও হতাশ হইনি।চাকরি যেহেতু পাচ্ছিলাম না হাতে চাকরি থেকে আয় করা যে স্বল্প পরিমান টাকা ছিল তা নিয়ে আমাদের উদ্যোগ আমার পিরোজপুর.কম এ পুরোদমে সময় দেয়া শুরু করি।

অনলাইনে বেশি করে প্রচার প্রচারণা শুরু করি।ভাল রেসপন্স আশা শুরু করে।এ ক্ষেত্রে অনেক কাছের বন্ধুরা এগিয়ে এসেছিল।তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।হয়ত তাদের কারনেই আজ আমাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে।”

আমার পিরোজপুর.কম এর কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা জানান, “পিরোজপুর একটি মৎস ও কৃষি নির্ভর জেলা। কৃষকরা নানা রকমের ফসল এখানে ফলায়। তার মধ্যে মাল্টা,কালোজিরা চাল অন্যতম। পিরোজপুরকে মাল্টার সুবর্ণভূমি বলা হয়। মাল্টা এ জেলার সরকার কর্তৃক স্বীকৃত একটি ব্র্যান্ড।পিরোজপুরকে বলা হয় মাল্টার সুবর্নভূমি।

অন্য দিকে পিরোজপুর একটি নদী বিধৌত জেলা। জালের মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে নদী- খাল। ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবন-জীবিকা গড়ে উঠেছে এই নদীকে কেন্দ্র করে। এদের মধ্যে রয়েছে জেলে সম্প্রদায়, যারা নদীতে ও সাগরে মাছ ধরে, আবার কেউ কেউ রয়েছে, যারা মাছ শুটকি করে জীবিকা নির্বাহ করে। এর উপর ভিত্তি করে অনেক শুটকিপল্লীও গড়ে উঠেছে এখানে।

এছাড়াও এ এলাকার কিছু মানুষ প্রাচীন কাল থেকে শীতল পাটি শিল্পের সাথে জড়িত রয়েছে। মিষ্টি বাঙালির আপ্যায়নের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাঙালির যেকোনো অনুষ্ঠান মিষ্টি ছাড়া অপূর্ণ থেকে যায়। এর মধ্যে রসগোল্লার স্থান সবার উপরে। শত বছরেরও বেশি সময় ধরে এ এলাকার রসগোল্লা ব্যাপক সমাদৃত। প্রবীণ বিশেষজ্ঞদের মতে রসগোল্লার আদি উৎপত্তিস্থল এই পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায়।

বর্তমানে আমার পিরোজপুর.কমের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত এ অঞ্চলের বিখ্যাত রসগোল্লাসহ এ অঞ্চলের কৃষকদের উৎপাদিত অর্গানিক সুগন্ধি কালোজিরা চাল,অর্গানিক মাল্টা ও শুটকি দেশের নানা প্রান্তে সরাসরি ভোক্তাদের বিপণন করা হচ্ছে। ফলে এ অঞ্চলের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে এবং দেশের নানা প্রান্তের সাধারণ ভোক্তারা তাদের কষ্টার্জিত টাকায় ভেজালমুক্ত পণ্য কিনতে পারছে।

এ জেলার শীতলপাটিসহ কিছু শিল্প বিলুপ্তির মুখে। এই শিল্পগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করে তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমার পিরোজপুর.কম প্রতিনিয়ত কাজ করছে। আমার পিরোজপুর.কম এ এখন পিরোজপুর জেলার বিখ্যাত শীতলপাটিও পাওয়া যায়।”

তারা ইতিমধ্যে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৩৪ টির অধিক জেলার মানুষের কাছে আমার পিরোজপুর.কম এর পণ্য পৌছাতে সক্ষম হয়েছে।দিন দিন মানুষের আস্থা এবং বিশ্বাসে এগিয়ে যাচ্ছে আমার পিরোজপুর.কম।আমার পিরোজপুর এখন অনেকের কাছেই একটি ব্রান্ডের নাম।আমার পিরোজপুর.কম কে এগিয়ে নিতে সহযোগী হিসেবে কাজ করছে পিরোজপুর জেলার বিসিক, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃপক্ষ (বিডা), ইএসডিপি সহ আরো অনেকে।

এই উদ্যোগের উদ্যোক্তা জি, এম আদল এবং সিরাজুম মুনিরা দম্পতি স্বপ্ন দেখেন জেলার শত বেকার তরুণের কর্মসংস্থান হবে আমার পিরোজপুর.কমের মাধ্যমে।

আমার পিরোজপুর এর উদ্যোক্তাদ্বয় আরো স্বপ্ন দেখেন ভবিষ্যতে আমার পিরোজপুর.কম দেশের অন্যতম একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হবে। সারা বিশ্বব্যাপী পিরোজপুর জেলাকে ব্রান্ডিং করবে আমার পিরোজপুর.কম।

অনুপ্রেরণা ও ভালো মানুষ হওয়ার মূলমন্ত্র

ড. মাহাদী হাসান


শুনো ভাই ও বোনেরা-
-ছোটবেলায় আমাদের উপর কারো কুনজর পড়বে সেই ভয়ে আমাদের মা আমাদের কপালের একপাশে নিকষ কালো ফোটা দিয়ে রাখতেন। কত্ত ভালোবাসেন মা আমাদের। বিশ্বের আর কোন দেশে এমন মা আছেন?

-আমাদের মা যখন আমাদের ব্রেস্টফিডিং করাতেন, তখন কারো সামনে করাতে চাইতেন না। কেউ দেখলে যদি আমাদের পেটে অসুখ হয় সেই ভয়ে। এমন মা বিশ্বের কোথায় মিলবে?

-ছোট্র বেলায় যখন অন্যরা কোলে নিতেন, এমনকি যদি বাবাও নিতেন কোলে, আমাদের মা বলতেন, সাবধানে নিও/নিস যেন ব্যাথা না পায়, পড়ে না যায়। আহারে ভালোবাসা!

-ভাইয়েরা বোনেরা, যখন বাড়িতে ইলেক্ট্রিসিটি ছিলোনা, সারারাত মা না ঘুমিয়ে বাঁশের/তালপাতার পাখায় বাতাস করতেন। মা সারারাত না ঘুমিয়ে বা আধোঘুমে আবার তার দিনশুরু করতেন সকালে। এমন মা কোথায় পাবো?

-যখন একটু বড় হলাম আমরা। হাটতে শিখলাম। মধ্যবিত্তদের ঘরে তখন ওয়াকার ছিলোনা। আমাদের মায়েরা সেসময় ওয়াকার শব্দটিও শুনেনি। তোমার আমার হাটার সুবিধার্থে/যেন পড়ে ব্যথা না পাই, দুইটা বাঁশ দিয়ে ওগুলো ধরে হাটা শিখিয়েছেন। এমন মায়ের ভালোবাসা কোথায় পাওয়া যাবে?

