আর কত বিড়ম্বনা সইতে হবে এইচএসসি-২০২০ কে?

আতিকুর রহমান আতিক: বর্তমান এইচএসসি ব্যাচ-২০২০ জন্মলগ্ন থেকেই বিড়ম্বনার শিকার হয়ে আসছে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় নতুন নিয়ম। তারপর জেএসসি পরীক্ষায় হরতালের কারণে পরীক্ষা বিকালে দিতে হল। এসএসসি পরীক্ষায় ৭ টা সৃজনশীল শুরু হল। সর্বশেষ এইচএসসি পরীক্ষায় আঘাত হানল প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের নামের সাথে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে অটোপাশের ট্যাগ।

সেই সাথে চলছে মাননীয় শিক্ষাবিদদের সিদ্ধান্ত পাল্টানোর খেলা। এইচ এস সি পরীক্ষা নিয়ে কত নাটক চলল তাতো সবাই উপভোগ করেছেই। দুদিন পরপর এভাবে সিদ্ধান্ত পাল্টানো ১৩ লক্ষ শিক্ষার্থীর জীবন ও ক্যারিয়ারের ছন্দপতন ঘটানোর জন্য যথেষ্ট। এখন চলছে এডমিশন টেস্ট নিয়ে বিড়ম্বনা।

দেশে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা চালু হয়েছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ভোগান্তি কম হবে ও অর্থ সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি করোনা মহামারির সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা সহজতর হবে।তবে যদি গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ও বিজ্ঞান থেকে বিভাগ পরিবর্তনে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য যে নিয়ম প্রণয়ন করা হয়েছে তা পাল্টানো নাহয় তাহলে অনেক শিক্ষার্থী ক্ষতির সম্মুখীন হবে। নয়তো ২০০৩ এইচ এস সি ব্যাচের মত ২০২০ ব্যাচও তাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে নীতিনির্ধারকগণের করা ভুলের মাশুল গুণতে বাধ্য হবে কড়ায়গণ্ডায়।

কোনো দেশে যখন শিক্ষানীতি নতুন করে প্রণয়ন করা হয় তখন তার বিস্তারিত কয়েক বছর আগেই জানিয়ে ‍দিতে হয়। যাতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এটার সাথে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে অনায়াসে। যেমনটা আমরা দেখেছি কিছুদিন আগে দেশে নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করেছে যা কয়েক বছর আগেই সবাইকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

ভর্তি পরীক্ষার মানবন্টনের এই নতুন নিয়মের কথাও আগেই জানিয়ে দেয়া উচিত ছিল।তাছাড়া ‍যদি প্রতি বিভাগের মানবন্টনের কথা যদি এইচ এস সি পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণার পরপর জানিয়ে দেয়া হত তাহলেও শিক্ষার্থীরা তাদের লেখা-পড়া কভার করতে পারত।

বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে বেশী বিষয় চাপিয়ে দেয়া হয়েছে অন্যান্য গ্রুপের তুলনায়। যেখানে মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং এর শিক্ষার্থীদেরও এত বিষয়ে পড়তে হয় না। তাও আবার শেষ মূহুর্তে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে এতগুলো বিষয় চাপিয়ে দেয়াটা বেমানান।

তাছাড়া এখন হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ‍বিভাগ পরিবর্তন পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার জন্য বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে কোচিং করছে। তাদের মধ্যে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও কম নয়। তাছাড়া করোনার ভয়ানক ছোবলে অনেক মধ্যবিত্ত/উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের আর্থিক অবস্থাও শোচনীয় পর্যায়ে। অনেকের এই মূহুর্তে নতুন করে বিজ্ঞান বিভাগের কোচিং এ ভর্তি হওয়ার পর্যাপ্ত অর্থ নেই। তাই এরকম হাজার হাজার শিক্ষার্থীর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নকে অনিশ্চয়তার বেড়াজালে আবদ্ধ করা কি অনুচিত নয়?

