৬ দফা দবি না মানলে লাগাতার আন্দোলনের হুশিয়ারি রাবি শিক্ষার্থীদের

 

রাবি প্রতিনিধি

পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। বুধবার বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়ক গুলোতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে একটি প্রতিবাদী সমাবেশ করেন তারা।

এসময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

তাদের দাবিগুলো হলো- স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল ও ক্যাম্পাস খুলে দেয়া, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিভিন্ন বর্ষের আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো নেয়া, সংক্ষিপ্ত সময়ে সকল বর্ষের ক্লাস ও পরীক্ষা নেয়া, সেশন জট এড়াতে কার্যকর সকল পদক্ষেপ গ্রহন করা, অবিলম্বে সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া, শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যাম্পাসের মধ্যে করোনা ইউনিট ও আইসোলেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, আজ আমাদের ক্লাসে থাকবার কথা ছিলো। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য ক্লাসের জন্য রাজপথে নামতে হয়েছে। আমরা আমাদের এই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ থেকে মুক্তি চাই। আমরা অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এসময় দীর্ঘ সেশনজট নিরসনে দ্রুত পরীক্ষা নেয়ার পাশাপাশি আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো নেয়ার দাবি জানান তারা।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলী বলেন, আমরা বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সাথে দেখছি। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে নীতিমালাও দিয়েছেন। সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার বিষয়ে আগামীকাল একটি সভা ডেকেছি। সেখানে সকল ডীন, বিভাগীয় প্রধানসহ প্রশাসন আলোচনার মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্ত নিবেন। এই সার্বিক পরিস্থিতিতে কিভাবে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিচালনা করা যায়, তার একটি অভ্যন্তীন নীতিমালা তৈরী করার চেষ্টা করবে প্রশাসন।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নীতিমালা এবং রাবি শিক্ষক সমিতির অনুরোধে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেন প্রশাসন। তারই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল ৩ জুন সভা ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ মে স্বাস্থ্য বিধি মেনে দ্রুত হল-ক্যাম্পাস খোলার দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

দ্যা ক্যাম্পাস টুডেঃ আগামী ২৯ মে পর্যন্ত দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বন্ধ ঘোষণা দেওয়া থাকলেও চলমান সরকারি বিধি-নিষেধের (লকডাউন) সময়সীমা ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ফলে ৩০ মে পর্যন্তই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে।এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও কিছুদিন বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকরা। জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। তবে তার আগেই করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে আগামী জুনের মাঝামাঝি সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে সরকারের।

এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতে পারে এসএসসি ও এইচএসসি ব্যাচ। তথ্য মতে, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ওই বছর ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দফায় দফায় তা বাড়িয়ে আগামী ২৯ মে পর্যন্ত করা হয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দেশের প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে শিক্ষাবিদ ও শিক্ষকরাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিগগির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

তারা বলছেন, বৈশ্বিক এই মহামারিটি শিগগির যাবে না। এটিকে নিয়েই সবার চলতে হবে। তাই শিক্ষার গতিপথ ফিরিয়ে আনতে সরকারকে এ বিষয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। এদিকে, দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সোমবার (২৪ মে) বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

শিক্ষার গতিপথ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানোগ্রাফি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মুসলেম উদ্দিন মুন্না বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সময় কখনো আসবে না।

যেহেতু এটি একটি বৈশ্বিক মহামারি তাই এটি আজ-কালের মধ্যে চলে যাবে ব্যপারটি এমন না। এটিকে নিয়েই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। এমন চিন্তায় যদি আমরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারি তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন নয়?

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখলেও সুরক্ষা ব্যপারটা তো আর থাকছে না। যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে না তারা কি আর বের হচ্ছেনা? স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছু খোলা রাখা হয়েছে এবং আমরাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে জীবনযাপন করছি।

একইভাবে স্বাস্থ্যবিধি যেন সবাই মানে সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা উচিত। আমি মনে করি, এ প্রজন্মকে ধরে রাখতে হলে ও শিক্ষার গতিপথ ফিরিয়ে আনতে সরকারকে গভীরভাবে ভাবতে হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, সভ্য দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে। সরকার চাইলে বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে পারতেন। সরকার সেটি করেননি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়াছে কিনা, এ প্রসেঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এই মুহূর্তে ছুটি অল্প কিছু বাড়াতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি কয়দিন বাড়ছে, এখন সুনির্দিষ্ট করা বলা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা এখনও দেওয়া যায়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন ৬ লাখ টিকা আসছে, শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দিয়ে দিতে। সেটা দিতে কিছু সময় লাগবে। আমরা কী কী করছি বুধবার (২৯ মে) বলতে পারবো।

