জবি: আবরার হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদলের মিছিলে ছাত্রলীগের হামলা

জবি টুডেঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিলে হামলা করেছে ছাত্রলীগ । এ ঘটনায় জবি ছাত্রদলের অন্তত ১০ নেতা আহত হয়েছেন।

বুধবার (৯ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছাত্রদলের ২ জনকে আটক করেছে। আহতদের ২ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।



আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগ লীগের হামলা। ছাত্রদলের ১০ নেতা আহত।



আহত দুজন হলেন-জবি ছাত্রদলের সহসভাপতি মিজানুর রহমান নাহিদকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং যুগ্ম-সম্পাদক মিজানুর রহমান শরীফকে সুমনা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে

ঘটনার বিষয়ে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলায় সমবেত হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে থেকে আবরার হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি নিয়ে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি অবকাশ ভবনের সামনে আসলে পেছন থেকে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় জবি ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক আলী হাওলাদার ও ছাত্রদল কর্মী জাহিদকে কোতোয়ালি থানায় আটক করা হয়েছে।

হামলার ব্যাপারে ছাত্রদল সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, আবরার হত্যার প্রতিবাদ ও ছাত্রদলের ক্যাম্পাসে নিয়মিত যাওয়ার কর্মসূচি হিসাবে ক্যাম্পাসে গেলে ছাত্রলীগ আমাদের উপর হামলা করে। এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের ক্যাম্পাস, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমরা নিয়মিত আসবো। এত কেউ বাধা দিল এর জবাব ক্যাম্পাসেই দেওয়া হবে।

কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) মওদুদ বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হচ্ছিলো তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা ছাত্রদলের ২জনকে আটক করেছি। তারা আমাদের হেফাজতে রয়েছে।”

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য জবি প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালকে বারবার ফোন দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

ছাত্রলীগ: গেস্টরুমে ভালো কিছু শেখানো হয়, নির্যাতন হয় না

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ গেস্টরুমে ভালো কিছু শেখানো হয় প্রসঙ্গ টেনে ছাত্রলীগ বলেছে, এখানে কোন নির্যাতন করা হয় না, শিক্ষার্থীদের ভাল কিছু শিখানো হয়’।

বুধবার (০৯ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের নির্মম হত্যাকাণ্ডে গৃহীত ব্যবস্থার পর্যালোচনা এবং হত্যাকারীদের দ্রুত সময়ে শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতারা এ দাবি করেন।



“গেস্টরুম ভালো সংস্কৃতি। এখানে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অনেক নিয়মকানুন শেখানো হয়। ছাত্রলীগ এটাকে পজিটিভ হিসেবেই দেখছে। গেস্টরুমে নেগেটিভ কিছু অত্যন্ত কম হয়।”



গেস্টরুম নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, “গেস্টরুম ভালো সংস্কৃতি। এখানে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অনেক নিয়মকানুন শেখানো হয়। ছাত্রলীগ এটাকে পজিটিভ হিসেবেই দেখছে। গেস্টরুমে নেগেটিভ কিছু অত্যন্ত কম হয়।”

ফাহাদ হত্যা নিয়ে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেন, “আবরার হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের প্রশ্রয় দেওয়া হয়নি। সাংগঠনিকভাবে তাদের ১১ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এর বাইরে আর কারও সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাদেরও যেন খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ছাত্রলীগ সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।”

প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৩ টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হল থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুমে থাকতেন। কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামের বরকত উল্লাহ ছেলে ফাহাদ বাড়ি থেকে রবিবারই হলে ফেরেন।

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

আবরার হত্যা: জড়িতদের ফাঁসি চেয়ে বশেমুরবিপ্রবিতে মানববন্ধন

বশেমুরবিপ্রবি টুডেঃ বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদ ও খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।



আবরারের এ হত্যাকান্ড আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কখনোই মেনে নিতে পারি না, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।



অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা আবরার হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুত খুনিদের সর্বোচ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান

মানবন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা জানান, দেশের সব থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীরাই ভর্তি হন বুয়েটের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আর সেখানেও যদি নিজের বাক স্বাধীনতা প্রকাশের জন্য কাউকে খুন হতে হয়, তাহলে দেশ কোন দিকে যাচ্ছে।