১০ দিনের মধ্যেই এইচএসসির ফল প্রকাশ

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ ‘ডিসেম্বরের মধ্যেই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ডিসেম্বরের মধ্যে এইচএসসির ফল ঘোষণা করা হবে, আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’

আজ রবিবার (২০ ডিসেম্বর) এমন তথ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম আমিরুল ইসলাম।

শিক্ষামন্ত্রী ড দীপু মনি এর আগে ৭ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে জানান, করোনা মহামারির মধ্যে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনীর মতো এবার এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে না । অষ্টম শ্রেণির সমাপনী ও এসএসসির ফলাফলের গড় করে এবারের এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হবে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই এই ফল ঘোষণা করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, জেএসসি-জেডিসির ফলাফলকে ২৫ এবং এসএসসির ফলকে ৭৫ শতাংশ বিবেচনায় নিয়ে ফল ঘোষিত হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও করোনা সংক্রমণের কারণে তা স্থগিত করা হয়। চলতি বছরের গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দফায় দফায় সেই বন্ধের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে, যা এখনও চলমান । কওমি- মাদ্রাসা ছাড়া অন্যসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

নভেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা, নম্বর কমানোর সম্ভাবনা

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে স্থগিত এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। এ আলোচিত পরীক্ষা আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে আয়োজনের চিন্তাভাবনা করছে সরকার। তবে পূর্ণ নম্বর ১০০ থেকে কিছুটা কমিয়ে সব বিষয়েই পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে। প্রতিদিন একটি বিষয়ের পরীক্ষা নেয়া হবে। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে এ ব্যাপারে বোর্ডগুলোকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিশ্বস্ত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা এবিসয়ে জানান, “এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা আয়োজনে দুটি বিষয়ে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। প্রতি বিষয়ে ৫০ শতাংশ নম্বর কমানোর প্রস্তাব আছে। সেক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক নেই সেগুলোতে বহুনির্বাচনী ও সৃজনশীল উভয় অংশের পূর্ণমাণ থেকে ৫০ শতাংশ করে কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। যেগুলোতে ব্যবহারিক আছে সেগুলোতে ব্যবহারিক নম্বর ঠিক রেখে অবশিষ্ট অংশের (এমসিকিউ ও সৃজনশীল) নম্বর সমন্বয় করে পূর্ণ নম্বর ৫০ শতাংশ কমানো হবে।”

অপর এক প্রস্তাবে কেবল মাত্র “এমসিকিউ কিংবা সৃজনশীল অংশের যেকোনো একটির পরীক্ষা নেয়ার বিষয় আছে। এ ক্ষেত্রেও ব্যবহারিকের নম্বর ঠিক রেখে বাকি অংশের ওপর নম্বর সমন্বয় করা হবে। করোনা পরিস্থিতির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নিজ নিজ কলেজকে ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে মন্ত্রণালয় যে প্রস্তাব গ্রহণ করবে সেটি বোর্ডগুলো বাস্তবায়ন করবে। এক্ষেত্রে পরীক্ষার সময় কমানোর বিষয়টি অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।”

পরীক্ষার খসড়া রুটিন এখন পর্যন্ত তৈরি করা হয়নি। মন্ত্রণালয় থেকে তারিখ ঘোষণার পর পরীক্ষার সময়সূচি তৈরি করা হবে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বোর্ড চেয়ারম্যানদের বৈঠকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা শুরুর ব্যাপারে মতামত দেয়া হয়।

মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, “রুটিন তৈরির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি মাথায় রেখে নতুনত্ব আনার চিন্তা রয়েছে। সেটি হচ্ছে, দৈনিক একটির বেশি পরীক্ষা না রাখা এবং প্রত্যেক দিনই পরীক্ষা নেয়া। স্বাভাবিক সময়ে মূল বিষয়গুলোর পরীক্ষার পরে বিভাগভিত্তিক সকালে ও বিকেলে দুটি করে পরীক্ষা রাখা হতো। ফলে সকালে বিজ্ঞানের পরীক্ষা হলে বিকেলে মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষার পরীক্ষা নেয়া হতো। একটি পরীক্ষার পরে কেন্দ্র পরিষ্কারের বিষয়টি সামনে রেখে দৈনিক একটি রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। তবে ধর্মীয় ও সাপ্তাহিক ছুটি বাদে অন্যসব দিন পরীক্ষা নেয়া হবে।”

