ড. ইউনূসের জীবনী ও আমাদের নেতা

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও ১৯৬১ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭১ সালে তিনি ভ্যান্ডবিল্ট ইউনিভার্সিটি গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম ইন ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (জিপিইডি) থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি নাগরিক কমিটি গঠন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গড়ে তোলেন। সেখানে অন্য বাঙালিদের সঙ্গে বাংলাদেশ তথ্যকেন্দ্র পরিচালনা করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশের দারিদ্র্যদূরীকরণে উদ্যোগী হন।

পরে দারিদ্র্যদূরীকরণে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে জামানতবিহীন ক্ষুদ্রঋণের ধারণাকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেন তিনি। পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানিত পুরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয় নোবেল পুরস্কারকে। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে তার নিরলস লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সর্বোচ্চ এই সম্মান পেয়েছেন। এজন্য ২০০৬ সালে তিনি এবং তারই প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।

এ পুরস্কার ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’, ‘কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল’সহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২৮ জুন তার জন্মদিনকে গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বৈশ্বিকভাবে ‘সামাজিক ব্যবসা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।

এখন পর্যন্ত দারিদ্র্যদূরীকরণে ক্ষুদ্রঋণ বা সামাজিক ব্যবসার এই মডেল পৃথিবীর ৪০টির বেশি দেশে ১৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান ধারণ করে চলেছে। এ ছাড়া পৃথিবীর ৮০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে তার নামে ‘ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে ড. ইউনূসের চিন্তা, কাজ, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও তার জীবনাদর্শ নিয়ে গবেষণা হয়। এখন পর্যন্ত ২৪টি দেশের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ৬০টির মতো সম্মানসূচক ডিগ্রি পেয়েছেন। ১৩০টির বেশি সম্মাননা পেয়েছেন ৩০টির বেশি দেশ থেকে। কানাডা ও জাপানের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে ড. ইউনূসের জীবনী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গত কয়েক দশকে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক, গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ উদ্যোগ, গ্রামীণ সামগ্রী, গ্রামীণ শক্তিসহ ৫০টির বেশি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস: নানা অপবাদ ও মামলার যন্ত্রণায় কেটেছে গত ১৫ বছর

পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানিত পুরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয় নোবেল পুরস্কারকে। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে তার নিরলস লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সর্বোচ্চ এই সম্মান পেয়েছেন। এরপর বিশ্ব জুড়ে তাকে সম্মানিত করা হয়। তবে গত ১৫ বছর খুব একটা সুখকর ছিল না বিশ্বখ্যাত এই অর্থনীতিবিদের।

আওয়ামী লীগ সরকারের টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনকালে সরকারের শীর্ষপর্যায় থেকে নানা বিষয়ে অপমান, অপদস্থ ও যন্ত্রণা সইতে হয়েছে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। সদ্য পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে নিয়ে নানা সময় ‘রক্তচোষা’ ও ‘সুদখোর’ বলে কটূক্তি করেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা বাতিল হলে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। এমনকি পদ্মা সেতু চালুর পর শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘ড. ইউনূসকে পদ্মা নদীতে দুটি চুবানি দিয়ে সেতুতে তুলে দেওয়া উচিত।’

গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে ড. ইউনূসকে সরিয়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে গেলেও হেরে যান তিনি। এরপর গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ তছরুপ, শ্রম আইনের বিধি না মানাসহ নানা অভিযোগে একের পর এক মামলার বিষয়ে ড. ইউনূস বরাবরই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তাকে হয়রানির কথা বলে আসছিলেন।

তিনি বলেছেন, তার প্রতিষ্ঠিত অর্ধশতাধিকের বেশি প্রতিষ্ঠানে তার কোনো মালিকানা নেই এবং এসব প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি কোনো লভ্যাংশ নেন না। এসব প্রতিষ্ঠানের সবই মানুষের ও প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের কল্যাণে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় গত ২ জুন ড. ইউনূসকে ঢাকার সংশ্লিষ্ট বিশেষ জজ আদালতের এজলাসে লোহার খাঁচার ভেতরে গিয়ে দাঁড়াতে হয়। ওইদিন তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মহাকাব্যে কিছু দেবদেবী থাকে যারা অভিশপ্ত। তারা যাদের ওপর অভিশাপ দেয় তারা অভিশপ্ত জীবনযাপন করে। আমিও মনে হয় এ রকম মহাকাব্যের অংশ হয়ে গেছি। কোনো দেবদেবী আমার ওপর অসন্তুষ্ট হয়েছে, আমাকে অভিশাপ দিয়েছে। সেই অভিশাপের কারণে আজকে এখানে হাজির হয়েছি। লোহার খাঁচায় দাঁড়ানো অভিশপ্ত জীবনের অংশ।’

