ভারতীয় মু‌সলিমদের পা‌শে দাঁড়া‌নোর আহ্বান আহমদ শফীর

সারাদেশ টুডে: সম্প্রতি ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ মামলার রায় ঘোষণা করেছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ গত শনিবার এই রায় ঘোষণা করেন।

যেখানে অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে মসজিদ ভেঙে রাম-মন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতীয় মু‌সলিমদের পা‌শে দাঁড়া‌নোর আহ্বান জানিয়েছেন মাওালানা আহমদ শফী।

রবিবার (১০ নভেম্বর) রাতে গণমাধ্যমে পাঠা‌নো এক বিবৃ‌তিতে বাবরি মস‌জি‌দের রায় প্রসঙ্গে তীব্র প্রতিবাদ জা‌নি‌য়ে এ কথা ব‌লেন তিনি।

তি‌নি ব‌লেন, ‘১৫২৮ সা‌লে মোঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাকি কর্তৃক তৈ‌রি করা হয় বাবরি মসজিদ। ওই স্থা‌নে কথিত ও ক‌ল্পিত রাম মন্দির থাকার অজুহা‌তে ১৯৯২ সা‌লের ৬ ডিসেম্বর উগ্রবাদী হিন্দু কর্তৃক বাবরি মসজিদ শহীদ ক‌রে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে শত শত মুসলমানকে শহীদ করা হয়। মুস‌লিম বিশ্ব সে ক্ষত এখ‌নো ভু‌লে‌নি।’

দারুল উলূম হাটহাজারীর মহাপ‌রিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী ব‌লেন, ‘বাবরি মস‌জিদের বিতর্কিত মামলার পক্ষপাতমূলক রায় এমন সময় দেওয়া হ‌লো, যখন ভারতের মুস‌লিম জন‌গো‌ষ্ঠী হিন্দু‌দের হা‌তে চরমভা‌বে নির্যা‌তিত হ‌চ্ছে। গোমাংস ভক্ষণ ও জয়‌শ্রীরাম না বলায় পি‌টি‌য়ে হত্যা করা হচ্ছে। বা‌ড়িঘ‌রে অগ্নি‌সং‌যোগ করা হ‌চ্ছে। আমি ম‌নে ক‌রি, এ রা‌য়ে হিন্দু‌দের খু‌শি করা হ‌য়ে‌ছে। এর মাধ্যমে কট্টর হিন্দুদের উগ্রতা আরও বেড়ে যা‌বে।’

তিনি আরও ব‌লেন, ‘প্রত্নতত্ত্ববিদগ‌ণের বহু বার অনুসন্ধানের পরও সেখা‌নে কোনো ম‌ন্দি‌রের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপরও বাব‌রি মস‌জি‌দের স্থা‌নে রাম মন্দির স্থাপ‌নের অযৌক্তিক রায় দেওয়া হ‌য়ে‌ছে। আমা‌দের আশঙ্কা এতে‌ সাম্প্রদায়িক সম্প্রী‌তির চরম অবন‌তি হ‌বে। এহেন মুহূ‌র্তে মুস‌লিম বি‌শ্বের বাবরি মস‌জি‌দ ইস্যু‌তে শক্তিশালী অবস্থান তৈ‌রি করা এবং ভারতীয় মু‌সলিমদের পা‌শে দাঁড়া‌নো উচিত।’

উল্লেখ্য, বাবরি মসজিদের বিরোধপূর্ণ জমি রামজন্মভূমি ট্রাস্টকে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি নতুন মসজিদ নির্মাণের জন্য মুসলিমদের পাঁচ একর জমি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

তবে সেই জমি গ্রহণ করা হবে কি না, সে ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি সুন্নি ওয়াক্‌ফ বোর্ড। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ২৬ নভেম্বর আলোচনায় বসবেন তারা।

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।