একজন বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আমাদের জানান, “পরীক্ষার কেন্দ্র ও সিটপ্ল্যান ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এক বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থীদের ‘জেড’ আকারে বসানো হবে। সে হিসেবে প্রথম বেঞ্চে একপাশে একজন বসালে আরকেজনকে দ্বিতীয় বেঞ্চে অপর পাশে বসানো হবে। তৃতীয় বেঞ্চে বসানো হবে দ্বিতীয় বেঞ্চের বিপরীত পাশে। এই প্রক্রিয়ায় আসন ব্যবস্থা করতে গিয়ে কেন্দ্র সংখ্যা ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি কেন্দ্রে গড়ে ৬৫০ জন করে পরীক্ষার্থী আছে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, “এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে বোর্ডগুলো সার্বিকভাবে প্রস্তুত। শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ মঙ্গলের বিষয়টি আমলে রেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলেই সেটি বাস্তবায়ন করা হবে।”

এদিকে বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, “পরীক্ষা ছাড়া মূল্যায়ন করা হলে এই ব্যাচ ভবিষ্যতে প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। তাই পরীক্ষা হবে। কিন্তু বিষয় কমানো হবে না পূর্ণ নম্বর কমবে– সে রকম একাধিক বিকল্পই আছে। পরীক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হবে।”

এইচএসসি-২০২০ পরীক্ষা এবং অতীত অভিজ্ঞতা থেকে একটি প্রস্তাবনা

ডঃ শেখ মাহাতাবউদ্দিন


বাংলাদেশের একজন শিক্ষার্থীর জীবনের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর ধাপ হল এস এস সি এবং এইচ এস সি পরীক্ষা। এই দুইয়ের তুলনাতে আবার এইচ এস সি কেই বেশী গুরুত্বপূর্ণ বলতে হবে। অনেকই দ্বিমত করতে পারেন কিন্তু আমেরিকা জাপান ঘুরে এসেও এই এইচ এস সি এর ফলাফল নিয়ে আমাদের যে পরিস্থিতির শিকার হতে হয়, সেই অভিজ্ঞতা থেকে এইচ এস সি কে ছোট করে দেখা মানে বাংলাদেশের বাস্তবতা সম্পর্কে স্বল্প জানা সমার্থক শব্দই হবে।

তাই এই পরীক্ষা সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের খুব সাবধানে নিতে হবে। তা না হলে আমরা ২০০১ এস এস সি এবং ২০০৩ এইচ এস সি ব্যাচ যেভাবে বিনা দোষে আজও অপরাধবোধের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে পথ চলছি তেমনি এইচ এস সি ২০২০ ব্যচও তাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে নীতিনির্ধারকগণের করা ভুলের মাশুল গুণতে বাধ্য হবে।

২০০১ সালে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার হলে গিয়ে জানতে পারি যে আমাদের ফলাফল গ্রেডিং সিস্টেমে হবে। উহা কি বা কিভাবে ভালো গ্রেড পাওয়া যাবে তা তো অলীক কল্পনার বিষয় ছিল, এমনকি আমাদের শিক্ষকগণও গ্রেডসিট দেখে ফলাফল ঘোষণা করতে হিমসিম খেয়েছিলেন! যে পেয়েছে “এফ”গ্রেড তাকেও দেখেছি“এ+” পেয়েছে মর্মে ঘোষণা শুনে মিষ্টি বিলানোর পরেই জানতে পারল যে সে আসলে দুই বিষয়ে ফেল করেছে! একটি পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের পদ্ধতি বদলের পূর্বে আমাদের কত পরিপূর্ণ প্রস্তুতি ছিল এই ঘটনা থেকেই প্রতীয়মান হয়!

সে যাই হোক, আমরা ২০০১ সালে সারা বাংলাদেশে ৭৬ জন এ+ এবং ২০০৩ এইচ এস সি তে মাত্র ২০ জন এ+ প্রাপ্ত ব্যাচ। যে ব্যাচে বরিশাল বোর্ডে কেউই এ+ তো পায় নাই বরং যতদূর মনে পরে ৩.০০ পর্যন্ত পেয়েছিল মাত্র ৪৮৫ জনের মত! অথচ একটা বোর্ডে এরে চেয়ে বেশী স্টার মার্কস ও পেত নাম্বার সিস্টেমে!

