দিন মজুর বাবার ক্যান্সারে মৃত্যু, লাইট পোস্টের আলোয় লেখাপড়া করে ঢাবিতে চান্স

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ ক্যান্সারে বাবার মৃত্যু হলো। দিন মজুর বাবার স্বপ্ন ছিল একমাত্র মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হলো কিন্তু বাবা দেখে যেতে পারলেন না।

মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালায়। তবুও থেমে থাকেনি তানিয়ার স্বপ্নজয়ের যুদ্ধ। দরিদ্রতা তাকে দমাতে পারিনি।

অন্যের জমিতে ছোট্ট একটি কুঁড়েঘর। বাড়িতে আলোর কোন ব্যবস্থা নেই! বিদ্যুৎ নেই। বাড়ির পাশের লাইট পোস্ট। রাত হলেই সেখানে বই খাতা নিয়ে বসে পড়তো অদম্য মেধাবী তানিয়া।

জেলা শহরের ’কাঞ্চন নগর মডেল স্কুল এন্ড কলেজ’ থেকে পরীক্ষা দিয়ে এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে মেধা তালিতায় ভর্তির সুযোগ হল।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার টাকা নেই। এই বুঝি বাবার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলো! এরই মধ্যে ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র পাশে দাঁড়ালেন। অবশেষে বাবার স্বপ্ন সত্যি হচ্ছে।

গল্পটা ঝিনাইদহ জেলা শহরের কাঞ্চননগর গ্রামের তানিয়া সুলতানার। তার বাবা কামাল হোসেন ভ্যানচালক ছিলেন। ৩ বছর আগে তার বাবা ক্যান্সার রোগে মারা গেছেন । মা আছিয়া বেগম। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন।

তানিয়ার মা আছিয়া বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার মেয়ে এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। উচ্চ শিক্ষা নিয়ে হতাশ ছিলাম। মেয়র দায়িত্ব নেয়ার কারণে খানিকটা স্বস্তি মিলেছে।”

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু জানান, “তানিয়ার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর পাশে থাকতে পেরে খুশি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করার সব ব্যয়ভার বহন করবে।”

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

‘চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি’র নেতৃত্বে আবারও মিশা সওদাগর

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটলো। ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০১৯-২১’ মেয়াদে আবারও সভাপতি পদে বিজয়ী হয়েছেন মিশা সওদাগর। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন জায়েদ খান।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দিনভর নির্বাচনের পর শুক্রবার রাত ২টার দিকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচনের ফল প্রকাশ হয়।

নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটে স্বতন্ত্র প্রার্থী মৌসুমীকে পরাজিত করে আবারও সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন মিশা সওদাগর এবং ইলিয়াস কোবরাকে পরাজিত করে সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন জায়েদ খান।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি জানান, “নির্বাচিত এই কমিটি আগামী দুই বছর দায়িত্ব পালন করবে।”

শিল্পী সমিতি নির্বাচনে এবার ২১টি পদের বিপরীতে ২৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। মোট ভোটার ৪৪৯ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৩৮৬ জন। শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৫ টায় শেষ হয়।

শিল্পী সমিতি নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন তিন তিন প্রার্থী। তারা হলেন সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সুব্রত, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক পদে জ্যাকি আলমগীর ও কোষাধ্যক্ষ পদে ফরহাদ।

 

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

‘এরা শুধু শিক্ষক সমাজকে নয়, সমস্ত জাতিকে কলঙ্কিত করেছে’: হুমায়ুন কবির

বশেমুরবিপ্রবি টুডেঃ অফিস আদেশ উপেক্ষা করে ভ্রমণে ব্যস্ত থাকাসহ বিভাগের শিক্ষার্থীদের নম্বরপত্র হারিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠা বাংলা বিভাগের প্রভাষক জয়নাব বিনতে হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয় কলঙ্কমুক্ত করার আহবান করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সহকারী প্রক্টর ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. হুমায়ুন কবির।

তিনি আরও বলেন, “এরা শুধু শিক্ষক সমাজকে নয়, সমস্ত জাতিকে কলঙ্কিত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্যে পরিণত করেছে।”

বুধবার সমকাল পত্রিকার অনলাইনে ‘শিক্ষার্থীদের নাম্বারপত্র হারিয়ে ফেলেছেন শিক্ষক!’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে হুমায়ুন কবির একটি ফেসবুক গ্রুপে তার মন্তব্যসহ সংবাদের লিংকটি শেয়ার করেন।

প্রকাশিত সংবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, “শিক্ষক জয়নাব বিনতে হোসেন চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার বিষয়ে ছুটি নিয়েছিলেন। অফিস আদেশে বলা হয়েছিলো চিকিৎসা শেষে পুনরায় কর্মস্থলে যোগদানের কথা। কিন্তু নিধার্রিত ছুটি শেষ হলেও তিনি কর্মস্থলে যোগদান না করায় সাবেক ভিসির পরামর্শক্রমে ওই শিক্ষককে অবৈতনিক ‘অসাধারণ ছুটি’ -তে পাঠানো হয়।”