-ওহে ভাইবোনেরা, যখন ছোট্র ছিলাম, যখন নিজের প্যান্ট নিজে পরতে পারতামনা, তখন মা গোসল করাতেন। শীতের সময় আমাদের জন্য গরম পানি করতেন চুলায়। মা নিজে ঠা-া পানি দিয়ে গোসল করলেও আমাদেরকে গরম পানিতেই গোসল করাতেন। ওই পানি বেশি গরম কিনা তা মায়ের হাতে ঢেলে পরীক্ষা করেই আমাদের গায়ে পরে ঢালতেন এমন স্যাক্রিফাইসিং মা কোথায় পাবে?

-ভাইবোনেরা, শীতকালে আমাদেরকে উষ্ণতা দেয়ার জন্য মা তার সুতি শাড়ির পুরোটাই ভিজিয়ে ফেলতেন। সেই ভেজা শাড়িতেই মা ঘুমাতেন। এমন মমত্ববোধ আর কোথায় পাবে? এই মমত্ববোধ তোমায় মোটিভেইট করেনা?

-যাদের বড় ভাইবোন ছিলো, সেই ভাইবোনেরা স্কুলের টিফিনের টাকা জমিয়ে আমাদের জন্য চকলেট কিংবা বাঁশের বাঁশি নিয়ে আসতো। এমন ভাইবোনের ভালোবাসা তোমায় মোটিভেইট করেনা?

-যখন ছোট্র ছিলাম, আমাদের নাম যাই রাখা হোক, আমাদের মা বাবা ভাইবোনেরা কত্ত আদুরে নামে আমাদের ডাকতেন সোনা, যাদু, ময়না, টিয়া, আব্বু, বাজান, আম্মু, মা, মামনি, লক্ষী। এসব মনে হলে জীবনের প্রতি ইন্সপায়ারড হও না?

-এখন ছোটদের দাঁত পড়ার সময় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। কিন্তু আমাদের মা বাবা গল্পের তালে তালে একটানে ব্যথাহীনভাবেই দাঁত তুলে ফেলতেন। মনে পড়ে সেই সেরা ডাক্তারদের কথা?

-যখন স্কুলে যাবার বয়স হলো, মা নিজের কোলের কাছে আমাদের মাথা নিয়ে জড়িয়ে ধরে কি গভীর ভালোবাসায় চুল ঠিক করে দিতেন কিংবা বোনদের চুলে বেণি করে দিত মনে পড়ে? মা আমাদের মাথায় বেশি করে তেল দিয়ে দিতেন। সেই তেল কানের দুপাশ বেয়ে পড়তো! আহা মনে হতো মাথা থেকে মমত্ববোধ পড়ে যাচ্ছে মনে পড়ে সেসব?

-হে আধুনিক প্রজন্ম, তোমাকে এক জোড়া জুতা কিনে দিয়ে তোমার বাবা কতদিন খালি পায়ে হেটেছেন, তার হিসেব রেখেছো? তোমাকে একটা গাইড বই কিনে না দেয়ায় তোমার মা তোমার বাবাকে কত্ত বকেছেন! তোমার বাবা কোন অভিযোগ করেননি। মনে পড়ে?

-যারা প্রত্যন্ত গ্রামে বড় হয়েছো আমার মতো, একটা হারিকেনের আলোয় কিংবা পিদিমের আলোয় পড়তে। আমাদের মা হারিকেনের চিমনির সাথে একটা সাদা কাগজ লাগিয়ে দিতেন যেন আমাদের চোখেমুখে বেশি উত্তাপ না লাগে। আহা ভালোবাসা!

-মনে পড়ে, পড়ার আওয়াজ একটু কমে গেলেই মা কিংবা বাবা পেছনের রুম থেকে আওয়াজ তুলতেন, “পড়তেছনা কেন? শব্দ করে পড়। শুনতে পাচ্ছোনা পাশের বাড়ি থেকে পড়ার আওয়াজ আসতেছে!” এমন আরো কত কি মনে পড়ে মায়ের সেই স্বর?

-পাড়ার অপেক্ষাকৃত কম ভালো কিংবা স্কুল পালানো ছেলেমেয়েদের সাথে মিশতে কতবার না করতেন আমাদের মা বাবা? কয় লক্ষবার আমাদেরকে খারাপের সাথে মিশতে না করেছেন? মনে পড়ে?

-পেটভরে খাওয়ার পরেও বাবা-মা বলতেন, “আজকে তোমার ক্ষিধে নেই কেন? রাস্তার দোকানের খাবার খেয়েছো নিশ্চয়ই।” মনে পড়ে?
-অন্যের গাছের ফল কিংবা পুকুরের মাছ কিংবা অন্যের খেলনা সামগ্রী নিয়ে আসলে মা সেসব রেখে আসতে বলতেন। মা আমাদের সৎপথের কথা বলতেন। সেই সততার শিক্ষা মনে পড়েনা?

-প্রাথমিকে কিংবা মাধ্যমিকে স্কুলের বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে, একটা দেশাত্মবোধক গান গাওয়ার জন্য মা কত্ত অনুপ্রেরণা দিতেন, সেসব মনে পড়ে? ছেলেমেয়েরা গান গাইবে কিংবা লং জাম্প দিবে, তা দেখার জন্য বাবা মা স্কুলে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। একটা পুরস্কার পেলে সেদিনের সব অকাজের জন্য আর শাস্তি দিতেন না। সেসব মনে পড়ে?

-হে প্রজন্ম তুমি কি জানোনা, তোমাদের মসজিদে পাঁচবেলা আযান দেয়া মুয়াজ্জিন কিংবা মন্দিরে প্রতিদিন ঘন্টা বাজানো লোকটা কত্ত অল্প টাকা পেয়েও সততার সাথে জীবন যাপন করছে? তার কাছ থেকে মক্তবে কিংবা মন্দিরে আল-কোরআন কিংবা গীতা থেকে যেসব শিখেছিলে, সেই শিক্ষা কোথায় আজ?

-তোমাদের বোঝা বইতে বইতে আমিন মিয়ার কাধে ফোসকা হয়েছে, তার জন্য তোমার কিছুই করার নেই আজ? ভেবে দেখো কার টাকায় তুমি আজ মহারাজা? তোমাকে কবির ভাষায় জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হয়-

“রাজা, তোর কাপড় কই?”
-মনে পড়েনা স্কুলে প্রতিদিন একটা শার্ট পরে আসা মাস্টার মসাই পড়াতেন, “সকালে উঠে আমি মনে মনে বলি, সারাদিন যেন আমি ভালো হয়ে চলি”। খবর রাখো সেই শিক্ষাগুরুর?