 

৭ বছরেও শেষ হয়নি অনার্স, দ্বিতীয় দিনেও অবরুদ্ধ প্রশাসনিক ভবন

বেরোবি প্রতিনিধি


সেশনজট মুক্ত ও দ্রুত অনলাইন ক্লাস চালুকরণের দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরুদ্ধ করে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের (২০১৪-১৫) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টা থেকে প্রায় ২ ঘন্টাব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের গেট বন্ধ করে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।

তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলে জানান তারা। পরে উপাচার্য ক্লাস শুরু করার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা প্রশাসিক ভবন অবমুক্ত করে চলে যায়।

ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, অনেক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনকি আমাদের (বেরোবি) বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু বিভাগে অনলাইনে ক্লাস চলছে। অথচ ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও ক্লাস শুরু করতে পারেনি ইংরেজী বিভাগ।
৪ বছরে ৮ সেমিস্টারে স্নাতক শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৬ বছরে মাত্র ৬ সেমিস্টার সেমিস্টার সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, অনার্স সম্পন্ন না হওয়ার কারণে আমরা কাঙ্খিত জায়গায় চাকরির জন্য আবেদন করতে পারছিন না। প্রায় ৩ বছরের এ সেশনজটের পেছনে শিক্ষকদের হেয়ালিপনা ও দায়িত্বহীনতাকেই দায়ী করছেন তারা। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘৭ বছরের ৪র্থ বর্ষে, অনার্স শেষ হবে কবে? হতাশার নাম ইংরেজি বিভাগ।

সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কিংবা শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে পুরোপুরি অনলাইনে ক্লাস নেয়ার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। আগামী ১৫ অক্টোবর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণকে নিয়ে ইউজিসিতে মিটিং আছে। মিটিংয়ে ক্লাসের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত হবে তা পরবর্তীতে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গতকাল (১২ অক্টোবর) দ্রুত ফলাফল প্রকাশ, অনলাইনে ক্লাস চালুকরণ ও একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থা কর্মসূচি পালন করে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৮টি ব্যাচের শতাধিক শিক্ষার্থী। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভাগীয় প্রধান তাদের দাবিগুলো মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে তারা চলে যায়।

ভিসি আউট আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার হয়নি এক বছরেও

বশেমুরবিপ্রবি টুডে


২০১৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। স্থানীয়দের কর্তৃক ওই হামলায় আহত হয়েছিলেন প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। সেই সময় শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের আন্দোলন বন্ধ করতেই তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের নির্দেশে ওই হামলা করা হয়েছিলো।

এ ঘটনায় ওই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক কোনো মামলা দায়ের না করায় প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বাদী হয়ে এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। তবে এক বছর পার হয়ে গেলেও হামলার জড়িত পাঁচ শিক্ষার্থীর স্থায়ী বহিষ্কার এবং এক শিক্ষার্থীর দুই বছরের বহিষ্কারাদেশ ব্যতীত এ ঘটনার আর কোনও বিচার পাননি শিক্ষার্থীরা।

মামলার একজন বাদী প্রিয়তা দে বলেন, “মূলত আন্দোলন বন্ধ করতেই আমাদের ওপর হামলা করানো হয়েছিলো। হামলার পর বিচার নিশ্চিত করতে মামলা করাটা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব হলেও তারা ওই সময়ে মামলা না করায় আমরা ৭-৮ জন শিক্ষার্থী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী উল্লেখ করে মামলা করেছিলাম। পরবর্তীতে আমরা হামলাকারীদের ছবিসহ বিভিন্ন ডকুমেন্টস প্রদান করেছিলাম। কিন্তু এক বছর পার হলেও হামলাকারীদের শনাক্ত করা হয়নি এবং কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি।”

এদিকে, দীর্ঘ এক বছরেও বিচার না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হামলায় আহত শিক্ষার্থীরা। কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ মাশুকুর রহমান বলেন, “আমি সামনে থেকে খুব খারাপভাবে হামলার শিকার হওয়া একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বলতে পারি, এতগুলো উর্বর বিবেকের উপর এমন হামলা, একজন মানুষের পক্ষে কল্পনাও করা সম্ভব নয়। সাবেক উপাচার্যের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে আমি সহ আমার ভাই-বোনের উপর নির্বিচারে যে হামলা করা হয়েছিলো তার বিচার আমরা আজ অবধি পাইনি। নবনিযুক্ত নতুন ভিসি মহোদয় এবং প্রশাসনের কাছে দাবি থাকবে,যে বা যারা এই জঘন্যতম হামলার সাথে জড়িত ছিলো সকলকে বিচারের আওতায় এনে ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করার। যাতে পরবর্তীতে কেউ এমন ঘৃণ্য কাজ করার সাহস না পায়। আমি আমার কিংবা আমাদের উপর নির্মম আঘাতে শরীর বয়ে ঝড়ে পড়া প্রতিটি ফোটা রক্তের সুষ্ঠ বিচার চাই।”