এদিকে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ২য় বর্ষ ২য় সেমিস্টারের মৌখিক পরীক্ষার নম্বরপত্র হারিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

বাংলা বিভাগের ওই বর্ষের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা পরীক্ষা যথাযথ সময়ে দিয়েছি। এতদিন পরে এসে জানতে পারলাম শিক্ষক জয়নাব বিনতে আমাদের নম্বরপত্র হারিয়ে ফেলেছেন। এখন আমরা ফলাফল নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগটির একাধিক শিক্ষার্থী জানান, জয়নাব বিনতে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার বিষয়ে ছুটি নিয়ে পাহাড়-পর্বতে আরোহণসহ বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণে ব্যস্ত রয়েছেন। এছাড়া তিনি বিভাগে থাকাকালীন সময়ে ক্লাস-পরীক্ষার বিষয়ে উদাসীন ছিলেন। ক্লাস না নিয়েই তিনি দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াতেই পছন্দ করেন। পরীক্ষার নম্বরপত্র হারিয়ে ফেলা তার পক্ষে অসম্ভব কিছু না।

নম্বরপত্র হারিয়ে ফেলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম গোলাম হায়দার বলেন, “বিষয়টি একজন শিক্ষকের কাছ থেকে মোটেও কাম্য নয়। আমরা বিষয়টি নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিবো।”

এদিকে চিকিৎসার কথা বলে ভ্রমণের বিষয়টি অস্বীকার করে শিক্ষক জয়নাব বিনতে হোসেন বলেন, “আমি পাহাড়-পর্বতসহ বিভিন্ন স্থানে অবৈতনিক ছুটি নিয়ে ঘুরেছি। এছাড়া গবেষণার জন্য আমাকে শিক্ষা ছুটি না দেয়ায় বাধ্য হয়ে অবৈতনিক ছুটি নিয়েছি। তবে গবেষণার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। অপরদিকে নম্বরপত্র হারিয়ে ফেলার বিষয়ে তিনি বলেন, “বিভাগের সাবেক সভাপতি সবকিছুর দায়িত্বে ছিলেন। তিনিই এই বিষয়ে জানেন। আমি কিছু বলতে পারব না।”

এ দিকে বিভাগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, “আমি ব্যস্ত থাকায় শিক্ষক জয়নাব বিনতে হোসেনকে মৌখিক পরীক্ষার দায়িত্ব দিয়েছিলাম কিন্তু তিনি পরীক্ষা শেষে আমার কাছে বা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে নম্বরপত্র প্রদান করেননি। পরবর্তীতে তিনি মৌখিকভাবে জানান নম্বরপত্র হারিয়ে গিয়েছে।”

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

অবিভাবকহীন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত

ববি টুডেঃ অবিভাবকহীন অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এএম ইমামুল হকের মেয়াদ শেষ হয় গত ২৭ মে। এরপর কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। প্রায় পাঁচ মাস ধরে উপাচার্য ছাড়া চলছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।

এদিকে কোষাধ্যক্ষের মেয়াদও শেষ। কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. একেএম মাহাবুব হাসান এর মেয়াদ শেষ হয়েছে ৭ অক্টোবর। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দুই পদ শূন্য থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে প্রশাসনিক ব্যবস্থা। এরই মধ্যে সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে এবারের অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ দুই পদ শূন্য থাকায় মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে প্রশাসনিক কার্যক্রম। বন্ধ রয়েছে সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল ও ফিন্যান্স কমি’টির কার্যক্রম। কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া।

এ অবস্থায় দ্রুত উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। ইতোমধ্যে সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা।

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

ফরিদপুরের লোকাল বাস গুলোতে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া!

বিশেষ প্রতিবেদনঃ মা বাবার পরিশ্রম আর কষ্টের টাকায় আমাদের পড়ালেখা করান ,অনেক পরিবারে দুই তিন জন সন্তান আছে যারা লেখা পড়া করছেন ।সেই পরিবারের প্রধান আয়ের উৎস হয় তো বাবা না হয় মা যারা কৃষক না হয় শ্রমিক ।

তাদের দুই বেলা ভালো ভাবে খেতে কষ্ট হয় ,কিন্তু তাদের সন্তান কে তারা ভালো একটি স্কুল বা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে চান । তাই অনেক দরিদ্র ঘরের শিক্ষার্থীরা গ্রাম থেকে শহরের একটি ভালো স্কুল কলেজে ভর্তি হয় ।সবার পক্ষেই এই ফরিদপুর শহরে থেকে পড়ার মতো অর্থিক ক্ষমতা নেই।