একই মামলায় ১২ জুন আবারও লোহার খাঁচায় গিয়ে হাজিরা দিয়ে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘যত দিন কোনো ব্যক্তি অপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত না হচ্ছেন, তত দিন নিরপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবেন। একজন নিরপরাধ নাগরিককে শুনানির সময় লোহার খাঁচার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে, এটা আমার কাছে অত্যন্ত অপমানজনক। এটা গর্হিত কাজ। একটা সভ্য দেশে কেন একজন নাগরিককে মামলার শুনানির সময় পশুর মতো দাঁড়িয়ে থাকতে হবে?’ এ মামলায় গত ১৫ জুলাই সর্বশেষ হাজিরা দেন তিনি। তবে, ওই দিন লোহার খাঁচায় হাজিরা দিতে না হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেন তিনি। তাড়াহুড়ো বিচার নিয়ে ড. ইউনূস বলেছিলেন, ‘কিছু একটার শিকার হচ্ছি তো, এটা পরিষ্কার। এটা প্রতিহিংসা বলেন, বিদ্বেষ বলেন সবকিছু মিলিয়েই।’

এ ছাড়া শ্রম আদালত ও শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে জামিন নিতে ও হাজিরা দিতে গিয়েও মামলার যন্ত্রণার কথা প্রায়ই সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করতেন ড. ইউনূস। গত ৪ জুলাই এ মামলায় হাজিরা দিয়ে জামিন নিয়েছিলেন তিনি।

শ্রম আইনের মামলায় সাজা বাতিল : শ্রম আইনের মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের ছয় মাসের দণ্ড ও জরিমানা বাতিল করে গতকাল রায় দিয়েছে ঢাকার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) এমএ আউয়াল চারজনের আপিল মঞ্জুর করে তাদের বেকসুর খালাস দিয়ে এ রায় দেন।

আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বিচারিক আদালতের রায়টি বাতিল করে খালাস দিয়েছে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল।’

গত ১ জানুয়ারি ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত এক রায়ে ড. ইউনূস, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেয়। গত ২৮ জানুয়ারি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল তাদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে তাদের জামিন দেয়। একই সঙ্গে আপিল নিষ্পত্তি পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের অংশটুকু স্থগিত করে ট্রাইব্যুনাল। হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে বাদীপক্ষ কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। গত ৫ ফেব্রুয়ারি চারজনের দণ্ড স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল দেয় হাইকোর্ট। একই সঙ্গে চারজনকে বিদেশে যেতে হলে আপিল ট্রাইব্যুনালকে অবহিত করতে হবে বলে আদেশ দেয় আদালত। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৮ মার্চ হাইকোর্ট রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দিয়ে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশটিকে (সাজা স্থগিত) বাতিল করে। গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে হাইকোর্টের এই পূর্ণাঙ্গ রায়ে মামলাটি যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। ১৪ আগস্ট এ মামলায় ড. ইউনূসের আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল।

ড. ইউনূসসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিল-সংক্রান্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলা রয়েছে। এটি করা হয় গত বছরের ৩০ মে। এ মামলায় গত ২৯ জানুয়ারি ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। এরপর ৩ মার্চ ড. ইউনূসসহ অন্যরা এ মামলায় বিচারিক আদালত থেকে জামিন পান। গত ১২ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ বিচার শুরুর আদেশ দেয়। সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে থাকা এ মামলাটির কার্যক্রম বাতিল চেয়ে গত ৮ জুলাই হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন ড. ইউনূস। গত ২৪ জুলাই হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ এ আবেদন খারিজ করার পাশাপাশি মামলাটির বিচারকাজ এক বছরের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয় আদালত।

গতকাল ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নিম্ন আদালতে এ মামলাটি এখনো শুনানির প্রাথমিক ধাপে আছে। আমরা শিগগির আপিল বিভাগে আপিল করে মামলার কার্যক্রম বাতিল চাইব।’

শিক্ষার্থীদের কীভাবে প্রত্যাখ্যান করি : ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম প্রস্তাব করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেই প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন শান্তিতে নোবেলবিজয়ী ড. ইউনূস।

এ প্রসেঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যে শিক্ষার্থীরা এত ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তারা যখন এই কঠিন সময়ে আমাকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন, তাহলে আমি কীভাবে তা প্রত্যাখ্যান করি?

বিবিসিকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে ফ্রান্সের প্যারিসে আছেন। তিনি শিগগিরই ঢাকা ফিরবেন বলে ইউনূস সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক লামিয়া মোরশেদ বিবিসিকে জানিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরে বঙ্গভবন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে অনতিবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে।

এরপর ভোররাতে এক ভিডিওতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

সেখানে নাহিদ বলেন, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সর্বজন গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। তিনি ছাত্র-জনতার আহ্বানে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে এই গুরুদায়িত্ব নিতে সম্মত হয়েছেন।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, তারা সকালের মধ্যেই এই সরকার গঠনের প্রক্রিয়া দেখতে চান। রাষ্ট্রপতির কাছে আহ্বান থাকবে, দ্রুত সময়ের মধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হোক।

মৃত্যুর আগে যা লিখেছিলেন পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদ

রংপুরে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয় কমিটির সদস্য ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২২) নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহত আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা আন্দোলন সমন্বয় কমিটির সদস্য ছিলেন।

পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার একদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্টেটাস দিয়েছিলেন আবু সাঈদ। যেখানে তিনি গণ অভ্যুত্থানে শহীদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শামসুজ্জোহাকে স্মরণ করেন। তিনি লিখেন, ‘স্যার! এই মুহূর্তে আপনাকে ভীষণ দরকার স্যার! আপনার সমসাময়িক সময়ে যারা ছিল সবাই তো মরে গেছে, কিন্তু আপনি মরেও অমর। আপনার সমাধি, আমাদের প্রেরণা। আপনার চেতনায় আমরা উদ্ভাসিত।’

শিক্ক্ষকদের ইঙ্গিত করে আবু সাঈদ বলেন, ‘প্রজন্মে যারা আছেন, আপনারাও প্রকৃতির নিয়মে একসময় মারা যাবেন। কিন্তু যতদিন বেঁচে আছেন মেরুদণ্ড নিয়ে বাচুঁন। নায্য দাবিকে সমর্থন জানান, রাস্তায় নামুন, শিক্ষার্থীদের ঢাল হয়ে দাঁড়ান। প্রকৃত সম্মান এবং শ্রদ্ধা পাবেন। মৃত্যুর সাথে সাথেই কালের গর্ভে হারিয়ে যাবেন না। আজন্ম বেঁচে থাকবেন শামসুজ্জোহা হয়ে। অন্তত একজন ‘শামসুজ্জোহা’ হয়ে মরে যাওয়াটা অনেক বেশি আনন্দের, সম্মানের আর গর্বের।’

জানা গেছে, এদিন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের লালবাগ এলাকা থেকে ক্যাম্পাসের দিকে যায়। এরপর ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ফলে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বাধে। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে রোবির ইংরেজি আবু সাঈদ নিহত হন।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‌‌‌‌‌‌‌‘কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। তারা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। অনেক পুলিশ সদস্য এতে আহত হয়েছেন। একজন মারা গেছে বলে শুনেছি তিনি কীভাবে মারা গেছেন তা বলতে পারছি না।’

উল্লেখ্য, চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা বা নাতিপুতি’ বলা হয়েছে অভিযোগ করে রোববার রাত থেকে প্রতিবাদ শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীজুড়ে। এবার সেই আন্দোলন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলন: রণক্ষেত্র রাজধানীর মহাখালী

রাজধানীর মহাখালীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ বক্সের সামনে দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো মহাখালী এলাকা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাফিক-গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) এ এস এম হাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, মহাখালী ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেখা গেছে। মোটরসাইকেল দুটি পুলিশের কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’

প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তারা ধরে নিয়েছেন ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ তাদেরকেই বলা হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে রোববার মধ্যরাত থেকে আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

গতকাল সোমবার দুপুর থেকে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ। বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলা সংঘর্ষে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। রাত ১০টার পর আন্দোলনকারীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং সারা দেশের সব পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে তাদের সমর্থনে রাস্তায় নামার আহ্বান জানান।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে রাজধানীর ১৫-২০টি স্থানে একযোগে সড়ক অবরোধ শুরু করেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অবরোধে গোটা রাজধানী অচল হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়াসহ দেশের প্রায় সর্বত্র শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে এসেছেন। দুপুরের পর থেকে ঢাকার সায়েন্সল্যাব এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়।

