বই কেনার সামর্থ্য ছিল না, বন্ধুর বই পড়ে সহকারী জজ হলেন আসাদুজ্জামান নূর

শিক্ষক কিংবা হলের শিক্ষার্থীরা তাকে ভালোবাসেন, কারণ সে খুবই বিনয়ী। ক্যাম্পাস-বিভাগের বড় ভাই কিংবা বন্ধুরাও তাকে বেশ সমীহ করতেন, কারণ সবাই তার কঠোর পরিশ্রমের কথা জানতেন। তাকে পড়তে দেখে ঘুমিয়ে যেতেন রুমমেটরা, আবার সকালে ঘুম থেকে উঠেও তাকে পড়তে দেখতেন সবাই।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান নূরের পরিশ্রমের গল্পটা এমন। এমন পরিশ্রমের উপহারও মিলেছে। স্নাতকোত্তর শেষ না হতেই বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের (বিজেএসসি) নিয়োগ পরীক্ষায় সহকারী জজ পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। সারাদেশে উত্তীর্ণ ১০৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪০তম তিনি।

পঞ্চগড়ের সদর উপজেলার মৃত মো. নূর বাদশার দ্বিতীয় সন্তান নূর। এসএসসিতে জিপিএ ফাইভ এবং এইচএসসিতে ৪.৩৩ জিপিএ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০১৭ সালে ভর্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে ইবির আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হন।

২০১২ সালে নূর বাবাকে হারান। সবেমাত্র এসএসসি পাস করেছেন। তখন থেকেই মা মোছা. রশিদা পারভীনের অনুপ্রেরণায় এই পর্যায়ে আসা নূরের। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার পর শুরুর দিকে পড়ালেখায় তেমন মনোযোগী ছিলাম না। করোনার সময় জীবন সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি। অনিশ্চয়তার জীবনে নিজেকে বদলানোর প্রয়াসে ধর্ম পালন এবং পড়াশোনায় মনোযোগী হই।

তিনি বলেন, বই কেনার তেমন সামর্থ্য ছিল না। কারণ প্রথম বর্ষ থেকেই উপবৃত্তির টাকায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতাম। পরবর্তীতে আমার বন্ধু হোসনে মোবারক সাগর এবং মোহাম্মদ নাজ্জাসির বই নিয়ে আমি পড়াশোনা শুরু করি। বিজেএসসির প্রিলি হতে লিখিত পুরোটা সময় আমি তাদের বই পড়েছি। এছাড়াও জুডিশিয়ারীর দিক নির্দেশনায় আমি সব থেকে বেশি সহায়তা পেয়েছি সাকিব আহমেদ ইমন ভাইয়ের থেকে। যিনি ১৫তম বিজেএসসি পরীক্ষায় সহকারী জজ হিসেবে সুপারিশ প্রাপ্ত। আজীবন ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।

নূর আরো বলেন, ইমন ভাই আমাকে মানসিকভাবে অনুপ্রাণিত করত। বলতেন, নূর তুমি পারবে। তিনি আমার আপন ভাইয়ের মতো সহযোগিতা করেছেন। সবথেকে বেশি কৃতজ্ঞ থাকব আমার মায়ের কাছে, সেই ছোট থেকেই আমার প্রতিটা সিদ্ধান্তে তিনি সব সময়ই আমার পাশে ছিলেন। সাহস জুগিয়েছেন। আমার আজকে যা অর্জন তার পুরোটাই আমার মায়ের অর্জন বলে আমি মনে করি।

নূর বলেন, অনেক বছর অপেক্ষায় ছিলাম- মাকে একটা সুসংবাদ জানাব। মায়ের হাসি মুখটা দেখব বলে। অনেক দিন মাকে হাসিমুখে দেখিনি। আল্লাহ আমার ফরিয়াদ কবুল করেছেন।

ইবির এই শিক্ষার্থী বলেন, আজ আমার এই অর্জনে যে মানুষটা সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন, সে মানুষটা আমার বাবা। সেই মানুষটা আজ আর নেই। এটাই আমার সবচেয়ে বড় দুঃখ। এছাড়া আমার কোনো দুঃখ নেই।

