করোনা উপসর্গ নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যু

কুবি টুডে: করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবুল হাসান।

রবিবার (৮ আগস্ট) সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দুপুর আড়াইটায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আবুল হাসান কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল জলিলের সন্তান। গত কিছুদিন আগে ধরে জ্বর-সর্দি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে কুমিল্লা মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ২ দিন ভর্তি ছিলেন।

পরে অবস্থার উন্নতি হলে তাকে রিলিজ দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এদিন সকালে ফের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে দুপুরের দিকে হাসাপাতালে নেয়ার পথেই তিনি মারা যান। আবুল হাসানের জানাযা তার নিজ বাড়িতে এশার নামাজের পর অনুষ্ঠিত হবে।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি আইনুল হক বলেন, আবুল হাসান কয়েকদিন ধরেই একটি বেসরকারি হাসাপাতালে ভর্তি ছিলেন। গত শুক্রবার কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে সে। তবে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় আজ আবার কুমিল্লা মেডিকেলে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়: এবার গবেষণা খাতে ২৫% বেশি অর্থ বরাদ্দ

কুবি প্রতিনিধি

২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৫৭ কোটি ১ লাখ টাকার বাজেট পাশ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।এদিকে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেট ছিল ৫১ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা। যা ২০২১-২২ অর্থ বছরের তুলনায় সামগ্রিকভাবে ১০% বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত রোববার (২৭ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে ৮০ তম সিন্ডিকেটে বাজেট উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান। পরে আলোচনা শেষে এ বাজেট অনুমোদন দেয় সিন্ডিকেট।

এর আগে গত ২২ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কমিটির (এফসি) ৪৮তম সভায় প্রস্তাবিত বাজেটের সুপারিশ করা হয়।

২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে সেমিনার ও কনফারেন্স খাতে ৬০%, ফিল্ড ওয়ার্ক ও শিক্ষা সফর খাতে ৫০%, গবেষণা খাতে ২৫% বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে এবং সম্পূর্ণ নতুনভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য মেধা বৃত্তি খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এ বছর শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার জন্য ৩৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পণ্য ও সেবা সহায়তা বাবদ ১৪ কোটি ৩৫ লাখ, পেনশন ও অবসর সুবিধা বাবদ ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা, গবেষণা অনুদান বাবদ ১ কোটি ৫০ লাখ, অন্যান্য অনুদান বাবদ ৫ লাখ ও মূলধন অনুদান ৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা রাজস্ব (আবর্তক ও মূলধন) বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পাসকৃত বাজেটে প্রারম্ভিক স্থিতি হিসেবে ২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে বরাদ্দ পাওয়া যাবে ৪৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে ৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে আজ থেকে পরীক্ষা শুরু

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক: স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবারও সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)।

আজ রবিবার (১৩ জুন) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু বিভাগের আগেরবারের স্থগিত হওয়া ও অনলাইনে সিলেবাস সম্পন্ন হওয়া কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষা এবং কিছু বিভাগে মিডটার্ম পরীক্ষার গ্রহণের মধ্য দিয়ে এ পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে আজ ১৩ জুন থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে একইভাবে পরীক্ষা শুরু করেছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাক্রমে তা স্থগিত করা হয়।

অন্যদিকে পরীক্ষা গ্রহণ উপলক্ষে পরীক্ষার হলগুলো জীবাণুমুক্তকরণ ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

এসব বিষয়ে গতকাল একাধিক বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্যবিধি পালনে আবশ্য পালনীয় ৭টি নির্দেশনা, পালনীয় বিষয় নিশ্চিত করতে তদারকি কমিটি প্রসঙ্গ উঠে আসে। এছাড়াও পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচলের সময় সংক্রান্ত বিষয়েও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।

তদারকি কমিটির আহবায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, আজ সকাল থেকেই আমরা পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি তদারকি করছি। আমাদের এ কার্যক্রম প্রতিদিন চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যাতে কোন অবস্থাতেই স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করা না হয় সেদিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি আছে এবং থাকবে।#চ্যানেলআই

অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে কুবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

কুবি টুডে

করোনা মহামারীর কারণে দেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইন ক্লাসের পর এবার হাঁটছে অনলাইন পরীক্ষার পথে। দুর্বল নেটওয়ার্ক, অধিকমূল্যের ডাটাপ্যাকসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় অনলাইন ক্লাস চললেও পরীক্ষা নেয়া আদৌ সম্ভব কি না তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে।

কেউ কেউ সেশনজট কমানোর জন্য অনলাইনে পরীক্ষা দিতে রাজী থাকলেও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতায় অধিকাংশের মত অনলাইনে পরীক্ষার বিপক্ষে। অনলাইন পরীক্ষার নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের মতামত তুলে ধরছেন ”দ্যা ক্যাম্পাস টুডে ” এর কুবি প্রতিনিধি চৌধুরী মাসাবী।

