অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম: বৈষম্য দূরীকরণে পদক্ষেপ নেওয়া অতি জরুরী

সাজু সরদার


অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম! করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা। বাংলাদেশ সরকার করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য, শিক্ষার্থীদের মনোবলকে চাঙ্গা রাখার জন্য “ঘরে বসে শিখি”, “আমার ঘরে, আমার স্কুল”, জুম অ্যাপের মাধ্যমে ক্লাস, ফেসবুক লাইভে ক্লাস সম্প্রচারের মতো বিভিন্ন সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এসব পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে সময় উপযোগী কিন্তু কতটুকু কার্যকরী সেটা মূল্যায়নের বিষয়।

মূল্যায়নের বিষয় আসলেই চোখে পড়ে “কোটি শিশুর পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে” শিরোনামে গত ২৭ জুলাইয়ের প্রথম আলো পত্রিকার একটি প্রতিবেদন। প্রতিবেদন পড়লেই বোঝা যায় এই শিকের উচ্চতা শহরের তুলনায় গ্রাম, বস্তি এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেশি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বস্তির এক ঘরের গাদাগাদির বাসায় টিভির ক্লাসে মন বসানো কঠিন। পাহাড়ি অঞ্চলের অনেকের বাসায় টিভিতো দুরের কথা কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগও নেই।

আবার ব্রাকের গবেষণা জরিপ বলছে ৫৬ শতাংশ ছেলেমেয়ে টিভির ক্লাসে আগ্রহ পায় না এবং অনেক সরকারি স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস করার মতো সামর্থ্যও নেই। তবে শহরের নামিদামি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা স্বেচ্ছাসেবী বা এনজিও পরিচালিত কিছু স্কুল যারা অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে তাদের শিক্ষার্থীদের অবস্থা আবার এদিক থেকে ভালো। গ্রামের তুলনায় শহরের শিক্ষার্থীদের উন্নত আর্থসামাজিক অবস্থার কারণে শহরের শিক্ষার্থীরা বর্তমান অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অনেক এগিয়ে আছে। তবে মোট শিক্ষার্থীর যে ৭০ ভাগ সরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। এই ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী যে অনাকাঙ্ক্ষিত বৈষম্যর শিকার হচ্ছেন সেটা অতিদ্রুত সমাধান না করা গেলে শিক্ষাখাতের গত ২ দশকের সব অর্জন ব্যর্থ হবে।

এ তো গেল প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের কথা! এবার বলি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কথা। গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মোটামুটি সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেন। যদিও তার আগেই হাতেগোনা কিছু বিভাগ বা শিক্ষক ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনলাইন ক্লাস শুরু করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনও অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে যথেষ্ট সহায়তা করার আগ্রহ দেখিয়েছেন।

সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে অনলাইন ক্লাস শুরুর উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু উপাচার্য মহোদয়রা যে সমস্যাগুলো সমাধান পূর্বক অনলাইন ক্লাসের ব্যাপারে একমত হয়েছিলেন সেটার সমাধান এখন পর্যন্ত চিঠি চালাচালিতেই সীমাবদ্ধ আছে। যে ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ডিভাইস সমস্যার কারণে অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারছে না (মঞ্জুরি কমিশনের গবেষণা অনুযায়ী) তাদের সহায়তার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গ্রান্ট বা সফট লোন প্রদানের জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে যে তালিকা চেয়েছিলেন সেটা একবার পাঠানোর পর মঞ্জুরি কমিশন গত ২০ সেপ্টেম্বর তারিখে আবারো নির্ভুল তালিকা প্রেরণের জন্য সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।