পড়াশোনার বিষয়ে নূর বলেন, আমি ফজরের নামাজ পড়ে পড়াশুনা শুরু করতাম। যতক্ষণ ক্লান্ত না হতাম ততক্ষণ পড়ার চেষ্টা করতাম। সবসময় চেষ্টা করেছি বুঝে পড়ার। একটা বিষয় কয়েকবার পড়ার চেষ্টা করেছি। সর্বোপরি মায়ের ইচ্ছে পূরণে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। আর আল্লাহ কাছে সাহায্য চেয়েছি। সবার দোয়া আর নিজের প্রচেষ্টার সম্মিলিত প্রয়াস আজকের এই সফলতা।

এই সফলতার পেছনে বিভাগের শিক্ষকদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নূর।

রাবির ২১ শিক্ষার্থী সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় সুপারিশপ্রাপ্ত

দেশের ১৬তম জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের (বিজেএসসি) সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় ১ম স্থানসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) আইন বিভাগের মোট ২১ জন শিক্ষার্থী সহকারী জজ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের এমন সাফল্যে আনন্দিত বিভাগের শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরাও।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২১ জনের নাম নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. হাসিবুল আলম প্রধান।

আইন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ফলাফলে প্রথম হয়েছেন রাবির আইন বিভাগের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নুসরাত জেরিন জেনি। তিনি ডিপার্টমেন্টে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট ছিলেন। তার বাসা বগুড়া জেলায়। মেধাতালিকায় ষষ্ঠ হয়েছেন একই ব্যাচের ফাহাদ ইশতিয়াক। এছাড়াও আরিফ আফসার শুভ সপ্তম, সাথী দশম, বাপ্পি ভুঁইয়া ১১তম, রাফিউল ইসলাম ৩০তম, মৌসুফা তানিয়া মৌলি ৩১তম, আহামাদুল কবীর শাকিল ৩২তম, সুদীপ ঘোষ ১০১ ও মেহেদী হাসান ১০২তম স্থান অর্জন করে রীতিমতো বাজিমাত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ৪০তম ব্যাচের ১০ শিক্ষার্থী।

আরও জানা যায়, ৪০তম ব্যাচ ছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের পাঁচ জনসহ অন্যান্য ব্যাচ থেকে আরও ৬জন শিক্ষার্থী সহকারী জজ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এ নিয়ে রাবি থেকে মোট ২১জন শিক্ষার্থীর তথ্য প্রাথমিকভাবে পাওয়া গেছে।

বিজেএস ১০২তম হয়েছেন মো. মেহেদী হাসান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরিবারের ইচ্ছে ছিল সহকারী জজ হওয়ার। তাদের ইচ্ছে আমার অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করছে। আমি সে অনুযায়ী চেষ্টা করেছি। বাবা-মায়ের দোয়ার ফলে আজ এ ফলাফল করতে পেরেছি।

একাডেমিক পড়াশোনার বিষয়ে তিনি বলেন, বিভাগের পড়ার বাইরেও বিজেএস এর পড়াশোনাটা অনেক গভীর। আমাদের বিভাগের পড়াশোনাটা যদি আরেকটু বিজেএস কেন্দ্রিক করানো হয় তাহলে আমাদের জন্য আরও সুবিধা হবে। পরবর্তীতে যারা পরীক্ষা দিবে তাদের জন্য অনেক ভালো হবে।

আনন্দ প্রকাশ করে রাবির আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মারুফ হোসেন মিশন বলেন, বিভাগের বড় ভাই-আপুদের সফলতা দেখে আমাদের ভালো লাগছে। তাদের সফলতা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগর বলেন, এ পর্যন্ত আমাদের বিভাগ থেকে ২১জন শিক্ষার্থী বিজেএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে বলে জানা গেছে। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আমাকে ফোন করে নিশ্চিত করেছেন। তবে এ সংখ্যাটি আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।

সহকারী জজ হিসেবে সুপারিশ প্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, যারা উত্তীর্ণ হয়েছে তারা আমাদের গর্ব। তাদের এ অর্জনে আইন বিভাগ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গর্বিত। তাদের হাতে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে বলে প্রত্যাশা এ শিক্ষকের।

