করোনা আক্রান্ত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি: ডা. জাফরুল্লাহ

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়ই বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার করোনায় আক্রান্ত ধর্ষণ আর দুর্নীতিতে। বিএনপি করোনায় আক্রান্ত কোমরভাঙা রাজনীতিতে। বিএনপির মাঠে নামার মেরুদণ্ড নেই। এই করোনা থেকে সবাইকে বের হয়ে আসতে হবে।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। ধর্ষণের বিরুদ্ধে এ কর্মসূচির আয়োজন করে গণতন্ত্র ফোরাম।

মানববন্ধনে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে মা-বোনেরা আর শান্তিতে থাকতে পারছেন না। কোথাও শান্তিতে বের হবেন, তারও উপায় নেই। অন্যদিকে দুর্নীতি যেভাবে ছড়িয়েছে, তাতেও সাধারণ মানুষের আর বাঁচার উপায় নেই। দেশে সুশাসন থাকলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সারাদেশে এভাবে ধর্ষণের মহোৎসব চালাতে পারত না।

সরকারপ্রধানের উদ্দেশে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘এনাফ ইজ এনাফ। আর নয়। এবার ক্ষমতা ছাড়েন। অনেক হয়েছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না। কোথাও কেউ শান্তিতে নেই। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে মূলত বঙ্গবন্ধুকেই অপমান করেছে সরকার। কারণ, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন ক্ষমতা সবসময় জনগণের হাতে ন্যস্ত থাকবে। বঙ্গবন্ধু শোষণহীন সমাজব্যবস্থার জন্য লড়াই করেছেন।’

বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপি এতটাই করোনা আক্রান্ত যে রাস্তায় নামতে পারে না। বর্তমানে প্রতিটি ক্ষেত্রেই জাতি চরম দুর্দশায় আছে। এ থেকে মুক্তির একটাই পথ আমি দেখি- আমাদের সবাইকে রাস্তায় নামতে হবে। এ সময় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ারও আহ্বান জানান।

দ্রব্যমূল্যের প্রসঙ্গ টেনে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে তেলেসমাতি খেলছে সরকার। আগেই ব্যবস্থা নিলে এ রকম পেঁয়াজকাণ্ড হতো না। ভারতনীতি পরিহার করতে হবে। নিজের উৎপাদন বাড়ানো এবং অন্যান্য দেশের পেঁয়াজ আনতে হবে।বিএনপিকে আবারও রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপিকে রাজপথে নামতে হবে। প্রতিবাদ করতে হবে। আন্দোলন করতে হবে জনগণের পক্ষে।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

নভেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা, সিট প্ল্যান চূড়ান্ত

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।

তবে পূর্ণ নম্বর কমিয়ে সব বিষয়েই পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তা আছে। আর দিনে কেবলমাত্র একটি বিষয়ে পরীক্ষা রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা শেষে বোর্ডগুলোকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ দিকে, এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পরীক্ষা ছাড়া মূল্যায়ন করা হলে এই ব্যাচ ভবিষ্যতে প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। তাই পরীক্ষাই নেওয়া হবে। বিস্তারিত পরিকল্পনা আগামী সোম-মঙ্গলবারের (৫-৬ অক্টোবর) মধ্যে প্রকাশ করা হবে।

অন্যদিকে, সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এইচএসসি পরীক্ষার ব্যাপারে দুটি বিকল্প চিন্তা করা হয়েছে। একটি হচ্ছে, প্রতি বিষয়ে ৫০ শতাংশ নম্বর কমানো হবে। সে ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক নেই সেগুলোয় এমসিকিউ ও সৃজনশীল উভয় অংশের পূর্ণমান থেকে ৫০ শতাংশ করে কমানো হবে। আর যেগুলোয় ব্যবহারিক আছে সেগুলোয় ব্যবহারিক নম্বর ঠিক রেখে অবশিষ্ট অংশের (এমসিকিউ ও সৃজনশীল) নম্বর সমন্বয় করে পূর্ণ নম্বর ৫০ শতাংশ কমানো হবে।