কেউ বা পড়া লেখার পাশাপাশি ফরিদপুর থেকে সকালে কলেজ শেষ করে দুপুরে বাবার সাথে গ্রামের ক্ষেতে কাজ করে ।ফরিদপুর শহরের সবচেয়ে বড় কলেজ হচ্ছে সরকারী রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ।এই বিশ্ববিদ্যালয় অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা গ্রাম থেকে আসে প্রতিদিন আবার ক্লাস শেষ করে গ্রামে চলে যায় ।

এই যাও আসার মাধ্যম হচ্ছে গণ পরিবহন ।কিন্তু একজন কৃষক বা শ্রমিকেরা যখন তাদের সন্তানের এই পরিবহণের ভাড়া মিটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে তখন তাদের পাশে কেউ নেই দাঁড়ানোর ।বছর কয়েক আগেও ফরিদপুর জেলার গণপরিবহন গুলোতে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া চালু ছিল।এখন আর তা নেই ।সেদিন কথা হলো এক শিক্ষার্থীর সাথে তিনি সরকারি রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স করছেন ।

তিনি ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর এসে প্রতিদিন ক্লাস কর্নে । তার প্রতিদিন যাওয়া আসার খরচ পড়ে ১০০ টাকা যা তার পরিবারের জন্য চাপের হয়ে যায় বলে তিনি জানান।তিনি আরো বলেন এই রাস্তা গণপরিবহণ গুলোর কনটেক্টারেরা শিক্ষার্থীদের সাথে খুব বাজে ব্যবহার করে ।

শিক্ষার্থীদের ২৫ টাকার হাফ ভাড়া অনুরোধ করে ৪৫ টাকা দেওয়া যায় , তবে তাদের শিক্ষার্থীদের সারা পথ দাঁড়িয়ে আসতে হয় । শিক্ষার্থীরা যখন হাফ ভাড়া দিতে চায় তখন তাদের উপর চরাও হোন হেল্পার কনটেক্টারেরা এবং তারা হাফ ভাড়া তো নেনই না বরং ন্যায ভাড়া পঞ্চাশ টাকা তার থেকে আরো অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করে।

এই হাফ ভাড়ার প্রচলন কিভাবে শুরু হয়েছিল তা জানান, অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের(এআরআই) সাবেক পরিচালক ও বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সামছুল হক । তিনি বলেন, সম্ভবত ১৯৬৪ সালে বিআরটিসি চারটি বাস দিয়ে সরকারিভাবে গণপরিবহন সেবা দেয়া শুরু করে। তখন থেকে সরকারের নির্দেশে নেয়া হতো। কিন্তু এটা ছিল সম্পূর্ণ সরকারি সেবা।

পরবর্তীতে যখন সরকারি বাসের সাথে সাথে বেসরকারি বাস গণপরিবহনের সেবা দেয়া শুরু করে। তখন সরকারি বাসের নিয়মে বেসরকারি বাসেও ছাত্রদের হাফ ভাড়া নেয়া হতো। কিন্তু এ বিষয়ে যেহেতু কোনও লিখিত নিয়ম নাই। এটা একটা প্রথা হয়ে দাঁড়ায়, যেটা পরবর্তীতে বেশ কিছুদিন চলে। কিন্তু সরকার যেহেতু বেসরকারি বাস কোম্পানির সাথে কোনও চুক্তি করে নাই সেহেতু এই হাফ ভাড়া নিতে তারা বাধ্য নয়।

তবে সাধারণ যাত্রীদের সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে বেসরকারি গণপরিবহন সঙ্গে সরকারের যদি চুক্তি থাকতো, বিআরটিএ’র নির্ধারিত ভাড়া ছাড়া অতিরিক্ত ভাড়া না নেয়াসহ ছাত্রদের হাফ ভাড়া বিষয়ে চুক্তি থাকত তাহলে ভালো হতো এবং এতো তর্কবিতর্ক হতো না। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই বেসরকারি গণপরিবহনের সাথে সরকার চুক্তি করে থাকে। সরকারের চুক্তি এবং লিখিত কোনও আইন না থাকার কারণে হাফ ভাড়ার এই প্রথাটা ধীরে ধীরে উঠে যেতে থাকে।

দ্য ক্যাম্পাস টুডের সাথে কথা হয় সরকারি রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরাব নাদিম ইতুর তিনি বলেন, এই জেলার সকল শিক্ষার্‌থীদের একটাই দাবি চালু হোক গণপরিবহন গুলোতে শিক্ষার্থীদেও জন্য হাফ ভাড়া । তিনি আরো দাবি করেন সরকারি রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন গুলো ফরিদপুরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় থেকে রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ক্যাম্পাস পর্যন্ত চালু করা হোক।



প্রতিবেদনটি লিখেছেন দ্য ক্যাম্পাস টুডে’র প্রতিনিধি শিতাংশু ভৌমিক অংকুর


 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ’গেস্টরুম’ কি চলে?