-হে প্রজন্ম মনে কি পড়েনা, অন্যের গায়ে হাত দেয়ার অপরাধে হেডমাস্টার সাহেব কয়টা বেত ভেঙেছে তোমার পিঠে? আহা শাসন।
-হে প্রজন্ম মনে পড়ে কি, সেই যে ক্লাস শুরুর আগে হাজারো শিক্ষার্থী মিলে গাইতে, “আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি”?
-হে গ্র‌্যাজুয়েট, ক্যাডার, ব্যাংকার, শিক্ষক, ডাক্তার, ডক্টর ভাইবোনেরা, মনে পড়ে স্কুলে সবার সামনে দাঁড়িয়ে একটা ছেলে/মেয়ে উচ্চকন্ঠে প্রতিদিন শপথবাক্য পাঠ করাতো- “আমি শপথ করিতেছি যে, বাংলাদেশের সেবায়…”? বড় হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সব ভুলে গেছ?

-মনে পড়ে, তোমরা কয়েকশোজন একসাথে হাততুলে জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে? ভুলে গেলে আরেকবার স্কুলের শুরুতে যাও। সব মনে পড়বে।
-হে প্রজন্ম, মনে পড়েনা, সেসব কবিতা, “সবার সুখে হাসবো আমি, কাঁদবো সবার দুঃখে” কিংবা “আমি হবো সকাল বেলার পাখি, সবার আগে কুসুমবাগে উঠবো আমি ডাকি”? ভুলে গেছো? তুমি কি জাগবেনা আজ?

মা বাবার এত্তসব অনুপ্রেরণা, ভালোবাসা, স্কুলের শপথ আর নৈতিকতার শিক্ষা যেদেশের ছেলেমেয়েরা বাচ্চাকাল থেকেই পেয়ে থাকে, তাদের এখন মোটিভেশনাল স্পীচ শুনতে হয় টাকা দিয়ে। তাদের এখন প্রেরণার জন্য বিভিন্ন মুভি দেখতে হয় তাদের নৈতিকতা আর দেশপ্রেম শেখাবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলেও এথিক্স ও বাংলাদেশ স্টাডিজ পড়াতে হয়।

আমি বলছিনা মুভি দেখে প্রেরণা নেয়া কিংবা এথিক্স বা বাংলাদেশ স্টাডিজ পড়ানো খারাপ। জানার জন্য পড়া যায়। কিন্তু যে শেকড় ভুলে যায়, এসব ক্লাসরুমের শিক্ষায় তার কতটুকুই বা উন্নতি হয়?

শুনো প্রজন্ম,
তোমার মায়ের মমত্ববোধ, ভাইবোনের ভালোবাসা, স্কুলের নৈতিকতার শিক্ষা- এসবে যদি তুমি অনুপ্রাণিত না হও, যদি ভালো মানুষ না হও, তাহলে পৃথিবির দ্বিতীয় কোন শক্তি তোমাকে মোটিভেট করতে পারবেনা। হোক তা ভালো ফলাফলের জন্য কিংবা ভালো মানুষ হওয়ার জন্য।

এই নষ্ট বর্তমানে প্রেরণা খুঁজোনা।
এই নষ্ট বর্তমানে ভালো হওয়ার দীক্ষা খুঁজোনা।
এখানে তুমি এসব নাও পেতে পারো।

তোমার প্রেরণা ও ভালো হওয়ার দীক্ষা-
তোমার অতীতে।
তোমার বাল্যশিক্ষায়।
তোমার মায়ের সেই ভিজা আঁচলে।
তোমার বাবার খালি পায়ে হাটার শব্দে।
তোমার ভাইবোনের এনে দেয়া চার আনার চকলেটে।
তোমার মা বাবার আজ্ঞায়।
তোমার মা বাবার নিষেধাজ্ঞায়।
স্কুল মাস্টারের বেতের আঘাতে।
স্কুল মাস্টারের সেই ভালোবাসায়।
বাড়ির কামলামুনিদের কোলের স্পর্শে।

বর্তমান তোমাকে দাসে পরিণত করবে। তোমাকে হিপোক্রিটে পরিণত করবে যদি তুমি তোমার শেকড়কে ভুলে যাও।

তাই প্রেরণার কেন্দ্রবিন্দু থেকেই প্রেরণা নিও।
তোমাকেই এদেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
তুমি যদি হেরে যাও, তাহলে পরের প্রজন্ম “ভালো মানুষ হও”, নৈতিক হও”, “দেশকে ভালোবাসো”, “কারো উপর জুলুম করোনা”- এসব শিক্ষাকে গালি মনে করবে। তাই আমরা দায়িত্ব না নিলে, আমাদের সম্মুক্ষে আরো বেশি হতাশা অপেক্ষা করছে ধরে নিতে হবে।

ভুল জায়গায় প্রেম খুঁজোনা।
ফিরে যাও তোমার মূলে।
তোমার মূলেই তোমার কূল।

নজরুলের ভাষায় আবারো গেয়ে উঠো,

“ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ?
কে আছ জোয়ান, হও আগুয়ান, হাঁকিছে ভবিষ্যত।
এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার!!

ফাঁসির মে যারা গেয়ে গেল জীবনের জয়গান,
আসিথ অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন বলিদান?
আজি পরীক্ষা জাতির অথবা জাতের করিবে ত্রান?
দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, কান্ডারী হুঁশিয়ার!”

লেখক ও শিক্ষক,
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি ।

রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিয়ে গবেষণা করবেন খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, এ হলো এমন এক প্রতিষ্ঠান- যেখানে বিদ্যা উৎপন্ন হয়। অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে মূলত গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন জ্ঞান সৃজন হবে। পথচলা শুরু হয়েছে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের। গবেষণায় মন দিয়েছেন খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুকৃবি) শিক্ষার্থীরা।