বক্তারা আরও বলেন, আবরারের এ হত্যাকান্ড আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কখনোই মেনে নিতে পারি না, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।

প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৩ টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হল থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুমে থাকতেন। কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামের বরকত উল্লাহ ছেলে ফাহাদ বাড়ি থেকে রবিবারই হলে ফেরেন।

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

আবরার আমার বন্ধু

আবরার আমার বন্ধু। একই সেশনের (‘১৭) ছাত্র আমরা। একই জেলা জন্মস্থান আমাদের। ওকে খুন করা আর আমাকে খুন করার মধ্যে তত্ত্বগত কোনো ভিন্নতা নেই। আজ ও খুন হয়েছে, কাল আমি খুন হবো, পরশু আপনি খুন হবেন। গতপরশুও দ্বীপ খুন হয়েছিলো, গতকালও বিশ্বজিৎ খুন হয়েছিল।


কিন্তু আমি অনেক খুশি এটা দেখে যে, আমার বন্ধু আবরারের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে আমার দেশের মানুষগুলো চুপ নেই। নিঃসংকোচে প্রতিবাদ করছে সবাই। বিচার চাইছে দেশের কাছে। আজ ওদের এতো এতো প্রতিবাদের এই জোয়ারের কারণেই আবরার হত্যাকাণ্ডের বিচার-প্রক্রিয়া তীব্র গতিতে এগোচ্ছে। তবে এ এক লজ্জাজনক সত্য। বিচারের জন্য কেন হাজার হাজার মানুষ সমস্বরে চিৎকার করে বলবে, বিচার দাও, বিচার চাই? বিচার কেন আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাসের মতো স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বাভাবিক প্রবৃত্তি নয়? কেন অন্যায় করা মাত্রই বিচার কার্যক্রম শুরু হয় না?


যাক সেসব কথা। আমার দেশের মানুষ জেগে উঠেছে এটাই বড় কথা। তবে একটা প্রশ্ন, কাল যখন আমি মরবো তখনও কি আমার দেশের মানুষ একইভাবে প্রতিবাদ করবে? বিচার চাইবে?


বুয়েটেরই ছাত্র দ্বীপ যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়ে নৃশংসভাবে কোপ খেয়ে মরেছিলো তখন তো আমার মানুষগুলো বিচার চায়নি। একের পর এক ব্রাহ্মণ যখন সিরিয়ালি খুন হতে থাকলো, তখন তো আমার মানুষগুলো বিচার চায়নি। হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পরও তো আমার মানুষগুলো হত্যাকারীদের উপর ক্রাশ খাওয়া ছাড়েনি৷


প্রিয়া সাহা ও ইসকন ইস্যুকে কেন্দ্র করে আমার মানুষগুলো তো হিন্দুদের দেশদ্রোহী বলতে থামেনি। একই সফরের মুহিবুল্লাহ যখন দেশে এসে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নিয়ে সমাবেশ করে বলে রোহিঙ্গারা না চাইলে বাংলাদেশের কেউ তাদের বের করে দিতে পারবে না। রোহিঙ্গারা এই দেশেই এই ভূখণ্ডেই অধিকার নিয়ে থাকবে। তখন তো আমার মানুষগুলো একটুও উদ্বেগ দেখায়নি। অথচ এখন আসাম থেকে নাগরিকত্ব হারানো বাঙালি আসতে না আসতেই আমারই মানুষগুলো বড্ড চিন্তায় পড়েছে।


স্বজাতি বাঙালির চেয়ে বিজাতি রোহিঙ্গা কেন বড়? আমাদের কাছে হিন্দু মারাঠির চেয়ে মুসলিম বাঙালি বেশি প্রিয় – বোধহয় এটাই হিন্দুদের ভুল। আমরা জয় শ্রী রাম বলে সারাবিশ্বের হিন্দু একত্রিত হই না এবং এক হিন্দুত্বের ছায়াতলে পুরো বিশ্বকে আনতে চাই না – বোধহয় এটাই হিন্দুদের ভুল।


কেন আবরার হত্যার দায় হিন্দুদের উপর চাপাতে চাওয়া হচ্ছে? কেন অনিক সরকারকে হিন্দু বলে প্রচার করা হচ্ছে? কেন প্রশাসনের কারণ দেখানোর পরও অমিত সাহাকে হত্যাকারীদের দলে ফেলা হয়নি বলে এতো প্রতিবাদ? প্রতিবাদটা আবরারের খুন হওয়ার জন্য নাকি অমিত সাহাকে খুনি সাব্যস্ত করার জন্য? কেন হঠাৎ খুনি হিসেবে দর্শায়িত মোঃ অনিক সরকারকে নিয়ে এখন আর খুনি বলে চিল্লানো হচ্ছে না?