ঢাবি টুডেঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলে রয়েছে অতিথিদের জন্য ‘গেস্টরুম’। রাতে এসব ‘গেস্টরুমে’ হলের শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়। ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা বলছেন, প্রশাসনের নীরবতার কারণেই বছরের পর বছর ধরে এই অপকর্ম চলে আসছে। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, সেই দলের ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্বে চলে আসছে এই ‘গেস্টরুম কালচার’।

ভুক্তভোগী সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে যেতে বাধ্য করা হয় তাদের। না গেলে জবাবদিহির জন্য ডাকা হয় গেস্টরুমে। গভীর রাতে হল থেকে বের করে দেওয়াসহ মারধরও করা হয়। গেস্টরুমে যেতে কেউ অনিচ্ছা প্রকাশ করলে ‘শিবির অপবাদ’ দিয়ে হল ছাড়তেও বাধ্য করা হয়। কোনও শিক্ষার্থীর ফেসবুকে প্রকাশিত মতও যদি বিপক্ষে যায়, তাহলেও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এছাড়া জুনিয়রদের প্রতি বিভিন্ন অসদাচরণ ও অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহারও করা হয় গেস্টরুমে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। সব সময় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিকভাবে হলের আসন বণ্টন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আর এর বিনিময়ে হলের শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যেতে হয়। তবে হল প্রশাসনের দাবি, হলের সবকিছুই তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ঢাবির শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রেজাউল আলম বলেন, “প্রথম বর্ষে থাকতে সপ্তাহে তিন-চার দিন রাতে গেস্টরুমে যেতে হতো। হলের বড় ভাইয়েরা বাধ্য করতেন। না গেলে অন্যদের দিয়ে ধরে নিয়ে যেতেন।’ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ না দেওয়ায় তার কয়েকজন বন্ধুকে মারধর করে হল থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।”


কী হয় ‘গেস্টরুমে’?


শিক্ষার্থীরা জানান, প্রথম বর্ষ থেকে শুরু করে মাস্টার্স পর্যন্ত সবাই এই গেস্টরুমে আসা-যাওয়া করেন। তবে সবাইকে ‘চেইন অব কমান্ড’ মেনে চলতে হয়। এখানে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রনেতাদের কথাই চূড়ান্ত।

কয়েকটি হলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গেস্টরুম দিনের বেলা অতিথিদের জন্য ব্যবহৃত হলেও রাতে ব্যবহৃত হয় ‘রাজনৈতিক শিষ্টাচার’ শেখানোর কাজে। হলে ওঠা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ‘রাজনৈতিক আচরণ’ শেখানোর হাতেখড়ি হয় এখানে। কীভাবে হলের বড় ভাইদের সঙ্গে কথা বলতে হবে, সালাম দিতে হবে, তাদের কথায় সায় দিতে হবে ইত্যাদি।

প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের গেস্টরুমে ডাকেন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। তাদের (দ্বিতীয় বর্ষের) গেস্টরুমে ডাকেন তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এভাবেই চলে গেস্টরুমের কার্যক্রম। এভাবে পর্যায়ক্রমে চলতে থাকে এই ‘গেস্টরুম কালচার’। এখান থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হয় হল রাজনীতিও।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গেস্টরুম দুইভাগে বিভক্ত—বড় গেস্টরুম এবং মিনি গেস্টরুম। বড় গেস্টরুমে সব বর্ষের শিক্ষার্থীরা যান। এটি সপ্তাহে এক বা দুইবার হয়। আর মিনি গেস্টরুম সপ্তাহে তিন বা চারদিন হয়। সাধারণত রাত ১০টা-সাড়ে ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সচল থাকে গেস্টরুম।


‘গণরুম’ থেকে ‘গেস্টরুম’ নির্যাতন


বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যেদিন কেউ হলে ওঠেন, সেদিনই তিনি ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের ‘কর্মী’ হয়ে যান। তাদের মধ্যেই পরে কেউ কেউ নেতা হয়ে ওঠেন। অনেকে মনে করেন, এই সংস্কৃতিই ছাত্র রাজনীতিতে অনুপ্রবেশকারীদের সুযোগ করে দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে বৈধভাবে থাকার জায়গা না পেয়ে রাজনৈতিকভাবে যারা হলে ওঠেন, তাদের রাখা হয় ‘গণরুম’-এ। সেখানে গাদাগাদি করে থাকেন ৩০-৪০ জন শিক্ষার্থী। তাদেরই মূলত গেস্টরুমে ডাকা হয়। এর বাইরেও অনেক শিক্ষার্থী ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে ঝামেলা এড়িয়ে নিরাপদে হলে থাকার জন্যও গেস্টরুমে যেতে বাধ্য হন।


ছাত্রনেতাদের বক্তব্য


ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোকে অলিখিতভাবে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের হাতে তুলে দেয় প্রশাসন। এর মধ্যে দিয়ে ছাত্র সংগঠনকে অপকর্ম করার সুযোগ দেওয়া হয়। সব জেনেও প্রশাসন নীরব থাকে।

রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণ করলে হলে থাকতে দেয়, অন্যথায় শিবির ব্লেম দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে হলগুলোতে ক্ষমতাসীনদের নির্যাতনের বিভিন্ন ঘটনা আমরা দেখেছি। বুয়েটের আবরারের মতো ২০১০ সালে ঢাবিতে প্রাণ হারিয়েছেন আবু বকর।”

ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, “গেস্টরুম ভালো সংস্কৃতি। এখানে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অনেক নিয়মকানুন শেখানো হয়। ছাত্রলীগ এটাকে পজিটিভ হিসেবেই দেখছে। গেস্টরুমে নেগেটিভ কিছু অত্যন্ত কম হয়। গেস্টরুমে নির্যাতনের যে অভিযোগগুলো রয়েছে তা বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, “গেস্টরুম অবশ্যই থাকবে। এটি রাজনৈতিক শিষ্টাচারের অংশ। গেস্টরুমে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে যাবে। আমরা কাউকে জোর করবো না। তবে যারা অতি উৎসাহী, তারা গেস্টরুমকে ভিন্নখাতে নিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটায়। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের হুঁশিয়ারি রয়েছে।”

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, “গেস্টরুমে ম্যানার শেখানোর নামে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন সবসময় শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি হয়, তাদের আচরণ শেখানোর প্রয়োজন আছে কিনা তা আমাদের বোধগম্য নয়। নেতাদের কথা না শুনলে শিক্ষার্থীদের শিবির অপবাদ দিয়ে হলছাড়া করা হয়।”


ঢাবি হল প্রশাসনের বক্তব্য


সেই সময় ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান তিন শিক্ষার্থীকে বের করে দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “এই ঘটনার পর আমি তাৎক্ষণিকভাবে আবাসিক শিক্ষকদের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। তারা তখন ওই ছাত্রদের আবার হলে তুলেছেন বলে আমি জানি।”

এদিকে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ‘গেস্টরুম কালচার’র অভিযোগ সম্পর্কে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “হলে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের কোনও খবর আমার কাছে আসেনি।হলের আসন বণ্টন থেকে শুরু করে সবকিছু প্রশাসনই দেখভাল করে।”


ঢাবি উপাচার্যের বক্তব্য


উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “আমাদের হলগুলোতে ‘গেস্টরুম’ রয়েছে। হলে যে অতিথিরা আসেন, তাদের বিশ্রামের জন্য তা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে নির্যাতন হয় কি না তা আমার জানা নেই। তবে কেউ যদি কোনও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায়, তাহলে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান খুবই কঠিন “

যাদের সঙ্গে ‘আল্লাহ’ থাকেন, তাঁরা কখনও ‘হতাশ’ হন না

ধর্ম ও জীবন টুডেঃ পাওয়া-না পাওয়া, সাফলতা-ব্যর্থতা এবং জয়-পরাজয় মানুষের জীবনে আসবে বা আসতেই পারে। এ জন্যই কি হতাশ হয়ে আত্মহত্যা করতে হবে! আত্মহত্যা কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না। তাছাড়া আত্মহত্যাকে কোনো ধর্মই সমর্থন করে না।


প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরে কিছু দোয়া আছে, যে ব্যক্তি ওইগুলো পড়ে আমল করবে, সে কখনও নিরাশ বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আমলগুলো তেত্রিশবার তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) পড়া, তেত্রিশবার তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ) পাঠ করা এবং চৌত্রিশবার তাকবির (আল্লাহু আকবার) পড়া। (সহিহ মুসলিম)।


ইসলামের নির্দেশনা হচ্ছে, স্বপ্নপূরণে ব্যর্থ হলে হতাশ হওয়া যাবে না। ব্যর্থতার পরই আসবে সফলতা। যেমনিভাবে রাত পোহালেই আসে দিন। আর ব্যর্থতায় মর্মাহত লোকদের সান্ত্বনা দিয়ে আল্লাহ বলেন, তোমরা হতাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মুমিন হও। (সূরা আলে ইমরান : ১৩৯)।


অনেকে হতাশ হয়ে হরেক রকম নেশায় জড়ায়। এতে সাময়িক স্বস্তি পাওয়া যায় কিন্তু হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। নেশা করা ইসলাম ধর্মে হারাম। তাই যারা পাওয়া, না-পাওয়া জীবনে হতাশ হয়ে পড়েছে তাদের উচিত নেশা না করে ধৈর্য ধারণ করা এবং নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা। কেননা ধৈর্যশীলদের সঙ্গে থাকেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।


এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আল্লাহ বলেন, হে ইমানদারগণ, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। (সূরা বাকারা : ১৫৩)। আর আল্লাহতায়ালা যাদের সঙ্গে আছেন, তাদের দুঃখ-কষ্ট ঘায়েল করতে পারে না। রাসূল (সা.) হতাশাগ্রস্ত মানুষকে মানসিক প্রশান্তি লাভের জন্য কয়েকটি আমলের নির্দেশ দিয়েছেন। যা তাদের মনকে সজীব ও সতেজ করবে।


