অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম: বৈষম্য দূরীকরণে পদক্ষেপ নেওয়া অতি জরুরী

সাজু সরদার


অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম! করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা। বাংলাদেশ সরকার করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য, শিক্ষার্থীদের মনোবলকে চাঙ্গা রাখার জন্য “ঘরে বসে শিখি”, “আমার ঘরে, আমার স্কুল”, জুম অ্যাপের মাধ্যমে ক্লাস, ফেসবুক লাইভে ক্লাস সম্প্রচারের মতো বিভিন্ন সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এসব পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে সময় উপযোগী কিন্তু কতটুকু কার্যকরী সেটা মূল্যায়নের বিষয়।

মূল্যায়নের বিষয় আসলেই চোখে পড়ে “কোটি শিশুর পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে” শিরোনামে গত ২৭ জুলাইয়ের প্রথম আলো পত্রিকার একটি প্রতিবেদন। প্রতিবেদন পড়লেই বোঝা যায় এই শিকের উচ্চতা শহরের তুলনায় গ্রাম, বস্তি এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেশি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বস্তির এক ঘরের গাদাগাদির বাসায় টিভির ক্লাসে মন বসানো কঠিন। পাহাড়ি অঞ্চলের অনেকের বাসায় টিভিতো দুরের কথা কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগও নেই।

আবার ব্রাকের গবেষণা জরিপ বলছে ৫৬ শতাংশ ছেলেমেয়ে টিভির ক্লাসে আগ্রহ পায় না এবং অনেক সরকারি স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস করার মতো সামর্থ্যও নেই। তবে শহরের নামিদামি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা স্বেচ্ছাসেবী বা এনজিও পরিচালিত কিছু স্কুল যারা অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে তাদের শিক্ষার্থীদের অবস্থা আবার এদিক থেকে ভালো। গ্রামের তুলনায় শহরের শিক্ষার্থীদের উন্নত আর্থসামাজিক অবস্থার কারণে শহরের শিক্ষার্থীরা বর্তমান অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অনেক এগিয়ে আছে। তবে মোট শিক্ষার্থীর যে ৭০ ভাগ সরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। এই ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী যে অনাকাঙ্ক্ষিত বৈষম্যর শিকার হচ্ছেন সেটা অতিদ্রুত সমাধান না করা গেলে শিক্ষাখাতের গত ২ দশকের সব অর্জন ব্যর্থ হবে।

এ তো গেল প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের কথা! এবার বলি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কথা। গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মোটামুটি সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেন। যদিও তার আগেই হাতেগোনা কিছু বিভাগ বা শিক্ষক ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনলাইন ক্লাস শুরু করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনও অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে যথেষ্ট সহায়তা করার আগ্রহ দেখিয়েছেন।

সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে অনলাইন ক্লাস শুরুর উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু উপাচার্য মহোদয়রা যে সমস্যাগুলো সমাধান পূর্বক অনলাইন ক্লাসের ব্যাপারে একমত হয়েছিলেন সেটার সমাধান এখন পর্যন্ত চিঠি চালাচালিতেই সীমাবদ্ধ আছে। যে ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ডিভাইস সমস্যার কারণে অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারছে না (মঞ্জুরি কমিশনের গবেষণা অনুযায়ী) তাদের সহায়তার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গ্রান্ট বা সফট লোন প্রদানের জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে যে তালিকা চেয়েছিলেন সেটা একবার পাঠানোর পর মঞ্জুরি কমিশন গত ২০ সেপ্টেম্বর তারিখে আবারো নির্ভুল তালিকা প্রেরণের জন্য সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।

ডিভাইস বঞ্চিত ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর চূড়ান্ত তালিকা করতেই ইউজিসির তিন মাস শেষ! তাহলে কবে এই শিক্ষার্থীরা ডিভাইস পাবে আর কবে একই স্রোতে মিশে বন্ধুদের সাথে একসাথে ক্লাস করবে। ইউজিসির চিঠি চালাচালির এই লগ্নে অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতি বিতর্কের মধ্যেই বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা (এই ১৫ শতাংশ বাদে) তাদের সেমিস্টারের ক্লাস শেষ করে পরীক্ষার জন্য তীর্থের কাকের মতো সময় পার করছে। অনেক বিভাগ আবার পরীক্ষা ছাড়াই পরবর্তী সেমিস্টার শুরু করেছে। তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে যারা কোন একটি বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছে অথবা যাদের সামনে আর কোন সেমিস্টার নেই সেই সমস্ত শিক্ষার্থীরা অর্থাৎ যাদের শুধুমাত্র স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্বের পরীক্ষা বাকি আছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সমস্ত শিক্ষার্থীরা অপেক্ষায় আছে কবে পরীক্ষা দিতে পারবে, একটা চাকুরিতে যোগদান করবে আর সংসারের হাল ধরে গরীব বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাবে। এই পরিস্থিতির শিক্ষার্থীরা যে কি পরিমাণ মানসিক কষ্টে আছে সেটা তাদের সাথে কথা বললেই বোঝা যায়। আবার যারা পরবর্তী সেমিস্টার শুরু করেছে সেসকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চিন্তায় আছে এর পর তারা কি করবে! সামনে শীত মৌসুমে করোনার আশংকার কারণে অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খোলারও কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু এক বর্ষের পরীক্ষায় কৃতকার্য না হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনগত কারণে অন্য বর্ষের কোন সেমিস্টারের ক্লাসও করা যাবে না। সুতরাং এসকল শিক্ষার্থীরাও এক অজানা আশংকার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এদিক থেকে নিশ্চিন্ত আছে। কারণ নিয়ামানুযায়ী তারা অনলাইনে ক্লাস করছে, পরীক্ষা দিচ্ছে! ইতিমধ্যে তারা দুই সেমিস্টার (জানুয়ারী-এপ্রিল এবং মে-আগস্ট) শেষ করেছে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শেষ পর্বের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়ে রেজাল্ট নিয়ে চাকুরিতে যোগদান করেছে। অন্যদিকে তাদের সমসাময়িক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা এখনো পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য প্রহর গুনছে। করোনার কারণে সঠিক নীতি ও সিদ্ধান্তের অভাবে তারা শুধু শিক্ষাজীবন নয় ভবিষ্যৎ চাকরি জীবনেও বৈষম্যর শিকার হচ্ছে এবং হবে। শুধুমাত্র সময়মত পরীক্ষার দিতে না পারার কারণে তারা তাদের সমসাময়িক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বন্ধুদের চাইতে জুনিয়র হিসেবে চাকুরীতে যোগদান করবে (কতদিন পর সেটাও অনিশ্চিত)।

তবে এসব বিষয়ে সমন্বয়কারী সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাথা ব্যাথা নেই। “পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরীক্ষা এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়া হবে” এ কথা বলেই তাদের দায়িত্ব শেষ! উপরিউক্ত বৈষম্য, অদূরদর্শিতা ও সিদ্ধান্তহীনতা দেশ ও জাতির জন্য ক্ষতিকর। দেশ ও জাতি মেধাবী শিক্ষার্থীদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সামাজিক ও পারিবারিক চাপে শিক্ষার্থীদের মানসিক শক্তি দিন দিন কমে যাচ্ছে, পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সামগ্রিক দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ অতি জরুরী!!!

