রাবি উপাচার্যকে ইউজিসির তলব, প্রাধ্যক্ষ পরিষদের নিন্দা

 

রাবি প্রতিনিধি


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম. আব্দুস সোবহানকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক তলবের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক পার্থ বিপ্লব রায় স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে প্রাধ্যক্ষ পরিষদ বলেন, ‘রাবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযােগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরী কমিশন ( ইউজিসি ) কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি আগামী ১৭ ই সেপ্টেম্বর যে গণশুনানির আহবান করেছে তা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ ১৯৭৩ এর সাথে সাংঘর্ষিক ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাধ্যক্ষ পরিষদ আজ মঙ্গলবার (১৫ ই সেপ্টেম্বর) সভা থেকে ইউজিসি কর্তৃক গৃহীত ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের সাথে সাংঘর্ষিক গণশুনানি উদ্যোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহবায়ক ও শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক পার্থ বিপ্লব রায় বলেন, আমরা হল প্রাধ্যক্ষরা মিলে মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে একটি আলোচনা সভা করি। সভা শেষে প্রাধ্যক্ষ পরিষদ ইউজিসি কর্তৃক নেয়া সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

রাবি প্রতিনিধি


ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) উপ-পরিচালক (সঙ্গীত) রকিবুল হাসান রবিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। বুধবার সকালে নগরীর মতিহার থানায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা মামলাটি দায়ের করেছেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১০ সালে তার মেয়ে ১২ বছর বয়সে রকিবুল হাসানের কাছে গান শিখতেন।

রবিন বাড়িতে এসে গান শেখাতেন। রকিবুল পরিবারের সদস্যদের কাছে বিশ্বস্ত হয়ে উঠেন। এই সুযোগ ব্যবহার করে তার মেয়ের ওপর যৌন নির্যাতন করেছেন রকিবুল। তখন ভয়ভীতি দেখিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন। সে সময় ভুক্তভোগী এ বিষয়ে বাবা-মাকে বলতে সাহস করেননি।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, এখন তার মেয়ে ভারতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। কয়েক মাস আগে দেশে ফিরে তার মেয়ে জানতে পারেন, রকিবুল আরও অনেক মেয়ের সঙ্গে অনৈতিক কাজ করেছেন। এরপরই ভুক্তভোগীরা তাদেরকে (বাবা-মা) বিষয়টি বলেছেন। তাদের যেন কোনো মেয়ের ক্ষতি না করতে পারে। এছাড়া এ ঘটনার অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিত। এ ধরনের উপলব্ধি থেকেই তিনি এ প্রতিবাদ করছেন।

এদিকে গত ২৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেল তদন্ত করছে। গত ২ সেপ্টেম্বর উপাচার্য দপ্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলে পাঠানো অভিযোগ বিষয়ে ৯ সেপ্টেম্বর একটি সভা হয়েছে।

যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেলের সভাপতি অধ্যাপক রেজিনা লাজ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা প্রথম সভা করেছি। ঘটনাটি অনেক আগের। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করার চেষ্টা করছি

রাবির উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধি ১৪৭ কোটি, মেয়াদ বাড়লো আরও দু’বছর

রাবি প্রতিনিধি


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উন্নয়ন প্রকল্পে খরচ বাড়লো ১৪৭ কোটি ১২ লাখ টাকা। এবার পাঁচটি প্রকল্প মোট ৫৩৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ খরচের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

২০২০-২১ অর্থবছরের অষ্টম একনেক সভায় ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (প্রথম সংশোধন)’ শীর্ষক এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪৭ কোটি ১২ লাখ টাকা। পুরোটাই সরকার বহন করবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক খন্দকার শাহরিয়ার রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দশনা পাওয়া মাত্রই খুব দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামগত উন্নয়নের কাজ শুরু হয়ে যাবে।

এর আগে ক্রমবর্ধমান চাহিদার জন্য শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য ৩৬৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর একনেকে অনুমোদিত হয়। গত বছরের জুন পর্যন্ত ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি ৪৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা। বর্তমানে রেট সিডিউলের পরিবর্তন ও কিছু কারণে প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১৪৭ কোটি ১২ লাখ টাকা বাড়িয়ে এখন মোট ৫১০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে প্রকল্পটির মেয়াদও বাড়ছে দুই বছর; অর্থাৎ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত।