ডিভাইস বঞ্চিত ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর চূড়ান্ত তালিকা করতেই ইউজিসির তিন মাস শেষ! তাহলে কবে এই শিক্ষার্থীরা ডিভাইস পাবে আর কবে একই স্রোতে মিশে বন্ধুদের সাথে একসাথে ক্লাস করবে। ইউজিসির চিঠি চালাচালির এই লগ্নে অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতি বিতর্কের মধ্যেই বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা (এই ১৫ শতাংশ বাদে) তাদের সেমিস্টারের ক্লাস শেষ করে পরীক্ষার জন্য তীর্থের কাকের মতো সময় পার করছে। অনেক বিভাগ আবার পরীক্ষা ছাড়াই পরবর্তী সেমিস্টার শুরু করেছে। তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে যারা কোন একটি বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছে অথবা যাদের সামনে আর কোন সেমিস্টার নেই সেই সমস্ত শিক্ষার্থীরা অর্থাৎ যাদের শুধুমাত্র স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্বের পরীক্ষা বাকি আছে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সমস্ত শিক্ষার্থীরা অপেক্ষায় আছে কবে পরীক্ষা দিতে পারবে, একটা চাকুরিতে যোগদান করবে আর সংসারের হাল ধরে গরীব বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাবে। এই পরিস্থিতির শিক্ষার্থীরা যে কি পরিমাণ মানসিক কষ্টে আছে সেটা তাদের সাথে কথা বললেই বোঝা যায়। আবার যারা পরবর্তী সেমিস্টার শুরু করেছে সেসকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চিন্তায় আছে এর পর তারা কি করবে! সামনে শীত মৌসুমে করোনার আশংকার কারণে অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খোলারও কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু এক বর্ষের পরীক্ষায় কৃতকার্য না হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনগত কারণে অন্য বর্ষের কোন সেমিস্টারের ক্লাসও করা যাবে না। সুতরাং এসকল শিক্ষার্থীরাও এক অজানা আশংকার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এদিক থেকে নিশ্চিন্ত আছে। কারণ নিয়ামানুযায়ী তারা অনলাইনে ক্লাস করছে, পরীক্ষা দিচ্ছে! ইতিমধ্যে তারা দুই সেমিস্টার (জানুয়ারী-এপ্রিল এবং মে-আগস্ট) শেষ করেছে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শেষ পর্বের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়ে রেজাল্ট নিয়ে চাকুরিতে যোগদান করেছে। অন্যদিকে তাদের সমসাময়িক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা এখনো পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য প্রহর গুনছে। করোনার কারণে সঠিক নীতি ও সিদ্ধান্তের অভাবে তারা শুধু শিক্ষাজীবন নয় ভবিষ্যৎ চাকরি জীবনেও বৈষম্যর শিকার হচ্ছে এবং হবে। শুধুমাত্র সময়মত পরীক্ষার দিতে না পারার কারণে তারা তাদের সমসাময়িক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বন্ধুদের চাইতে জুনিয়র হিসেবে চাকুরীতে যোগদান করবে (কতদিন পর সেটাও অনিশ্চিত)।

তবে এসব বিষয়ে সমন্বয়কারী সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাথা ব্যাথা নেই। “পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরীক্ষা এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়া হবে” এ কথা বলেই তাদের দায়িত্ব শেষ! উপরিউক্ত বৈষম্য, অদূরদর্শিতা ও সিদ্ধান্তহীনতা দেশ ও জাতির জন্য ক্ষতিকর। দেশ ও জাতি মেধাবী শিক্ষার্থীদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সামাজিক ও পারিবারিক চাপে শিক্ষার্থীদের মানসিক শক্তি দিন দিন কমে যাচ্ছে, পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সামগ্রিক দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ অতি জরুরী!!!