শেষ খবর পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়েছেন।

বিভিন্ন মেয়াদে বশেমুরবিপ্রবির ৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, প্রক্টরকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি, ইট দিয়ে জুনিয়রকে গুরুতর আঘাত ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্যের ঘটনায় বিভিন্ন মেয়াদে ৪ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও ১ শিক্ষার্থীকে জরিমানা এবং ১ শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট ২ বছরের জন্য স্থগিত করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) প্রশাসন।

গত ১২ ও ১৩ জুন রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত আলাদাভাবে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কার ও জরিমানা করার বিষয়টি প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তি গুলোতে বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের ১০ জুন অনুষ্ঠিত আলোচ্যসূচি-১, ২ ও ৪ অনুযায়ী যথাক্রমে জুনিয়রকে ইট দিয়ে আঘাতের ঘটনায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ মোল্লাকে ৪ সেমিস্টার বহিষ্কার ও অতিরিক্ত বিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দানের ঘটনায় বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী উৎসব কুমার গাইনকে সাময়িক বহিষ্কার করে এ বিষয়ে পরবর্তীতে খতিয়ে দেখার জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়ে।

অন্যদিকে বশেমুরবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটি ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের রুম বিষয়ক দ্বন্দ্বে বশেমুরবিপ্রবি প্রক্টর ড. মোঃ কামরুজ্জামানকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করার কারণে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান (মুগ্ধ) কে ২ সেমিস্টার বহিষ্কার ও দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, আইন বিভাগ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ জাকারিয়াকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার ও ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়াও একই ঘটনায় আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো: ইমন হোসেনকে ১০০০ টাকা জরিমানা এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থী হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকি প্রদানের কারণে একই বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইজাজুর রহমানকে দুই বছরের জন্য সার্টিফিকেট স্থগিত ও কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ক্ষমা চাওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। একই সাথে এই ঘটনায় শাস্তি প্রাপ্ত প্রথম তিন জনকে ক্ষমা চেয়ে মূচলেকা প্রদান করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

একই সাথে অন্য আরেক বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কটুক্তির বিষয়ে গত ১০ জুন ২০১৪ শৃঙ্খলা বোর্ড সভার ২ নম্বর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে সভাপতি হিসেবে ছাত্র উপদেষ্টা ডক্টর শরাফত আলী, সদস্য হিসেবে সহকারী প্রক্টর মো. হুমায়ুন কবির এবং সদস্য সচিব হিসেবে ল-সেলের সেকশন অফিসার সাজিদুর রহমানকে রাখা হয়েছে।

এমপি আজিমের মরদেহ উদ্ধার হয়নি: কলকাতা পুলিশ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে চিকিৎসার জন্য গিয়ে নিখোঁজের ৮ দিন পর কলকাতার একটি এলাকায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে আনারের মরদেহ উদ্ধার হয়নি বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ।

বুধবার (২২ মে) বিকেলে নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনস থেকে বেরিয়ে কলকাতা পুলিশের এক মুখপাত্র সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

ভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতার যে ফ্লাটে এমপি আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে, সেখানে তার মরদেহ পাওয়া যায়নি।

পুলিশের ওই মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশের এমপি আনোয়ারুল আজীম ব্যক্তিগত কারণে এখানে এসেছিলেন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। ১৮ তারিখে বরাহনগর থানায় একটি মিসিং ডায়েরি করেন তার একজন জানাশোনা লোক গোপাল বিশ্বাস। তার ভিত্তিতে আমরা তদন্ত শুরু করি।

পুলিশের ধারণা, দুই দেশের দুষ্কৃতকারীরা ঘটনায় জড়িত। ওই আবাসনের ৫৬ নং রুমে তাকে হত্যার পর টুকরো করা হয়েছে এবং সেখান থেকে মরদেহের টুকরো কোথাও ‘গায়েব করে ফেলেছে’ দুষ্কৃতকারীরা। পুলিশ নিশ্চিত যে, এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। #খবর সংযোগ

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অকৃতকার্য ৫১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী

ঢাকা: চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় ২ হাজার ৯৬৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। ৫১ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষার্থীই পাস করেনি।

আজ ১২ মে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রাপ্ত ফলাফল থেকে জানা যায় এবার মোট ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। সারা দেশের মোট ৩ হাজার ৭৯৯ টি কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৮৬১ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশ নেয়।