অপর প্রস্তাবে শুধু এমসিকিউ কিংবা সৃজনশীল অংশের যে কোনো একটির পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি আছে। এ ক্ষেত্রেও ব্যবহারিকের নম্বর ঠিক রেখে বাকি অংশের নম্বর সমন্বয়ের চিন্তা আছে। আর করোনা পরিস্থিতির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নিজ নিজ কলেজকে ব্যবহারিক পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাবও আছে। এখন মন্ত্রণালয় যে প্রস্তাব গ্রহণ করবে, সেটি বাস্তবায়ন করবে বোর্ডগুলো। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষার সময় কমানোর বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

সূত্র মতে, মন্ত্রণালয় থেকে তারিখ ঘোষণার পর রুটিন তৈরি করা হবে। তবে গত ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বোর্ড চেয়ারম্যানদের বৈঠকে ৮ নভেম্বরের পর পরীক্ষা শুরুর ব্যাপারে মতামত দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, রুটিন তৈরির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি সামনে রেখে নতুনত্ব আনার চিন্তা আছে। সেটি হচ্ছে, দৈনিক একটির বেশি পরীক্ষা না রাখা এবং প্রতিদিনই পরীক্ষা। স্বাভাবিক সময়ে মূল বিষয়গুলোর পরীক্ষার পর বিভাগভিত্তিক সকালে ও বিকালে দুটি করে পরীক্ষা রাখা হতো। ফলে সকালে বিজ্ঞানের পরীক্ষা হলে বিকালে মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষার পরীক্ষা নেয়া হতো। একটি পরীক্ষার পর কেন্দ্র পরিষ্কারের বিষয়টি সামনে রেখে দৈনিক একটি রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। তবে ধর্মীয় ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পরীক্ষা রাখা হবে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানান, পরীক্ষার কেন্দ্র ও সিট প্ল্যান ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এক বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থীদের ‘জেড’ আকারে বসানো হবে। সেই হিসেবে প্রথম বেঞ্চে এক পাশে একজন বসালে দ্বিতীয় বেঞ্চে অপর পাশে বসানো হবে। আর তৃতীয় বেঞ্চে বসানো হবে দ্বিতীয় বেঞ্চের বিপরীত পাশে। এই প্রক্রিয়ায় আসন ব্যবস্থা করতে গিয়ে কেন্দ্র সংখ্যা ১০-২০ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি কেন্দ্রে গড়ে ৬৫০ জন করে পরীক্ষার্থী আছে।

আরেকজন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানান, করোনা শুরুর আগে সব সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্নপত্র ছাপানো শেষ করে মাঠপর্যায়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মার্চের শেষ সপ্তাহে মাদ্রাসা বোর্ডের প্রশ্নপত্র ছাপানো শেষ হয়। এ সপ্তাহে সেটিও পাঠানো হয়েছে। ছাপানো এসব প্রশ্নেই পরীক্ষা নেওয়া হবে। যদি সরকার আংশিক নম্বরে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সকাল বেলা কেন্দ্র সচিবদের নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হবে। সে অনুযায়ী তারা শিক্ষার্থীদের জানাবেন।

এ দিকে, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সাব-কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে বোর্ডগুলো সার্বিকভাবে প্রস্তুত। শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ মঙ্গলের বিষয়টি সামনে রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলেই কাজ শুরু করব।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খুলবে অনিশ্চিত, এইচএসসি পরীক্ষার সিদ্ধান্তও আজ নয়

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে তাও অনিশ্চিত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, করোনা পরিস্থিতি এখনও অনুকূলে নয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শীতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। এদিকে শিক্ষাবোর্ড বলছে. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব নয়। ফলে শিগগিরই এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বসছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সাব-কমিটি। তবে বৈঠক থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা কিংবা এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে না বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে। একাধিক বোর্ড চেয়ারম্যানও সেদিকেেই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তারা বলছেন, সবাই এখন করোনা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে। এরমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুব সহজে খুলছে না। ফলে পরীক্ষা নিতে আরও দেরি হতে পারে। কবে এ পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে সে বিষয়েও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি তারা। তবে পরীক্ষা নেওয়ার সব প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে তারা বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অন্তত ১৫ দিন পর এ পরীক্ষা আয়োজন করা যাবে।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক মু. জিয়াউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে এইচএসসি পরীক্ষা হবে না, তা চূড়ান্ত। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতিও এখনও তৈরি হয়নি।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারের (আজ) বৈঠকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বিষয়ে আলোচনা হবে না। এটি বোর্ড চেয়ারম্যানদের নিয়মিত বৈঠকের অংশ। পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অবস্থা সৃষ্টি হয়নি। করোনার কারণে যে সংকট, তার মধ্যে আমরাও আছি। এখন পরীক্ষা কীভাবে হবে? এমন প্রশ্নও রাখেন তিনি।

