আবরার হত্যার ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকসহ দুই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার মাসুদ এলাহীসহ দুই জন সাক্ষ্য দেবেন আজ।

আজ রবিবার বেলা ১২টায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচাররক আবু জাফর মোঃ কামরুজ্জামানের আদালতে ২৫ আসামির বিরুদ্ধে এ সাক্ষ্য গ্রহণের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে গত চার দিন টানা সাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ সহ রাষ্ট্র পক্ষের চারজন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২৫ আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবীরা রাষ্ট্র পক্ষের সাক্ষীদের জেরা করেন।

এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডে বিধান রেখে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এ মামলায় অভিযুক্ত ২৫ আসামির তিন জন পলাতক আর ২২ আসামি কারাগারে রয়েছে।

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ই অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

আবরার ফাহাদের নামে নির্মিত ‘আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ’ ভেঙে দিয়েছে পুলিশ

ডেস্ক রিপোর্ট

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নির্মিত ‘আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ’ ভেঙে দিয়েছে পুলিশ।

বুধবার (৭ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে বুলডোজার দিয়ে এ স্থাপনা ভেঙে দেয় পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে কোন থানার পুলিশ এটি ভেঙে দিয়েছে তা জানা যায়নি।

স্থাপনাটির প্রতিষ্ঠাতা ও আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক, ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কোনো দেশপ্রেমিক মানুষের পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, যারা এ কাজ করেছে তারা এ দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে এ স্থাপনা পুনঃস্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।

‘আজ আমার আব্বুর জন্মদিন’: বাবা হারা মা

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


আবরার ফাহাদের জন্মদিন আজ। ১৯৯৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন আবরার। সে হিসেবে আজ তার ২২তম জন্মদিন। ছাত্র শিবিরের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহ করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। গেস্টরুমে পরিকল্পনা করে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার সিদ্ধান্ত নেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ছেলের মা রোকেয়া খাতুন জানান, “আজ আমার আব্বুর (আবরার ফাহাদ) জন্মদিন। ১৯৯৮ সালে যেদিন ওর জন্ম হলো, সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার (১২ ফেব্রুয়ারি)। বাংলা সনে মাঘ মাস। বড় ছেলে আবরার ফাহাদ যখন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল, তখন নিম্ন-মধ্যবিত্ত এ পরিবারে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছিল। কিন্তু গেলো বছরের ৬ অক্টোবর রাতে সব আশা-আকাঙ্ক্ষা শেষ হয়ে গেছে।

জানা যায়, জন্মদিনে পারিবারিকভাবে আজ তেমন কোনো কর্মসূচি না থাকলেও বাদ আসর কুষ্টিয়া শহরের বাড়ির পাশের আল হেরা জামে মসজিদে নিহত আবরার ফাহাদের জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। জন্মদিনের সকালে ছেলেকে ফোন করে ভালো কিছু খেয়ে নিতে বলতেন রোকেয়া খাতুন। এবার কাউকে কিছু বলার নেই। পাশেই বসে ছিলেন ছোট ছেলে আবরার ফাইয়াজ।

রোকেয়া খাতুন, নিজের জন্মের সাড়ে তিন মাসের মধ্যেই বাবাকে হারিয়েছেন। সে কারণেই ছেলের জন্মের পর থেকেই আব্বু বলে ডাকতেন। আবরার ফাহাদ নামটা স্বামী বরকত উল্লাহর দেয়া। জন্মের পর মাত্র একবার ঘটা করে বাড়িতে আবরারের জন্মদিন পালন করা হয়েছিল। পাঁচ বছর বয়সে, যে বছর আবরারকে স্কুলে ভর্তি করা হয়েছিল, সেই বছর। এখনও মা যত্ন করে রেখেছেন পুরোনো ছবির অ্যালবাম।

আবরার ফাহাদের স্মরণে কুষ্টিয়ায় দোয়া মাহফিল

সারাদেশ টুডে: বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

শুক্রবার আবরারের মায়ের সঙ্গে দেখা করতে তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায় যায় বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। দুপুরে তারা আবরারের পরিবারের সঙ্গে একসঙ্গে খাবার খান। এর আগে জুম্মার নামাজের পর মসজিদে আবরার ফাহাদের জন্য দোয়া করা হয়। এসব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘বুয়েটিয়ান’ পেজে একটি পোস্ট দেয়া হয়েছে।

