আজারবাইজানের জয়, মুসলিম বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্ত!

মুহিব মাহমুদ


নাগোর্নো-কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের মধ্যে যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছিল আপাতদৃষ্টিতে তা রাশিয়ার মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তির মাধ্যমে অবসান ঘটলো। যদিও এই চুক্তির প্রতিবাদে আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভানে হাজারে মানুষ প্রতিবাদ করছে,প্রতিবাদকারীরা পার্লামেন্ট ভবনে পর্যন্ত হামলা চালিয়েছে।

১৯৯২ সালে জাতিগত আর্মেনিয়ানদের কাছে হারানো ভূমি দীর্ঘ ২৮ বছর পর আজেরি জনগন আবারো ফেরত পেতে যাচ্ছে।দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলে আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার এ সংঘাত বহু পুরনো ঘটনা। দুটি দেশই একসময় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সদস্য ছিল। নাগোর্নো-কারাবাখ একটি বিতর্কিত অঞ্চল,তবে এটি আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অংশ।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হাজারো মানুষ হতাহত হয়েছে,আজারবাইজানের গানজা শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে তবুও আজারবাইজান একটুর জন্যও পিছু হটেনি। নাগোরনো কারাবাখের রাজধানী স্টেপানাকার্ট হয়তো আজেরি বাহিনী উদ্ধার করতে পারেনি,তবে গুরুত্বপূর্ণ শহর শুশা এবং কাচিন করিডর সহ আজেরিদের দখল হয়ে যাওয়া জমির ৭০ ভাগ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।

প্রশ্ন হল মুসলিম প্রধান আজারবাইজান খ্রিস্টান প্রধান আর্মেনিয়ার সাথে যুদ্ধে পেরে উঠলো কিভাবে? উত্তর একটাই তুরস্ক! এই যুদ্ধে পাক্কা খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন এরদোগান। আজারবাইজান-আর্মেনিয়া যুদ্ধে প্রথম থেকেই আজারবাইজানকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে গেছে তুরস্ক।

আজারবাইজান ও তুরস্কের জনগন দুই দেশ এক জাতি হিসেবে পরিচিত। বিশ্লেষকরা এখন এটা বলার চেষ্টা করছেন,আজারবাইজান এই যুদ্ধে জিততে পেরেছে একমাত্র তুরস্কের উন্নত প্রযুক্তির ড্রোনের কারণে। আজেরি জনগণও তুরস্কের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুল করেনি,তারা রাজধানী বাকুতে জয়ের উল্লাস করছেন তুরস্ক আর আজারবাইজানের পতাকা নিয়ে।

এই যুদ্ধে সবচেয়ে বড় অর্জন আজারবাইজানের দখল হয়ে যাওয়া শহর শুশা। যে শহরে দীর্ঘ ২৮ বছর পর এখন থেকে পবিত্র আযানের ধ্বনি শোনা যাবে।

এটা কি মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি বড় বিজয় নয়! যেখানে মুসলিম বিশ্ব ক্রমাগতভাবে হারিয়েছিল তাদের পবিত্র শহর জেরুজালেম,সিরিয়ার গোলান মালভূমি কিংবা মিশরের সিনাই উপত্যকা। আজারবাইজান-আর্মিনিয়া যুদ্ধের পর এখন এটা বলার সময় এসেছে,মুসলিমরা একত্রিত হতে পারলে তাদের হারিয়ে যাওয়া গৌরবময় ইতিহাস ফিরে পাওয়া সম্ভব।

শিক্ষার্থী
রসায়ন বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।