জিয়াউল হক বলেন, সময়সূচি প্রকাশের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠকেও এ বিষয় চূড়ান্ত করার জন্য নয়। পরীক্ষার বিষয়ে এ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত একটাই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে পরীক্ষা হচ্ছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে পরীক্ষা হবে না বলে তিনি জানান।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ থাকায় এখনই এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমি সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।’

এর আগে গত সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রসঙ্গক্রমে তিনি একথা বলেন। এসময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে দলের শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তবে তার এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান।

শীতকালে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে, সতর্ক থাকুন: তথ্যমন্ত্রী

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


শীতকালে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শীতকালে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে , যেটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বলেছে। আমি অনুরোধ জানাব, আমরা যেন এই ধারণায় না ভুগি যে করোনা চলে গেছে। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে করোনা আছে এবং শীতকালে সেটি বাড়তে পারে এবং স্বাস্থ্যবিধি আমাদের সবার মেনে চলা প্রয়োজন।

বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে করোনা ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, করোনা চলে গেছে এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। করোনা আছে। শীতকালে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসবে। আমাদের আশঙ্কা ডিসেম্বরে করোনা বৃদ্ধি পেতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি আমাদের সবার মেনে চলা প্রয়োজন। আমরা অতীতে বা করোনার শুরুতে যেমন সতর্ক ছিলাম। এখনও একই সতর্কতা আমাদের অবলম্বন করতে হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার আরও কম হত যদি দেশের মানুষ ব্যাপক হারে পরীক্ষা করত। পরীক্ষার হার নিয়ে আমি বলতে চাই বাংলাদেশে যে পরিমাণ পরীক্ষা করা হচ্ছে সেটা জাপানের কাছাকাছি। জাপানের জনসংখ্যার অনুপাতের যে পরিমাণ পরীক্ষা হয় তার থেকে একটু কম আছে বাংলাদেশে। কিন্তু জাপানের কাছাকাছি।

এসময় মন্ত্রী আরও বলেন, করোনা কখন যাবে আমরা সেটা কেউ জানি না। শীতকালে সেটি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা দেখেছি ডিসেম্বর মাসে যখন করোনা দেখা দিয়েছিল তখন যে সব দেশে শীত ছিল বেশি সে সব দেশে বেশি মানুষ মারা গেছে। সুতরাং শীতকালে করোনা বাড়ার বেশি আশঙ্কা রয়েছে। যেটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বলেছে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে জনগণকে ওয়াকিবহাল করেছেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ২৬ সেপ্টেম্বর!

শাফিউল কায়েস


করোনা ভাইরাসের জন্য বিশ্ব এখনও থমকে আছে। সেই সাথে জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিথর হয়ে আছে। অদম্য প্রাণচাঞ্চল্য থাকা স্থাপনাগুলো হয়ে পড়েছে প্রাণহীন। শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখর থাকা ক্লাস রুম, করিডোরগুলোও আজ নিস্তব্ধ। চলমান এ পরিস্থিতিতে শিক্ষা জীবন নিয়ে শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা। করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে নানা ধরণের ঘোষণা আসলেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইন ক্লাস নেয়া ছাড়া এখনো পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট আর কোন নির্দেশনা নেই।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো সীদ্ধান্ত এই মাসের শেষে। করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে বলে জানা গেছে।