শিক্ষার্থীদের এমন সাফল্যে গর্বিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. হাসিবুল আলম প্রধান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, টানা চতুর্থবারের মতো এবারও বিজেএস পরীক্ষায় আমার শিক্ষার্থীরা প্রথম স্থান অর্জন করায় আমরা বিভাগের শিক্ষক হিসেবে গর্বিত। এক ব্যাচ থেকেই ১০ জন শিক্ষার্থীর এমন সাফল্যে আমরা আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি, যে-সকল শিক্ষার্থী জুডিশিয়ারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে তারা তাদের সর্বোচ্চ মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।

জবিতে বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আসন বরাদ্দ পাওয়া বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীদের হল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার ( ২৫ সেপ্টেম্বর) হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হলের আবাসিকতা লাভ ও বসবাসের শর্তাবলি এবং আচরণ ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা ২০২১ এর ১৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীরা হলে সিট পাবে না। তারা অতিদ্রুত হলের সিট ছেড়ে দিবে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রী বলেন, আমরা যারা বিবাহিত তারাও তো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। তাহলে আমাদের কেনো সিট ছাড়তে হবে। বাইরে থাকার চেয়ে হলে থাকতে পারলে আমরা সিকিউরড থাকি। অনেকের হাসবেন্ড ঢাকার বাইরে থাক। তাদের ফ্যামিলিও ঢাকায় থাকে না। তারা তো হলেই থাকবে।

হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, হলের বিধিমালার ১৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী কোনো বিবাহিত ছাত্রী হলে সিটের আবেদন কর‍তে পারবে না। আমরা বিধি অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ছাত্রী আছেন যাদের বাবা নাই, মা নাই। তারা হলের সিটের জন্য কান্নাকাটি করে। তাদের আসলেই হলে সিট প্রয়োজন। সিট পেলে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সুবিধার হবে। কিন্তু অনেকে বিবাহিত মেয়েরা আছে যাদের পরিবারের সামর্থ্য আছে খরচ বহন করার। প্রয়োজনে তারা আমাদের দরখাস্ত দিক যে হল ছেড়ে বাসা নিতে এক মাস বা দুই মাসের সময় প্রয়োজন। আমরা সেটা কনসিডার করব।

বিবাহিত কিন্ত আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল ছাত্রীদের জন্য এই সিদ্ধান্ত শিথিল হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ স্যার ভালো বলতে পারবেন। তবে এবিষয়ে কোষাধ্যক্ষ স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও মিটিংয়ে থাকায় তার মন্তব্য পাওয়া যায় নি।

এছাড়াও, বিজ্ঞাপ্তিতে হলের যেসকল মেয়ে শিক্ষার্থীর মাস্টার্সের রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছে তাদের অতিদ্রুত হল ছাড়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কোন মানোন্নয়ন ( মাস্টার্স) পরীক্ষার্থী এমফিল ছাত্রী হলে থাকতে পারবেনা বলেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

৮ অক্টোবর থেকে চবির প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ক্লাশ শুরুর তারিখ পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন সূচি অনুযায়ী আগামী ৮ অক্টোবর থেকে শুরু হবে।

রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) চবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও ভর্তি কমিটির সচিব এস এম আকবর হোছাইন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২২- ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা কমিটি’র ১২তম সভার ২নং সিদ্ধান্তক্রমে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ৬ষ্ঠ পর্যায়ে সাধারণ ও কোটার আসনে প্রাথমিক ভর্তির সময়সীমা ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে ভর্তিকৃত সকল ছাত্র/ছাত্রীর চূড়ান্তভাবে ভর্তির (অনলাইনে SIF পূরণ এবং নির্ধারিত ভর্তি ফি জমা দান ) সময়সীমা আগামী ১ অক্টোবর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। এমতাবস্থায়, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ/ইনস্টিটিউটে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তিকৃত ছাত্র/ছাত্রীদের ক্লাশ শুরুর তারিখ আগামী ৮ অক্টোবর পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।

চবি ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উক্ত কমিটিটি বিলুপ্তের ঘোষণা দেওয়া হয়।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়- বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় শাখার উপ-দপ্তর সম্পাদক সাদি মোহাম্মদ আকাশ সমকালকে বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।