দক্ষিণাঞ্চলের চিংড়ি মাছ, কাঁকড়া, পাট, সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য, রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ অনেক কিছু নিয়ে গবেষণার সুযোগ পাচ্ছেন এখানকার শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গবেষণা কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের জাতীয় প্রাণি রয়েল বেঙ্গল টাইগার দিয়েই গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেছে । যা শিক্ষা ও গবেষণায় নতুন নতুন ইতিহাসের স্বাক্ষী হবে বলে মনে সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার জন্য খুলনার জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট ১৪-১৫ বছর বয়সী একটি মৃত রয়েল বেঙ্গল টাইগার দিয়েছে। গত ২০ জানুয়ারি খুলনার জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্টস্থ বনবিলাস চিড়িয়াখানায় বার্ধক্য জনিত কারণে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার মারা যায়। খুলনা প্রাণিসম্পদ অফিস এ তথ্য জানিয়েছে। খবরটি খুলনা প্রাণিসম্পদ অফিসের মাধ্যমে জানতে পারে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিষয়টি জেনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো: শহীদুর রহমান খানকে জানানো হয় ।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি, অ্যানিম্যাল অ্যান্ড বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি মেডিকেল টিম চিড়িয়াখানায় মৃত বাঘটিকে বুধবার দুপুরে পরিদর্শন করে। উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিম্যাল নিউট্রিশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. তসলিম হোসেন, ফিজিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এমএ হান্নান, ডা. পাপিয়া খাতুন, ডা. জান্নাত হোসেন, ডা. স্বরূপ কুমার কুণ্ডু, ডা. শাহাবুদ্দীন আহমেদ, ডা. শহীদুল্লাহ, ডা. শারমিন জামান, নাজমুল হক অপুসহ শিক্ষার্থীরা।

পরিদর্শন শেষে জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে বাঘটিকেখুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি, এনিম্যাল অ্যান্ড বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস অনুষদের নিকট হস্তান্তর করা হয় । পরবর্তীতে বাঘটি দৌলতপুরে অবস্থিত খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে আনা হয় এবং বাঘটির চামড়া, কংকাল, ও অভ্যন্তরীন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ সমূহকে সংরক্ষণ করা হয়। যা ভবিষ্যতে ভেটেরিনারি, এনিম্যাল অ্যান্ড বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের ব্যবহারিক পাঠদানে ও গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হবে।

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি, এনিম্যাল অ্যান্ড বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস অনুষদের শিক্ষার্থী মাহিরুল হল শিলং ও পিয়াল রায় বলেন, দেশের নবীনতম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়ে ব্যবহারিক শিক্ষা ও গবেষণার কাজে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া সত্যিই আনন্দদায়ক ও গর্বের। এই ধরণের অবিস্মরণীয় ও ঐতিহাসিক কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুর রহমান খানকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এম এ হান্নান বলেন, ভেটেরিনারি শিক্ষা ও গবেষণায় নতুন একটি দ্বার উন্মোচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো: শহীদুর রহমান খান স্যার এর প্রতি শিক্ষকরা চিরকৃতজ্ঞ। এই ধরনের বিভিন্ন শিক্ষামূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে খুকৃবি উচ্চতর কৃষি শিক্ষার সকল স্তরে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে শিক্ষা ও গবেষণায় এই ধরনের নতুন নতুন ইতিহাসের স্বাক্ষী হবে বলেও বিশ্বাস করেন তিনি।

এছাড়া খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি ও হিস্টোলজি বিভাগের প্রস্তাবিত “এনাটমি মিউজিয়াম” বাস্তবায়িত হলে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের পুরো দেহের কঙ্কালটিকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মোচন করা হবে। অধিকন্তু, মৃত বাঘটি হস্তান্তরের জন্য বন বিলাস চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: শহীদুর রহমান খান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ি দক্ষিণাঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দিন দিন শিক্ষা ও গবেষণায় নতুন নতুন ইতিহাসের স্বাক্ষী হবে। মৃত বাঘটির কংকাল ও অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রতঙ্গ বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হবে। খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে কৃষি শিক্ষায় দক্ষিণ এশিয়ার একটি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

করোনায় শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ইবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ বর্তমান বিশ্বের মানুষের জীবনের গতিধারা পাল্টে দিয়েছে। সবকিছুর সাথে আমূল পরিবর্তন এসেছে শিক্ষাদান ব্যবস্থায়ও। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সরাসরি পাঠদান বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন।

প্রথম পর্যায়ে সরকার ১৮ মার্চ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর আর চালু হয়নি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সর্বশেষ সংযোজন হিসেবে ২০২১ সালের ৩১ ই জানুয়ারি পর্যন্ত এ বন্ধের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ক্লাস কার্যক্রম বা পরীক্ষা সবকিছুই হচ্ছে এখন অনলাইনে। ডেস্কটপ, ল্যাপটপ আর স্মার্টফোনের পর্দাতেই চলছে শিক্ষার কার্যক্রম।

এ অনলাইন পদ্ধতি সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এর সাথে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠ দান চালু থাকলেও পরীক্ষা বন্ধ থাকায় সেশনজট নামক অভিশাপ নিয়ে গভীর উদ্বিগ্নে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। করোনা মহামারীর এ অবস্থায় দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে মতামত জানিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাবনা জানাচ্ছেন মোঃ সোহানুর রহমান।

“শিক্ষা ব্যবস্থায় সুস্পষ্ট সরকারি নির্দেশনা প্রয়োজন”
মোঃ রবিউস সোহাগ, ফার্মেসী বিভাগ।

যদিও ২০২০ সালটি আমাদের জন্য বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য খুব একটা ভালো ছিল না, এই মহামারী তে তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা প্রথম থেকে সচেতন থাকলেও নিরাপত্তার চিন্তা মাথায় রেখে খুব বেশি কিছু করাও যাচ্ছিলো না। অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম এর মাধ্যমে যতটুকু সম্ভব এই ক্ষতিটুকু পূরণের চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু যে ক্ষতিটা ইতিমধ্যে হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো অনার্স ফাইনাল এবং মাস্টার্স এর শিক্ষার্থীদের যারা তাদের ক্যারিয়ারেও একটা বছর পিছিয়ে গেল।

চাকরির পরীক্ষাগুলোতে আবেদন করা যাচ্ছে না কারণ পরীক্ষা আটকে আছে, সার্বিকভাবে চিন্তা করলে আসলে কোনো শিক্ষার্থীই এই ক্ষতির বাইরে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেমন ক্যারিয়ার এ একটুখানি পিছিয়ে গেল, তেমনি দীর্ঘদিন স্কুল কলেজ বন্ধ থাকার জন্য এ প্রভাব পড়েছে শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবেও, উইকিপিডিয়ার তথ্যানুসারে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত, মহামারীর প্রতিক্রিয়ায় স্কুল বন্ধ হওয়ার কারণে বর্তমানে প্রায় 1.077 বিলিয়ন শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাছাড়াও অনলাইনে ক্লাসে উপস্থিতি ছিল তুলনামূলকভাবে কম, অনেকের দ্রুতগতির ইন্টারনেট এবং ডিভাইস না থাকায় ক্লাসে উপস্থিতি কম ছিল। পরিশেষে, মহামারী দ্বারা সৃষ্ট পরিস্থিতি এড়াতে সরকার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুস্পষ্ট নির্দেশাবলীর সাথে শিক্ষার বিষয়ে ভাল সিদ্ধান্ত নিবে সেই আশাই করছি।

“শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দিতে হবে”
আরোশি আঁখি, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট।

করোনা মহামারীতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাত আমার মনে হয় শিক্ষা খাত। করোনার কবলে থমকে গেছে শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীরা পার করছে সর্বোচ্চতম উদ্বেগ এর সময়। তবে এক্ষেত্রে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমান ভাবে শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং করতে সক্ষম হয়নি। শহরের নাম করা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত চলছে অনলাইন ক্লাস। এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মফস্বলের ছেলেমেয়েরা। এ সময়ে শিক্ষার্থীদের একটা অংশ ঝুঁকে যাচ্ছে বিভিন্ন ধরণের অনলাইন গেমের কবলে যা অনেকটা নেশার মত ঝাপটে ধরছে। আরেকটা অংশ গল্পের বই এবং মুভিতেই ব্যস্ত।

তবে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী মানসিক অবসাদে ভুগছে অনেকে সুইসাইড এর মতো ভয়াবহ পথ বেছে নিয়েছে। করোনার ফলে সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তায় ভুগছে শিক্ষার্থীরা। এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সবাইকে অত্যধিক মাত্রায় স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে। সকল প্রতিষ্ঠান কে শিক্ষার্থীদের দিক বিবেচনা করে অনলাইন ক্লাস চালিয়ে যেতে হবে। সরকারিভাবে ডিভাইস ক্রয়ের সফট লোন দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। যথাক্রমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের আগের অবস্থান ফিরিয়ে দিয়ে শিক্ষাব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।

“যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা দরকার”
মোঃ সনেট শেখ, ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট

কোভিড-১৯ এর কারণে দেশে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রায় শতভাগ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে আর সেই জায়গায় স্থান করে নিয়েছে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা। কিন্তু এখানে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল এই ব্যবস্থা কি আদতেও আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কে পুনরুজ্জীবিত রাখতে পারবে ? কারণ বিভিন্ন দেশে জরুরি অবস্থার অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় , শিশুরা যত বেশি স্কুল থেকে দূরে থাকে ,তাদের স্কুলে ফেরার সম্ভাবনা তত কমে যায়। আবার নেটওয়ার্কিং সহ অর্থনৈতিক নানাবিধ সমস্যার কারণে দেশের সকল শিক্ষার্থীকে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আসা সম্ভব নয়।

একই সাথে শিক্ষকদের প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতির বাহিরে এসব অনলাইন প্লাটফর্মে শিক্ষা দিতে তারা খুব একটা অভ্যস্ত নন, যে কারণে শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের একটি কমিউনিকেশন গ্যাপ তৈরি হচ্ছে । অন্যদিকে এই মহামারী দুর্যোগ আর শিক্ষাখাতের অচল অবস্থার যদি স্থায়ী হয় তবে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে শিক্ষার্থীদের চাকরি বা পরবর্তী ভবিষ্যৎ জীবনের ওপর। তাই ভবিষ্যতে এমন দুর্যোগে শিক্ষাব্যবস্থাকে বাঁচাতে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের শিক্ষক সমাজকে এগিয়ে নিতে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই । আর বর্তমান সরকার এ বিষয়ে যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় আমাদের জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে আমার বিশ্বাস।

“ডিভাইসের অপ্রতুলতা, ইন্টারনেটের উচ্চমূল্য, দুর্বল নেটওয়ার্ক প্রধান সমস্যা”
মোঃ আসরাফুল ইসলাম, ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ।

করোনা মহামারী আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। উন্নত দেশ গুলো এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে অনেকাংশ সফল হলেও পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশ গুলো। আমাদের দেশেও অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকলেও সবাই অংশগ্রহণ করতে পারছে না। এর প্রধান কারন হচ্ছে অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা, ইন্টারনেট সংযোগ না থাকা, ইন্টারনেট প্যাক বা ডাটার অত্যাধিক দাম ও ডিভাইসের অপ্রতুলতা। শিক্ষাব্যবস্থা তরান্বিত করতে হলে ঘরে ঘরে ইন্টারনেট সংযোগ ও উচ্চ গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও অনলাইন ক্লাসের রেকর্ড থাকে এমন মাধ্যমে ক্লাস নিতে হবে যাতে করে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীরা পরে ক্লাস টা করে নিতে পারে। এগুলো নিশ্চিত করতে পারলে শিক্ষাব্যবস্থায় যে ক্ষতি হয়েছে সেটা ধীরে ধীরে পুষিয়ে ওঠা সম্ভব বলে আমি মনে করি।

“সেশনজট মুক্ত শিক্ষা কার্যক্রম হুমকির মুখে”
হাসিব আক্তার , হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি।

বিশ্বজুড়ে চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীরা গভীর অনিশ্চয়তায় পড়েছে। দীর্ঘ নয় মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। কবে খুলবে, তার কোন নিশ্চয়তা নেই। শিক্ষাব্যবস্হা এর আগে কখনো এমন স্থবির পরিস্থিতিতে পড়েনি যা করোনাকালীন সময়ে সৃষ্টি হয়েছে। কবে এই স্থবিরতা কেটে যাবে তা পুরোই অনিশ্চিত। এর মাঝে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ক্লাসগুলোয় পরীক্ষা বিহীন পরের ক্লাসে উত্তীর্ণকরনের পথ বেছে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলো নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সেশনজট মুক্ত শিক্ষা কার্যক্রম হুমকির মুখে পরে গিয়েছে করোনাকালীন সময়ে। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়েছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বছর জুড়ে যা ছিলো আলোচনা-সমালোচনায়

মাসুম মাহমুদ, ববি প্রতিনিধিঃ বছরের শেষ সূর্যাস্ত মনে করিয়ে দেয় অনেক কিছু। হিসেবের খেরো খাতা ঘেঁটে যোগ বিয়োগের ফলাফল মেলাতে হয়। পাওয়া না পাওয়ার সমীকরণ তো আছেই।

নতুন বছরে নতুন করে হালখাতা খোলার সময় স্মৃতিপটে নাড়া দিয়ে ওঠে পুরনো ক্ষত। সেই সাথে ভুলগুলো মেরামত করে সামনের দিকে এগুনোর এক মসৃণ পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হয়।

পড়াশোনা, আন্দোলন-সংগ্রাম, সভা-সমাবেশ, আড্ডা, সংস্কৃতি, আলোচনা-সমালোচনা,গবেষণা, ইত্যাদি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। করোনা মহামারী পরিস্থিতিসহ কেমন কাটলো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০ সাল? কি কি ছিলো আলোচিত ঘটনা হিসেবে সমালোচনার বিষয়গুলোই কেমন ছিলো? নতুন স্বপ্ন নিয়ে বছরখানা শুরু করে কি পেল দক্ষিণের বাতিঘরের শিক্ষার্থীরা?