ফলাফল যা হবার তাই হল, ২০০৭/০৮ সালের দিকে দেখি সবাই ৫.০০ স্কেলে ৪/৪.৫ কে প্রথম শ্রেণী বলে চাকুরির বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করল। আমাদের ঢাকা কলেজের বন্ধুরা শুরু করল আন্দোলন কারণ এই ৪.০০/৪.৫০ স্কেল থাকলে আমাদের ব্যাচের ৯০% শিক্ষার্থী কোন চাকুরিতে আবেদন করতেই পারবে না! আন্দোলনের দিনই আমাদের ঢাবি এর নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন এ বাংলাদেশের প্রাইমারী, সেকেন্ডারি এবং টারসিয়ারি লেভেলে রসায়ন শিক্ষা নিয়ে আয়োজন করা ওয়ার্কশপ ছিল।

সেখানে তৎকালীন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাহেব কোনভাবে জানতে পারলেন আমরা ২০০১ ব্যাচ এবং আমাদের দুই তিনজনকে জিজ্ঞেস করলেন আমাদের দাবী কি এবং এর যৌক্তিকতা কি? আমরা সব বুঝিয়ে বলার পর উনি কথা দিলেন উনি এই বিষয়টি গুরুত্ব সহ দেখবেন। উনি উনার কথা রেখেছিলেন এবং আমাদের ও আমাদের পরের ব্যাচের জন্য ৩.০০ কে প্রথম বিভাগ ফলাফলের মর্যাদা দেয়া হয়। পরিতাপের বিষয় ঐ প্রজ্ঞাপন কেবল সরকারী কাগজ হিসেবেই রয়ে গেছে অদ্য পর্যন্ত, কোথাও এই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বিজ্ঞাপন হয় না কেবল বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যতীত!

সুতরাং, একটি ব্যাচের পাবলিক পরীক্ষা বা এই সংক্রান্ত কিছু পরিবর্তনের পূর্বে আমাদের যথেষ্ট সচেতন হওয়া একান্ত কর্তব্য। পত্রিকা মারফত জানতে পারলাম পরিস্থিতি খারাপ হলে এইচ এস সি পরীক্ষা বাতিলও হতে পারে। আবার দীপ্ত টিবির লাইভে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় বললেন ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষার্থী কম হয়াতে ওদের পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। খুবই যৌক্তিক কাজ এবং পরীক্ষা বাদে গ্রেডিং করার মত অভিশাপের হাত থেকে বাঁচতে এর চেয়ে ভালো কোন মাধ্যম নেই। অর্থাৎ এইচ এস সি পরীক্ষাও নিতেই হবে এবং সেটা কার্যকর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হতে হবে।

আমি নীতিনির্ধারকগণের কেউ নই। এর পরেও নিজের ৪ বছর সক্রিয় স্কুল কলেজের শিক্ষকতা এবং ৭ বছরের অধিক বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলের শিক্ষা এবং গবেষণালব্ধ অভিজ্ঞতা থেকে একটি কার্যকর পদ্ধতি প্রস্তাব করতে চাচ্ছি। যা অন্তত ২০২০ ব্যাচকে আমাদের মত সারাজীবন ব্যাপী এক অপরিপক্ব সিদ্ধান্তের বলী হওয়া থেকে রক্ষা করতে সহযোগিতা করবে বলেই বিশ্বাস করি।

যে যুক্তিতে বা যে বিষয়ের উপর ভরসা করে আমরা এ এবং ও লেভেলের পরীক্ষার অনুমতি দিচ্ছি সেই যুক্তিকেই যদি কাজে লাগাই তবেই যৌক্তিক সমাধান সম্ভব হবে। আমরা সকলেই জানি আমাদের প্রায় সকল কলেজ গুলো সুসংগঠিত। প্রতিটি কলেজে অন্তত প্রথম এবং দ্বিতীয় বর্ষের সকল শিক্ষার্থীদের জন্য বসার ব্যবস্থা থাকছে। সুতরাং এই অবকাঠামো ব্যবহার করেই আমরা নির্বিঘ্নে পরীক্ষা নিয়ে নিতে পারি এবং তা শীত আসার পূর্বেই। পরীক্ষা নিতে আমাদের নিচের বিষয় গুলো নিশ্চিত করতে হবে-