প্রকল্পটি সংশোধনের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ ও পূর্ত সংশ্লিষ্ট মোট ১৩টি অঙ্গের মধ্যে ৪টি অঙ্গের কাজের জন্য ২০১৭ সালে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি ওই নির্মাণ কাজের ড্রয়িং, ডিজাইন ও ব্যয় প্রাক্কলন পুনঃনির্ধারণ করার পরিপ্রেক্ষিতে মূল অনুমোদিত ব্যয়ের তুলনায় বেশকিছু অঙ্গের ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া মূল প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসের পিডব্লিউডি রেট সিডিউল অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে ২০১৮ সালের রেট সিডিউল কার্যকর হওয়ায় প্রকল্পের মোট ব্যয় বেড়েছে। গত বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি ৪৮ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ১৩ দশমিক ২৩ শতাংশ।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে- দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল, শহীদ এইচ এম কামরুজ্জামান হল, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা হল, শিক্ষক কোয়ার্টার ভবন, বিজ্ঞান ভবন ও শেখ রাসেল মডেল স্কুল ভবন নির্মাণ, কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তন মেরামত ও সংস্কার, চতুর্থ বিজ্ঞান ভবন, কলা ভবন ও কৃষি অনুষদ ভবন ও চারুকলা ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, সবুজ সীমানা প্রাচীর, ড্রেন ও কালভার্ট এবং যন্ত্রপাতি ও বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে নিরাপত্তায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন।

সভা শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে সভার বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। একনেক সভায় অংশ নেন- কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি; মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন প্রমুখ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


নিয়ম বহির্ভূতভাবে পেনশন আটকে রাখার অভিযোগেরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আব্দুস সোবহানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন সাবেক ভিসি অধ্যাপক মু. মিজানউদ্দীনের স্ত্রী মোমেনা জীনাত।

বাদি পক্ষের আইনজীবী নুরে কামরুজ্জামান ইরান জানান, ‘মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী যুগ্ম জেলা জজ আদালত-১ এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আদালতের বিচারক জয়ন্তী রাণী মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ১৯ অক্টোবর বিবাদীদের আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন। মামলার অপর পাঁচ আসামির মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই রেজিস্ট্রার, কোষাধ্যক্ষ, রাবির শেখ রাসেল স্কুলের বর্তমান সভাপতি ও অধ্যক্ষ।’

আইনজীবী আরও জানান, ‘মামলার বাদি মোমেনা জীনাত রাবির শেখ রাসেল স্কুলের অধ্যক্ষ ছিলেন। অবসর গ্রহণের পর নিয়ম বহির্ভূতভাবে তার পেনশনের ৪৫ লাখ ৬১ হাজার ৯৪৫ টাকা আটকে রাখা হয়েছে। পাওনা টাকা আদায়ে তিনি এ মামলা দায়ের করেছেন।’

সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষক, থানায় জিডি

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ৯ জন শিক্ষক। গত(রবিবার) রাতে নগরীর মতিহার থানায় জিডি করেন তারা।

জিডি সূত্রে জানা গেছে , গত ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ডিনস্ কমপ্লেক্সের শিক্ষক লাউঞ্জে আলোচনা করছিলেন। এসময় তাদের কাছে খবর আসে মামুন নামে একজন বহিরাগত ও রাবি স্কুলের সহকারী শিক্ষক সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে কিছু সংখ্যক বহিরাগত ডিনস্ কমপ্লেক্সের বাইরে থাকা শিক্ষকদের গাড়িগুলো গোপনে ভিডিও ধারণ করছে। পরে শিক্ষকরা উপস্থিত হলে তারা শিক্ষকদের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে।

নিরাপত্তা চাওয়া শিক্ষকরা হলেন- ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, ম্যানেজমেন্ট বিভাগে অধ্যাপক আলী রেজা, সংগীত বিভাগের অধ্যাপক অসিত রায়, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মুজিবুল হক আজাদ খান, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তরিকুল হাসান, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান, নাট্যকলার ফারুক হোসাইন, ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক একরাম উল্যাহ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষকদের মুখপাত্র অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমরা বর্তমান উপাচার্যের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বেশ কয়েকটি অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি বরাবর দিয়েছি। ইউজিসি অভিযোগ আমলে নিয়ে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর উন্মুক্ত গণশুনানির আয়োজন করেছে। রাবি স্কুলের সহকারী শিক্ষক সাদ্দাম হোসেন উপাচার্যের আর্শীবাদপুষ্ট বলে ক্যাম্পাসে প্রচার আছে। আমাদের ধারণা শুনানির সঙ্গে এর কোনও যোগসূত্র থাকতে পারে।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।