হতাশ হতে বারণ করেছে ইসলাম। যারা জীবনের প্রথম পর্যায়ে খারাপ কাজ করেছে পরবর্তী সময়ে নিজের কৃতকর্মের কথা স্মরণ করে মর্মপীড়ায় ভুগছেন, তাদেরও আল্লাহতায়ালা নিরাশ করেননি। তিনি তাদের সুপথে ফিরে আসার জন্য ক্ষমার সুসংবাদ দিয়ে বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের সব গোনাহ মাফ করবেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা যুমার : আয়াত ৫৩)।

বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে দেশ মুক্তি পাক

আবরার ফাহাদ! বুয়েট ক্যাম্পাসের উজ্জ্বল নক্ষত্রগুলোর একজন ছিলো সে। কাল থেকে দেশের মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশিবার উচ্চারিত নাম। কিন্তু কেনো? কারন তার উপর করা বর্বরোচিত আঘাত এবং তারই ফলশ্রুতিতে এই সুন্দর পৃথিবী থেকে প্রস্থান ঘটেছে ছেলেটির।

কুষ্টিয়া জিলা স্কুল, নটরডেম থেকে বুয়েটের ইইই। দেশসেরা ছাত্রদের একজন। বুয়েটের মত প্রতিষ্ঠানে পড়ানোর জন্য তার নিজের, বাবা-মা’র, শিক্ষক সহ কতজনের কত শ্রম ছিলো, সবকিছু মাত্র ক’ঘন্টার ব্যবধানে পন্ড হয়ে যাবে কে ভেবেছিলো! কি দুর্ভাগা তার বাবা-মা!



বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে দেশ মুক্তি পাক


কত স্বপ্নের বীজ বপন করে রেখেছিল পরিবারটি। ভেবেছিলো এইতো কিছুদিন পর পরিবারের হাল ধরবে, সবার মুখে হাসি ফোটাবে। নরপিশাচরা একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে অতি জঘন্য ভাবে সব স্বপ্ন শেষ করে দিলো।

আবরারের বাবার স্টেটমেন্ট শুনলাম। যেখানে উনি বলছেন “আমাদের পরিবার আগাগোড়া নৌকায় ভোট দেই!”

মাত্রই মারা যাওয়া পুত্রশোকে কাতর বাবাকে পরিবারের রাজনৈতিক সমর্থনের পরিচয় দিয়ে বিচার চাইতে হয়! হায়! কোন দেশে আমরা আছি! কেনো শুধুমাত্র ভিন্নমত ধারণ করার কারনে কারোর জীবন চলে যাবে? কেনো এসব দিনেদিনে বাড়ছে? স্বাধীনতা অর্জনের অর্ধশতকের কাছাকাছি সময়ে এসে এমন পরিনতি কি আমাদের কাম্য ছিলো? সত্যিকার অর্থেই ভাষাহীন হয়ে গেছি!

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আমাদের দেশের ক্যাম্পাস গুলোতে অহরহ ঘটেছে। বিচারের জন্য অনেকেই হন্যে হয়ে ঘুরেও ন্যায়বিচার পায়নি।



ছেলেটি বুয়েটের না হয়ে গ্রামের কোনো এক কলেজের হলে কি এমন শোরগোল শোনা যেতো? এতো লিখালিখি বা নিউজ হতো? আমি নিশ্চিত হতো না।


কেনো ঘটছে এমন ঘটনা। সমাজে মানুষ বড় হয় মানবিকতা ও যুক্তিতর্কের মাঝে। আজকাল এই দুটি গুণ অনেকের মধ্যে দেখা যায় না। কণ্ঠরোধের সংস্কৃতি একটা দেশকে দিনকে দিন পিছিয়ে দিতে পারে কারন যেখানে তর্ক নেই সেখানে উন্নয়নের সুযোগ সীমিত। মানবিকতা গড়ে ওঠে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। অর্থ উপার্জন ও সামাজিক স্ট্যাটাস অর্জন মূখ্য উদ্দেশ্য হতে পারেনা। প্রতিষ্ঠান মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ। যার ফলশ্রুতিতে মানসিক বিকারগস্ত মানুষের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে। সাথেসাথে ক্ষমতার অতিরিক্ত ব্যবহার ও শো-অফ মানসিকতাও অনেকাংশে দায়ী।

শুনলাম অমিত সাহা নামের একজনের রুমে অবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সেই হত্যায় সবচাইতে নিষ্ঠুর ভূমিকা পালন করে বলে খবরে এসেছে। কিন্তু তার নাম এজাহার থেকে বাদ, গ্রেফতারও হয়নি, ছাত্রলীগ ১১ জনকে বহিষ্কার করেছে, সেখানেও তার নাম নেই। হয়তো আরেকটি বিচারহীনতা দেখতে যাচ্ছে দেশ। এমন তো হবার কথা নয়।