লেখক: শিক্ষক
ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় যেন GPA এর মূল্যায়ন করা না হয়

তানিয়াল হোসেন


২০২০-২০২১ শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় যেন JSC & SSC গড়ে HSC এবং SSC ই GPA এর মূল্যায়ন যেন না করা হয় তার জোর দাবি জানাচ্ছি।

এবার আসা যাক কেন এমনটার জোর দাবি জানাচ্ছি -তবে এর আগে আমার এক বন্ধুর কথা শুরুতেই বলে নিচ্ছি -আমার বন্ধু JSC তে GPA=3.00 এবং SSC তে GPA=3.75 পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।কিন্তু সে কঠোর পরিশ্রম করে পড়াশুনার মাধ্যমে HSC তে GPA=5 পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। কেন শুরুতেই এমনটি বললাম তার উত্তর নিচের কথাগুলোর মাধ্যমে পাবেন বলে আশা করি।

আজ শিক্ষামন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা এই মুহূর্তের জন্য কল্যাণকর না অকল্যাণকর সেটা আপনারা সবাই জানেন এবং ভাল বোঝেন।আমি শিক্ষামন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করছি না।তবে আমার দাবি হলো ২০২০-২০২১ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় যেন GPA এর মূল্যায়ন করা না হয়।

যারা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক তারা সবাই যেন অংশগ্রহণ করতে পারে।আর,সেই পরীক্ষার মেধাক্রমের ভিত্তিতেই যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। কেননা, আমার এই বন্ধুর মত অনেক পরীক্ষার্থী এবারও ছিল।যারা JSC & SSC তে ভাল রেজাল্ট করে নি।কিন্তু,HSC তে ভাল করার মনোবল ছিল।আজ শিক্ষামন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তে তারা তাদের স্বপ্নগুলোকে ডুবিয়ে দিতে বসেছে।

তারা ভাবছে তার স্বপ্ন অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হবে না।আমি দু জন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেছি। ১ম যার সাথে আমি কথা বললাম সে ত কান্নার কারণে কথাই বলতে পারছিল না।তার কথা হল ভাই আমার ত JSC & SSC ই রেজাল্ট খুব বাজে।আমার ত স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব।আজ সব শেষ হয়ে গেল।আমি আর পড়াশুনা করব না।

২য় জন।সেও প্রায় একই কথা ২০২০-২০২১ শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় যেন GPA এর মূল্যায়ন করা না হয়।
২০২০-২০২১ শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় যেন JSC & SSC গড়ে HSC এবং SSC ই GPA এর মূল্যায়ন যেন না করা হয় তার জোর দাবি জানাচ্ছি। এবার আসা যাক কেন এমনটার জোর দাবি জানাচ্ছি – তবে এর আগে আমার এক বন্ধুর কথা শুরুতেই বলে নিচ্ছি – আমার বন্ধু JSC তে GPA=3.00 এবং SSC তে GPA=3.75 পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।কিন্তু সে কঠোর পরিশ্রম করে পড়াশুনার মাধ্যমে HSC তে GPA=5 পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। কেন শুরুতেই এমনটি বললাম তার উত্তর নিচের কথাগুলোর মাধ্যমে পাবেন বলে আশা করি।

আজ শিক্ষামন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা এই মুহূর্ত্যের জন্য কল্যাণকর না অকল্যাণকর সেটা আপনারা সবাই জানেন এবং ভাল বোঝেন।আমি শিক্ষামন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করছি না।তবে আমার দাবি হলো ২০২০-২০২১ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় যেন GPA এর মূল্যায়ন করা না হয়।

যারা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক তারা সবাই যেন অংশগ্রহণ করতে পারে। আর, সেই পরীক্ষার মেধাক্রমের ভিত্তিতেই যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। কেননা, আমার এই বন্ধুর মত অনেক পরীক্ষার্থী এবারও ছিল।

যারা JSC & SSC তে ভাল রেজাল্ট করে নি।কিন্তু,HSC তে ভাল করার মনোবল ছিল।আজ শিক্ষামন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তে তারা তাদের স্বপ্নগুলোকে ডুবিয়ে দিতে বসেছে।তারা ভাবছে তার স্বপ্ন অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হবে না।আমি দু জন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেছি। ১ম যার সাথে আমি কথা বললাম সে ত কান্নার কারণে কথাই বলতে পারছিল না।তার কথা হল ভাই আমার ত JSC & SSC ই রেজাল্ট খুব বাজে।আমার ত স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব।আজ সব শেষ হয়ে গেল।আমি আর পড়াশুনা করব না।

২য় জন।সেও প্রায় একই কথা বলছিল।তার কথা হল ভাই এইচএসসিতে GPA টা ভাল করব বিধায় অনেক পড়াশুনা করেছিলাম।আমার সব ইচ্ছা ইচ্ছায় থেকে গেল।আমার JSC & SSC রেজাল্ট খুব একটা ভাল না।আমি হয়ত ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারব না।

তারপর আমি আমার এলাকার একজন শিক্ষকের সাথে কথা বললাম – তিনি বললেন “দেখো আমরা ত হাওর অঞ্চলের মানুষ।আমাদের শিক্ষার্থীরা খুব বেশি সচেতন না।তারা বিশ্ববিদ্যালয় কি তা কলেজে ভর্তি হয়ে তারপর জানে।

তখন তাদের মধ্যে অনেকেই খুব পড়াশুনা করে এবং প্রতিবছর JSC & SSC তে ভাল ফলাফল না করেও HSC তে অনেক ভাল করে।তারপর এখান থেকে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়।কিন্তু আজ তারা তাদের সেই স্বপ্ন হারাতে বসেছে।তারা ভাবছে তারা হয়ত আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে না।কারণ তাদের JSC & SSC রেজাল্ট খুব একটা ভাল না। এমনটি হয়ত সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভাবছে।

তাই আমি শিক্ষা মন্ত্রাণলয়ের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় যেন GPA এর মূল্যায়ন করা না হয়।আর,এমনটি যেন এই মাসেই সিদ্ধান্ত নিয়ে তা শিক্ষার্থীদের উদ্দশ্যে বলে দেওয়া হয়। বলছিল।তার কথা হল ভাই ইন্টারে GPA টা ভাল করব বিধায় অনেক পড়াশুনা করেছিলাম।আমার সব ইচ্ছা ইচ্ছায় থেকে গেল।আমার JSC & SSC রেজাল্ট খুব একটা ভাল না।আমি হয়ত ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারব না।

তারপর আমি আমার এলাকার একজন শিক্ষকের সাথে কথা বললাম – তিনি বললেন “দেখো আমরা ত হাওর অঞ্চলের মানুষ।আমাদের শিক্ষার্থীরা খুব বেশি সচেতন না।তারা বিশ্ববিদ্যালয় কি তা কলেজে ভর্তি হয়ে তারপর জানে।তখন তাদের মধ্যে অনেকেই খুব পড়াশুনা করে এবং প্রতিবছর JSC & SSC তে ভাল ফলাফল না করেও HSC তে অনেক ভাল করে।তারপর এখান থেকে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়।কিন্তু আজ তারা তাদের সেই স্বপ্ন হারাতে বসেছে।তারা ভাবছে তারা হয়ত আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে না।কারণ তাদের JSC & SSC রেজাল্ট খুব একটা ভাল না। এমনটি হয়ত সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভাবছে।

তাই আমি শিক্ষা মন্ত্রাণলয়ের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় যেন GPA এর মূল্যায়ন করা না হয়।আর,এমনটি যেন এই মাসেই সিদ্ধান্ত নিয়ে তা শিক্ষার্থীদের উদ্দশ্যে বলে দেওয়া হয়।তাহলে সেসব শিক্ষার্থী তারা তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য চেষ্টা করে যাবে।আবার তারা ঘুরে দাঁড়াবে।

লেখক: তানিয়াল হোসেন
ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর ।

এইচএসসি বিনা পরীক্ষায় পাশের সিদ্ধান্ত ও বাস্তবতা : একটি মূল্যায়ন

মোহাম্মাদ ফখরুল ইসলাম


এইচএসসি পরীক্ষার সিদ্ধান্তটি বেশ আলোচিত এখন এবং সেটা হওয়াই স্বাভাবিক।সিদ্ধান্তটির পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সবাই মতামত দিচ্ছে।আমি চেষ্টা করবো সিদ্ধান্তটির সামগ্রিক দিক তুলে ধরার জন্য।যেকোনো সিদ্ধান্ত নিলে সব পক্ষের Win-win অবস্থা বজায় রাখা শুধু কষ্টসাধ্য নয় প্রায় অসম্ভব। আমরা মজা করে কিংবা সমালোচনা (বাস্তবে সমালোচনা আছেও) করতেই পারি,কিন্তু সার্বিক দিক চিন্তা করলে এই সিদ্ধান্তের বাইরে খুব বেশি কিছু কি করার ছিলো?