কমিটি বিলুপ্তের পেছনে চবি ছাত্রলীগের বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড জড়িত আছে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সব দিক বিবেচনা করে পরবর্তী কমিটি ঘোষণা করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখা ও শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা ইতিবাচক ছাত্ররাজনীতির দায়িত্ব। সাম্প্রতিককালে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত এবং আমাদের দলীয় শৃঙ্খলা ও আদর্শের পরিপন্থী। একটি ইতিবাচক ছাত্র রাজনীতি আমাদের প্রত্যাশা। সেটির ব্যত্যয় হওয়ায় আমরা এই ব্যবস্থা নিয়েছি।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই শাখা ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটিতে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও মার্কেটিং বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পরে ২০২২ সালের জুলাই মাসের ৩১ তারিখ ৪২৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

জবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহীনের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) নয়া পল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে পল্টন থানা হয়ে পল্টন পার্টি অফিসে সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয় বিক্ষোভ মিছিলটি।

মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সহ সাধারণ সম্পাদক, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক, সদস্যবৃন্দ সহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, গোলাম মাওলা শাহীনকে সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে দীর্ঘ আট মাসের উপরে এই ফ্যাসিস্ট সরকার কারাবন্দী করে রেখেছে। সব মামলায় জামিন এবং মহামান্য হাইকোর্ট থেকে নতুন মামলা ও রিমান্ড না দেওয়ার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও নতুন নতুন মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নিচ্ছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল এই অন্যায় অবিচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।

তিনি আরও বলেন , কতজনকে আটক করবে ? জেলে তো আর জায়গা হচ্ছে না। আপনারা তো (সরকার) আজ গোটা দেশকেই কারাগার বানিয়ে ফেলেছেন। জাতি এই বন্দিদশা থেকে মুক্তি চায়। জনগণকে মুক্ত করতেই বিএনপির আন্দোলন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে জনতার ঐক্যবদ্ধ চলমান আন্দোলনেই এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটবে।

বিইউপিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এ ‘টেকসই উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’ বিষয়ক দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিইউপির ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ সম্মেলনটির আয়োজনে করে।

তিন দিনব্যাপী সম্মেলনে প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি অনলাইনে যুক্ত হয়ে এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। ভাইস চ্যান্সেলর মেজর জেনারেল ড. মোঃ মাহবুব-উল আলম সম্মেলনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে অগ্রগতির মাধ্যমে একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গঠন করা’ যা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নকে আরও ত্বরান্বিত করবে।

জানা যায়, সম্মেলনে ১৫টি দেশ থেকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা, কৃষি, শিল্প এবং আধুনিক নগরায়ন বিষয়ে ২৮৭টি গবেষণা প্রবন্ধ জমা হয় যার মধ্যে ১০০টি সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে। এছাড়া এই সম্মেলনে শিক্ষা ও শিল্পের মধ্যে বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তি, এবং প্রকৌশল বিষয়ক ধারণা বিনিময়ের মাধ্যমে একটি অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি শিল্প মেলার আয়োজন করা হয়। সময়োপযোগী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠান আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে।

সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মালয়েশিয়ার পাহাং ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. কামাল জুহাইরি বিন জামলি, বিকাশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কামাল কাদির, গ্রামীন ফোন লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন (আরএপিআইডি) এর পরিচালক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।

এসময় বিইউপি সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ফ্যাকাল্টি মেম্বার, শিক্ষার্থীসহ দেশ-বিদেশের আমন্ত্রিত অতিথিরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

বশেফমুবিপ্রবিতে সুশাসন নিশ্চিতকরণে অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা ২০২৩-২০২৪ বাস্তবায়নে সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে অংশীজনদের অংশগ্রহণে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজনে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রাধন অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আলম খান।

এ সময় তিনি জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা ২০২৩-২০২৪ বাস্তবায়নে সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদের জন্য সেবার মানোন্নয়ন, পরিধি বাড়ানো এবং কম সময় ও কম খরচে সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা করেন।

সভায় যোগদানকারী অংশীজনেরাও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রেখে মানসম্মত ও বিশ্বমানের শিক্ষা প্রদান করে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবেলায় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির বিষয়ে তাদের মতামত প্রদান করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিএ ফোকাল পয়েন্ট সহকারী রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ মো. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে
রেজিস্ট্রার সৈয়দ ফারুক হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে শিক্ষক প্রতিনিধি, ছাত্র প্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ অংশীজনেরা অংশ নেন।

জিপিএ ৫ পেয়েও কলেজ পাননি ২২ হাজার শিক্ষার্থী

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে দ্বিতীয় ধাপে আবেদন করেও কলেজ পাননি ২২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে রয়েছেন জিপিএ-৫ পাওয়া ২ হাজার ২৯১ জন শিক্ষার্থীও। কলেজে ভর্তি হতে তাদের ফের তৃতীয় ধাপে করতে হবে আবেদন। এর আগে প্রথম ধাপে আবেদন করেও কলেজ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন সাড়ে ৮ হাজার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীসহ মোট ৪৫ হাজার আবেদনকারী।

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জানান, কলেজ‌ পছন্দের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আরও সচেতন হলে এ চিত্র হতো না।

জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে ২ লাখ ৯৪ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেন। তাদের মধ্যে কলেজ পেয়েছেন ২ লাখ ৭২ হাজার ৮৭০ জন। এ ধাপেও কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২২ হাজারের বেশি। এর মধ্যে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী রয়েছেন ২ হাজার ২৯১ জন। জিপিএ-৫ পাওয়া এসব শিক্ষার্থীরা যদি প্রথম ধাপে বা দ্বিতীয় ধাপে আরও বেশি কলেজ পছন্দক্রমে দিতেন, তাহলে তুলনামূলক ভালো কলেজ পেতেন বলে মনে করেন ঢাকা বোর্ডের এ কলেজ পরিদর্শক।

তিনি জানান, কিছু কলেজ আছে- যারা জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিশ্চয়তা দিয়ে জিম্মি করে রাখে। তারা অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া ছাড়াই ভর্তি করিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এটা কিছুতেই করতে দেওয়া হবে না। গতবারও আমরা এটা হতে দেইনি, এবারও কেউ সুযোগ পাবে না।

এদিকে, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ মিলিয়ে এ পর্যন্ত একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় রয়েছেন ১২ লাখ ৫১ হাজার ৯২৮ জন শিক্ষার্থী। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর হিসেবে এখনো সাড়ে ৩ লাখের বেশি শিক্ষার্থী একাদশে ভর্তি প্রক্রিয়ার বাইরে রয়েছেন।

ভর্তির প্রথম ধাপে আবেদন করেন ১৩ লাখ ৭ হাজার শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে কলেজ পান ১২ লাখ ৬১ হাজার জন, আর ভর্তি হবেন বলে নিশ্চিত (নিশ্চায়ন) করেন ১০ লাখ ২৬ হাজার শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে, দ্বিতীয় ধাপে আবেদন করেন ২ লাখ ৯৪ হাজারের মতো শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে কলেজ পেয়েছেন ২ লাখ ৭২ হাজার জন। প্রথম ধাপে নিশ্চায়ন করা এবং দ্বিতীয় ধাপে কলেজ পেয়ে প্রাথমিক নির্বাচিত হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখের মতো। বাকি সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়াতেই নেই।

এদিকে, দ্বিতীয় ধাপে কলেজ পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়ন চলছে। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ৩৩৫ টাকা ফি দিয়ে নিশ্চায়ন করতে পারছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত এ নিশ্চায়নের সুযোগ পাবেন তারা। কলেজ পেয়েও কেউ নিশ্চায়ন না করলে তার প্রাথমিক নির্বাচন বাতিল বলে বিবেচিত হবে।

দ্বিতীয় ধাপে কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীরা তৃতীয় ধাপে আবেদনের সুযোগ পাবেন। আগামী ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর তৃতীয় ধাপে আবেদন নেওয়া হবে। তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে ২৩ সেপ্টেম্বর। ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর তৃতীয় ধাপের নির্বাচন নিশ্চায়নের সুযোগ দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, একাদশ শ্রেণিতে চূড়ান্ত ভর্তি শুরু হবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর, যা চলবে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। চলতি বছর বিভিন্ন কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। ভর্তির সর্বোচ্চ ফি ৮ হাজার ৫০০ টাকা। ভর্তি শেষে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে ৮ অক্টোবর।