দেশে অন্যান্য যে সেক্টর চালু কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বন্ধ থাকার কারণ জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের দ্য ক্যাম্পাস টুডেকে বলেন, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান খোলা না হলে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখার সম্ভাবনা আছে। অন্যান্য সকল সেক্টর খুললেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হচ্ছে না কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন। শিশুরা স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন নয়। ফলে তাদের মাধ্যমে বাসায় বাবা-মা, বৃদ্ধা দাদা-দাদী আক্রান্ত হতে পারে। । তখন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাবে। এই বিবেচনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো সীদ্ধান্ত এখনো হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। এর মধ্যে আমরা দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবো এবং সেই অনুযায়ী তার এক সপ্তাহ আগে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের ২৬ তারিখের দিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।

এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন কেন্দ্রীয়ভাবে নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো নেবে । তিনি বলেন, ‘তারা আলাদা চিন্তা-ভাবনা (শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ খোলার ব্যাপারে) করছে, কীভাবে করা যায়। কওমি মাদ্রাসা খুলে দেওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। তবে অনলাইনে পাঠদান চলছে

করোনায় মারা গেলেন জনপ্রিয় খলনায়ক সাদেক বাচ্চু

বিনোদন টুডে


করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ইউনিভার্সেল হাসপাতালে মারা গেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা সাদেক বাচ্চু।

রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ১২টা ৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয় বলে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ চক্রবর্তী।

সাদেক বাচ্চুর বড় মেয়ে সাদিকা ফাইরোজ মেহজাবিন সাংবাদিকদের জানান, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ৬ অগাস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তার বাবা। সেখানে নমুনা পরীক্ষায় শুক্রবার করোনাভাইরাস ধরা পড়লে শনিবার তাকে ইউনিভার্সেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

৬৬ বছর বয়সী এ অভিনেতা দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। ২০১৩ সালে তার হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারও করাতে হয়েছিল।

ডাকবিভাগের সাবেক কর্মকর্তা সাদেক হোসেন বাচ্চু ১৯৮৫ সাল চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। ‘রামের সুমতি’র মাধ্যমে যাত্রা শুরুর পর বহু জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। খল চরিত্রের অভিনেতা হিসেবে দর্শকদের কাছে পেয়েছেন আলাদা পরিচিতি।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে ‘একটি সিনেমার গল্প’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য খল চরিত্রে সেরা অভিনেতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান সাদেক বাচ্চু।

এ বছর ক্যাম্পাস না খুললে, বিকল্প উপায় কি হতে পারে?

শফিকুল ইসলাম


বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ক্যাম্পাস খুলা নিয়ে স্পষ্টতই আমরা দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে আছি। চলছে পক্ষ বিপক্ষে যুক্তি পাল্টা যুক্তির লড়াই। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে দেখে আসছি প্রশাসন বরাবরই সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের মতামতের প্রতি উদাসীন। যার দীর্ঘমেয়াদী ফল ভোগ করতে হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকেই। যা পরিস্থিতি, তাতে ভাবলেশহীন কর্তৃপক্ষ মধ্যে আগামী দুই তিনমাসেও ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার বিন্দুমাত্র লক্ষণ দেখছিনা।

শিক্ষার্থীদের স্থবির শিক্ষা জীবন সচল করতে এই অবস্থায় বিকল্প কি করা যেতে পারে? এই ব্যাপারে আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক-প্রসূত বিকল্প চারটি প্রস্তাব সবার সাথে শেয়ার করতে চাই।

প্রস্তাব-১: কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাস খুলতে আগ্রহী না হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেইসব ব্যাচের পরীক্ষাগুলো আটকে আছে সেই সকল ব্যাচের পরীক্ষাগুলা নিয়ে নিতে পারে। একসাথে না নিতে চাইলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথমে মাস্টার্স এরপর চতুর্থ, তৃতীয়, দ্বিতীয় এবং প্রথম বর্ষের এক্সামগুলা নিয়ে নেওয়া হোক।

প্রস্তাব-২: যদি কোন ভাবেই এক্সাম নেওয়া সম্ভব না হয় তাহলে যেসকল শিক্ষার্থীদের এক্সামের কারণে শিক্ষা জীবন আটকে আছে তাদের পরের সেমিস্টার অথবা পরের বর্ষে অনলাইন ক্লাস করার সুযোগ দেওয়া হোক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে না হয় আমরা দুই সেমিস্টারের/বর্ষের এক্সাম একসাথে দিয়ে দিবো।