আমার দৃষ্টিতে পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্তটা সঠিকই,যদিও বিকল্প মূল্যায়নে দুই পরীক্ষার গড়ের বাইরে আরো গুনগত পন্থা রয়েছে।যেহেতু পরীক্ষা হচ্ছে না সেই বিকল্প উপায়গুলো বিবেচনায় রেজাল্ট প্রস্তুত করলে হয়তোবা যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা আছে সেটা কিছুটা কমিয়ে আনা সম্ভব।কিন্তু মন্ত্রণালয় মনে হয় না সেদিকে এগুবে!!

এখন বলি কেন যুক্তিযুক্ত মনে করছি সিদ্ধান্তটিকে। আমি জানি লেখার বিপরীতে অনেক যুক্তি অবশ্যই আসবে,তবে সেই যুক্তিগুলি আবেগ বিবর্জিত হবে বলে আশা করি।

সরকার কিন্তু কালক্ষেপন করেছে যথেষ্ট শুধুমাত্র সঠিক সুযোগের অপেক্ষায়,কিন্তু বাস্তবে এটা পায় নি।সামনে এপ্রিলে আরেকটি ব্যাচ পরীক্ষার জন্য অপেক্ষমাণ। আবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে যে কেন্দ্র-আসন লাগবে তা অপ্রতুল।সাথে সমপরিমান পরীক্ষক,আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্যান্য লজিস্টিকস ব্যবস্থা করা আসলেই কঠিন।সর্বোপরি,বিপুল শিক্ষার্থী সমাগমে সামাজিক দূরুত্ব নিশ্চিত করাও প্রায় অসম্ভব!

এখন অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন,দেশের সব কার্যক্রম চলে এখানেই শুধু সংক্রমণ ঝুঁকি কেন সরকার দেখে! দেখুন অন্যান্য যেসব প্রতিষ্ঠান বা সেক্টর খোলা তার প্রকৃতি আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রকৃতি এক নয়।অন্যান্য সেক্টরে জীবিকার তাগিতে ও প্রায় ব্যক্তিগত ঝুঁকি এবং ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে।সেক্ষেত্রে সরকারের দায় সেই অর্থে একক কিংবা বহুলাংশে নয়।কিন্তু শিক্ষাখাতে জিম্মাদারি বা সিদ্ধান্ত অনেকটা সরকারের ইচ্ছে ও সক্ষমতার উপর নির্ভর করে।কাজেই এখানে সরকারের দায় ও দায়িত্ব বেশি।এখানে একটা শিক্ষার্থী যদি করোনা আক্রান্ত হয়,আপনি নিশ্চয়ই তার আশেপাশে আপনার সন্তানকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দিবেন না। তাছাড়া সংক্রমণ হলে অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষা বঞ্চিতও হতে পারে,এখন কোন অধিকারে বা দায়িত্বে আপনি তাদেরকে বঞ্চিত করবেন?

তাছাড়া,শিক্ষাব্যবস্থার একটা Ecosystem আছে।এই সিস্টেমটা কিন্তু বিচ্ছিন্ন নয়,একেকটা স্তর অন্যটির সাথে ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে। সেই ব্যবস্থার ভারসাম্যের কথাও কিন্তু সরকারকে ভাবতে হয়।বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও কিন্তু নতুন শিক্ষাবর্ষের জন্য অপেক্ষমান,সেই ব্যবস্থায়ও একটা ধাক্কা লাগছে।দেশে প্রায় শ’খানেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে,নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা না হলে যেগুলো ব্যাপক ছাত্রসংকটে পরবে।ইতিমধ্যেই করোনার থাবায় তাদের প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক সক্ষমতার মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে।তাই,এই পরীক্ষা আরো দীর্ঘায়িত হলে এই প্রতিষ্ঠানগুলো দারুণভাবে ভেঙ্গে পরবে।

এই সিদ্ধান্তের একটা খারাপ দিক হবে, একটা বড় অংশ প্রায় বিনা মূল্যায়নে ও অযোগ্যতা নিয়েই পরবর্তী ধাপে যাবে, এটা নিশ্চিত। গতবছর প্রায় ৩.৫ লাখ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছিলো যারা এবারো পরীক্ষার্থী,এর কাছাকাছি বোধ হয় এবারও অকৃতকার্য হতো,তাতেও সংখ্যাটা একবার ভেবে দেখুন!আবার শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ মাধ্যমিক পর্যায়ে গ্রামে বা মফস্বলের পরিবেশে পড়াশোনা করে,ফলে অপেক্ষাকৃত কম রেজাল্ট থাকে এসএসসি বা জেএসসিতে।তাদের একটা বড় অংশ ভবিষ্যতের কথা ভেবে শহরে ভালো কলেজে পড়াশোনা করে ও ভালো রেজাল্টও করে আর সেই রেজাল্ট পাল্টে দেয় অনেকের জীবন,তাদের জন্য এই সিদ্ধান্তটি একটা ধাক্কাই। যারা পূর্বে ভালো করে নাই তারা ভুগবে,তাদের ভালো করার সুযোগ আছে,এখানে তারা বঞ্চিত হবে।এখানে বলার অনেক কিছুই আছে। কিন্তু We don’t have any option right now which doesn’t harm everyone.

প্রসঙ্গত,আরেকটা বিষয় আনি যদিও এখানে অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে তবুও।বিগত বছরগুলোতে যে পাবলিক পরীক্ষাগুলো হয়েছে সে পরীক্ষাগুলো যে আহামরি উল্টানো(মান) কিছু ছিলো তা কিন্তু নয়।পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ছিলো প্রায় স্বাভাবিক । পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরিতেও ভুলভ্রান্তি ছিলো অহরহ। পরীক্ষার হলে দেখাদেখি, শিক্ষকদের পক্ষ থেকে উত্তর বলে দেওয়া এবং পরীক্ষার আগমুহূর্তে কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র বাইরে পাঠিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাগুলো কিন্তু দেয়ালের মধ্যে ঘটে আসছিল না,সেগুলো সামাজিক গণমাধ্যমসহ অন্যান্য মাধ্যমে পরিচিত দৃশ্য ছিলো। তাই আকাশ-পাতাল ফাঁরাক হয়েছে তা বলা যাবে কি?

তাছাড়া ১৯৭১ সালে যুদ্ধের ডামাডোলে বন্ধ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অর্ধশতক পর আবারো সংকটে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। যুদ্ধের পর পরীক্ষা ছাড়াই অটো প্রমোশনে শিক্ষার্থীরা শুরু করেন থেমে যাওয়া শিক্ষা জীবন।

জীবনে দূর্যোগ আসে,সেটা প্রত্যাশিত অবশ্যই নয় কিন্তু এর ফলাফল বয়ে বেরাতে হয় আর এটা মেনে নেয়াটাই ম্যাচুরিটি। শিক্ষার্থীদের যেটা বলবো, যে বিষয়ে আপনার হাত নেই সেখানে মাথা ব্যাথা করে লাভ নেই,যেখানে আপনার হাত আছে(ভর্তি প্রস্তুতি) সেখানেই মনযোগ দিন।ভর্তি পরীক্ষা হবে না বা বাতিল করে রেজাল্টের ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে এইরকম মনোভাব নিয়ে সময়ক্ষেপণ করা মোটেও উচিত নয়(যদিও পরবর্তীতে এইরকমটাও হয় তবুও না)।

সিদ্ধান্তটা মন থেকে বিবেচনা করলে আমি ব্যথিত কিন্তু মাথা দিয়ে চিন্তা করলে অবধারিত!তবু মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে আরেকটু সুক্ষ্ম বিবেচনা করা যেতেই পারে!