বছরের শুরু..

দীর্ঘ ছয় মাস ভিসি বিহীন থাকার পর নভেম্বরের শুরুতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড.সাদেকুল আরেফিন দায়িত্ব গ্রহণ করায় প্রাণ ফিরে পেয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয়টি। আটকে থাকা ভর্তি পরীক্ষা ও একাডেমিক সেমিষ্টার ফাইনালসহ বিভিন্ন কার্যক্রম তরান্বিত হতে লাগলো, সেশনজট নামক আর্তনাদী শব্দের বিতাড়নের এক নব আশ্বাসে একরাশ আশা নিয়ে কীর্তনখোলার পারে যেন খোলা নিঃশ্বাস নিতে চাচ্ছিল সবাই।

সমালোচনার মাস ফেব্রুয়ারী

বছরের শুরুর মাসটা মোটামুটি নির্ঝঞ্ঝাটে পার হলেও ফেব্রুয়ারী শুরু হতেই নানামুখী বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে পত্র-পত্রিকার শিরোনামে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। কখনো মাঠ পরিষ্কারের নামে শিক্ষার্থীদের লাগানো অর্ধশতাধিক গাছে আগুন দেওয়া, কখনো খেলার মাঠে জয়ের পর ধাক্কাধাক্কির ঘটনায় শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষ। কখনো কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলার আসামী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্যু ক্লার্ক এবং জেলা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক বনি আমিনকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করে উত্তাল ববিপারা।

লিপ-ইয়ারের এই মাস শেষ হওয়ার প্রাক্কালেই ঘটতে চলেছিল আবরার হত্যার পুনরাবৃত্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই বাংলা হলের ৪০১৬ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র মো. শাহজালালকে তার কক্ষ থেকে ডেকে ১০০১ নম্বর কক্ষে নেয়া হয়। সেখানে হাত-পা ও মুখ বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ ও তদন্ত শেষে দু’জনের বহিষ্কার, একই দিন শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দু’গ্রুপের সংঘর্ষে চারজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়। পৃথক ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাস চত্ত্বর।

এতশত সমালোচনার মধ্যেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় এসেছিল মজার একটি সংবাদ ‘ প্রেমের দায়ে বহিষ্কার হলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিঙ্গেল কমিটির সহ-সভাপতি ‘

মার্চ- আরেক সমালোচনাময় অধ্যায়

মার্চের শুরুতে করোনা নিয়ে অত বিস্তর আলাপ না হলেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সমালোচিত ঘটনা বন্ধ থাকে নি। শুরুতেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রজমোহন কলেজের(বিএম কলেজ) শিক্ষার্থীদের এক গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি প্রতিষ্ঠানেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজমান ছিলো, সমালোচনায় ছিলো ববি প্রশাসনের পদক্ষেপ নিয়েও। এর মধ্যেই গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাথে বায়োকেমিস্ট্রি এ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মারমুখী আচরণও ছিলো আলোচনায়। ববি শিক্ষার্থী উর্মি’র উপর ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলা , স্বয়ং শিক্ষক জড়িত থাকার অভিযোগ ও ছাত্রলীগের গুজব বলে ঘোষণা দেওয়া ইত্যাদি চলমান-চিত্রে পরিনত হয়েছিল।

বছরের শুরুটা অপয়া ভাবে হলেও নতুন ভিসির আগমনে হাজারো আলোচনা-সমালোচনার মাঝেও শিক্ষা কার্যক্রমে কিছুটা গতি সবে আসতে চলেছিল। ভাগ্যবিধাতার মনঃক্ষুণ্নতায় করোনা ভাইরাসের প্রকোপে হঠাৎ থমকে গেল সব।

মাহামারিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

এরপরের হিসেব টা একেবারেই ভিন্নতর, প্রথমত লকডাউনে বন্দি দশায় ঘরে বসে থাকা,শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ জায়গা থেকে ত্রান বিতরণ কর্মসূচি, দু-একটি বিভাগের উদ্যেগে নিজ শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা ইত্যাদি। শিক্ষা কার্যক্রম সহ সবকিছুই যখন ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে ঘরে বসেই চলতে শুরু হলো। তখন অনলাইন ক্লাস বিড়ম্বনা, মেসে ভাড়া কমানোর জন্য প্রশাসনের সাহায্যের দাবীতে অনলাইন প্রতিবাদ কর্মসূচি ইত্যাদি। এরইমধ্যে ‘মাথা ন্যাড়ার হিড়িকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা’ এমন রসালো ঘটনা দিয়েও সংবাদ শিরোনামে ছিলো ববিয়ানরা।

প্রেমবিয়োগে শিক্ষার্থী আত্মহত্যা, বঙ্গবন্ধু ও ধর্ম অবমাননা

পারিবারিক সমস্যার জেরে প্রেমিকের আত্মহত্যার দেড় মাসের মাথায় ববি ছাত্রীর আত্মহত্যা। গনিত বিভাগের এই মেধাবী শিক্ষার্থীর জীবন বিয়োগে শোকাহত ছিলো সম্পূর্ণ ববি পরিবার। দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে থাকা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে যে ক্ষত হয়েছে তার প্রকাশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফুটে ওঠে। এর-ই মধ্যে ইসলামি বিধি-বিধান নিয়ে কটুক্তি করায় সমালোচনার তিব্র স্রোত বয়ে চলে কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের এক শিক্ষার্থীর ওপর। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শোকজ করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সবশেষে বঙ্গবন্ধু পরিবার নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে সাময়িক বহিষ্কার করা হয় লোকপ্রশাসন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থীকে।

এছাড়াও বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত, প্রথমবারের মতো গ্রামীন ফোনের সাথে চুক্তি, বিনামূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা, এক অধ্যাপক নিয়েই দশ বছরে পদার্পন, প্রাতিষ্ঠানিক মেইল প্রদান, প্রথমবারের মতো ফিল্ম আর্কাইভে গবেষণা ফেলোতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। সবিশেষ, স্বাস্থ বিধি মেনে স্নাতক ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া ইত্যাদি।

এমন সব আলোচনা ও সমালোচনায় শেষ হলো দক্ষিণ বঙ্গের সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপিঠের মহামারীময় বৎসর৷ এখন ভুল গুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে এবং ভালো কাজ গুলো থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সামনে কতটুকু এগিয়ে যেতে পারবে তারা এটাই দেখার বিষয়। নতুন এক ভোরের প্রত্যাশায়।

কেমন ছিল গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০!