প্রসঙ্গত, নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করা নয়জন শিক্ষকই রাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মিজানউদ্দিন পন্থী। তারা বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে অপসারণ দাবি করে আসছিলেন। ‘দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষক সমাজ’র ব্যানারে তারা বর্তমান প্রশাসনের ‘অনিয়মের’ বিচার চেয়ে আন্দোলন করছিলেন।

রাবি উপাচার্য না আসলেও তদন্ত প্রতিবেদন দেবে ইউজিসি

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) একটি তদন্ত দল। অভিযোগের জবাব দিতে নিজে থেকেই তদন্ত দলকে একটি উন্মুক্ত শুনানির আয়োজন করতে বলেন রাবি উপাচার্য।

প্রস্তাবিত তারিখ অনুযায়ী আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন র্নিধারণ করা হলে শুনানিকে স্বাগত জানিয়ে ইউজিসিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এম সোবহান। যদিও শুনানির কয়েক দিন আগে সুর পাল্টেছেন এম সোবহান।

এখন তিনি দাবি করছেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত করার ক্ষমতা ইউজিসির নেই। তবে ইউজিসি বলছে, তিনি শুনানিতে না আসলেও তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে। তার দেয়া চিঠিকেই তার বক্তব্য হিসেবে নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন সরকারের কাছে পাঠানো হবে।

জানা যায়, রাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কমিশনে প্রাপ্ত বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে সম্প্রতি একটি কমিটি করে ইউজিসি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার কাছ থেকে লিখিত ব্যাখ্যা চাইলে লিখিতভাবে সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা দেয়া অসম্ভব দাবি করে এ বিষয়ে ইউজিসিকে উন্মুক্ত শুনানি আয়োজনের আহ্বান জানান তিনি। তার এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইউজিসি শুনানি আয়োজন করলেও এখন অন্য কথা বলছেন রাবি উপাচার্য। বর্তমানে তদন্ত কমিটির এখতিয়ার নিয়েই প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন তিনি।

গত বুধবার অনেকটা স্ববিরোধী অবস্থান নিয়েই ইউজিসির তদন্ত কমিটিকে কর্তৃত্ববিহীন আখ্যা দিয়ে এর কার্যক্রম বন্ধের জন্য ইউজিসি চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। চিঠিতে রাবি উপাচার্য দাবি করেন, ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের কোনো ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে দেয়া হয়নি। আইন অনুযায়ী তদন্ত কমিটির সদস্যদের মর্যাদা উপাচার্যের মর্যাদার এক ধাপ ওপরে হওয়া বাঞ্ছনীয়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে ইউজিসির একজন সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও উপাচার্যের পদমর্যাদার সমমর্যাদাসম্পন্ন ইউজিসির দুজন সদস্য নিয়ে কমিটি গঠিত হয়েছে। যা শুধু বেআইনিই নয়, বরং এর মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাও খর্ব করা হয়েছে।

যদিও ইউজিসি বলছে, ১৯৭৩ অধ্যাদেশের ক্ষমতাবলেই তারা রাবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত করছে। কমিশন বলছে, অধ্যাদেশের ৫-এর আই ধারা অনুযায়ী, আইন ও সরকার প্রদত্ত কাজে কমিশন ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবে। অধ্যাদেশের সে ক্ষমতাবলেই ইউজিসির রাবি উপাচার্যের অনিয়ম তদন্ত করছে। এছাড়া ইউজিসি বলছে, সিনিয়র সহকারী পরিচালক পদমর্যাদার কোনো কর্মকর্তা তদন্ত কমিটিতে নেই। ওই কর্মকর্তা শুধু সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

অনলাইনে রাবি শিক্ষার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা দিতে হবে

রাবি টুডে


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা দিতে হবে অনলাইনে। করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ ও মাস্টার্সের মৌখিক পরীক্ষা অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের অনার্স ও মাস্টার্সে ভর্তি প্রক্রিয়াও অনলাইনে সম্পন্ন করা হবে।

সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এম এ বারী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনার্স থিসিস, মাস্টার্স থিসিস, এমফিল/পিএইচডি থিসিস মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করা যাবে। এছাড়া যেসব অনুষদের অনার্স ৪র্থ বর্ষের প্রজেক্ট প্রেজেন্টেশন এবং মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়নি, তাদের মৌখিক পরীক্ষা অনলাইনে এবং তবে শিক্ষার্থী সংখ্যা কম হলে উপস্থিতির মাধ্যমে নেওয়া হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, করোনা-কালীন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে যেসব এমফিল/পিএইচডি ফেলোর রেজিস্ট্রেশন/পুনঃভর্তি/সেমিনার প্রদানের সময় উত্তীর্ণ হয়েছে, তারা বর্ণিত কাজসমূহ সম্পাদন করতে পারবেন। তবে এ অনলাইন কার্যক্রম কেবল করোনাকালীন সময়ের জন্য প্রয়োজ্য বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে গত ১৮ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা ও আবাসিক বন্ধের ঘোষণা দেয় রাবি প্রশাসন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধ হলে থামছে না চুরি!

ওয়াসিফ রিয়াদ, রাবি প্রতিনিধি


করোনাভাইরাসের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস ধরে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোও।

এই বন্ধকালীন সময়েও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শের-ই-বাংলা একে ফজলুল হক হলের এক শিক্ষার্থীর তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে চুরির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী মাহফুজুর রহমান ওই হলের ৩৩৩ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান ও হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক পার্থ বিপ্লব রায়কে অভিযোগ করে।

জানতে চাইলে মাহফুজুর রহমান বলেন, দীর্ঘ পাঁচ মাস পর হলে এসে দেখি রুমের ভেতরে সব এলোমেলো। ট্রাংক ভাঙ্গা, ব্যাগ, টেবিলে থাকা জিনিসপত্র এলোমেলো। আমার তেমন মূলবান কিছু না থাকায় ঘর থেকে শুধু টেবিল ঘড়িটা নিয়ে গেছে। রুমে থাকা অন্য শিক্ষার্থীদেরও চুরি হয়েছে বলে আশঙ্কা করছি।

তিনি বলেন, রুমে তালা থাকা সত্ত্বেও চুরির ঘটনা ঘটছে। হলে থাকা প্রহরীরা থেকেও নেই। হল প্রশাসন নিশ্চুপ! প্রশাসন শুধু শান্ত্বনাই দিয়ে যাচ্ছে।

এঘটনায় জানতে চাইলে শের-ই-বাংলা একে ফজলুল হক হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক পার্থ বিপ্লব রায় বলেন, আমাদের এই হল অন্যান্য হলগুলো থেকে আলাদা। হলটি অনেক পুরাতন এবং নিরাপত্তা কম। হলের চারদিকের প্রাচীর টপকিয়ে যে কেউ খুব সহজেই হলে প্রবেশ করতে পারে। এছাড়াও হলে প্রহরীর ভুমিকা অনেক। তারা হয়তো দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না। ইতোমধ্যে আমি হলে দায়িত্বরত প্রহরীর সংখ্যা বাড়িয়েছি এবং তাদের নিয়ে দফায় দফায় মিটিং করে সতর্ক করেছি। আশা করি এমন অপ্রিতিকর ঘটনা এরপর আর হবে না।

শুধু শের-ই-বাংলা একে ফজলুল হক হলই নয়, এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাদারবকশ্ হলেও চুরির ঘটনা ঘটছে। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা ব্যতীত কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় নি বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

হলে চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, হলে চুরির ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি এর আগে হল প্রাধ্যক্ষদের হলে নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছিলাম। আগামীকাল হলের প্রধ্যক্ষদের ডেকে হলে যেন আর চুরির ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেব। এবং হলগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করবো।

রাবিতে নতুন দুই সহকারী প্রক্টর নিয়োগ

রাবি প্রতিনিধি


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রক্টরিয়াল বডিতে নতুন আরও দুই জন সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ রবিবার বেলা ১২ টায় তাঁরা দায়িত্ব গ্রহন করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা (অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সদ্য নিয়োগ পাওয়া দুই জন সহকারী প্রক্টর হলেন- ইসলামিক স্টাডিস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবিএম সরোয়ার আলম এবং ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মু. আরিফুর রহমান।

অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, আজ দুপুরে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত নতুন এই দুই জন সহকারী প্রক্টর তাদের দায়িত্বভার গ্রহণ করছেন। প্রশাসন থেকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত এই পদে তারা দায়িত্ব পালন করবেন।

বর্তমানে তাদের দুজনসহ মোট ১২ জন সহকারী প্রক্টর রয়েছেন বলেও জানান তিনি।