মোহাম্মাদ ফখরুল ইসলাম
শিক্ষক, লেখক ও গবেষক ।

 

রাজনৈতিক রং দিলে সঠিক বিচার কাজ বাধাগ্রস্ত হয়

আশরাফুল ইসলাম খোকন


যেকোনো অন্যায় অপরাধের বিরুদ্ধে সচেতন জনগণ প্রতিবাদী হবে এটাই স্বভাবিক। দেশকে দেশের মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে হলে প্রতিবাদ করতে হবে। আর রাষ্ট্রকে এর বিচারের দায়িত্ব নিতে হবে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যাতে কেউ আর সাহস না পায়।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,সিলেটের এমসি কলেজ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ধর্ষণ ও ন্যাক্কারজনক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। সরকার ইতিমধ্যে সিলেট ও বেগমগঞ্জের মূল আসামির সকলকে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করেছে। খুব তড়িৎ গতিতেই তাদেরকে গ্রেফতার করেছে,কোনো কালক্ষেপন করেননি।

কেউ ভার্চুয়াল মিডিয়ায়,কেউ রাজপথে ধর্ষণের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদমুখর হয়েছেন। অবাক হওয়ার বিষয় হচ্ছে,এই প্রতিবাদ মিছিলে ধর্ষণকারীদের সহযোগীরাও আছেন।

জোর গলায় স্লোগান দিচ্ছেন। ধর্ষণকারীর বিচার করা যাবেনা অনেকটা এইরকম দাবিতে কিছুদিন আগেও তারা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। নেটিজেনদের ভাষায়,ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে ধর্ষক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদে রূপান্তরিত হয়েছেন।

২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি-জামাত সন্ত্রাসীদের দ্বারা যখন মহিমা ফাহিমা হুনুফা পূর্ণিমারাসহ ১৭ হাজার ২০০ মা-বোন ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে তখন যদি প্রতিবাদ হতো বিচার হতো তাহলে হয়তো আজ রাজপথে দাঁড়াতে হতো না।

তবে কোনো অঘটনেরই রাজনৈতিক রং দেয়া উচিত না। তাহলে সঠিক বিচার বাধাগ্রস্ত হয়। জনগণ বিভ্রান্ত হয়। বিচার চাওয়া ও প্রতিবাদ করা অবশ্যই উচিত। কিন্তু যারা রাজনৈতিক রং দেয়ার চেষ্টা করেন তারাও সমান অপরাধী।

লেখক
আশরাফুল ইসলাম খোকন
ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

 

ধর্ষণ করতে বেডাগিরি লাগে, আর বেডাগিরি অর্জনের সবচেয়ে সহজ পথ ক্ষমতাসীন দল

কামরুল হাসান মামুন


ধর্ষণ করতে বেডাগিরি লাগে। আর বেডাগিরি দেখানোর জন্য ক্ষমতা লাগে। ক্ষমতার জন্য ক্ষমতাসীন দল করা বেডাগিরি অর্জনের সবচেয়ে সহজ পথ। ক্ষমতাসীন দল করলে শত অপকর্ম করে কোন বিপদে পরলে দলবদ্ধ শেল্টার পাওয়া যায় আবার একই সাথে পুলিশের আস্কারা পাওয়া যায়।

সরকার আর পুলিশ মিলে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে যে, সরকারি দলের কেউ কোন অন্যায় করলে সহজে ধরবে না। সেই অন্যায়টি যত জঘন্যই হউক। কারণ ধরলে দেখা গেছে পুলিশ উল্টো পানিশমেন্টের শিকার হয়। ধর্ষণ বন্ধ করতে হলে ক্ষমতার সুতাটা কেটে দিতে হবে।

আবার ক্ষমতা থাকলেই ক্ষমতার বলে বেডাগিরি দেখানো একটি অসভ্যতা। ক্ষমতা থাকলেও ক্ষমতাকে ধারণ করে ক্ষমতাকে ভালো কাজে ব্যবহারের জন্য সুশিক্ষার প্রয়োজন। আমাদের বর্তমান সমাজে সেই সুশিক্ষা দেওয়ার মত শিক্ষক এবং প্রতিষ্ঠান দুটোরই অভাব। এই অভাব ৩০ বছর যাবৎ আমাদের সরকারেরাই সৃষ্টি করেছে তাদের লাভের জন্য।

অশিক্ষিত সমাজকে বোকা বানানোর অনেক লাভ। যদিও সেই লাভটা আসল লাভ না। শেষ বিচারে তারাও হারে। কিন্তু সরকারে যদি আলোকিত নেতৃত্ব না থাকে তারা কেবল এই মুহূর্তের লাভই দেখতে পায়। দূরের লাভ বোঝার মত বোধ বা দেখার মত চোখ কোনোটিই তাদের নেই।

একটু আগে আমার সরাসরি ছাত্রী নাহয়েও আমি যাকে প্রিয় ছাত্রী মানি তার (Samsun Nahar Rakhy) একটা স্টেটাস পড়লাম। সে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে পাশ করেছে। তার লেখাটি কাট & পেস্ট করলাম।

এটা হতে পারতো me too আন্দলোনের পার্ট। তারপরও এই পোটেনশিয়াল ধর্ষক শিক্ষকের বিচার কামনা করি। শিক্ষকরা যখন এমন বেডাগিরি দেখায় সেখানে ভালো সমাজ কিভাবে আশা করব? বাকিটা ছাত্রীর লেখাটি পড়ুন এবং ভাবুন।

তার লেখা স্ট্যাটাসটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো – “এখনও ধর্ষিত হইনি। কিন্তু হতে পারতাম, বহুবার! আজকে একটা ঘটনা বলি।২০০৯ সাল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সেমিস্টারের পিএল চলে। সাথে ঈদের ছুটিও ছিল সম্ভবত। ডিসিপ্লিন বন্ধ। বাসায় বসে টিভি দেখছিলাম।

এরমধ্যে ফোন আসলো সিআর Bayzid Alam Khan এর নম্বর থেকে। ও বলল, মোল্লা আজিজুর রহমান স্যারের ক্লাস টেস্ট দিছিলি তুই? তোর শীট তো স্যার খুঁজে পাচ্ছেন না। এইমাত্র বললেন আমাকে। স্যার তোকে ফোন করে কনফার্ম করতে বলেছেন। ফোন কর জলদি।ফোন করলাম।

– সিটি দিয়েছিলে?জি, স্যার। দিয়েছি তো!খুঁজে পাচ্ছি না। আচ্ছা, দেখি আরও খুঁজে। পেয়ে যাবো হয়তো। (ধানাইপানাই)… আচ্ছা, তুমি কী একটা সমস্যা নিয়ে আসছিলে না? এখন আমি ফ্রি আছি। আসতে পারো।

মনে পড়ে গেল, কী কারণে যেন রুমানা ম্যামের রুমের সামনে উঁকি মারছিলাম। স্যার দেখে বলেছিলো, কী সমস্যা? হঠাৎ কী বলবো, পড়াশুনা বিষয়ক একটা প্রশ্ন হাজির করলাম। স্যার বলেছিল, এখন ব্যস্ত। পরে এসো। মাথা নেড়ে বিদায় হলাম।

স্যার তো কারণে অকারণে আমাদের ইনসাল্ট করার জন্য মুখিয়ে থাকে। হঠাৎ যেচে পড়ে উপকার করতে চাইছে! খটকা লাগলো। বললাম, ঠিক আছে, স্যার। প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছি। সমস্যা নাই। ধন্যবাদ।

– টার্ম ফাইনালের প্রস্তুতি কেমন চলছে? তুমি এলে কিছু ব্যাপারে গাইডলাইন দিতে পারি। আমার সন্দেহ বাড়লো।স্যার, ছুটি চলছে তো। ডিসিপ্লিন কি কোনো কারণে খোলা? না, আমার বাসায় চলে আসো। তুমি নিরালা এলাকা চেনো?