প্রস্তাব-৩: অনলাইন ক্লাস প্রক্রিয়াকে আরও গুরুত্ব দিয়ে আরও কার্যকর করা হোক। নেট কানেকশন নাই, ডিভাইস নাই! এই প্রব্লেমগুলা খুব কম সংখ্যক স্টুডেন্টদের। সবাই আন্তরিক হলে এই সমস্যাগুলো সহজেই সমাধান করে অনলাইন ক্লাস গুলাকে আরও কার্যকর করা যায়। ক্লাসে উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনে এটেন্ডেন্স নেওয়া হোক। প্রযুক্তিখাতে বাজেটের উদ্ধৃত অংশ ব্যয় করা হোক।

প্রস্তাব-৪ : ক্যাম্পাসে যে সকল শিক্ষার্থী টিউশন করে পেট চালাত তারা গত ছয় মাসের এই দুর্যোগে কে কোথায় উপোস দিন কাটাচ্ছে তার খবর কেউ রাখেননি! অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী-কর্মকর্তাগণ বসে বসে বেতন ভাতা নিচ্ছেন। অথচ সকল কর্মকর্তা-ককর্মচারীর একসপ্তাহের বেতন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অসহায় শিক্ষার্থীদের তিন মাসের পেট পূজার ব্যাবস্থা করা যায়।

আপনাদের আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে ক্যাম্পাস খুলার কোন আগ্রহ না থাকলে অন্তত বিশ্ববিদ্যালয়ের অসহায় শিক্ষার্থীদের জন্য একটি তহবিলের ব্যাবস্থা করার জোর দাবি জানাই।

লেখকঃ শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যলয় ।

করোনায় নাজেহাল দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা

হৃদয় মিয়া


করোনা ভাইরাস সংক্ষেপে কোভিড ১৯ এর উৎপত্তিটা চীনের হুপেই প্রদেশের উহান নগরীতে ডিসেম্বর মাসে। ভাইরাসটির সূচনালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত প্রভাব বিস্তার করেছে ১৮৮ টিরও অধিক দেশে, ভেঙ্গে দিয়েছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ।

বাংলাদেশে ভাইরাসের সূচনালগ্ন থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তবে ৮ ই আগস্ট থেকে দেশের কওমী মাদ্রাসাগুলি কার্যক্রম চালু হয়েছে, অনুমতি দেওয়া হয়েছে পরীক্ষা নেওয়ারও । বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে সেশনজট দূর করতে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস । গ্রামে নেটওয়ার্ক কাভারেজ ভালো‌ না থাকায় শিক্ষার্থীদের পরতে হচ্ছে বিড়ম্বনায়।

এছাড়াও সবাইকে ক্লাসের আওতায় আনার জন্য ইউজিসি কর্তৃক গরীব শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে স্মার্টফোন এবং ফ্রি ইন্টারনেট। তবে এখন পর্যন্ত ইউজিসির কোন সিদ্ধান্তই বাস্তবায়িত হয় নি । পিছিয়ে গেছে এইচএসসি পরীক্ষা, কবে নাগাদ হয় তারও কোন নিশ্চয়তা নেই,তাই শিক্ষার্থীরা আছে টেনশনে|বিআইজিডি বলছে, আগে যেখানে গ্রামের শিক্ষার্থীরা দিনে স্কুল, কোচিং ও বাড়িতে নিজেদের পড়ালেখা মিলে ১০ ঘণ্টা ব্যয় করত, এখন তা নেমে এসেছে মাত্র ২ ঘণ্টায়, অর্থ্যাৎ ৮০ শতাংশ সময় কমেছে পড়াশোনার।

এছাড়াও গত মে মাসে ব্র্যাকের একটি জরিপ দেখেছে, ১৬ শতাংশ শিশু আতঙ্কে ভুগছে।
ইতোমধ্যে, করোনা পরিস্থিতি পার হওয়ার পর পুনরায় স্কুল চালুর জন্য জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হয়েছে । সব মিলিয়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নাজেহাল অবস্থা ।