দ্বিতীয় ধাপেও কলেজ পাননি ২২ হাজার শিক্ষার্থী

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে দ্বিতীয় ধাপে আবেদন করেও কলেজ পাননি ২২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে রয়েছেন জিপিএ-৫ পাওয়া ২ হাজার ২৯১ জন শিক্ষার্থীও। কলেজে ভর্তি হতে তাদের ফের তৃতীয় ধাপে করতে হবে আবেদন। এর আগে প্রথম ধাপে আবেদন করেও কলেজ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন সাড়ে ৮ হাজার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীসহ মোট ৪৫ হাজার আবেদনকারী।

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জানান, কলেজ‌ পছন্দের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আরও সচেতন হলে এ চিত্র হতো না।

জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে ২ লাখ ৯৪ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেন। তাদের মধ্যে কলেজ পেয়েছেন ২ লাখ ৭২ হাজার ৮৭০ জন। এ ধাপেও কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২২ হাজারের বেশি। এর মধ্যে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী রয়েছেন ২ হাজার ২৯১ জন। জিপিএ-৫ পাওয়া এসব শিক্ষার্থীরা যদি প্রথম ধাপে বা দ্বিতীয় ধাপে আরও বেশি কলেজ পছন্দক্রমে দিতেন, তাহলে তুলনামূলক ভালো কলেজ পেতেন বলে মনে করেন ঢাকা বোর্ডের এ কলেজ পরিদর্শক।

তিনি জানান, কিছু কলেজ আছে- যারা জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিশ্চয়তা দিয়ে জিম্মি করে রাখে। তারা অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া ছাড়াই ভর্তি করিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এটা কিছুতেই করতে দেওয়া হবে না। গতবারও আমরা এটা হতে দেইনি, এবারও কেউ সুযোগ পাবে না।

এদিকে, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ মিলিয়ে এ পর্যন্ত একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় রয়েছেন ১২ লাখ ৫১ হাজার ৯২৮ জন শিক্ষার্থী। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর হিসেবে এখনো সাড়ে ৩ লাখের বেশি শিক্ষার্থী একাদশে ভর্তি প্রক্রিয়ার বাইরে রয়েছেন।

ভর্তির প্রথম ধাপে আবেদন করেন ১৩ লাখ ৭ হাজার শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে কলেজ পান ১২ লাখ ৬১ হাজার জন, আর ভর্তি হবেন বলে নিশ্চিত (নিশ্চায়ন) করেন ১০ লাখ ২৬ হাজার শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে, দ্বিতীয় ধাপে আবেদন করেন ২ লাখ ৯৪ হাজারের মতো শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে কলেজ পেয়েছেন ২ লাখ ৭২ হাজার জন। প্রথম ধাপে নিশ্চায়ন করা এবং দ্বিতীয় ধাপে কলেজ পেয়ে প্রাথমিক নির্বাচিত হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখের মতো। বাকি সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়াতেই নেই।

এদিকে, দ্বিতীয় ধাপে কলেজ পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়ন চলছে। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ৩৩৫ টাকা ফি দিয়ে নিশ্চায়ন করতে পারছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত এ নিশ্চায়নের সুযোগ পাবেন তারা। কলেজ পেয়েও কেউ নিশ্চায়ন না করলে তার প্রাথমিক নির্বাচন বাতিল বলে বিবেচিত হবে।

দ্বিতীয় ধাপে কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীরা তৃতীয় ধাপে আবেদনের সুযোগ পাবেন। আগামী ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর তৃতীয় ধাপে আবেদন নেওয়া হবে। তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে ২৩ সেপ্টেম্বর। ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর তৃতীয় ধাপের নির্বাচন নিশ্চায়নের সুযোগ দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, একাদশ শ্রেণিতে চূড়ান্ত ভর্তি শুরু হবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর, যা চলবে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। চলতি বছর বিভিন্ন কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। ভর্তির সর্বোচ্চ ফি ৮ হাজার ৫০০ টাকা। ভর্তি শেষে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে ৮ অক্টোবর।