এবার বিশেষজ্ঞ কমিটির আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি


গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) টানা সাতদিন পর বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যদের আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

দীর্ঘ ৩মাস অবস্থান কর্মসূচির পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ইটিই বিভাগকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইন্জিনিয়ারিং (ইইই) এর সাথে একীভূতকরণের দাবিতে আমরণ অনশন করছিলো এসকল শিক্ষার্থীরা।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) উপাচার্যসহ শিক্ষকদের আশ্বাসে গত ১৬ জানুয়ারি অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেন ইটিই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ইটিই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ১৭ জানুয়ারি আলোচনায় বসেছিল। উক্ত আলোচনায় ২৬ জানুয়ারির মধ্যে তাদের দাবির যৌক্তিকতা বিচারে একটি তদন্ত কমিটি গঠনসহ তিনটি প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়নি। পরে আবার তারা আমরণ অনশন বসে।

এদিকে আজ শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেল ৫ টায় ১৬ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যরা আলোচনাসভা শেষে অনশনরত শিক্ষার্থীদের বিস্কিট এবং পানি খাইয়ে অনশন ভাঙান। এসময় বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যরা জানান, আমাদের পক্ষে সরাসরি ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুযোগ নেই। আমরা শুধুমাত্র সুপারিশ করতে পারি৷ তবে আমরা তোমাদের সমস্যাগুলো অনুধাবন করেছি এবং যাতে এই সমস্যার সমাধান হয় সেই অনুযায়ী সুপারিশ করেছি।

এসময় বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান করেন। সেই সঙ্গে বলেন, বর্তমান উপাচার্য চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ায় তার পক্ষেও এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয় কারণ তিনি একাডেমিক কাউন্সিল কিংবা রিজেন্ট বোর্ডের মিটিং আয়োজন করতে পারবেন না।

বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যদের আশ্বাসে অনশন থেকে বিরত থাকার বিষয়ে ইটিই শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষকরা অনুরোধ করায় আমরা আপাতত অনশন স্থগিত করেছি তবে আন্দোলন স্থগিত করেনি। আর ক্লাসে ফিরে যাবো কিনা এ বিষয়ে আমরা পরবর্তীতে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নিবো।

উল্লেখ্য, ইইই এবং ইটিই বিভাগকে একীভূতকরণের দাবিতে বিগত বছরের ১৭ অক্টোবর থেকে আন্দোলন করে আসছে ইটিই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এদিকে গত ২০ জানুয়ারি বিভাগ দুটির সম্ভাব্যতা সম্পর্কে মতামত প্রদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বশেমুরবিপ্রবির ইইই, ইটিইসহ বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতিদের সমন্বয়ে ১৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়।

আমরণ অনশনে ১১ শিক্ষার্থী হাসপাতালে, ১৬ সদস্যের কমিটি গঠন

বশেমুরবিপ্রবি টুডে


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগকে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সঙ্গে একীভূতকরণের দাবিতে আমরণ অনশনরত ১১ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সমাধানের জন্য ১৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত অনশন চলা অবস্থায় অসুস্থ হওয়া ১১ শিক্ষার্থীকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অসুস্থ ১১ শিক্ষার্থী হলেন- তৃতীয় বর্ষের সাকিবুল হাসান শান্ত, আকাশ বিশ্বাস, চতুর্থ বর্ষের নাফিসা খানম, মো. শিহাব শাহরিয়ার, হান্নান মিয়া, নাসিম, দ্বিতীয় বর্ষের মো. তানিম মিয়া, তুষার, বিপ্রনাথ, আজিজুল হাকিম সবুজ ও আব্দুর রহিম। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে তাদেরকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা শারীরিক দুর্বলতার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানান সহপাঠীরা।

এদিকে সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও বিভাগটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান স্বাক্ষরিত একটি পত্রের মাধ্যমে ১৬ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সকলকে নিয়ে একটি সভায় অংশগ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বশেমুরবিপ্রবির ইইই, ইটিইসহ বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতিদের সমন্বয়ে গঠিত এ বিশেষজ্ঞ দলের প্রথম সভা আগামী ২৫ জানুয়ারি হবে বলে জানা যায়।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ৯০ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করারপরে কোন সমাধান নাপেয়ে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ইটিই বিভাগকে ইইই বিভাগের সঙ্গে একীভূতকরণের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।