এবার আমি মোটামুটি নিশ্চিত, ব্যাটার মতলব খারাপ। কারণ উনার সাথে আমার এমন কোন সখ্যতা হয়নি যে আমার জন্য তার দরদ এতো উতলাইয়া পড়বে!তবু কড়াভাবে কিছু বলতে পারিনি (এখন হলে ওর কপাল খারাপ আছিলো)। তাই ছুতা দেয়া শুরু করলাম।

– না, স্যার। তেমন একটা চিনি না। ভেতরে যাইনি (মিছা কথা। ছাত্রী পড়াই নিরালায়)।সমস্যা নেই। ইজি এড্রেস। বলে দিলেই আসতে পারবে।স্যার, আমার ছাত্রছাত্রী আসবে বিকেলে। এখন প্রায় দুটো বাজে। আর আমার বাড়ি ফুলতলা, নিরালা থেকে একঘণ্টার পথ। ও, আচ্ছা।ফোন রেখে দিলো সে।

পাশে বড় আপা বসে ছিল। ফোন লাউড মোডে দেয়া ছিলো, সব শুনেছে আপা। আমি শুধু তার দিকে তাকিয়ে বললাম, কী হলো এটা!
বড়আপা বললো, একদম সাবধানে থাকবি এর ব্যাপারে। উদ্দেশ্য ভালো না।আমি বললাম, সে তো বুঝতেই পারছি। আমি বরং যাই। গিয়ে দেখি ও আমার কী ছিঁড়তে পারে।কোনো বীরত্ব দেখানোর দরকার নাই।

পুরুষ মানুষের সাথে গায়ের জোরে পারবি না। এড়িয়ে চলাই নিরাপদ। কেউ ওর দিকে আঙুল তুলবে না, তোর দিকে তুলবে। আমার কি দুর্নামের অভাব আছে? আর কী হবে? আর একা তো যাবো না। Nayeem Hasan , Anindya Munasib Bayazid ওদের নিয়ে যাবো।

হাতেনাতে ধরবো ব্যাটাকে। যাই হোক, আমার মাস্টারপ্ল্যান খারিজ করে দিলো বড় আপা। এরই মধ্যে আবার ফোন বাজলো। শ্রদ্ধেয় স্যারের নম্বর! শোনো, তোমার ছাত্রদের আজকে আসতে মানা করে দাও।

– ওদের সবার নম্বর নাই আমার কাছে। আর সামনে ওদের ভর্তি পরীক্ষা তো। এখন মিস দিলে ক্ষতি হবে, স্যার।কোনোভাবেই হচ্ছে না দেখে রণে ভঙ্গ দিল শ্রদ্ধেয় শিক্ষক আমার।মাথা পুরাই খারাপ নাকি এই লোকের! এ কী নির্লজ্জ পারসুয়েশন!

প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আবার কল বাজলো। আবারও স্যার। বলল, শোনো, আমি যে তোমাকে ফোন করে আসতে বলেছি এটা তোমার বন্ধুদের বলো না। ওরা তোমাকে খারাপ ভাবতে পারে। তুমি তো সহজ সরল মেয়ে। অনেক কিছু বুঝবে না। ওরা নানান কথা ছড়াবে যদি শেয়ার করো।
-জি, স্যার। বলবো না।

(বলা বাহুল্য, আমার চেহারায় গাধা ভাব প্রকট!)
এরপর থেকে শুরু হলো স্যারের সাথে আমার ঠান্ডা যুদ্ধ!

ক্লাসে তার দিকে এমনভাবে তাকাতাম, যেন চোখ দিয়েই বলে দিতাম, কী বাল পড়ান আপনি। ভাড়ামি যতসব!আর সেও তার প্রেমের নিদর্শন দেখাতো পরীক্ষার খাতায়। পুরো চার বছর তার সব কোর্সে দরিদ্র ফলাফল। রেজাল্ট নিয়ে আফসোস করি না।

কিন্তু হাজার উপায়ে মানসিক অত্যাচার করেছে, ক্লাসে অপমান করেছে। আফসোস হয়, কেন তখন রেজাল্ট খারাপের ভয়টাকে পাত্তা দিছিলাম!
লেখাটি যারা পড়লেন, কী মনে হয়, স্যারের উদ্দেশ্য কী ছিল?
ঝুলায়ে রাখার মানে নাই। নাম বলে দিলাম।

লেখক
কামরুল হাসান মামুন
অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ধর্ষকের শাস্তি হোক প্রকাশ্য পাথর নিক্ষেপ : গোলাম রাব্বানী

গোলাম রাব্বানী


লাগামহীন দুর্নীতি ও ধর্ষণ প্রতিনিয়ত চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, বিদ্যমান আইন ও এর দুর্বল প্রয়োগনীতি এই দুটি মারাত্মক অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না!

দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণের ভ্যাট-ট্যাক্সের অর্থ আত্মসাত, রাষ্ট্র বিরোধী ও ধর্ষণকে মানবতা বিরোধী অপরাধ বিবেচনা পূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে কঠোর আইন প্রণয়ন ও এর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে না পারলে, বর্তমান সরকারের সকল ইতিবাচক কাজ ও গৌরবান্বিত সাফল্যে এ বিষফোঁড়া দুটো ‘এক মন দুধে কয়েক ফোটা গো-মূত্র’ এর ন্যায় সকল অর্জন ম্লান করে দেবে।

সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত দুর্নীতিবাজ ও ধর্ষকের শাস্তি ইসলামী অনুশাসন মোতাবেক হলে এহেন অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমার মেয়ে ফাতেমা চুরি করলেও আমি তার হাত কেটে দেব।’

আর ধর্ষকের শাস্তি হোক, প্রকাশ্যে পাথর নিক্ষেপ করে, ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি করে বা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড!

লেখক

সাবেক সাধারণ সম্পাদক

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ

বিশ্ব শিক্ষক দিবসে দুই প্রফেসরকে শ্রদ্ধা

ড. মো. আসাবুল হক


আজ ৫ই অক্টোবর। বিশ্ব শিক্ষক দিবস। এ দিনে আমার দু’জন শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক নিয়ে এ লেখার প্রয়াস। ড. সুব্রত মজুমদার হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গণিতের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর। অপরদিকে, ড. অরুণ কুমার বসাক হলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ইমেরিটাস প্রফেসর। একাডেমিকভাবে প্রফেসর মজুমদার স্যার প্রফেসর বসাক স্যারের এক বছরের সিনিয়র।

সেই সূত্র ধরে প্রফেসর বসাক প্রফেসর মজুমদারকে গুরুদেব বলে ডাকেন। শিক্ষকতা ও গবেষণার পাশাপাশি প্রফেসর বসাকের যেমন আছে চেয়ার-টেবিল বানানো থেকে হোমিওপ্যাতি চিকিৎসায় দক্ষতা, তেমনি প্রফেসর মজুমদারের আছে সঙ্গীতে। এ দুজন প্রফেসর নিয়ে অনেক কথা বলা যায় অনেক কথা লেখা যায়। যারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটু খোঁজ খবর রাখেন তাঁরা সবাই অবগত আছেন।

বইয়ের পাতার আদর্শ শিক্ষকের বাস্তব উপস্থিতি যে এখনও আমাদের আশেপাশে আছে তার উদাহরণ এ দুজন প্রফেসর। পাঠদান, গবেষণা থেকে দৈনিন্দন জীবনে প্রতিটি কাজের প্রতি যেমন তাঁরা দায়িত্ব্যবান, তেমনি কাজগুলো করেন অত্যন্ত নিয়ম তান্ত্রিকভাবে। আর এরই ধারাবাহিকতায় তাঁরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ এবং গণিত বিভাগের গবেষণার কাজকে কতটা এগিয়ে দিয়েছেন তা স্বচক্ষে না দেখলে বোঝা যাবে না। প্রফেসর বসাক এ পর্যন্ত শতাধিক আন্তর্জাতিকমানের প্রকাশনাসহ অনেকে তাঁর তত্ত্বাবধায়নে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেছেন।