নাদিয়া, আসিফ মহিউদ্দিন, নয়ন চট্টা আর পিনাকী ভট্টারাই আজ প্রতিবাদের উৎসস্থল। এরা উসকে না দিলে আমার মানুষগুলো বিচার চাইতে পারে না, কথা কইতে চায় না, প্রতিবাদ করতে জানে না৷ একটা হিন্দুকে খুনি বা জঙ্গি বানাতে এদের যেই নিরলস পরিশ্রম, তা হয়তো খুব তাড়াতাড়িই সফলতার সূর্য দেখবে। এরা খুব তাড়াতাড়িই হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা বাধিয়ে ওলটপালট করে খাবে।


সব খুনিকে আজ থেকে ধর্ম দিয়েই বিচার করা হোক। মোঃ অনিক সরকার একজন খুনি। শ্রী অমিত সাহা মেজরিটির বিচারে একজন নৃশংস খুনি। করো মূর্খের দল – করো এ বাণী প্রচার। ডাকিয়া আনো আঁধার। খুনির জয়ে অবিকার। আজ থেকে সব নষ্টদের অধিকার।



লিখেছেন শ্রী অর্পন কৃষ্ণ গোস্বামী, ফেসবুক পাতা থেকে।



 

“আবরারের বাব-মা’র অভিশাপে যেন ধ্বংস হয় অসুস্থ সমাজ”

ফেসবুক টুডেঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে বইছে নিন্দার ঝড়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, দেশের গণমাধ্যম এবং বিশ্ব গণমাধ্যমে আলোচলনার শীর্ষে আবররার হত্যাকান্ড ও বাংলাদেশ-ভারত চুক্তি।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে ফেসবুকে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন অভিনেত্রী ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন।

স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য……

“বুয়েটের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগেরই ‘৬৯ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন আমার বাবা।সারা জীবন তার মুখে গর্বের সঙ্গে উচ্চারিত হওয়া এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার স্বপ্ন ছিল আমারও। ভর্তি পরীক্ষার ফরম তোলার সময় ঢাকার বাইরে থাকায় পরীক্ষাই দিতে পারিনি আমি! সেই দুঃখ ভোলার জন্য প্রায়ই ভেবেছি পুত্রদ্বয়ের যেকোনো একজন যেন এই মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অংশীদার হতে পারে।



একেকটা আঘাতে ছেলেটা কি ‘মা গো’ বলে চিৎকার দিয়েছিল? ‘মা গো’ ডাক শুনে খুনি ছেলেগুলোর কি একটুও নিজের মা-এর কথা মনে পড়েনি! ঠিক কতবার.., কতক্ষণ ধরে.., কতটুকু আঘাত করলে ২০/২১ বছরের একটা তরুণ ছেলে মরেই যায়! আমি আর ভাবতে পারি না।



এই প্রতিষ্ঠানের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগেরই ছাত্র ছিল আবরার। আবরারের কথা ভাবি আর আমার পুত্রদ্বয়ের মুখের দিকে তাকাই। আমার বুক কাঁপে। বাচ্চা দু’টোর পিঠ হাত-পা’র ওপর হাত বুলিয়ে দেই। ছোটবেলায় এ রকম ছোট ছোট হাত পা-ই তো ছিল আবরারের! তার মা কত রাত পিঠে হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে তাকে!