লেখক: শিক্ষক
ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

গণ বিশ্ববিদ্যালয়: অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে সেমিস্টার ফাইনাল

গবি টুডেঃ করোনাকালীন অনলাইনেই অনুষ্ঠিত হবে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষা। পরীক্ষার পদ্ধতি ও তারিখ নির্ধারণে কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হবে খুব দ্রুত। সাপ্লিমেন্টারী পরীক্ষার ফলাফল ১৩ জুন প্রকাশ হবে।

সপ্তাহে ১ দিন করে প্রতি অনুষদের শিক্ষক, কর্মকর্তারা অফিস করবেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা মোট ৩ দিন অফিস করবেন। এছাড়া অনলাইনে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম চলবে।

সরকারি নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

আজ বুধবার (০৩ জুন) এসব বিষয় জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা।

বশেফমুবিপ্রবিতে চলছে অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম

মো: আল-ফাহাদঃ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশের শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সেশনজটের। দেশের অন্যান্য পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা যখন এই শঙ্কায় রয়েছে তখন ব্যতিক্রম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেফমুবিপ্রবি) ।

দেশে অনলাইন শিক্ষার দ্বার উন্মোচন করেছে দেশের দশম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টি।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদের নির্দেশে ও সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়টি তাই অনলাইনে সিএসই, ইইই, গণিত, ম্যানেজমেন্ট, সমাজকর্ম ও ফিশারিজ এই ছয়টি বিভাগেই শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ফেসবুক গ্রুপ থেকে শুরু করে গুগল ক্লাসরুম, জুম, ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, হ্যাং–আউট নানা কিছুর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন শিক্ষকেরা। শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা কেমন বা কিভাবে চালাচ্ছে শিক্ষাকার্যক্রম, তা জানতে মুঠোফোনে ও মেসেঞ্জারের মাধ্যমে কথা হয় বেশ কয়েকজনের সঙ্গে।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘জুম’ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ফিশারিজ বিভাগের ২য় বর্ষের ‘কোস্টাল অ্যাকুয়াকালচার এন্ড মেরিকালচার’ কোর্সটির উদ্বোধন করেন বিভাগটির সিনিয়র শিক্ষক ড. আব্দুস ছাত্তার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন-‘অনলাইনে পাঠদান আমাদের দেশের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা। আর শিক্ষার্থীরা আগ্রহের সহিত অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করছে। আমার প্রথম ক্লাসেই উপস্থিতির হার ছিলো ৭৭%, যা আশাব্যঞ্জক। আমি আশা করছি আগামীতে এই উপস্থিতি আরও বৃদ্ধি পাবে।

তিনি আরও বলেন -‘আমাদের প্রায় ৭০ ভাগ ক্লাস ছুটির আগেই শেষ। বাকি ৩০ ভাগ ক্লাস অনলাইনে সম্পন্ন হবে। ’

শিক্ষার্থীদের আগে থেকেই ই-মেইলে অথবা হোয়াটস অ্যাপে লেকচার শীট প্রদান করে ‘ জুম ’অ্যাপলিকেশনে ক্লাস করার কথা জানালেন ফিশারিজ বিভাগের আরেক সিনিয়র শিক্ষক,পিএইচডি গবেষক মো: সাদিকুর রহমান (ইমন)।

জুম এপ্লিকেশনে দুটি বর্ষের ক্লাস নিচ্ছেন ফিশারিজ বিভাগের আরেক শিক্ষক ফখরুল ইসলাম চৌধুরী (সুমন)। তিনি জানান- ‘অনলাইনে ক্লাস করার পাশাপাশি আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম বা গ্রুপেও শিক্ষার্থীদের সংযুক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছি। ’

জুম এপ্লিকেশনে ‘ফিশারিজ মাইক্রোবায়োলজি’কোর্সটির ক্লাস নিচ্ছেন ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ আরিফুল হক(ইমন)। তিনি জানালেন ‘বাংলাদেশে COVID-19 এর কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন তাদের শিক্ষা কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পাদন করতে পারে, সেজন্যই অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করা হচ্ছে।’

এদিকে‘জুম’ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ৩য় বর্ষের ‘ফিশ প্রসেসিং’ কোর্সটির ক্লাস নিচ্ছেন বিভাগটির শিক্ষক সুমিত কুমার পাল।যেহেতু অনলাইন ভিত্তিক এই শিক্ষা কার্যক্রম কিছুটা ব্যয়বহুল। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়টি বিবেচনায় আনা উচিৎ বলে মনে করেন তিনি।