বিগত ২০২৩ সালে দেশের মোট ৩ হাজার ৮১০ টি কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৭১৪ টি মোট প্রতিষ্ঠানে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মোট ২ হাজার ৩৫৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। ফেল করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল ৪৮ টি।

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮১.৩৮ শতাংশ

ঢাকা : মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট ও সমমানের পরীক্ষায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পাসের হার ৮১ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং ৪,০৭৮ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।

জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে ২ হাজার ১৪১ জন ছাত্র এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্রীর সংখ্যা ১ হাজার ৯৩৭ জন।

পাসের হারের দিক থেকে যশোর শিক্ষা বোর্ড ৯২ দশমিক ৩৩ শতাংশ পাসের হার নিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে এবং সিলেট বোর্ডে পাসের হার সর্বনি¤œ ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

অন্যান্য বোর্ডে পাসের হার হলো- রাজশাহী বোর্ডে ৮৯ দশমিক ২৬ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৮৫ শতাংশ, ঢাকা বোর্ডে ৮৩ দশমিক ৯২ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডে ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৭৯ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং দিনাজপুর বোর্ডে ৭৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছে।

মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৯.৬৬ শতাংশ

ঢাকা : চলতি বছর মাদ্রাসা বোর্ডের দাখিল পরীক্ষায় পাসের হার ৭৯.৬৬ যা ২০২৩ সালে ছিল ৭৪ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ছিল ৮২ দশমিক ২২ শতাংশ।

এ বছর মোট ১৪ হাজার ২০৬ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৪৬৭ জন ছাত্রী আর ৬ হাজার ৭৩৯ জন ছাত্র।

পাসের হারের দিক থেকে যশোর শিক্ষা বোর্ড ১১টির মধ্যে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে, এই শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং সিলেট বোর্ডে পাসের হার সবচেয়ে কম, ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

অন্যান্য বোর্ডের পাসের হার হলো – রাজশাহী বোর্ডে ৮৯ দশমিক ২৬ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৮৫ শতাংশ, ঢাকা বোর্ডে ৮৩ দশমিক ৯২ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডে ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৭৯ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং দিনাজপুর বোর্ডে ৭৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছে।

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১,৮২,১২৯ জন

ঢাকা : চলতি বছরে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ৮৩ হাজার ৩৫৩ জন ও ছাত্রী ৯৮ হাজার ৭৭৬ জন।

গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন, ২০২৪ সালে জিপিএ-৫-এর সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। অর্থাৎ এ বছর জিপিএ-৫-এর সংখ্যা কমেছে ১,৪৪৯ জন।

এবার ঢাকা বোর্ডে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৯ হাজার ১৯০ জন, রাজশাহী বোর্ডে ২৮ হাজার ৭৪ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ১২ হাজার এক’শ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে, যশোর বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৭৬১ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ১০ হাজার ৮২৩ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করেছে, বরিশাল বোর্ডে ৬ হাজার ১৪৫ জন, সিলেট বোর্ডে মোট ৫ হাজার ৪৭১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে, দিনাজপুর বোর্ডে ১৮ হাজার ১০৫ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে, ময়মনসিংহে ১৩ হাজার ১৭৬ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। মাদ্রাসা বোর্ডে মোট ১৪ হাজার ২০৬ জন জিপিএ -৫ পেয়েছে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে মোট ৪ হাজার ৭৮ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।

এবার অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ জন। এর মধ্যে ৯ লাখ ৮৮ হাজার ৭৯৪ জন ছাত্র ও ১০ লাখ ২৪ হাজার ৮০৩ জন ছাত্রী।

এদের মধ্যে মোট উত্তীর্ণ হয়েছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। পাসের হার ৮৩ দশমিক ৪ শতাংশ। মোট জিপিএ-৫ এর মধ্যে ৮৩ হাজার ৩৫৩ জন ছাত্র ও ৯৮ হাজার ৭৭৬ জন ছাত্রী।

এ বছর সকল শিক্ষাবোর্ডে উত্তীর্ণ মোট ছাত্রের চেয়ে ৫৯ হাজার ৪৭ জন বেশী ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ছাত্রের চেয়ে ১৫ হাজার ৪২৩ জন বেশী ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।

নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ মোট ছাত্রের চেয়ে ৯৭ হাজার ৯৭২ জন বেশী ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ছাত্রের চেয়ে ১৪ হাজার ৪৯১ জন বেশী ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।