আজ ছেলেটি বুয়েটের না হয়ে গ্রামের কোনো এক কলেজের হলে কি এমন শোরগোল শোনা যেতো? এতো লিখালিখি বা নিউজ হতো? আমি নিশ্চিত হতো না। তার অর্থ একটা ঘটনা যতক্ষণ না দেশের সবার কাছে পৌঁছাতে পারছে ততক্ষণ সবাই নিরব থাকছি, ততক্ষণ বিচার ঠিকমত হবে কি না তা নিয়ে আশংকায় থাকছি।

কিন্তু আমরা আশাকরি বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে দেশ মুক্তি পাক। দেশের বিরাজমান বিচারব্যবস্থায় যে শাস্তির বিধান রয়েছে তার সবকিছুর প্রয়োগ হোক। আমরা চায়না এমনভাবে আর কোনো মা’য়ের কোল খালি হোক। ক্যম্পাসগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আসল চরিত্র ফিরে পাক। সুষ্ঠু লেখাপড়া ও গবেষণার পরিবেশ দ্রুতই নিশ্চিত হোক।

লেখকঃ নাসির উদ্দিন, প্রধান সম্পাদক, দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

‘শিক্ষকতা অর্থ উপার্জনের পেশা নয়’: ইউজিসি চেয়ারম্যান

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি)চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেছেন, “শিক্ষকতা দ্রুত অর্থোপার্জন ও ধনী হওয়ার পেশা নয়, এটি জাতি গঠনে একটি মহৎ পেশা।



“যারা শিক্ষকতা পেশায় আসবেন তাদেরকে নৈতিকতা, ত্যাগ এবং দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। এটি সহজাত হওয়া উচিত। অর্থোপার্জনের জন্য এ পেশায় না আসাই ভালো। মেধাবীদেরকে এ পেশায় নিয়োগ দেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।”


আজ রবিবার (০৬ অক্টোবর) ইউজিসিতে আয়োজিত কলেজ শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইডিপি) অগ্রগতি সম্পর্কিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

ইউজিসি চেয়ারম্যান কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যথাযথ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানান এবং বলেন অযোগ্য ও অদক্ষদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিলে জাতি কাঙ্ক্ষিত ফল ভোগ করতে পারবে না।

অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, “দেশের শিক্ষার মান নিয়ে ইউজিসি উদ্বিগ্ন। মানসম্মত শিক্ষা জাতি গঠনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যমান পরিস্থিতি উন্নতির জন্য ইউজিসি কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।”

ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, “দেশে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনেক শিক্ষার্থী থাকলেও যোগ্য শিক্ষকের কারণে তাদের জ্ঞান এবং দক্ষতার ঘাঠতি থাকছে এবং চাকরীতে এর প্রভাব পড়ছে। শিক্ষকদেরকে সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত করতে পারলে এ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে বলে তিনি মনে করেন।”

ইউজিসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, “বাংলাদেশে স্নাতকদের অর্জিত ফলাফল এবং প্রকৃত জ্ঞানে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছ। “আগে শিক্ষার্থীদের মেধাক্রম দেখে জ্ঞানের বিচার করা যেতো। সে মোতাবেক তাদেরকে নির্বাচন করা হতো। বর্তমানে অর্জিত গ্রেড পয়েন্টের সাথে প্রকৃত জ্ঞানের পার্থক্য রয়েছে। তাদের অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতা সন্তোষজনক নয়। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়া ছেলেমেয়েরা ব্যর্থ হচ্ছে। এতে সমাজে সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।”

উক্ত সভায় ইউজিসি’র পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক ড. ফেরদৌস জামান, সিইডিপির প্রকল্প পরিচালক ড. একেএম মুখলেছুর রহমান এবং বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র অপারেশন অফিসার ড. মোখলেসুর রহমানসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দ্য ক্যাম্পাস টুডে

ভ্রমণ কাহিনী লেখার গুরুত্বপূর্ণ ১০ টিপস

ভ্রমণ টুডেঃ ব্লগ, ফিচার ম্যাগাজিন বা অন্য কোথাও ছাপানো না হলেও নিজের ডায়েরিতে তুলে রাখতে পারেন। কিন্তু গৎবাঁধা গল্প লিখে গেলে পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। কিছু ধাপ মেনে লিখলেই ভ্রমণ কাহিনী হবে আকর্ষণীয় ও পাঠযোগ্য। জেনে নিন ভ্রমণ কাহিনী লেখার ১০ টিপস।

পরিষ্কার কাহিনীসূত্র: ভ্রমণ নিজেই একটি গল্প হতে পারে না। বরং ঘটনাবলীর ধারাবাহিকতা মাত্র। কোনো কোনো ঘটনা মজার আবার কোনোটা নাও হতে পারে। লেখার সময় সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন কোন ঘটনা আপনি বলতে চান এবং কোন ঘটনাবলী গল্পে তুলে ধরবেন। সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন ও ওয়েবসাইটে কোন ধরনের ভ্রমণ কাহিনী প্রকাশ হয় দেখে নিতে পারেন। প্রথমে নিজের মতো করেই লিখে ফেলুন। তারপর প্রয়োজনমতো সম্পাদনা ও সংক্ষিপ্ত করে নিন।

লক্ষ্য: কিছু ভ্রমণে আপনার শারীরিক উপস্থিতির বর্ণনা (কোনো পর্বতের চূড়ায় ওঠা, বিশাল নদী পার হওয়া ও বাঘ দেখা) থাকবে যেগুলো কাহিনীকে নির্দেশনা দেয় এবং একটি উদ্দেশ্য থাকে। এতে পাঠক গল্পের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত লেগে থাকে। কারণ তারা জানতে চায় লক্ষ্য অর্জিত হবে কিনা।

অভিজ্ঞতার কাঁটছাঁট: কাহিনীর চরিত্রের কথোপকথন, গতি, উদ্বেগ ও নাটকীয়তা থাকে। এ উপকরণগুলো পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখার মতো করে আনতে হবে ও সাজাতে হবে। ভ্রমণ কাহিনী এক থেকে দুই হাজার শব্দের মধ্যে লিখুন। প্যারা থাকবে ১০-২০টি।

প্রথম প্যারা হবে আকর্ষণীয়: পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে এমন কোনো ঘটনা দিয়ে শুরু করতে পারেন। কোনো নাটকীয় ঘটনা, কৌতুক, কথোপকথন বা এই তিনের সমন্বয়েও কাহিনী শুরু করা যায়। তবে প্রথম বাক্যে পাঠক ধরার ফাঁদ থাকতে হবে।

কথোপকথন: কথোপকথন ঘটনাস্থলকে জীবন্ত করে। ভ্রমণ সঙ্গীদের ব্যক্তিত্বকে গল্পে জায়গা দিন। কথোপথনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গল্পে তুলে ধরতে পারেন। যখন আপনি ঘুরতে যান সেখানকার লোকজন কী বলছে ও কীভাবে বলছে তার নোট নিতে পারেন।

দেখানো ও বলা: প্রত্যেক গল্পেই দেখানো ও বলা দুটো কৌশলই ব্যবহার করা হয়। কোনো চিন্তা না করেই আপনি এই কৌশল ব্যবহার করতে পারেন। যখন আপনার ঘটনার গতি কমিয়ে দেবেন এবং কোনো দৃশ্যের বিস্তর বর্ণনা দেবেন তখন তাকে দেখানো বলা হয়। আপনি কী দেখেছেন, শুনেছেন, অনুভব করেছেন- সেগুলো পাঠককে আপনার চোখ দিয়ে দেখাচ্ছেন। ঘটনার সঙ্গে বর্ণনা দেওয়া হচ্ছে বলা।

আনন্দ দেওয়া, প্রভাবিত করা নয়: নতুন লেখকরা প্রায়ই সাহিত্যিক ভাষায় লেখার চেষ্টা করেন। ভালো লেখকরা সাধারণত আর্নেস্ট হেমিংওয়ের উক্তি অনুসরণ করে থাকেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি কী দেখেছি ও কী অনুভব করি সেটাই সেরা ও সহজ উপায়ে কাগজে লিখে ফেলি। ’ তার মানে এই নয় যে আপনি হাস্যরস ও পরীক্ষামূলক কিছু তুলে ধরতে পারবেন না। তবে পাঠকের অবোধ্য কিছু লিখবেন না।

স্পষ্ট ভাষা: ভ্রমণ কাহিনীতে সাধারণত অর্থপূর্ণ শব্দ ও বাক্যাংশ থাকে। সুনির্দিষ্ট কোনো ভাষা ব্যবহারের চেষ্টা করুন। যে ভাষায় আপনি বর্ণনা করছেন সেটা যেন পাঠকের মনের চোখে ছবির মতো ফুটে উঠে।

পথ নির্দেশ: নতুন কোনো জায়গা বা দেশে ঘুরতে গেলে গাইডবই না নিয়ে গেলে সাধারণত পথ নির্দেশক ফলক অনুসরণ করা হয়। আপনার গল্পের মাধ্যমে পাঠকও সেই জায়গা ভ্রমণ করেন। প্রত্যেক প্যারাতে তাদেরকে জানিয়ে রাখুন এরপর আপনি কোথায় যাচ্ছেন। আপনার চূড়ান্ত লক্ষ্য তাদের মনে করিয়ে দিন।

অবশেষে লেখা শেষ করতে সময় নিন: অধিকাংশ ভ্রমণ কাহিনীই দ্রুতগতির ট্রেনে হঠাৎ ব্রেক কষার মতো করে শেষ হয়। পড়া শেষে পাঠক দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েন। তাই শেষ প্যারাটি লেখার ক্ষেত্রে সময় নিন।

দ্য ক্যাম্পাস টুডে