‘জুম’ অ্যাপলিকেশনে সিএসই বিভাগের দুটি ও ইইই বিভাগের একটি কোর্সের ক্লাস নিচ্ছেন সিএসই বিভাগের প্রভাষক মো: হুমায়ন কবির। তিনি জানান- ৫০-৬৫% শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাস করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গ্রুপে শিক্ষার্থীদের কোর্স ম্যাটেরিয়াল দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ’

অনলাইনে ক্লাসের অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হয়েছিল ফিশারিজ বিভাগে তৃতীয় বর্ষের মহিদুর রহমান জিমি’র কাছে। তিনি বললেন-‘অনেকদিন আমাদের ক্লাস বন্ধ ছিল। আজকে ক্লাস করলাম। প্রথম দিকে এই অ্যাপ এ মানিয়ে নিতে সমস্যা হলেও এখন সেটা ঠিক হয়ে গেছে। আমরা সবাই ক্লাস ভাল মত বুঝতে পারছি, স্যারেরা অনেক কষ্ট করে আমাদের লেকচার দিচ্ছেন। সর্বোপরি অামি মনে করি অনলাইন ক্লাস এর মাধ্যমে আমরা আমাদের পড়ালেখা চলিয়ে যেতে পারব আর প্রযুক্তির একটা ধাপ এগিয়ে যাব।’

ইন্টারনেটের ধীরগতি কিংবা উচ্চমূল্যের কারণে ক্লাসের সঙ্গে তাল মেলাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, এমন অভিজ্ঞতার কথাও বললেন কেউ কেউ।

ফিশারিজ বিভাগের ৩য় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী হোসনেআরা জান্নাত হাসি বলেন ‘অনেকদিন পর ক্লাস করছি। প্রথমে ভেবেছিলাম কিছুই বুঝবো না। কিন্তু সবকিছুই ভালো বুঝতেছি। সাধারণ ক্লাসের মতই লাগছে। শ্রেণি প্রতিনিধি (সিআর) হিসেবে আমি আর জিমি সব আপডেট তথ্য সহপাঠীদের জানিয়ে দিচ্ছি।আশা করছি অনলাইন ক্লাস বাকিদেরও ভালো লাগছে। তবে যাদের বাড়ি গ্রামে তাদের একটু নেটওয়ার্ক প্রবলেম হচ্ছে। সব মিলিয়ে অনলাইন ক্লাস ভালোই লাগছে। ’

অনলাইন পাঠদান বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড.সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন- ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে।আর তা পূরণ করার লক্ষ্যে শিক্ষকদের অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনায় উৎসাহিত করা হয়েছে।আর এটি সম্ভব হয়েছে শিক্ষকদের আন্তরিকতা আর শিক্ষার্থীদের আগ্রহের ফলে।’

তিনি আরও বলেন-‘নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি বিভাগেই অনলাইনে পাঠদান চলছে। এটা আমাদের বড় অর্জন।ছুটির পর যাতে শুধু সেমিস্টার পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারবে সেজন্য এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ফলে করোনার ছুটির প্রভাব তাদের শিক্ষাজীবনে পড়বে না।’

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস শুরু

পাবিপ্রবি টুডেঃ করোনা দুর্যোগের মধ্যে শিক্ষা-কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে অনলাইন শিক্ষা কার্মক্রম শুরু করেছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি)। প্রথম দিনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ২১টি বিষয়ে অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে।

বুধবার (৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের উপ-পরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে কয়েকটি বিষয়ে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়। বুধবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২১টি বিষয়ে অনলাইন ক্লাস শুরু করা হয়েছে। তবে অনলাইনে পরীক্ষা বা মূল্যায়ন এই মূহূর্তে হবে না।’

উল্লেখ্য, দেশে করোনার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এর আগে সাতটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে। আর গত ২ মে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত দুই হাজার ২৬০টি অনার্স কলেজে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালানার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া, দেশের ৬৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে।