বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের পাঁচ অনুরোধ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুরুতর আহতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পাঁচ অনুরোধ জানিয়েছে আহতরা।

বুধবার রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে আহতদের পক্ষে এমন অনুরোধ জানান সরকারি তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থী মো. সালমান হোসেন।

তিনি বলেন, নিটোরে এখনও প্রায় ১০০ জন চিকিৎসাধীন। তাদের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন, কারও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন। সরকারকে এ দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।

সালমান হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সকল নিহতদের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করে তাদের শহীদের মর্যাদা দিতে হবে এবং সকল নিহতদের পরিবারকে এককালীন ক্ষতিপূরণ বাবদ এক কোটি টাকা প্রদান করতে হবে।

সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অনেক রোগী আছে যাদের অবস্থা আশংকাজনক তাদেরকে যেন অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়।

আন্দোলনে আহতদেরকে এককালীন ক্ষতিপূরণ ও দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।

আহত শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার যাবতীয় খরচ সরকার বহন করবে এবং আহত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনা করতে হবে।

১০ দূতাবাসের কর্মকর্তার তথ্য চেয়েছে দুদক

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ ১০ দেশে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্য চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুদককে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ ১০ দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের ৩৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্য চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এটা আজকের পত্রিকায় আমি প্রথম দেখলাম। এখানে কিছু কনফিউশান থাকতে পারে, সেগুলো আমরা দূর করবো। অডিট অবজেকশন এবং দুর্নীতি এক জিনিস না। একটি ছোট উদাহরণ দেই। আমি দায়িত্বে থাকাকালীন কলকাতা মিশনের একটি গাড়ি কেনা হয়। এর চেয়ে অনেক ছোট গাড়ি দিল্লিতে কম দামে কেনা গেছে। অ্যাডভান্স দেওয়া হয়েছে এজেন্টকে, এজেন্ট মানে দালাল। আসলে গাড়ির কোম্পানির এজেন্ট ওরা। অভিযোগ এসেছে যে দালালকে দেওয়া হয়েছে চার লাখ টাকা সেটা আদায়যোগ্য। অবজেকশনটা আমার বিরুদ্ধে। এটা আমি কেন দিলাম, আমার কাছ থেকে নাকি এ টাকা আদায়যোগ্য হবে। মিশন অডিটের ডিজিকে বললাম গাড়ি কিনতে হলে বুকিং দিতে হয়, সেজন্য আগাম কিছু টাকা দিতে হয়। অডিট অবজেকশন অনেকসময় এরকম হয়। সেগুলোকে দুর্নীতি হিসেবে দেখা হচ্ছে কি না দেখতে হবে। কারণ অভিযোগের ধরন দেখে মনে হচ্ছে এগুলো অনেকগুলো অডিট অবজেকশনের ফলাফল। অডিট অবজেকশন আর দুর্নীতি এক জিনিস না। আমরা দেখবো।’

দুদককে সহযোগিতা করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সহযোগিতা তো অবশ্যই করবো। আমরা তো চাই না কোনো দুর্নীতি হোক। কাজেই যেটুকু সহযোগিতা চাইবে আমরা করবো, দেখতে হবে দুর্নীতি হয়েছে কি না। সেটা দেখে সেভাবে সহযোগিতা করবো।’

৩০ হাজার মেট্রিক টন সার কিনবে সরকার

সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আজ বুধবার অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই সার কেনার অনুমোদন দেয়া হয়। এটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দ্বিতীয় ক্রয় কমিটির বৈঠক।

কমিটির বৈঠক শেষে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বৈঠকে সার, এলএনজি এবং মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অতএব অতিপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্লাক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২১ কোটি ৪৮ লাখ ২১ হাজার ৮০০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের মূল্য ৩৪৩ দশমিক ১৭ মার্কিন ডলার।

আরেক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সভায় দেশীয় প্রতিষ্ঠান কাফকো থেকেও ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই সার কেনার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৬ কোটি ৯৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৩০ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।

এর আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে সার কেনা সংক্রান্ত তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়।

হাজী সেলিম ৫ দিনের রিমান্ডে

ঢাকা-৭ সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এই আদেশ দেন।

এর আগে, আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যার ঘটনায় লালবাগ থানায় করা মামলায় তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ।

অন্যদিকে আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন বাতিল করে জামিনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

উল্লেখ্য, গতকাল রোববার রাত পৌনে ১টার দিকে তাকে রাজধানীর বংশাল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