হামলার শিকার আরেক শিক্ষার্থী মানোস তালুকদার বলেন, “শিক্ষার্থীদের ওপর এর আগেও হামলা হয়েছে কিন্তু কখনও বিচার হয় নি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন কিন্তু সামগ্রিক অবস্থা দেখে এখন আর বিচারের বিষয়ে আশাবাদী হতে পারছি না। আমার মনে হয় এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে জড়িতদের বিচারের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ প্রত্যেককেই দায়িত্বশীল হতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।”

মামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল সেলের কর্মকর্তা সাজিদুর রহমান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের পর থেকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাথে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হওয়ায় এবং করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকায় সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে অবগত নই”

এই মামলাটির বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মনিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে কিছু জানাতে রাজি হননি এবং এ বিষয়ে আদালত থেকে তথ্য সংগ্রহ করার পরামর্শ দেন।

শিক্ষার্থীদের ওপর বারবার এধরনের হামলা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবির প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, “হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষে যতটুকু করা সম্ভব ছিল আমরা সেটা করেছি। যেসকল শিক্ষার্থীরা হামলার সাথে জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এছাড়া বর্তমানেও কোন সমস্যা তৈরি হলে সেগুলো সমাধান করছি এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।”

কুবিতে এবার প্রশাসনিক ভবনে তালা দিলো সাংবাদিকতা বিভাগ

ইকবাল মুনাওয়ার, কুবি প্রতিনিধি


প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে ক্লাসরুমের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ক্লাসরুম বাড়ানোসহ ৫ দফা আন্দোলনে করে ব্যাবসায় অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

আজ সোমবার (০২ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে ক্লাসরুমের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে অবস্থান নেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করার কারণে প্রশাসনিক ভবনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভবনে প্রবেশ করতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন।

এ সময় ক্লাসরুম সংকটের প্রতিবাদের অংশ হিসেবে প্রতীকী ক্লাস নেন বিভাগটির আসমা ইসলাম নামে একজন শিক্ষার্থী। এ ছাড়াও সেই সময় বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ করতে থাকে শিক্ষার্থীরা।

প্রতীকী ক্লাস সম্পর্কে আসমা বলেন, দীর্ঘদিন আমাদের ক্লাসরুম সংকট, এর প্রতিবাদে এবং আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই প্রতীকী ক্লাস নিয়েছি। এছাড়া তিনি জানান, ক্লাসরুম না দেয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

এ সময় অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১টি ক্লাসরুম নিয়ে চলছে সাংবাদিকতা বিভাগ। বর্তমানে ৫ টি ব্যাচ থাকলেও ক্লাসরুম বাড়ানো হয়নি। গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে কয়েকটি রুম বরাদ্দ দিলে ওই অনুষদের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সেটি ফিরিয়ে নেয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক সপ্তাহ সময় চেয়েছে। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে আমরা ক্লাস-পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত। তাছাড়া একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এভাবে শিক্ষা-কার্যক্রম চলতে পারে না।

বিভাগটির আন্দোলনরত ছাত্রআরাফাত হোসেন জানান, ‘দীর্ঘ চার বছর আমরা একটি কক্ষে ক্লাস ও পরীক্ষা দিচ্ছি। ল্যাব না থাকায় আমরা ব্যবহারিক কাজগুলো হাতে কলমে শেখার সুযোগ পাচ্ছিনা।,’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।

যবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ৮ দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি

ওয়াশিম আকরাম, যবিপ্রবি প্রতিনিধি


যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারসহ ৮ দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছে।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে আমরণ অনশন কর্মসূচি করে।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সভায় ডিসিপ্লিন কমিটির সুপারিশে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে ছয় শিক্ষার্থীকে।