সুপর্না রহমান, গণ বিশ্ববিদ্যালয়: করোনাভাইরাসের প্রকোপে নয়টি মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও ২০২০ সালটি সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) জন্য ঘটনাবহুল ছিল। এ বছরের আলোচিত ঘটনা নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন করেছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মী সুপর্ণা রহমান টুছি।

গণস্বাস্থ্য মেডিকেলের ঢাবি অধিভুক্তি

এ বছর ১৩ জানুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয় গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ। প্রতি ব্যাচে ৫০ জন ভর্তির অনুমোদন দেয় ঢাবি ডিন’স কমিটি। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ পরিচালনায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আইন থাকলেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি গণস্বাস্থ্য মেডিকেল। এরপর ২০ জুলাই, ২০১৯ থেকে ক্লাস, পরীক্ষা বর্জন করতে থাকে সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। পরে যুক্ত হয় ইন্টার্ন চিকিৎসক ও জুনিয়র মেডিকেল অফিসারগণ। কর্তৃপক্ষের লিখিত আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করে ক্লাসে ফেরে শিক্ষার্থীরা।

নিজ প্রতিষ্ঠানে তালাবদ্ধ ডা. জাফরুল্লাহ

এ বছরের ১৪ জানুয়ারি নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ হন প্রতিষ্ঠানটির ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। প্রায় দেড় ঘন্টা তাকে এক কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের বাজেট ও মেয়াদ বৃদ্ধি সংক্রান্ত সাধারণ সভায় এসেছিলেন তিনি। আলোচনার এক পর্যায়ে ইউজিসি কর্তৃক বৈধ উপাচার্য নিয়োগ ও বিভিন্ন বিভাগের অনুমোদন প্রসঙ্গে কোনো প্রতিকার না পেয়ে তাঁকে ঘেরাও করেন ছাত্র প্রতিনিধিরা। পরে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আলোচনায় বসতে চাইলে শিক্ষার্থীরা তালা খুলে দেন।

ব্যায়ামাগারের উদ্বোধন

গবি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও পড়াশোনায় মনোযোগী করতে ২৫ জানুয়ারি ব্যায়ামাগার চালু করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ট্রান্সপোর্ট চত্বরের পাশের ভবনে এটি স্থাপন করা হয়। সকাল সাড়ে ৮টা হতে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত শরীরচর্চা করতে পারবেন এখানকার শিক্ষার্থী ও শিক্ষাদাতারা। দুইশত টাকায় ফর্ম নিয়ে সদস্য হতে হয় এই ব্যায়ামাগারের।

গ্রামীণ উৎসবের মন্ডা-মিঠাই

মুজিব শতবর্ষে তৃতীয়বারের মতো পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। ২ ফেব্রুয়ারি এই উৎসবের উদ্বোধন করেন ঢাকা-২০ আসনের এমপি ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমদ। ঐতিহ্যবাহী বাহারী পিঠা ও বাহারি সাজে সজ্জিত ছিল খেলার মাঠের ৩০টি স্টল। এ বিদ্যাপীঠের বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠনের শিক্ষার্থীরা পিঠা তৈরি করেন। দিনব্যাপী এই উৎসবটি গ্রাম বাংলার বিভিন্ন খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুখরিত ছিল। এবারের পিঠা উৎসবের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ।

গবিসাসের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান

ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের সংগঠন গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (গবিসাস) ২০১৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে এ বছর ৭ম বর্ষপূর্তি ও ৮ম বর্ষে পদার্পণ করেছে। ট্রান্সপোর্ট ইয়ার্ডে দিনব্যাপী জমজমাট অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে ফিচার প্রদর্শনী, কেক কাটা, বর্ষসেরা সাংবাদিক বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরষ্কার প্রদান, ফানুস উড়ানো ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। সভাপতি মোহাম্মদ রনি খার সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন ঢাকা-২০ আসনের সাংসদ ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজির আহমেদ, দৈনিক অধিকারের সম্পাদক তাজবীর হোসাইন সজিব, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীর মুর্ত্তজা আলী বাবু, গবিসাসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আসিফ আল আজাদ।

ফার্মেসী ক্লাব নাটক

ফার্মেসি বিভাগের উন্নতি ও কল্যাণার্থে ফার্মেসী ক্লাব গঠন করা হয়। সংগঠনটি ২৬ সদস্য নিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে। তবে গঠনতন্ত্র না মেনে কমিটি গঠন করার অভিযোগ তুলে দুই দিন পরে ১৮ জনই পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেজিস্ট্রার ক্লাবটি ভেঙ্গে দেয়া এবং নিয়ম মেনে ক্লাব পুনর্গঠনের মৌখিক নির্দেশ দেন। তবে পরবর্তীতে এ নিয়ে আর কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি।

হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি ও বিনামূল্যে বিতরণ

করোনাকালীন সময়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করেছেন এই বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা। ফার্মেসি বিভাগ নিজ অর্থায়নে স্যানিটাইজার প্রস্তুত করে জনসাধারণকে বিনামূল্যে বিতরণ করে। প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ রোটারি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশের অর্থায়নে এক’শ মিলির ৫ হাজার স্যানিটাইজার তৈরি করে এবং অসহায় মানুষের মাঝে তা বিতরণ করা হয়।

গবিসাস আলাপন

লকডাউনে শিক্ষার্থীদের অলস সময়কে প্রাণবন্ত করতে ১৫ মে শুরু হয় গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (গবিসাস) আয়োজিত অনলাইন অনুষ্ঠান—গবিসাস আলাপন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা জানা অজানা গল্প নিয়ে হাজির হতো। নবীনদের জানানো হতো বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা ঘটনা। ঘন্টাব্যাপী এই অনুষ্ঠান দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গবিসাসের দেখাদেখি ডজনখানেক ক্যাম্পাসে এ আয়োজন শুরু হয়।

ড. বিজনের জি র‍্যাপিড ডট ব্লট

চলতি বছরের মে মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিট উদ্ভাবন করেন। এর মাধ্যমে মাত্র ৫ মিনিটে জানা যাবে রোগী কোভিড-১৯ পজিটিভ কী না! সারাদেশে বেশ সাড়া ফেলে এই “জি র‍্যাপিড ডট ব্লট” কিট। যদিও নানা জটিলতার কারণে এই কিট সরকারের অনুমোদন পায়নি।