ফেসবুকের বুয়েটিয়ান পেজে লিখেছেন, “অনেকদিন হচ্ছে, সন্তান হারানোর শোকে আমাদের মা ঠিকমত খেতে পারছেন না। আজ কুষ্টিয়ায় আমাদের প্রিয় বন্ধু-ভাই আবরারের গ্রামের বাড়িতে আমাদের প্রিয় দুঃখিনী মাকে নিয়ে একসাথে দুপুরের খাবার খেলাম। জানি, আমরা কেউই আবরারকে ফিরিয়ে দিতে পারবো না, পারবো না প্রিয় মায়ের সন্তান হারানোর দুঃখ ভুলিয়ে দিতে। কিন্তু আমরা সবাই সব সময় আবরার হয়ে থাকতে চাই আমাদের মায়ের সাথে।”

আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

আবরার হয়ে উঠতে পারেন অনন্ত প্রেরণার উৎস

আলী আর রাজীঃ আপোষহীন, দৃঢ়চেতা, সংশপ্তক, দেশপ্রেমিক, স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অগ্রদূত আবরার ফাহাদ। মৃত্যু যাকে কেবল মহানই করেনি বরং করে তুলেছে বাঙলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মহানায়ক, এ মাটির নতুন রাজনীতির পথপ্রদর্শক। আজ, সর্বার্থে; প্রান্তিক বাঙলাদেশীদের সম্ভাব্য বিপুল উত্থানের প্রতীক আবরার ফাহাদ।

আবরারের সহপাঠী ও বুয়েটের শিক্ষার্থীরা শোকগ্রস্ততার এই ক্ষণে, দেশের জন্য আবরারের আত্মদান ও অবদানকে পরিপূর্ণমাত্রায় উপলব্ধি করতে পারছেন কি না, জানি না। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি বলে, আবরারের আত্মদান নতুন বাঙলাদেশের উত্থান-পর্বের সূচনা করেছে এরই মধ্যে।

এই বিশেষ ক্ষণ এবং এই ক্ষণজন্মা মানুষটিকে দেশবাসীর স্মরণে অক্ষয় করে রাখার গৌরবে তার সান্নিধ্যধন্য সহপাঠীদের অংশ সর্বাধিক। অনুমান করি, আজ হোক বা কাল হোক আবরার ফাহাদের নামে অচিরেই দেশজুড়ে ছাত্রাবাসসহ নানান স্মৃতিস্মারক নির্মাণ শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে হল বা স্মৃতি-স্মারক নির্মাণের আগে, এই মুহূর্তে যে কক্ষটিতে আবরার ফাহাদ খুন হয়েছেন, বুয়েটের শেরেবাঙলা হলের সেই ২০১১ নং কক্ষটিকেই ঘোষণা দেওয়া যেতে পারে স্বাধীন চিন্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা সংগ্রামের সূতিকাগার হিসেবে।

এই কক্ষটিকেই গড়ে তোলা যেতে পারে নতুন প্রজন্মের মুক্তির লড়াইয়ের আতুড়ঘর হিসেবে। এখানে আবরারের আবক্ষ মূর্তি থাকবে, থাকবে তার ফেসবুক-পোস্টের প্রতিলিপি, তার সংগৃহীত বই আর তার স্মৃতিস্মারকগুলো। এভাবেই আবরারের স্মৃতি রক্ষার উদ্যোগ তার আত্মদানের কারণকে যথাযথ মাহাত্ম্য দিতে পারে। আবরারের প্রাণদানের ফলোক্রিয়ায়, জলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে আত্মদান এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার নতুন পীঠস্থান হয়ে উঠতে পারে বাঙলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।

জয় হোক আবরারের।

লিখেছেনঃ সহকারী অধ্যাপক, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

আবরারকে হত্যার মধ্য দিয়ে যে ক্ষতিটা হল, সেটি অপূরণীয়: শিক্ষামন্ত্রী

আবরারকে হত্যার মধ্য দিয়ে যে ক্ষতিটা হল, সেটি অপূরণীয়। শোক প্রকাশের কোন ভাষা নেই । ভাষা দিয়ে এ শোক প্রকাশ করা যাবে না। আমার কষ্ট লাগছে এ কথা ভেবে যে, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে বিশ থেকে তিরিশ জন মেধাবী তরুণদের জীবন শেষ হয়ে গেল।

কেননা, যারা আবরারকে হত্যা করেছে, তারাও বুয়েটের ছাত্র।তাদের কারো ফাঁসি হবে, কারো যাবজ্জীবন, কারো হবে জেল। এই ছেলেগুলো ও নিশ্চয়ই ভালো পরিবারের ছেলে । কিন্তু নষ্ট ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে এই ছেলেগুলো এতটা নষ্ট হয়েছে যে তারা পিটিয়ে আবরারকে মেরেই ফেলল! কী মর্মান্তিক!