এদিন আমরণ অনশনরত আজীবন বহিস্কৃত শিক্ষার্থী অন্তর দে শুভ জানান, জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কে ধ্বংস করার নীল নকশা এঁকেছে এই স্বৈরাচারী ভিসি আনোয়ার হোসেন, আমরা যতবারই প্রতিবাদ করতে গিয়েছি ততবারই আমাদের বহিষ্কার হতে হয়েছে, তবে আজ দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তাই আমরা শহীদ মিনারে আমরণ অনশনে বসেছি।

আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ে রিটেক ফি থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে অনেক বৈষম্যের শিকার হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এছাড়া যারা অসামঞ্জস্যতা নিয়ে কথা বলছে তাদেরকে বিভিন্নভাবে বারেবারে বহিষ্কার করা হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- অনতিবিলম্বে অবৈধ বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে, প্রশাসনের সেচ্ছাচারিতা ও স্বৈরচারী আচরণ বন্ধ করতে হবে, ল্যাব রিটেক ও কোর্স রিটেকের জরিমানা বাতিল করতে হবে, ইম্প্রুভিং সিস্টেম চালু করতে হবে, ক্লাসে উপস্থিতি (৬০-৭০)% হলে পাচ হাজার টাকা জরিমানা এবং (৫০-৬০)% হলে দশ হাজার টাকা জরিমানা বানিজ্য বন্ধ করতে হবে, রিটেক কোর্সের সিজিপিএ ৪ কাউন্ট করতে হবে, চাকুরীর নিয়োগের ক্ষেত্রে যবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির ক্ষেত্রে যে অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতা হয়েছে তার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা যে দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলন করছে তার বেশিরভাগই অনেক আগেই মেনে নেয়া হয়েছে। রিটেক ফি ৭৫ শতাংশ মওকুফ করে দেয়া হয়েছে। প্রায় প্রত্যেকটা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে আমাদের গ্রাজুয়েটরা রয়েছেন। তারপরও যদি তাদের কোন দাবি দাওয়া থাকে, তারা যদি আমাকে জানাই আমি বিষয়গুলো বিবেচনায় নিবো, এবং আমি চাই আমার শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে আসুক।

শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রমেই বাড়ছে অস্থিরতা

বশেমুরবিপ্রবি টুডে


বিশ্ববিদ্যালয় মন্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিরবতার প্রতিবাদে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগ অনুমোদনের দাবিতে মশাল মিছিল করেছেন। বিভাগটির অনুমোদনের দাবিতে ১১তম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি নিয়েছেন তাঁরা।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭ টায় ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল বের করেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। এসমস্ত শিক্ষার্থীরা বলেন, যতদিন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ইতিহাস বিভাগের অনুমোদন না দিবে ততদিন আন্দোলন চলবে।

প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবন তালাবদ্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ, ফলে শঙ্কায় ভুগছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অনেকে পড়ালেখা শেষ করে অফিস থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ নিতে পারছেন না। ফলে এক ধরনের অস্থিরতা শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের শিক্ষার্থী আদিব হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার দ্রুত সমাধান চাই। এভাবে এত সমস্যা নিয়ে একটা বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান বলেন, ইউজিসির সাথে পরবর্তী বৈঠকে ইতিহাস বিভাগের অনুমোদনের বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করা হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ভাষা সৈনিকদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন

বশেমুরবিপ্রবি টুডে


গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) ইতিহাস বিভাগের অনুমোদন দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে ভাষা সৈনিকদের স্মরণ করেন।

বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা চত্বর থেকে মোববাতি প্রজ্জ্বলন করে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার পর্যন্ত পদযাত্রা করেন। এ সময় তাঁরা “এক দফা এক দাবি,অনুমোদন কবে দিবি” সহ বিভিন্ন শ্লোগান দেন।

ইতিহাস বিভাগের অনুমোদন দাবিতে টানা সপ্তম দিনের মতো আন্দোলন করছে ওই বিভাগের শিক্ষাথীরা।

ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো.অরুপ হোসেন বলেন,আমরা আন্দোলনের অংশ হিসেবে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেছি। পরে ভাষা সৈনিকদের স্মরণে শহিদ মিনারে অবস্থান করেছি। সেই সাথে যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি আদায় না হবে ততদিন আন্দোলন চলবে।

উল্লেখ্য, ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এক সভায় অনুমোদনহীন ইতিহাস বিভাগে নতুন করে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের নির্দেশ দেয়। এরপরেই বিভাগটির শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩ বিভাগসহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

মধ্যরাতেও বিভাগ অনুমোদনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত

বশেমুরবিপ্রবি টুডে


বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) ভর্তি বন্ধের নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে বিভাগ অনুমোদনের দাবিতে মধ্য রাতেও অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিভাগটির অনুমোদনের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি নিয়েছেন।

