কোভিড-১৯ সহ সংক্রমণ জাতীয় রোগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় আইন ও আইন ভঙ্গের শাস্তি

রাকিব হাসান জিসানঃ সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ৪ ধারাতে সংক্রামক রোগের তালিকা দেওয়া রয়েছে। যদিও মূল আইনে করোনার কথা উল্লেখ নেই তবে ৪ ধারা অনুযায়ী সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে নতুন কোন সংক্রামক জাতীয় রোগকে এই আইনের অধীন করতে পারবে বলেও এখতিয়ার রাখা হয়েছে।

প্রথমে পেনাল কোডে তাকালে দেখতে পাই বাংলাদেশ পেনাল কোড ১৮৬০ এর ২৬৯,২৭০,২৭১ অনুযায়ী কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সঙ্গরোধ,জনসমাগম ত্যাগ ও অন্যকে সংক্রমিত করার চেষ্টায় থাকলে সেই ব্যক্তি আইনত অপরাধ করেছেন বলে বিবেচিত হবে।

নিম্নের উপাদানসমূহ যা ব্যক্তির দ্বারা সাধিত হলে বা করলে সে ব্যক্তি অভিযুক্ত হিশেবে পরিগণিত হবে:

*রোগটি সংক্রামক এবং জীবনের জন্যে হুমকি স্বরূপ ছিলো।
*অভিযুক্ত এমন কাজ করেছিলো যা রোগটি ছড়াতে সহায়তা করে।
*অভিযুক্ত কাজটি অবহেলাবশত এবং আইন বিরুদ্ধ ভাবে করে
*সে জানতো যে তার কাজের ফলে রোগটি ছড়াতে পারে

বে আইনি ভাবে অবহেলাজনিত কাজ যার দ্বারা জীবন বিপন্নকারী রোগের সংক্রমণ বিস্তার করার সম্ভাবনাময় কাজ যে ব্যক্তির দ্বারা সাধিত হয় তাকে ২৬৯ ধারা অনুযায়ী ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় প্রকার দন্ডেদন্ডিত হবে।

অপরদিকে কেউ জেনেশুনে ইচ্ছাকৃত ভাবে বিদ্বেষপূর্ণ কাজ করলে যা জীবন বিপন্নকারী রোগের সংক্রমণ বিস্তারের সম্ভাবনা রয়েছে তা ২৬৯ এর চেয়েও মারাত্মক অপরাধ করেছে বলে গণ্য হবে যার শাস্তি ২ বছর বা অর্থদণ্ড বা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

এবং ধারা ২৭১ অনুযায়ী সংক্রমণ সম্ভাবনা এলাকায় সঙ্গরোধ নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে সরকারি আদেশ নিজ ইচ্ছায় অমান্য করলে ঐ ব্যক্তিকে ছয় মাস বা অর্থদণ্ড বা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।

দ্বিতীয়ত বাংলাদেশের সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮( ২০১৮ সনের ৬১ নং আইন ) অনুযায়ী

এই আইনের ২৪ ধারা অনুযায়ী কেউ ইচ্ছায় বা অবহেলায় সংক্রমণ ছড়ালে কিংবা সহায়তা করলে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা কিংবা ৬ মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ড প্রদান করতে পারে।

আবার ধারা ২৫ অনুযায়ী প্রশাসনিক আদেশ অমান্য করলে কিংবা কর্তব্যরত ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে তার কাজে বাধা প্রদান করলে ৩ মাস বা ৫০ হাজার বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

উল্লেখ্য এই আইনের অধীনের অপরাধ অ-আমলযোগ্য,জামিনযোগ্য এবং আপোষযোগ্য এবং এতে ফৌজদারি কার্যবিধির বিচারিক প্রক্রিয়া প্রয়োগ হবে।

লেখকঃ শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)।