অপরদিকে, প্রফেসর মজুমদারের তত্ত্ববধায়নে প্রায় ১৫ জনের উর্দ্ধে পিএইচডি-এমফিল ডিগ্রী অর্জন করেছেন। তিনি প্রায় ৩০ এর কাছাকাছি আন্তর্জাতিকমানের প্রকাশনাসহ গণিতের ওপর অনেকগুলো বই লিখেছেন এবং অনুবাদ করেছেন। তিনি সঙ্গীতের উপরও একটি বই লিখেছেন। তিনি ম্যকারারে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়-এ যথাক্রমে সহযোগী অধ্যাপক এবং সহকারী প্রভাষক হিসেবে প্রায় পাঁচ বছর যাবত শিক্ষাদান করেছেন। প্রফেসর মজুমদার যেমন আইসিটিপি, আমেরিকা, কলকাতা এবং বাংলাদেশ ম্যাথমেটিক্যাল সোসাইটির সম্মানিত সদস্য, তেমনি প্রফেসর বসাকও বিশ্বের বিভিন্ন ফিজিক্যাল সোসাইটির ফেলো এবং সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে পেনিনসুলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট প্রদত্ত ‘প্রফেসর বসাক পুরস্কার এবং প্রফেসর বসাক বৃত্তি’ প্রদান করা হয়। ট্রাস্ট থেকে বিজ্ঞান অনুষদের এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সেরা ছাত্রদেরকে সম্মানিত করা হয়। বৃত্তির ঘোষণা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে প্রফেসর বসাক পেনিনসুলা ওয়েলফেয়ার কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানান এবং নামি-দামি শিক্ষকদের নামে বৃত্তি চালুর জন্য পেনিনসুলা ওয়েলফেয়ারের মত সমাজের বিত্তবান এবং প্রতিষ্ঠানদের প্রতি আহবান জানান। গুণী এবং আদর্শবান এসব শিক্ষকদের পুরস্কৃত করা এবং তাঁদের নামে বিভিন্ন বৃত্তি বা পুরস্কার চালু হচ্ছে জানলে ভাল লাগারই কথা। প্রফেসর বসাক এ বয়সেও পড়ালেখা, গবেষণা এবং বিভাগের অন্যান্য কাজের পেছনে যে সময়টা দেন তার সিকিভাগ সময়ও যদি আমরা দিতে পারতাম তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ইতিহাস অন্য রকম হতে পারত।

অপরদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে প্রায় ৪৫ বছর ধরেই শিক্ষকতা পেশায় ছিলেন প্রফেসর মজুমদার। শিক্ষকতার পাশাপাশি গুণী এ প্রফেসরের সঙ্গীত জগতে আছে অগাধ জ্ঞান এবং অবাধ বিচরণ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট-বড় প্রায় সব ধরনের সংগীত অনুষ্ঠান, প্রতিযোগিতা ইত্যাদি তাঁর তত্ত্বাবধায়নে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাঁর আর্শীবাদ নিয়ে আজ বাংলাদেশের সংগীত জগতে অনেকেই প্রতিষ্ঠিত। প্রফেসর মজুমদার বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির একজন সম্মানীত সদস্য এবং অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়গুলোতে তিনি অনেক সময় স্ব শরীরে উপস্থিত থেকে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়ে উৎসাহ যোগান।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিভাগের প্রফেসর অরুণ কুমার বসাক শিক্ষকতা পেশায় থাকলেও প্রফেসর সুব্রত মজুমদার অবসরে গেছেন অনেক বছর হলো। বাংলাদেশ সরকার প্রফেসর সুব্রত মজুমদার স্যারকে ইউজিসি প্রফেসর করে সম্মানিত করেছেন। প্রফেসর সুব্রত মজুমদার স্যার অবসরে গেলেও ছাত্রদের টানে বিভাগে এসে মাঝে মাঝে ক্লাস নেন যা ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ পাওয়া। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিতে আমরা অনেকে যখন ক্ষমতাসীনদের পেছনে ঘুরঘুর করি, সেখানে এ দু’জন প্রফেসরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতাসীণরা স্পর্শ বা কাছে টানতে পারেনি। তাঁরা গবেষণা এবং শিক্ষকতাকে ধ্যান-জ্ঞান মনে করে সারাটা জীবন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে সেবা দিয়ে গেছেন এবং এখনও যাচ্ছেন।

আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবসে প্রফেসর বসাক এবং প্রফেসর মজুমদারকে স্যারকে জানাই শ্রদ্ধা ও সম্মান। আমরা শিক্ষকরা যেন তাঁদের মতো গৌরবান্বিত হতে পারি-তাহলেই কেবল বিশ্ববিদ্যালয় গৌরবান্বিত হবে। গুণী এ দুই প্রফেসরের দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করছি।

লেখকঃ প্রফেসর, গণিত বিভাগ,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

 

এইচএসসি-২০২০ পরীক্ষা এবং অতীত অভিজ্ঞতা থেকে একটি প্রস্তাবনা

ডঃ শেখ মাহাতাবউদ্দিন


বাংলাদেশের একজন শিক্ষার্থীর জীবনের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর ধাপ হল এস এস সি এবং এইচ এস সি পরীক্ষা। এই দুইয়ের তুলনাতে আবার এইচ এস সি কেই বেশী গুরুত্বপূর্ণ বলতে হবে। অনেকই দ্বিমত করতে পারেন কিন্তু আমেরিকা জাপান ঘুরে এসেও এই এইচ এস সি এর ফলাফল নিয়ে আমাদের যে পরিস্থিতির শিকার হতে হয়, সেই অভিজ্ঞতা থেকে এইচ এস সি কে ছোট করে দেখা মানে বাংলাদেশের বাস্তবতা সম্পর্কে স্বল্প জানা সমার্থক শব্দই হবে।

তাই এই পরীক্ষা সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের খুব সাবধানে নিতে হবে। তা না হলে আমরা ২০০১ এস এস সি এবং ২০০৩ এইচ এস সি ব্যাচ যেভাবে বিনা দোষে আজও অপরাধবোধের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে পথ চলছি তেমনি এইচ এস সি ২০২০ ব্যচও তাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে নীতিনির্ধারকগণের করা ভুলের মাশুল গুণতে বাধ্য হবে।

২০০১ সালে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার হলে গিয়ে জানতে পারি যে আমাদের ফলাফল গ্রেডিং সিস্টেমে হবে। উহা কি বা কিভাবে ভালো গ্রেড পাওয়া যাবে তা তো অলীক কল্পনার বিষয় ছিল, এমনকি আমাদের শিক্ষকগণও গ্রেডসিট দেখে ফলাফল ঘোষণা করতে হিমসিম খেয়েছিলেন! যে পেয়েছে “এফ”গ্রেড তাকেও দেখেছি“এ+” পেয়েছে মর্মে ঘোষণা শুনে মিষ্টি বিলানোর পরেই জানতে পারল যে সে আসলে দুই বিষয়ে ফেল করেছে! একটি পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের পদ্ধতি বদলের পূর্বে আমাদের কত পরিপূর্ণ প্রস্তুতি ছিল এই ঘটনা থেকেই প্রতীয়মান হয়!

সে যাই হোক, আমরা ২০০১ সালে সারা বাংলাদেশে ৭৬ জন এ+ এবং ২০০৩ এইচ এস সি তে মাত্র ২০ জন এ+ প্রাপ্ত ব্যাচ। যে ব্যাচে বরিশাল বোর্ডে কেউই এ+ তো পায় নাই বরং যতদূর মনে পরে ৩.০০ পর্যন্ত পেয়েছিল মাত্র ৪৮৫ জনের মত! অথচ একটা বোর্ডে এরে চেয়ে বেশী স্টার মার্কস ও পেত নাম্বার সিস্টেমে!