অনলাইনে ক্লাস ও সেমিস্টার ফাইনাল

করোনা সংক্রমণ মহামারি আকার ধারণ করায় ১৭ মার্চ বন্ধ হয় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেশনজট এড়াতে ও লেখাপড়ার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ৯ এপ্রিল অনলাইন ক্লাস চালুর বিজ্ঞপ্তি দেয় গণ বিশ্ববিদ্যালয়। সংকটময় পরিস্থিতিতে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান, নেটওয়ার্ক ধীরগতি, অত্যাধিক মোবাইল ডাটার অর্থ, প্রয়োজনীয় শিক্ষা সামগ্রীর অভাব কাটিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ায় শুরুর দিকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। অনলাইন ক্লাস পদ্ধতির পক্ষে-বিপক্ষে মতামত জরিপ করে তারা। ধাপে ধাপে ছুটি বর্ধিত হওয়ায় ১ জুলাই প্রথমবার অনলাইন সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার সম্মুখীন হয় শিক্ষার্থীরা। তবে সব বাধা কাটিয়ে শতভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিতিতে পরীক্ষা কার্যক্রম শেষ হয়।

ব্লাইন্ড স্টিক উদ্ভাবন

দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পথ দেখাতে আগস্টে মেডিক্যাল ফিজিক্স এন্ড বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তন্ময় রায়ের উদ্ভাবন করেন ব্লাইন্ড স্টিক। অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি ব্যবহার হয়েছে এই প্রজেক্টটিতে। তারবিহীন হেডফোনের মাধ্যমে সংকেত, জিপিএস মাধ্যমে অবস্থান নির্ণয় সহ মোট ৫টি ফিচার রয়েছে এতে।

রেজিস্ট্রারের অশ্লীল ফোনালাপ ফাঁস

সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ছাত্রীর সাথে রেজিস্ট্রার মো. দেলোয়ার হোসেনের ২৬ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের অশ্লীল একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। এই খবরে ক্যাম্পাস উত্তাল হয়ে ওঠে এবং বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখি হয়। তাকে বহিস্কারের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। পরে ট্রাস্টি বোর্ডের এক সভায় ১২ সেপ্টেম্বর তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

রোবট ‘অ্যাভওয়ার’

কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিজ্ঞান বিভাগের শেষ বর্ষের চার ছাত্রী বিভাগীয় প্রজেক্টের অংশ হিসেবে তৈরি করেন নার্স রোবট ‘অ্যাভওয়ার’। রোবটটি হাঁটা-চলা, কথা বলা ছাড়াও নার্সের পরিবর্তে কাজ করতে পারে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে এটি উদ্ভাবন করেন তারা।

ছাত্র সংসদের ঘর গোছানোর বছর

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। সংসদের ৩য় কমিটি হলেও শিক্ষার্থীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রথম সংসদ এটি। তবে নির্বাচনের ১৯ মাস পর হয় তাদের অভিষেক। ৫ ডিসেম্বর বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) মো: জুয়েল রানা পদত্যাগ করেন। এর কয়েকদিন পরই নানা নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভার সিদ্ধান্তে সংসদের ৩য় কার্যনির্বাহী পরিষদ ভেঙ্গে দেয়।

গবিসাস ছাড়া সব সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে সরকারী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত ৮ ডিসেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তবে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের সংগঠন গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (গবিসাস) এর কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গবিয়ানরা মানবপ্রেমী

করোনা মহামারীতে সব থমকে গেলেও গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানবতা অব্যাহত ছিল। অনেকেই নিজস্ব অর্থায়নে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কেউ রান্না করা খাবার, কেউবা গোটা মাসের খাদ্যসামগ্রী, কেউ বৈশাখী উপহার, অনেকে আবার সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে একান্তে। জরুরী মূহুর্তে রক্ত সরবরাহ করেছে শিক্ষার্থীরা। পাঁচ মাস রাস্তার পাশে পরে থাকা এক ভারসাম্যহীন মহিলার আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র। হাসপাতালে করোনার উৎসর্গে এক মৃত ব্যক্তিকে ফেলে যায় তার স্বজনেরা৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী তার দাফনের ব্যবস্থা করে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন।

HSC Result 2020 Publish Date All Education Board Bangladesh

THE CAMPUS TODAY DESK: The results of the HSC and equivalent exams for 2020 are being published by December 31. And there is work to be done to create policy and proposals for setting numbers. After finalizing this, the ministry will publish the results on the orders of the education boards of the country.

Results will be given by the end of December. We are working on that. We are trying to keep the time given by the Education Minister. The National Advisory Committee is working on that. The last day of December is still trying to publish the results.

Earlier, Education Minister Dr. Dipu Moni told reporters that the results of the HSC exam will be released in the last week of December. The results of the HSC exam will be prepared based on the results of the JSC-JDC and SSC exams.

The school was closed on March 17 due to the coronavirus. The bandh was extended to January 16. Two ministries canceled the primary education, the Abtedai Education Academy, the JSC and JDC exams, and the last HSC exam due to corona. It was then announced that the results of HSC students would be prepared based on the results of the two public tests in JSC and JDC and SSC. The number will be so that students are not harmed internationally.

According to the Ministry of Education, the HSC-equivalent test was canceled due to the current year’s coronavirus infection. The Ministry has formed a national advisory committee to recommend the creation of results for students. The subject-based number of students will be determined based on the recommendations of the committee.

 

১৯৭১- ২০২১: ৫০ বছরে এসে ক্যালেন্ডারে এক অদ্ভুত মিল!

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ ৫০ বছরে এসে ইংরেজি ক্যালেন্ডারে এক অদ্ভুত মিল!যেন ঠিক ভবিষ্যতের কোন কিছু একই রুপে বর্তমানে ফিরে আসা। প্রায় সময় আমাদের আশে পাশে ঘটে থাকে বিচিত্র কিছু ঘটনা। এক ঘটনার সাথে আরেক নতুন ঘটনা কাকতালীয় ভাবেই মিলে যায়।

ইংরেজি বর্ষপঞ্জি ১৯৭১ সালের সাথে ২০২১ সালের বর্ষপঞ্জিতে তারিখ গুলো যেন অদ্ভুত ভাবে মিলে গেছে। দুই- চারটি তারিখ নয় পুরো বছর জুড়েই রয়েছে দিন মাস ও সপ্তাহের মিল।

১৯৭১ সাল ঠিক যে দিনটিতে শুরু ও শেষ হয়েছিল ২০২১ সালও ঠিক সে দিনটিতেই শুরু ও শেষ হচ্ছে। ২০২১ সালের বর্ষপঞ্জি ১৯৭১ সালের সাথে শুধু শুরু ও শেষের দিনটিই নয় বছরের সব কটি দিনই ১৯৭১ সালের সাথে মিল রয়েছে।

বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছরের দ্বারপ্রান্তে এসে পুরো আমাদের (বাঙালি জাতির) জন্য বছরটি আনন্দের ও মহত্ত্বের। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাঙ্গলাদেশ ফিরে গেল তার জন্মবর্ষে।