১। সামাজিক দূরত্ব এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা: যেই কলেজের শিক্ষার্থী সেই কলেজেই পরীক্ষা দিবে ফলে এক বেঞ্চে একজন বা নিরাপদে ৪ ফিটের মত দূরত্ব রেখে বসতে পারবে। কোন অভিভাবক পরীক্ষার হলে আসবেন না, ভীর কমে যাবে।

২। প্রশ্নপত্রের বৈষম্য এবং সহজলভ্যতাঃ প্রতি বোর্ডের জন্য পূর্বের নিয়মেই প্রশ্ন তৈরি হবে। এর মধ্যে কোন সেটে পরীক্ষা হবে তা কেবল পরীক্ষার দিন সকালেই বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয় দৈবচয়ন ভিত্তিতে ঠিক করবেন এবং পরীক্ষা শুরুর ৩ ঘণ্টা পূর্বে সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউ এন ও সাহেব কে জানিয়ে দিবেন। উনার দেয়া তথ্যে পূর্বে পাসওয়ার্ড প্রটেক্ট করা ফাইলের পাসওয়ার্ড থাকবে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঐ পাসওয়ার্ড দিয়ে ফাইল খুলে প্রশ্নের প্রতিটি কপি নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিট পূর্বে প্রতিটি কলেজের অধ্যক্ষের নিকট হস্তান্তর করবেন।

৩। একই কলেজে পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থীদের অনৈতিক সুবিধা পাওয়ার বিষয়ঃ যদিও এমন একটি পয়েন্ট লিখতে নিজে শিক্ষক হিসেবে লজ্জিত। এরপরেও বাস্তবতা অস্বীকার করে চলা যাবে না, যেহেতু আমাদের এই পেশাতে ইদানিং নৈতিকতার ঘাটতি দিনের আলোর মত পরিস্কার সেহেতু পরীক্ষা নিজ নিজ কলেজে হলেও গার্ড হবেন অন্য কলেজের শিক্ষকগণ।

এর পরেও আরও কোন ব্যাবস্থা থাকলে আমরা নিতে পারি এবং নিজের অর্জিত অভিজ্ঞতা থেকে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা করতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করব। পরিশেষে বলব যেকোনো মুল্যেই এই পরীক্ষা হোক এবং আমাদের ব্যচের মত ২০২০ ব্যচকেও বলিদান থেকে বিরত থাকুক আমাদের সমাজ।

লেখকঃ সহযোগী অধ্যাপক, ফুড এন্ড নিউট্রেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ১৫ দিন পর এইচএসসি পরীক্ষা

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরুর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত পাওয়ার ১৫ দিন পর নেয়া হবে এইচএসসি পরীক্ষা। আমাদেরকে পরীক্ষা নিতে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। তবে কবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে- সে সম্পর্কে কোনো অলোচনা হয়নি। বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সমন্বয়ে গঠিত আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ১৫ দিন পর পরীক্ষা নিতে আমরা প্রস্তুত আছি। পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

তিনি আরও বলেন, এ বছরের জেএসসি পরীক্ষার্থীদের নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে যে, স্কুলগুলো নিজস্ব প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করতে পারবে। যেহেতু পরীক্ষা আমরা নিতে পারব কিনা- এখনও জানি না, তাই এই সিদ্ধান্ত। তবে নভেম্বরের দিকে স্কুলগুলো খুলে দিতে পারলে ডিসেম্বরে এই পরীক্ষা নেয়া হবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, জেএসসি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হলে নিজস্ব পদ্ধতিতে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বছরের প্রথম আড়াই মাসের ক্লাস কার্যক্রম, সংসদ টেলিভিশন ও অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রমের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে। যে প্রতিষ্ঠান যতটুকু পড়াতে পেরেছে, ততটুকুর ভিত্তিতে মূল্যায়ন হবে।

এ ব্যাপারে শিক্ষা বোর্ড শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে গাইডলাইন দেবে। সিলেবাসের কতটুকু বা কোন অংশ পড়ানো হবে সেটি নির্ধারণে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটকে (বেডু) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গাইডলাইন তৈরির ক্ষেত্রে অষ্টম শ্রেণিতে সিলেবাসের যে অংশটুকু পড়ানো সম্ভব হবে না তার প্রয়োজনীয় অংশটুকু নবম শ্রেণিতে পড়ানোর নির্দেশনা থাকবে। এ নির্দেশনা পাঠানো হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খুলবে অনিশ্চিত, এইচএসসি পরীক্ষার সিদ্ধান্তও আজ নয়