ফলাফল যা হবার তাই হল, ২০০৭/০৮ সালের দিকে দেখি সবাই ৫.০০ স্কেলে ৪/৪.৫ কে প্রথম শ্রেণী বলে চাকুরির বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করল। আমাদের ঢাকা কলেজের বন্ধুরা শুরু করল আন্দোলন কারণ এই ৪.০০/৪.৫০ স্কেল থাকলে আমাদের ব্যাচের ৯০% শিক্ষার্থী কোন চাকুরিতে আবেদন করতেই পারবে না! আন্দোলনের দিনই আমাদের ঢাবি এর নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন এ বাংলাদেশের প্রাইমারী, সেকেন্ডারি এবং টারসিয়ারি লেভেলে রসায়ন শিক্ষা নিয়ে আয়োজন করা ওয়ার্কশপ ছিল।

সেখানে তৎকালীন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাহেব কোনভাবে জানতে পারলেন আমরা ২০০১ ব্যাচ এবং আমাদের দুই তিনজনকে জিজ্ঞেস করলেন আমাদের দাবী কি এবং এর যৌক্তিকতা কি? আমরা সব বুঝিয়ে বলার পর উনি কথা দিলেন উনি এই বিষয়টি গুরুত্ব সহ দেখবেন। উনি উনার কথা রেখেছিলেন এবং আমাদের ও আমাদের পরের ব্যাচের জন্য ৩.০০ কে প্রথম বিভাগ ফলাফলের মর্যাদা দেয়া হয়। পরিতাপের বিষয় ঐ প্রজ্ঞাপন কেবল সরকারী কাগজ হিসেবেই রয়ে গেছে অদ্য পর্যন্ত, কোথাও এই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বিজ্ঞাপন হয় না কেবল বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যতীত!

সুতরাং, একটি ব্যাচের পাবলিক পরীক্ষা বা এই সংক্রান্ত কিছু পরিবর্তনের পূর্বে আমাদের যথেষ্ট সচেতন হওয়া একান্ত কর্তব্য। পত্রিকা মারফত জানতে পারলাম পরিস্থিতি খারাপ হলে এইচ এস সি পরীক্ষা বাতিলও হতে পারে। আবার দীপ্ত টিবির লাইভে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় বললেন ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষার্থী কম হয়াতে ওদের পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। খুবই যৌক্তিক কাজ এবং পরীক্ষা বাদে গ্রেডিং করার মত অভিশাপের হাত থেকে বাঁচতে এর চেয়ে ভালো কোন মাধ্যম নেই। অর্থাৎ এইচ এস সি পরীক্ষাও নিতেই হবে এবং সেটা কার্যকর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হতে হবে।

আমি নীতিনির্ধারকগণের কেউ নই। এর পরেও নিজের ৪ বছর সক্রিয় স্কুল কলেজের শিক্ষকতা এবং ৭ বছরের অধিক বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলের শিক্ষা এবং গবেষণালব্ধ অভিজ্ঞতা থেকে একটি কার্যকর পদ্ধতি প্রস্তাব করতে চাচ্ছি। যা অন্তত ২০২০ ব্যাচকে আমাদের মত সারাজীবন ব্যাপী এক অপরিপক্ব সিদ্ধান্তের বলী হওয়া থেকে রক্ষা করতে সহযোগিতা করবে বলেই বিশ্বাস করি।

যে যুক্তিতে বা যে বিষয়ের উপর ভরসা করে আমরা এ এবং ও লেভেলের পরীক্ষার অনুমতি দিচ্ছি সেই যুক্তিকেই যদি কাজে লাগাই তবেই যৌক্তিক সমাধান সম্ভব হবে। আমরা সকলেই জানি আমাদের প্রায় সকল কলেজ গুলো সুসংগঠিত। প্রতিটি কলেজে অন্তত প্রথম এবং দ্বিতীয় বর্ষের সকল শিক্ষার্থীদের জন্য বসার ব্যবস্থা থাকছে। সুতরাং এই অবকাঠামো ব্যবহার করেই আমরা নির্বিঘ্নে পরীক্ষা নিয়ে নিতে পারি এবং তা শীত আসার পূর্বেই। পরীক্ষা নিতে আমাদের নিচের বিষয় গুলো নিশ্চিত করতে হবে-

১। সামাজিক দূরত্ব এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা: যেই কলেজের শিক্ষার্থী সেই কলেজেই পরীক্ষা দিবে ফলে এক বেঞ্চে একজন বা নিরাপদে ৪ ফিটের মত দূরত্ব রেখে বসতে পারবে। কোন অভিভাবক পরীক্ষার হলে আসবেন না, ভীর কমে যাবে।

২। প্রশ্নপত্রের বৈষম্য এবং সহজলভ্যতাঃ প্রতি বোর্ডের জন্য পূর্বের নিয়মেই প্রশ্ন তৈরি হবে। এর মধ্যে কোন সেটে পরীক্ষা হবে তা কেবল পরীক্ষার দিন সকালেই বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয় দৈবচয়ন ভিত্তিতে ঠিক করবেন এবং পরীক্ষা শুরুর ৩ ঘণ্টা পূর্বে সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউ এন ও সাহেব কে জানিয়ে দিবেন। উনার দেয়া তথ্যে পূর্বে পাসওয়ার্ড প্রটেক্ট করা ফাইলের পাসওয়ার্ড থাকবে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঐ পাসওয়ার্ড দিয়ে ফাইল খুলে প্রশ্নের প্রতিটি কপি নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিট পূর্বে প্রতিটি কলেজের অধ্যক্ষের নিকট হস্তান্তর করবেন।

৩। একই কলেজে পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থীদের অনৈতিক সুবিধা পাওয়ার বিষয়ঃ যদিও এমন একটি পয়েন্ট লিখতে নিজে শিক্ষক হিসেবে লজ্জিত। এরপরেও বাস্তবতা অস্বীকার করে চলা যাবে না, যেহেতু আমাদের এই পেশাতে ইদানিং নৈতিকতার ঘাটতি দিনের আলোর মত পরিস্কার সেহেতু পরীক্ষা নিজ নিজ কলেজে হলেও গার্ড হবেন অন্য কলেজের শিক্ষকগণ।

এর পরেও আরও কোন ব্যাবস্থা থাকলে আমরা নিতে পারি এবং নিজের অর্জিত অভিজ্ঞতা থেকে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা করতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করব। পরিশেষে বলব যেকোনো মুল্যেই এই পরীক্ষা হোক এবং আমাদের ব্যচের মত ২০২০ ব্যচকেও বলিদান থেকে বিরত থাকুক আমাদের সমাজ।

লেখকঃ সহযোগী অধ্যাপক, ফুড এন্ড নিউট্রেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

পোস্টঅফিস

 

চিঠি লিখেছে বউ আমার ভাঙা ভাঙা হাতে,,,,

একসময় চিঠিই ছিলো যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম।চিঠির পাতার এক একটা শব্দে ছিলো হাজারো আবেগ,ভালোবাসা।

এক চিঠির জন্য অপেক্ষা করতে হতো সপ্তাহ বা মাস।প্রেমিক – প্রেমিকার অব্যক্ত কথাগুলোর ঠাই মিলতো এসব চিঠিতে।

পিতামাতা ও তাদের শহুরে অবস্হানরত সন্তান- সন্ততির মধ্যকার যোগাযোগও হতো চিঠির মাধ্যমে।

এছাড়াও যোগাযোগের যাবতীয় কার্যাদি সম্পূন্ন হতো এই চিঠিতেই।

চিঠিগুলো আদান-প্রদানের জন্য পোষ্ট অফিস সর্বদা থাকতো মুখরিত ও ব্যস্ত।একই সাথে পোস্ট অফিসে অবস্থানরত ডাক- হরকরা এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি চিঠি বিলি করে বেড়াত।

কিন্তু কালের পরিক্রমায় ইন্টারনেটের বদৌলতে এবং ইমেইল,ফেসবুক,মেসেন্জার,
ইমো,হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদির সংস্পর্শে চিঠির আবেদন অনেকটাই ফুরিয়ে গেছে।ঘন্টার পর ঘন্টা এখন এসবের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।

তবে,সেই আবেগঘন হৃদয় থেকে
ঝরে পড়া অব্যক্ত কথাগুলো ঠাই পায় না, কলমের কালিতে লেখা খাম মোড়ানো কোন চিরকুটে।প্রেমিকা ও তার প্রেমিকের চিঠির পথ পানে চেয়ে থাকে না।

এছাড়াও,চিঠি পেয়ে ঘরের কোন এক কোণে চিঠির লাইন পড়তে পড়তে কল্পনার রাজ্যে প্রেমিক যুগল এখন আর বিচরণ ও করে না।

চিঠির গুরুত্ব কমে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে চিঠি বিলি করার মাধ্যম পোস্টঅফিস গুলো।
প্রায় বেশিরভাগ পোস্ট অফিসগুলোতে ঝুলতেছে তালা।ডাকহরকরাবৃন্দ তাদের পেশা ছেড়ে নাম লিখিয়েছে অন্য পেশায়।

হয়তো বাংলাদেশের মানুষ আর চিঠি লিখবে না প্রিয়জনকে।লেখা হবে না কোন গান চিঠি কেন্দ্রীক।কোন প্রেমিকা চিঠি পড়তে পড়তে হারিয়ে যাবে না তার প্রেমিককে নিয়ে কল্পনার কোন স্বর্গরাজ্যে।তবে পোস্টঅফিসগুলো সান্ত্রীর মতো হয়তো আর ও বহুকাল দাড়িয়ে থাকবে চিঠির সেই সোনালী যুগকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।

কন্যা-দিবসে-এক বাবার অনুভূতি

 

ড.মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন

সময়টা ১১ জুন, ২০০৬। ফজরের সময়… গর্ভস্থ সন্তান নড়ছে না… ভয়ে অস্থির। সিংগাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ভর্তি… দুপুর ২ঃ৪৫ মিনিটে আমার স্টাটাস চিরতরে পরিবর্তন হয়ে গেল… কন্যা সন্তানের বাবা হলাম। তখন ঝিরেঝিরে বৃষ্টি হচ্ছিল… পৃথিবীতে এসেই ফাতিমা বড় করে তাকাল… ইণ্ডিয়ান গাইনোকলজিস্ট ডা,আন্নাপুন্না দুষ্টুমি করলেন… দেখো, দেখো, পৃথিবীতে এসেই বাবার দিকে তাকাচ্ছে মেয়ে।

দৌড়াদৌড়ির জন্য বাবা’র অনুভূতি তেমন কাজ করল না, যদিও ওর জন্মের আগ থেকে ক্যাম্পাস থেকে ফেরার পথে কল্পনায় মেয়ের সাথে গল্প করতে কখন জানি বাসায় পৌছে যেতাম। সে গল্প আজ ধ্রুব সত্য হয়েই আমার চোখের প্রশান্তি৷

জন্মের একদিন পর ডাক্তার জানালো ফাতিমার জন্ডিস হয়েছে। ফটো-থ্যারাপী দিতে হবে কয়েকদিন। পরামর্শ দিল ওকে একা তাদের তত্ত্বাবধানে রেখে বাসায় চলে যেতে। ওকে ছাড়া দুজনে বাসায় ফেরার সময় শুণ্যতা অনুভব করতে লাগলাম। সকাল-বিকাল মেয়েকে দূর থেকে দেখতাম। অবশেষে ফাতিমাকে কোলে নিয়ে আমরা বাসায় ফিরলাম। দুজন থেকে হয়ে গেলাম তিনজন…

নতুন বাবা-মা, পরামর্শ নেয়ার মত কেউ পাশে নেই। দেখা গেল ও খাচ্ছে না… টয়লেট করছে না সপ্তাহখানিক ধরে… টেনশনে অস্থির… ল্যাব থেকে মাঝে মাঝে খবর নেয়া… অনলাইনে পড়াশুনা করে নতুন মা-বাবা হিসেবে ভয় দূর করতাম, আশ্বস্ত হতাম যে মেয়ের তেমন কিছু হয়নি… এসব মাতা-পিতার হওয়ার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

মেয়ে তো হাঁটছে না… না হাঁটার কারন কী-এসব নিয়েও পড়াশুনা করতাম… এক্সপেরিমেন্ট হিসেবে কাপড় শুকানোর লাঠি দিয়ে প্র্যাক্টিশ করাতাম… খুব স্বাভাবিক, কিন্তু কেন জানি একা হাঁটতে ভয় পায়। এশার সালাত আদায় করছিলাম… ফাতিমা পাশে বসে খেলছিল… সালাতের মাঝে দেখলাম ও হেঁটে সামনে দিয়ে চলে গেল! সে কোন অবলম্বন ছাড়া দাড়ায়নি কখনো। সেই রাতেই মেয়ে সারা বাসা দৌড়ে কাটালো! ওকে শুধু আমরা উৎসাহ দিলাম তাতে খুব এক্সসাইটেড হয়ে দৌড়ালো ৩০ মিনিটের মধ্যে।

হাঁটা শেখার পর ওর মা মেয়েকে প্রতিদিন পার্কে নিয়ে যেত.। বিড়াল দেখতে খুব আগ্রহ ছিল ফাতিমার… ক্যাম্পাস থেকে ফেরার পথে ডোভার কমিউনিটির সেই পার্কের ওভারব্রিজ দিয়ে নামতেই মেয়ে দৌড়িয়ে, লাফ দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরত… সে এক অন্য অনুভূতি। তারপর আমরা তিনজনে বাসায় ফিরতাম একসাথে…।

গুছিয়ে কথা বলা শিখল… নতুন নতুন গল্প বলার চেষ্টা করত… আমি টুনাটুনির গল্পটি কতভাবে রং-চং দিয়ে বিভিন্ন এংগেলে শুনাতাম… চুড়ুই পাখী ওকে প্রায়ই আকাশে বেড়াতে নিয়ে যেত… সিংহ-ইদুরের গল্প সহ কত কি…গল্প বিকৃতি করে নিজের মত করে বলতে ওস্তাদ ছিলাম আমি৷

মেয়ে এখন বড় হয়ে গেছে। জীবনের আরেকটি ক্রিটিক্যাল ধাপ পার করছে…
আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে হয়ত ১০ বছরের মধ্যে নিজেই নতুন সংসার শুরু করবে ইনশাল্লাহ। একসময় সন্তানের মা হয়ে যাবে সেই ছোট্ট মেয়েটি। এটিই জীবনের পরিক্রমা যার মধ্যে দিয়ে সবাইকে যেতে হয়।

রিসার্চকে কমিউনিটি সার্ভিস হিসেবে ধারন করার কারনে আগের মত সময় পাই না… ভুল বুঝাবুঝি হচ্ছে মেয়ের সাথে।ওর মা’কে প্রায়ই বলি -যে ইফোর্ট দেয়ার সুযোগ আল্লাহ দিয়েছেন তার কারনে বাবার জন্য সন্তানের একসময় অন্যধরনের ভালবাসা তৈরী হবে। বড় হলে ওরা একদিন ঠিকই বুঝবে, . বাবা’কে অন্যভাবে আবিষ্কার করবে ইনশাল্লাহ।

ফাতিমার মাকে একটা কথা প্রায়ই বলা হয়… দেখবে, ফাতিমা মাতৃত্ব লাভের ক্রিটিক্যাল সময়ে ওর পাশে থাকব যদি আল্লাহ ততদিন বাঁচিয়ে রাখেন…, নানাভাই হিসেবে গ্রেট হবো!

পরিবারের বড় সন্তান, কন্যা সন্তানের বাবা হওয়া সত্যিই আল্লাহর বিশেষ রহমত… কন্যা সন্তানরা মূলত শেষ বয়সের বাবা-মা’র মানসিক অবস্থা বুঝতে পারে। ছেলে সন্তানগুলো সাধারনত বাবা-মা’র কাছে অধরা হয়ে যায়…

লেখক
ড.মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন
সহযোগী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ
ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি।
নির্বাহী পরিচালক,
বায়োমেডিকেল রিসার্চ ফাউণ্ডেশন, বাংলাদেশ