আমাদের সবচেয়ে মেধাবী ছেলেরা দল বেঁধে তাদেরই এক সহপাঠীকে পিটিয়ে পিটিয়ে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করল। দোষটা কি ওদের? ছাত্র রাজনীতির যে দুষ্টচক্রের মধ্য দিয়ে এই মেধাবী ছাত্রগুলো নষ্ট হল; হয়ে উঠল একটা একটা দানব ও দুর্বৃত্ত; সেই দুষ্টচক্রকে হঠানো না গেলে, দুর্বৃত্তায়নের প্রক্রিয়াকে নির্মূল করা না গেলে আবরাররা বলি হতেই থাকবে।

সমাজ থেকে সহিষ্ণুতা, পরমতের প্রতি শ্রদ্ধা, গঠনমূলক সমালোচনা, ন্যায্যতার বোধ, ও মুক্তচিন্তা হারিয়ে যাচ্ছে, সেটিও যথেষ্ট শংকা ও উৎকন্ঠার বিষয়। আশা করছি প্রিয় নেত্রী এই বিষয়ে নজর দিবেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”

লিখেছেন ডাঃ দীপু মনি, শিক্ষামন্ত্রী, বাংলাদেশ।

মেধাবী হওয়াটা গুণ কিন্তু ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়াটা তো গুণ নয় বরং দোষ: তসলিমা

ফেসবুক পাতা টুডেঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নির্যাতনে নিহত আবরারকে নিয়ে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকালে তসলিমা নাসরিন একটি পোস্ট দেন।



“তাকে যারা পিটিয়েছিল, আমার বিশ্বাস, মেরে ফেলার উদ্দেশে পেটায়নি। কিন্তু মাথায় আঘাত লেগেছে, মরে গেছে।”



তসলিমার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি ‘দ্য ক্যাম্পাস টুডে’পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

“আরবাব ফাহাদের গুণের বর্ণনা করতে গিয়ে আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব, পাড়া পড়শি, চেনা পরিচিত সবাই বলছেন আরবাব মেধাবী ছিল এবং আরবাব ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো। মেধাবী হওয়াটা নিশ্চয়ই গুণ কিন্তু ২১ বছর বয়সে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়াটা তো গুণ নয়, বরং দোষ।


আরও পড়ুনঃ ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে স্ট্যাটাস, আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার

বিজ্ঞানের ছাত্র হয়ে ব্রহ্মাণ্ডের উৎপত্তি, বিবর্তনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই! সাত আকাশের ওপর এক সর্বশক্তিমান বসে আছে, সে ছ’দিনে আসমান জমিন বানিয়েছে, আদম হাওয়াকেও মাটি দিয়ে বানিয়েছে, কথা শোনেনি বলে জমিনে ফেলে দিয়েছে, কেউ একজন ডানাওয়ালা ঘোড়ায় চড়ে তাকে এবং তার বানানো স্বর্গ নরক দেখে এসেছে — এসব আজগুবি অবিজ্ঞান আর হাস্যকর গাল গপ্প কোনও বুদ্ধিমান কেউ বিশ্বাস করতে পারে? আরবাব পড়তো হয়তো বিজ্ঞানের বই, পরীক্ষা পাশের জন্য পড়তো। তার বিজ্ঞান মনস্কতা ছিল না।

নিজস্ব চিন্তার শক্তি ছিল না। একে আমি পড়ুয়া বলতে পারি, মেধাবী বলবো না। আরবাব ছিল নিব্রাস ইসলামদের মতো। একবিংশ শতাব্দির আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো, কিন্তু মাথায় চোদ্দশ বছর আগের অবিজ্ঞান আর অনাধুনিকতা।”

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

আবরারের ভাবিকেও পিটিয়েছে পুলিশ

সারাদেশ টুডেঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের মামাতো ভাবি তমাকে পুলিশ বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ করে আবরারের পরিবার।

পরে তাকে কুমারখালী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই সময় ছোটভাই ফায়াজকেও মারধর করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আবরারের ছোট ভাইসহ ৩জন আহত হন।

বুধবার (০৯ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম আবরারদের বাড়ি।কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গেলে এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভিসি আসার সংবাদ পেয়ে আবরারের বাড়ির সামনে জড়ো হতে থাকে গ্রামবাসী। মুহূর্তেই কয়েক হাজার নারী-পুরুষ আবরারের বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে।

বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ওই গ্রামে যান উপাচার্য। সেখানে গিয়ে রায়ডাঙ্গা কবরস্থানে আবরারের কবর জিয়ারত করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো এলাকা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। করব জিয়ারত শেষে আবরারের বাড়ির দিকে আসতে থাকে ভিসির গাড়িবহর। আবরারের বাড়ি ঢোকার মুখে ভিসির গাড়ির সামনে নারীরা শুয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দ্রুত গাড়ি ঘুরাতে থাকেন।

ভিসির গাড়িবহর চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ লাঠিচার্জে আবরারের মামাতো ভাবি তমা গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে কুমারখালী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৩ টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হল থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুমে থাকতেন। কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামের বরকত উল্লাহ ছেলে ফাহাদ বাড়ি থেকে রবিবারই হলে ফেরেন।

কুষ্টিয়ার এসপি: ‘আবরারের পরিবার জামায়াত-শিবির’

সারাদেশ টুডেঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) নির্মমভাবে পিটিয়ে নিহত ছাত্র আবরার ফাহাদের পরিবার জামায়াত-শিবির বলে দাবি করেছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভীর আরাফাত। এদিকে নিহত আবরারের ছোটভাই ফায়াজকে পুলিশ মারধর করেছে, এমন অভিযোগ উঠেছে।

আবরারের ছোট ভাই ফায়াজ বলেন, “কুষ্টিয়ার অ্যাডিশনাল এসপি তাকে কনুই দিয়ে আঘাত করেছেন। এবং তার ভাইয়ের জানাজার সময় বলেছিলেন দুই মিনিটে যেন জানাজা শেষ করা হয়।”

এদিকে এসপি আরাফাত অস্বীকার করে বলেন, “এসব মিথ্যা কথা। এখানে সবাই উপস্থিত আছেন। এসব মিথ্যা প্রগাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। ভিসিকে মারতে পারে নাই এ জন্য।”

এ ঘটনায় এলাকাবাসী কি ভিসির ওপর আক্রমণের কোনো চেষ্টা করেছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে এসপি আরাফাত বলেন, “এলাকাবাসী না, ওদের পরিবার জামায়াত-শিবিরের লোকজন। জামাতের লোকজন আক্রমণের চেষ্টা করেছিল।”

উল্লেখ্য, গত রবিবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ব্যাপারে জানা যায়, ওই রাতেই হলটির ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

 

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

আবরার হত্যাকাণ্ড, বিচার চায় জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক টুডেঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ নির্মমভাবে হত্যার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার চায় জাতিসংঘ।

বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস-বিস) মিলনায়তনে ডিক্যাব টকে এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো। এ বিষয়ে জাতিসংঘ থেকে একটি বিবৃতিও দেয়া হয়েছে বলেও জানান মিয়া সেপ্পো।



“এটি একটি দুঃস্বপ্ন। কোনো অভিভাবক চান না, তার সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এভাবে মারা যাক।”



আবরার ফাহাদ হত্যা সম্পর্কে মিয়া সেপ্পো বলেন, “এটি একটি দুঃস্বপ্ন। কোনো অভিভাবক চান না, তার সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এভাবে মারা যাক। এ মৃত্যুর পর মানুষের ক্ষোভ দেখেছি আমরা। এ হত্যার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার চায় জাতিসংঘ।’

এ হত্যাকাণ্ডে এর আগে বিস্মিত ও মর্মাহত হওয়ার কথা জানিয়ে বিবৃতি দেয় যুক্তরাজ্য।

ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দফতর থেকে বুধবার (০৯ অক্টোবর) দুপুরে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবাধ মতপ্রকাশের অভিযোগে বুয়েটের এক তরুণ শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘ নিন্দা জানাচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে অভিযুক্তদের বিচার না করায় বাংলাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে সহিংসতায় অনেকেই প্রাণ দিয়েছেন। জাতিসংঘের বাংলাদেশ দফতর লক্ষ্য করছে, অভিযুক্তদের ধরার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে। এর ফলে স্বাধীন তদন্তকারীরা একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে স্বচ্ছ বিচারের পথে যাবেন, যা ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সহায়ক হবে।

অপরদিকে আবরার ফাহাদ হত্যায় শোক জানিয়েছে জার্মানি। পাশাপাশি মত প্রকাশের স্বাধীনতা লঙ্ঘন শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেও মনে করেছে দেশটি। ঢাকায় অবস্থিত দেশটির দূতাবাস নিজেদের ফেসবুজ পেজে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।

প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৩ টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হল থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুমে থাকতেন। কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামের বরকত উল্লাহ ছেলে ফাহাদ বাড়ি থেকে রবিবারই হলে ফেরেন।

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।