দুদকে ৯৪ জনের পদোন্নতি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিভিন্ন বিভাগ ও পদে ৯৪ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক দাউদ হোসেন চৌধুরীর সই করা পৃথক পৃথক অফিস আদেশে এসব পদোন্নতি দেওয়া হয়। ১৫ বছর পর এই প্রথম একসঙ্গে এত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পদোন্নতি দেওয়া হলো।

এ বিষয়ে দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, সোমবার পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উপসহকারী পরিচালক থেকে সহকারী পরিচালক পদে ৬ জন ও প্রধান সহকারী থেকে উপ-সহকারী পরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ৪০ জন।

তিনি আরো বলেন, উচ্চমান সহকারী থেকে প্রধান সহকারী পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ৬ জন, উচ্চমান সহকারী থেকে সহকারী পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ২১ জন, ডাটা অপারেটর থেকে উচ্চমান সহকারী পদে ২ জন, অফিস সহায়ক থেকে অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে ৬ জন এবং কনস্টেবল থেকে কোর্ট সহকারী (এএসআই) পদে ১৩ জন পদোন্নতি পেয়েছেন।

এর আগে, গত ২৯ আগস্ট ৯ জনকে উপ-পরিচালক থেকে পরিচালক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল।

মাদ্রাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন ৪ তারিখের মধ্যে

এখন থেকে মাদ্রাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন প্রতিমাসের ১ থেকে ৪ তারিখের মধ্যে করতে হবে। নির্দেশ দিয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। এর আগে এই আবেদন প্রতিমাসের ১ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে করতে হতো। এবার এই আবেদনের সময় একদিন কমলো।

মঙ্গলবার মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ সংশোধিত) অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারীদের নতুন এমপিওসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির আবেদন অনলাইনে মাদ্রাসা প্রধান কর্তৃক প্রতিমাসের ১ থেকে ৪ তারিখের মধ্যে উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর এবং প্রতিমাসের ১ থেকে ৮ তারিখের মধ্যে উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কর্তৃক মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মেমিস সেলে প্রেরণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হলো।’’

শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা আগের নিয়মেই

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরাসরি শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের ক্ষমতা পেতে যাচ্ছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এজন্য একটি আইন পাসের কাজ চলছে। তবে সংসদ না থাকায় আইন পাস সময় সাপেক্ষ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এ অবস্থায় আগের নিয়মেই শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা আয়োজন করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন নতুন আইন পাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে সরকার পতনের পর সংসদ বিলুপ্ত হওয়ায় আইন পাসের বিষয়টি স্থগিত হয়ে গেছে। নতুন সরকার কবে গঠন হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য না থাকায় শিক্ষক সংকট দূর করতে আগের নিয়মেই অর্থাৎ ১৯তম শিক্ষক নিবন্ধনের মাধ্যমে শিক্ষক সংকট দূর করা হতে পারে।

এ বিষয়ে এনটিআরসিএ’র সদস্য (শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান) মুহম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আইন পাস কিংবা শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা সংক্রান্ত কোনো কিছুই এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। তবে আইন পাস করতে সংসদে তুলতে হয়। যেহেতু সংসদ নেই, কাজেই এটি কবে পাস হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

এনটিআরসিএ’র একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে তীব্র শিক্ষক সংকট রয়েছে। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব তারা নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চান। বিষয়টি শিক্ষা উপদেষ্টাসহ একাধিক মাধ্যমকে অবহিত করা হয়েছে। যেহেতু আইন পাসের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন, সেহেতু ১৯তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে ভাবা হচ্ছে।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে এনটিআরসিএ’র পরীক্ষা মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন শাখার এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের মাধ্যমে সনদ অর্জনের প্রথা বিলুপ্ত করতে চেয়েছিলাম। তবে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করায় আইন পাস হতে সময় লাগবে। এজন্য ১৯তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে ভাবা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত ১৮টি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা নিয়েছে এনটিআরসিএ। ইতোমধ্যে এক লাখের বেশি নিবন্ধন সনদধারীকে চাকরির সুপারিশ করা হয়েছে।