এদিন মধ্যরাতেও তাঁরা লেপ-কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে তাদের যৌক্তিক দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন,ইউজিসি যতদিন পর্যন্ত তাদের বিভাগের স্বীকৃতি না দিবে ততদিন তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি ইউজিসির এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ইতিহাস বিভাগে আর কোন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না। ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে ওইদিন রাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এসময় তারা প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।

ইতিহাস বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুন্সী ওহিদুর রহমান বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে না নেওয়া হলে প্রয়োজনে আমরা আরো কঠোর আন্দোলনে যাবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান বলেন, ইউজিসির এক সভায় বিভাগটিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন সুষ্ঠুভাবে সমাপ্ত করার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে বিভাগটিতে নতুন করে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য,বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) কোনো অনুমোদন ছাড়াই ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার অ্যান্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ (বিলওয়াবস) ইনস্টিটিউটের অধীনে ইতিহাস বিভাগ চালু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। বিভাগটিতে বর্তমানে ৪’শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন।

‘ইতিহাস বিভাগের অনুমোদন চাই, দিতে হবে’

শাফিউল কায়েস


একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিদিষ্ট একটি বিভাগ, ঐ বিভাগের শিক্ষার্থীদের অস্তিত্ব ও ভালোবাসা। কোন শিক্ষার্থী চান না যে, নিদিষ্ট সময় পর তাদের বিভাগের অস্তিত্ব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরদিনের জন্য বিলুপ্ত বা বন্ধ হয়ে যাক। তাছাড়া একটা সময় পর বাংলাদেশের কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ বন্ধের এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে কিনা আমার জানা নেই।

দুঃখজনক হলেও সত্যি ‘ইতিহাস বিভাগ’ নিয়ে এমন দুর্ঘটনা ঘটতে চলেছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি)। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন ছাড়াই তিন বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।

এদিকে ০৬ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ইউজিসির এক সভায় বিভাগটিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন সুষ্ঠুভাবে সমাপ্ত করার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ইতিহাস বিভাগে আর কোন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না। ইতিহাস বিভাগে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে এদিন মাঝ রাতে বিক্ষোভ করছেন একই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়েছেন তাদের বিভাগকে ইউজিসি অনুমোদন না দেওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

একজন শিক্ষার্থী অনেক আশা ও স্বপ্ন নিয়ে, একপ্রকার মেধার যুদ্ধে জয় লাভ করার পর একটি পছন্দের বিভাগে ভর্তি হন। একটি পরিবারে সদস্য চান তার পরিবারকে স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে এবং অস্তিত্ব টিকে রাখতে। একটি পরিবারের কোন সদস্য চান না, তার পরিবার বা পরিচয় বিলুপ্ত হোক। তেমনি ‘ইতিহাস বিভাগ’ -এর শিক্ষার্থীরাও চান না, তাদের ইতিহাস পরিবার বিনাকারণে বিলুপ্ত কিংবা অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলুক।

একটা কথা না বললেই নয়, ‘ইতিহাস বিভাগ’ তুচ্ছ কোন বিভাগ নয়। একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ গড়ার প্লাটফর্ম এবং পরিচয় বহন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের মত এই বিভাগেরও সমান গুরুত্ব রয়েছে। তাছাড়া এই বিভাগ না থাকলে দেশের গৌরবময় ইতিহাস চর্চা ও বৈশ্বিক ইতিহাস আমাদের কাছে অজানাই রয়ে যাবে; যা কোন ভাবেই কাম্য হতে পারে না।

আমি চাই ইউজিসি ইতিহাস বিভাগের চারশতাধিক মেধাবী শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে অনতিবিলম্বে ইতিহাস বিভাগের অনুমোদন প্রদান করে এবং যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাবার সুযোগ করে দেবে। এটা অনুরোধ নয়, এটা তাদের প্রাপ্য। ইউজিসির এই সিদ্ধান্তকে কোনভাবেই মেনে নেয়া সম্ভব না কিংবা মেনে নেয়া যায় না।

অবশেষে বলতে চাই, ইতিহাস বিভাগের অনুমোদন চাই, দিতে হবে। এটা যৌক্তিক দাবি, সময়ে দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগের একজন শিক্ষার্থী হিসাবে এটা আমারও দাবি। আমার ভাই-বোনের যৌক্তিক দাবি যেকোন মূল্যে মেনে নিয়ে ইতিহাস বিভাগের অনুমোদন দিতে হবে।


লেখকঃ শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