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে তাও অনিশ্চিত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, করোনা পরিস্থিতি এখনও অনুকূলে নয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শীতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। এদিকে শিক্ষাবোর্ড বলছে. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব নয়। ফলে শিগগিরই এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বসছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সাব-কমিটি। তবে বৈঠক থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা কিংবা এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে না বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে। একাধিক বোর্ড চেয়ারম্যানও সেদিকেেই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তারা বলছেন, সবাই এখন করোনা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে। এরমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুব সহজে খুলছে না। ফলে পরীক্ষা নিতে আরও দেরি হতে পারে। কবে এ পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে সে বিষয়েও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি তারা। তবে পরীক্ষা নেওয়ার সব প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে তারা বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অন্তত ১৫ দিন পর এ পরীক্ষা আয়োজন করা যাবে।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক মু. জিয়াউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে এইচএসসি পরীক্ষা হবে না, তা চূড়ান্ত। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতিও এখনও তৈরি হয়নি।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারের (আজ) বৈঠকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বিষয়ে আলোচনা হবে না। এটি বোর্ড চেয়ারম্যানদের নিয়মিত বৈঠকের অংশ। পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অবস্থা সৃষ্টি হয়নি। করোনার কারণে যে সংকট, তার মধ্যে আমরাও আছি। এখন পরীক্ষা কীভাবে হবে? এমন প্রশ্নও রাখেন তিনি।

জিয়াউল হক বলেন, সময়সূচি প্রকাশের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠকেও এ বিষয় চূড়ান্ত করার জন্য নয়। পরীক্ষার বিষয়ে এ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত একটাই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে পরীক্ষা হচ্ছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে পরীক্ষা হবে না বলে তিনি জানান।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ থাকায় এখনই এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমি সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।’

এর আগে গত সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রসঙ্গক্রমে তিনি একথা বলেন। এসময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে দলের শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তবে তার এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান।

এখনই এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না: প্রধানমন্ত্রী

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থাকায় এখনই এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে দলের শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছেন।

সোমবার ( ২১ সেপ্টেম্বর) বিকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রসঙ্গক্রমে তিনি একথা বলেন। বৈঠকে উপস্থিত বোর্ডের একাধিক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এখন এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে। আমার মনে হয়, এখন এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।
ড. আবদুর রাজ্জাকের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাককে লক্ষ্য করে বলেন, এখনই পরীক্ষা নিতে হবে কারণ কী? কলেজ তো চলছে না। আমি সামগ্রিক চিন্তা করে কাজ করি। ইউরোপ-আমেরিকা, ভারতে এখন করোনার কী অবস্থা? ওরা ভেবেছিল কমে যাবে। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় আবার ধাক্কা দিচ্ছে। আমাদের দ্বিতীয় দফায় করোনা আসতে পারে। কাজেই এখনই এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে না। যখন সময় হবে আমি বলে দেব। আর স্কুল কলেজও এখন খোলা যাবে না। সবকিছু ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সভায় প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান করোনা নিয়ে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে বলেন, এখন করোনা নিয়ে অনেক লেখালেখি হচ্ছে। কেউ কেউ বিভিন্ন মাধ্যমে সমালোচনা করছে। বিষয়টি কঠোরভাবে দেখতে হবে। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে মনে রাখতে হবে এখন আমরা একটা যুদ্ধকালীন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি। যারা সমালোচনা করেন, লেখালেখি করেন তাদের একটু ভেবে চিন্তে সমালোচনা করা উচিত।