ভারত খুলে দিয়েছে ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট

বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মাঝে ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দিয়েছে ভারত। প্রবল বৃষ্টির কারণে দেশটির বিহার ও ঝাড়খণ্ড রাজ্যে বন্যা ও পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের মুর্শিদাবাদসহ বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্টি হওয়া বন্যা পরিস্থিতি ও ভূমিধসের বিষয়ে বাংলাদেশকে আগেই তথ্য জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে ভারত। ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্প সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ বলছে, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বিপুল বৃষ্টি হওয়ায় ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে পানির চাপ সামলাতে ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে একদিনে বাংলাদেশে ১১ লাখ কিউসেক পানি প্রবেশ করবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্পে যে পরিমাণ পানি আসছে, সেই পরিমাণ পানি ছাড়া হয়েছে। ফারাক্কা বাঁধ এলাকায় পানি বিপৎসীমার ৭৭ দশমিক ৩৪ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফারাক্কা বাঁধে পানির অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়েছে। পানির চাপ বাড়ায় তা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। কর্মকর্তারা বলেছেন, পানি না ছাড়া হলে ফারাক্কা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

দেশটির এই সংবাদমাধ্যম বলেছে, ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় দৈনন্দিন পানি ছাড়ার পরিমাণ বাড়ছে। এদিকে এই পানি ছাড়ার ফলে গঙ্গা থেকে পানি ঢুকছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায়। বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায়। বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ গঙ্গার উচ্চ অববাহিকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হওয়ায় গঙ্গায় হু হু করে পানি বাড়ছে।

ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলোতে বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ফারাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিবেশি দুই রাজ্য—বিহার, ঝাড়খণ্ডে বন্যা দেখা দেওয়ায় ফারাক্কা বাঁধে পানির চাপ রয়েছে। তবে নেপালের পাহাড় থেকে এখনও কোনও পানি নেমে না আসায় কিছুটা স্বস্তি রয়েছে। ফারাক্কা বাঁধ এলাকায় বিপৎসীমা থেকে ৭৭ দশমিক ৩৪ মিটার ওপরে পানি প্রবাহিত হওয়ায় শনিবার গেট খুলতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফিডার ক্যানেলে পানির পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গা নদীর ওপর ফারাক্কা বাঁধের অবস্থান। বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে ১৯৬২ সালে এই বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রায় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত এই বাঁধের কাজ শেষ হয় ১৯৭০ সালে। ফারাক্কা বাঁধের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল।

ইউনূসের সঙ্গে সেনাপ্রধান, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের বৈঠক

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস আজ সোমবার দেশের আইনশৃঙ্খলার উল্লেখযোগ্য উন্নতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখপাত্র বলেন, আজ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ জামান রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তাঁর কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠককালে পরিস্থিতির উন্নতিতে সাহায্য করার জন্য সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি।

বৈঠকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টা দুই ডজনের বেশি মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন প্রকল্প সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
এসময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিকেলে সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন।

সুশীল সমাজের নেতাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।#বাসস

আবু সাঈদসহ অন্যদের আত্মত্যাগকে স্মরণ রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলুন : ড. ইউনূস

বাসস : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আবু সাঈদসহ অন্যান্যদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকে স্মরণ রেখে এগিয়ে যাওয়া সকলের দায়িত্ব।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে তিনি বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব আমাদের।’

ড. ইউনূস বলেন, আবু সাঈদ ও অন্যান্যদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকে স্মরণ রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

The Campus Today English

তিনি বলেন, ‘আবু সাঈদ শুধু একটি পরিবারের নন, তিনি বাংলাদেশের সব পরিবারের সন্তান।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অধ্যয়নরত তরুণ-তরুণীরা আবু সাঈদকে স্মরণ রাখবে এবং তার মতো হওয়ার অঙ্গীকার করবে।

ড. ইউনূস আরও বলেন, তারা বলবে-আমিও আবু সাঈদের মতো ন্যায় বিচারের জন্য লড়াই করব।

আবু সাঈদ এখন দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তিনি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার সন্তান।’

অধ্যাপক ইউনূস সকলকে যে কোন নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার এবং কেউ যেন কোন ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলতে না পারে, সেদিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, আমরা এই মাটির সন্তান, আমরা সবাই আবু সাঈদ।

তিনি বলেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে রক্ষা করা সবার দায়িত্ব।

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে এবং আবু সাঈদের মতো সামনে দাঁড়াতে হবে।’
নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে বিভাজন না করার জন্য সকলকে অনুরোধ জানিয়ে আরও বলেন, আমরা সবাই বাংলাদেশি। আমরা বাংলাদেশের সন্তান।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ। ‘এই বাংলাদেশ আবু সাঈদের বাংলাদেশ, এই বাংলাদেশে কোনো বৈষম্য নেই, আপনাদের সবার কাছে আমার অনুরোধ- সবাইকে রক্ষা করুন, সেখানে যেন কোনো নৈরাজ্য না হয়।’