একেকটা আঘাতে ছেলেটা কি ‘মা গো’ বলে চিৎকার দিয়েছিল? ‘মা গো’ ডাক শুনে খুনি ছেলেগুলোর কি একটুও নিজের মা-এর কথা মনে পড়েনি! ঠিক কতবার.., কতক্ষণ ধরে.., কতটুকু আঘাত করলে ২০/২১ বছরের একটা তরুণ ছেলে মরেই যায়! আমি আর ভাবতে পারি না।

ফেইসবুকে আবরারের পিঠটার ছবি দেখলাম। কী ভয়ংকর! কী নৃশংস! কী কষ্ট! এই ছবিটা যেন তার বাবা-মা’র চোখে না পড়ে। ভুল বলেছি। আবরারের বাবা, আবরারের মা তাদের বাবুটার ক্ষতবিক্ষত পিঠে হাত বুলিয়ে যেন অভিশাপ দেন মানুষের মতো দেখতে খুনি অমানুষগুলোকে। তাদের অভিশাপে যেন ধ্বংস হয়ে যায় এই অসুস্থ সমাজ।

নুসরাতকে ভুলে গিয়েছি, আবরারকেও ভুলে যাব, বিচার চাই বলে লাভ আছে কিনা জানি না তবুও, বিচার চাই।”

দ্য ক্যাম্পাস টুডে

আবরার হত্যার প্রতিবাদে কুমিল্লায় বিক্ষোভ-মিছিল

কুবি টুডেঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে কুমিল্লায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) সকাল ১০টায় কুমিল্লা নগরীর টাউনহলে বিক্ষোভ মিছিলটি করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি), কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।



“আবরারসহ যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে সবগুলোর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ভবিষ্যতে যেন নতুন আবরার হত্যার স্বীকার না হয় সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো হল প্রশাসনকে সজাগ থাকতে হবে।”



বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে এক সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন স্লোগানের মূখরিত হয়ে উঠে কুমিল্লা নগরী।

স্লোগানের মধ্যে ছিলো- ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, সন্ত্রাসীদের ঠাই নাই’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘দিয়েছি রক্ত, আরও দেবো রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্র সমাজ জেগেছে’ ইত্যাদি।

বিক্ষোভ মিছিলের সময় কুবি শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম হানিফ বলেন, “আবরারসহ যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে সবগুলোর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্বজিৎ হত্যার মতো যেন আসামীরা আইনের ফাক দিয়ে বের হয়ে না আসে। ভবিষ্যতে যেন নতুন আবরার হত্যার স্বীকার না হয় সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো হল প্রশাসনকে সজাগ থাকতে হবে।”

এছাড়াও কুবি’র আবদুর রহিম, ভিক্টোরিয়া কলেজের মহিউদ্দিন আকাশ ও সরকারী কলেজের সৈকতসহ বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা বক্তব্য প্রদান করেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্তত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী মিছিলে অংশগ্রহণ করে।



সংবাদ প্রেরক ‘দ্য ক্যাম্পাস টুডে’ এর কুবি প্রতিনিধি মুহাম্মদ ইকবাল মুনাওয়ার


 

আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসি চেয়ে বশেমুরবিপ্রবিতে প্রতিবাদ

বশেমুরবিপ্রবি টুডেঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (০৭ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবস হলের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।



“স্বাধীন দেশে (বাংলাদেশে) মতামত প্রকাশ কখনো অপরাধ হতে পারে না। আর যদি অপরাধ হয়েও থাকে তার জন্য আইন রয়েছে, বিচার ব্যবস্থা রয়েছে। তাকে যে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, আমরা তার সুষ্ঠু বিচার চাই।”



এ বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হয়ে অবশেষে জয়বাংলা চত্বরে অবস্থান নেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন এবং দোষীদের অবিলম্বে ফাঁসি নিশ্চিত করার দাবি জানান।

এ বিষয়ে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী মাসুম কবির বলেন, “স্বাধীন দেশে (বাংলাদেশে) মতামত প্রকাশ কখনো অপরাধ হতে পারে না। আর যদি অপরাধ হয়েও থাকে তার জন্য আইন রয়েছে, বিচার ব্যবস্থা রয়েছে। তাকে যে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, আমরা তার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

উল্লেখ্য, রবিবার (০৬ অক্টোবর) রাত ৩ টার দিকে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফাহাদকে শেরে বাংলা হলের প্রথম ও দ্বিতীয় তলার মাঝামাঝি স্থানে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সোমবার (০৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

দ্য ক্যাম্পাস টুডে