করোনা পজিটিভ খুলনা-৬ আসনের এমপি আক্তারুজ্জামান বাবু

মো: ইকবাল হোসেন


মহামারী করোনা ভাইরাসে প্রকোপে সারা বিশ্ব হিমশিম খাচ্ছে। ক্রমান্বয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ফ্রন্ট লাইনের দায়িত্বশীল চিকিৎসক, নার্স সহ জনপ্রতিনিধিরা। এবার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু।

শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবুর ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) তসলিম হুসাইন তাজ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষার দেন এমপি। এরপর গেলো শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) তাঁর করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) পজিটিভ এসেছেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত নির্বাচনী কয়রা উপজেলায় করোনার দুঃসময়ে জনগণের সঙ্গে আছেন সংসদ সদস্য মো: আক্তারুজ্জামান বাবু। করোনার শুরু থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধসহ ঘুর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছেন। কয়রা-পাইকগাছার প্রতিটি ইউনিয়নে গিয়ে তিনি মানুষের খোঁজ-খবর নেন। সরকারের পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে অসহায় মানুষকে সাহায্য-সহযোগিতাও করে যাচ্ছেন।

এমপির ব্যক্তিগত সহকারী আরো জানান, সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বর্তমানে ভালো আছেন। তিনি যেন সুস্থ হয়ে এলাকার মানুষের সেবায় খুব দ্রুত আবারো ফিরতে পারেন, এজন্য তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।

উল্লেখ্য, সাংসদ বাবু’র এর আগে দুই বার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। যেহেতু করোনা ভাইরাস অতি সহজে সংক্রমিত হয়। জনস্বার্থে আগামী কয়েকদিন তিনি বিভিন্ন কর্মসূচি ও নেতাকর্মী সহ সকলের সাথে সাক্ষাৎ থেকে বিরত থাকবেন। বর্তমানে এমপি আক্তারুজ্জামান বাবু তার নিজস্ব খুলনার বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

করোনা ও বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি

সাইকি মিজান বৃষ্টি


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল এই বছরের শুরুর দিকে, ছয় মাসের বেশি আগে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম চীনে ঘটলেও তা এখন ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বজুড়ে। জানুয়ারির সেই সময় থেকে পুরো বিশ্ব এবং আমাদের সবার জীবনে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন।

মানবজাতির সাথে যেন এক ভাইরাসের লড়াই, তাতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ, শঙ্কায় সাধারণদের জীবন-যাপন, দৈনন্দিন জীবন-যাপনের ছকে ব্যাপক পরিবর্তন । পুরো পৃথিবীর কথা বিবেচনা করলে চিত্রটা আশঙ্কাজনক। এ পর্যন্ত পরীক্ষার মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের নিশ্চিত সংক্রমণ ধরা পড়েছে ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষের। ইতিমধ্যে মারা গেছে প্রায় ৭ লাখ মানুষ।

সবথেকে ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে শুরুর দিকে এক লাখ মানুষের করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হতে কয়েক সপ্তাহ লাগতো। আর এখন মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই এক লাখ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর মতে, প্রথম ধাপে ৬৭ দিনে ১ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়, তারপর দ্বিতীয় ধাপে ১১ দিনে ১ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয় আর এখন ৪ দিনে ১ লাখ আক্রান্ত হচ্ছে, যা রীতিমত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

বিশ্বের সব জায়গায় কোভিড-১৯ এর প্রভাব একরকম নয়। এই ভাইরাসের গতিবিধির ওপর নজর রাখা বেশ দুষ্কর। কারণ ভাইরাসে আক্রান্ত বহু মানুষের মধ্যে কোন লক্ষণ-ই দেখা যাচ্ছে না।অনেকের লক্ষণ একেবারেই মৃদু অথচ কারো কারো বেলায় এই ভাইরাস খুবই মারাত্মক। এই পরিস্থিতিতে আমরা ঠিক কোন দিকে যাচ্ছি বা আমাদের ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাচ্ছে তা অনেকটা ঝাপসা কারণ আমরা মহামারীর আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারছি না বরং তার বদলে এক ‘নিউ নর্মাল’ বা নতুন স্বাভাবিক অবস্থার সন্ধানে আছি।

করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে, নিউজিল্যান্ডের সাফল্য সবার নজর কেড়েছে এবং এইটা শুধুমাত্র সম্ভব হয়েছিলো ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিহত করে অর্থাৎ এক দেহ থেকে অন্য দেহে ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করে। এক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ড খুব দ্রুত ভাইরাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলো লকডাউন এবং সীমান্ত বন্ধ করে। নিউজিল্যান্ডে এখন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নাই বললেই চলে।

অন্যদিকে, যেসব দেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে, সেখান থেকে দ্রুত লকডাউন অপসারণ করা ও সম্ভব হচ্ছে না। ডঃ হ্যারিস এর মত, ‘লকডাউন তুলে নেওয়া মানে এই নয় যে, আমরা আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারবো। এইটা এক নতুন ধরনের স্বাভাবিক অবস্থা। মানুষ মনে হয় ব্যাপারটা এখনো বুঝে উঠতে পারেনি।’

কখন এই অবস্থার অবসান ঘটবে?

ঔষধ: এই অবস্থার অবসান সম্পর্কে এখনো বিশ্ব কোনো সম্পূর্ণ আস্থামূলক তথ্য পায়নি। করোনা ভাইরাসের কিছু চিকিৎসা এখন ঔষধ দিয়ে করা হচ্ছে। ডেক্সামেথাসোন একটি সস্তা স্টেরয়েড যা খুব সংকটাপন্ন রোগীর বেলায় কাজ করছে বলে দেখা গেছে।কিন্তু সব মৃতপ্রায় রোগীকে বাঁচানোর মতো চিকিৎসা পদ্ধতি এখনো নাই।

হার্ড-ইমিউনিটি: অন্যদিকে সুইডেন হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের কৌশল নিয়েছিলো। কিন্তু এখন পর্যন্ত সুইডেনে তার প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় মৃত্যুর হার অনেক বেশি।

টিকা: এই মূহুর্তে ৬ টি টিকা নিয়ে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। যেসব টিকা কে খুব সম্ভাবনাময় বলে মনে করা হচ্ছে।এই টিকা গুলা কতটা কার্যকরী তা জানা সম্ভব হবে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায়। এই চূড়ান্ত ধাপে এসেই আসলে আসলে আগের অনেক প্রতিষেধকের চেষ্টা বিফল হয়েছে।তাই ধৈর্য্য সহকারে অপেক্ষা করতে হবে চূড়ান্ত ধাপে সফলতার অপেক্ষায়।

অন্যদিকে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে, রাশিয়ায় ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কোভিড – ১৯ এর টিকা অনুমোদন দিয়েছে, যা নিয়ে মানবদেহের উপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে দু মাসের কম সময়ে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিভিশনে টিকার অনুমোদন নথিভুক্ত করার ঘোষণাকালে বলেন, ” এই টিকা সফলভাবে শরীরে দীর্ঘস্থায়ী অ্যান্টিবডি তৈরি করতে এবং কোষের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পেরেছে এবং আমি এটা খুব ভালো করে জানি কারণ আমার এক মেয়েকে এই টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে।

মিস্টার পুতিন তার মেয়ের সুস্থতার ও দাবী করেছেন এবং বলেছেন,” এই টিকা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের প্রথম টিকা এবং সব ধরনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং তিনি চান যে খুব শীঘ্রই গণহারে এই টিকার উৎপাদন শুরু হোক।”

তাই বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে করোনা সংক্রমণ রোধ করতে সামাজিক দূরত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর অপেক্ষা করতে হবে কার্যকরী টিকার জন্য।

তবে সে দিকেও রয়েছে কিছু অনিশ্চয়তা, ঠিক কবে বা কতোদিনের মধ্যে পুরো বিশ্ব এই মহামারী থেকে মুক্তি পাবে বা টিকা পৌঁছে যাবে সর্বসাধারণের কাছে তা এখনও অনিশ্চিত। তাই ততোদিন পর্যন্ত নিজেদের ও বিশ্বের সুরক্ষা রক্ষার্থে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধির সামাজিক নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞা।

সাইকি মিজান বৃষ্টি
শিক্ষার্থী, তৃতীয় বর্ষ
ফার্মেসি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)।