বৈঠক সূত্র আরও জানায়, তৃণমূল থেকে পাঠানো তালিকায় জেলা-উপজেলা কিংবা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি-ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কেন তা জানতে চান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তিনি এসব জায়গায় দ্রুত সম্মেলন করার তাগিদ দেন। একই সঙ্গে দলে যেন অনুপ্রবেশ না হয় সেজন্য সবাইকে সতর্ক করেন তিনি। করোনাকালে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তাদের মূল্যায়নের নির্দেশ দেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে বিভিন্ন উপকমিটি, সহযোগী সংগঠনের কমিটিগুলো দ্রুত যাচাই-বাছাই শেষ করে ঘোষণা করতে তাগিদ দেন দলীয় প্রধান।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় বোর্ডের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, ড. আবদুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ উপস্থিত ছিলেন।

বিকাল ৪টায় শুরু হয়ে সভা চলে সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিট পর্যন্ত।

মাস্ক পরে মসজিদে যাওয়ার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা মোকাবিলায় মুসল্লিদের মাস্ক পরে মসজিদে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি মাস্ক পরায় সচেতনতা বাড়াতে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, জোহর ও মাগরিব এ দুই ওয়াক্তের সময় যেন সব মুসল্লি মাস্ক পরে নামাজে আসেন তা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যান্য সময়ও মসজিদে নামাজ পড়ার সময় মাস্ক পরায় উৎসাহিত করতে হবে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা থাকলেও মাস্ক পরতে জনসাধারণের অনীহা থাকায় যে কোনো সময় মার্কেট-শপিং মলে অভিযান চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ওয়েভ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা অংশ নেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অনেক দেশেই বিশেষ করে শীতপ্রধান দেশে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন নভেম্বরের শেষ থেকে সেকেন্ড ওয়েভ আসে কিনা সে প্রিপারেশন রাখতে হবে। ম্যাসিভ প্রিপারেশন যেন থাকে। সরকারপ্রধানও করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ওয়েভ নিয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন আমাদের যেন প্রস্তুতি থাকে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন সেকেন্ড ওয়েভ যদি আসে আমাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যদি সচেতন হই, তাহলে আমাদের জন্য এটা সুবিধা হবে। পাশাপাশি তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ঠা-ার প্রকোপটা বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে আমাদের লোকজনের নিউমোনিয়া, সর্দি, জ্বর বা অ্যাজমাটিক সমস্যা থাকে, সবাইকে প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।

এদিকে মন্ত্রিসভা বৈঠকে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় খুলনা, আইন, ২০২০-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে চিকিৎসা ডিগ্রি (রহিতকরণ) আইন, ২০২০-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন আইন, ২০২০-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২০ এর আগে ১৩ জুলাই মন্ত্রিসভা নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল। লেজিসলেটিভ বিভাগের মতামত পাওয়ার পর স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগ থেকে এটা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবার মন্ত্রিসভায় পাঠানো হলে আইনটির খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। তিনি বলেন, চিকিৎসা শিক্ষায় উচ্চশিক্ষিত বিশেষজ্ঞ গবেষক তৈরির লক্ষ্যে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণা এবং স্নাতক পর্যায়ে চিকিৎসা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মেডিকেল কলেজগুলোর শিক্ষার মান সংরক্ষণ ও উন্নয়নে খুলনা বিভাগে একটা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এটা প্রতিষ্ঠিত হলে খুলনা অঞ্চলের মধ্যে যত মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট বা চিকিৎসাসংক্রান্ত অন্য যেসব ইনস্টিটিউট থাকবে সবই খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে আসবে।

তিনি জানান, এর আগে রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যে আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একই রকম আইন করা হয়েছে।

এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, মন্ত্রিসভা ‘চিকিৎসা ডিগ্রি (দ্য মেডিকেল ডিগ্রিস) (রহিতকরণ) আইন, ২০২০-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। তিনি জানান, মেডিকেল কলেজের ডিগ্রি ও মান সবকিছু নির্ধারিত হতো ‘দ্য মেডিকেল ডিগ্রি অ্যাক্ট, ১৯১৬’ দিয়ে। পরবর্তী সময়ে ২০১০ সালে বিএমডিসি বা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ করা হলো। ১৯১৬ সালের আইনের যত প্রভিশন ও মোডিফিকেশন প্রয়োজন ছিল সবই ২০১০-এর আইনে নিয়ে আসা হয়েছে। ফলে ‘দ্য মেডিকেল ডিগ্রিস অ্যাক্ট, ১৯১৬’-এর কোনো কার্যকারিতা নেই।