ছবি:অর্ক

অর্ক গোস্বামী

নৃ – বিজ্ঞান বিভাগ,

শিক্ষাবর্ষঃ ২০১৫-১৬

বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে হয়তো এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে অনলাইনে সকল চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণের। আপাতঃদৃষ্টিতে এর চেয়ে বিকল্প কোনো রাস্তাও হয়তো আমাদের সামনে খোলা নেই। তবে এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে কতটুকু যুক্তিসম্মত সেই বিষয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

আমরা আধুনিকতার ছোঁয়া পেলেও সেই সক্ষমতা এখনোও অর্জন করতে পারিনি, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সকল চূড়ান্ত পরীক্ষা অনলাইন মাধ্যমে নেওয়া সম্ভব। আর অচিরেই এই সক্ষমতা অর্জন হবে বলেও মনে হচ্ছেনা।

যদি যান্ত্রিক কোনো গোলযোগের কারণে একজন শিক্ষার্থীও পরীক্ষা না দিতে পারেন, তাহলে সেই দায় কে নিবে! আর বাংলাদেশে বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বা মেনে চলার নাম করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সবকিছুই চলমান। তাহলে শিক্ষার্থীরা কেনো স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্ব স্ব ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে পারবেনা। আমি চাই, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্যাম্পাসগুলোতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হোক।

ছবি: তারিকুল

মোঃ তারিকুল ইসলাম
আইন বিভাগ
সেশনঃ ২০১৬-১৭

বিশ্ববিদ্যালয় এক্সাম কোনো গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয় যে অধিকাংশ শিক্ষার্থী পক্ষে মতামত দিলেই অনলাইন এক্সাম নেওয়াটা ঠিক হবে। অনলাইন এক্সামের জন্য যদি একজন শিক্ষার্থীও ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে সেটা হবে চরম অন্যায় এবং অবিচার।

ধরুন, একজন শিক্ষার্থী রুরাল এরিয়াতে অবস্থান করছে তাহলে সে পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে সমস্যা হতে পারে, এতে করে মেধাবী হওয়া সত্যেও তার রেজাল্ট পিছিয়ে যাবে। এছাড়া সচ্ছতার বিষয়েও একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। যেহেতু করোনা মহামারীতে আক্রান্তের হার কিংবা ডেথ কেইস নিম্নমুখী, তাই ঈদের পর যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফলাইনে এক্সাম নেওয়া হোক।

ছবি: সিগমা

ফারিয়া জাহান সিগমা
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিক বিভাগ
শিক্ষাবর্ষঃ ২০১৬-১৭

অনলাইন পরীক্ষার বিপক্ষে আমি। কারণ দেখা যাচ্ছে সব জায়গায় নেটওয়ার্ক ঠিকভাবে থাকে না। তাছাড়া ক্লাস সব ঠিক ভাবে করতে পারিনি আমরা। অনলাইনে এক্সাম হলে নেটের সমস্যা হতে পারে। তাই আমি স্বশরীরে উপস্থিত থেকে এক্সাম দেয়ার পক্ষে।

ছবিঃ ইয়াসমিন

ইয়াসমিন আক্তার

গনিত বিভাগ

শিক্ষাবর্ষঃ ২০১৮-১৯

জীবনের ভয়ংকর এক চ্যাপ্টারের নাম করোনা। নীরবে আঘাত করে নিস্তব্ধ করে দিয়েছে বিশ্বকে। প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ছাত্রছাত্রীরা। থমকে যাওয়ার চেয়ে ধীরগতিতে এগিয়ে যাওয়াও ভালো।

সরকার নানা উদ্যোগ এর মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা চালিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে অনলাইনে নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেই। মূল্যায়নের ব্যাপারটিও অনলাইনেই চালিয়ে নিতে চাচ্ছে।

সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের এই অনলাইন কার্যক্রমের মধ্য দিয়েই এগিয়ে যাওয়া উচিত। করোনা যে খুব দ্রুত চলে যাবে তা মোটামুটি নিশ্চিত। তার ভবিষ্যৎ কেমন সেটা ও আমরা কেউ জানিনা।করোনার লাগাম টানার অপেক্ষা করলে আমাদের কঠিন বাস্তবতার শিকার হতে হবে। তাই স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত অনলাইনেই চালু হোক শিক্ষা কার্যক্রম

 

 

নিরাপত্তাকর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিতে কুবি প্রশাসনের উদাসীনতা

চৌধুরী মাসাবি, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়: সরকারের ঘোষণা মোতাবেক ২০২০ সালের মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। সকল প্রকার একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ছুটিতে রয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারী। কিন্তু কর্মঘণ্টা করে যাচ্ছেন নিরাপত্তা কর্মীরা। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকলেও তাদের সুরক্ষা সামগ্রীর নিশ্চিতের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রয়েছে একেবারেই উদাসীন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গেল বছরের মার্চ থেকে করোনার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেলে বন্ধ হয়ে যায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই বাড়ি ফিরে যাওয়ায় জনমানবশূন্য ক্যাম্পাসে দেখা দেয় নিরাপত্তাহীনতা। তাই ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩১ জন সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা প্রহরী ২৩ জন নিরাপত্তাকর্মীর ছুটি মেলেনি।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরাপত্তাকর্মীরা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করলেও তারা পায়নি কোন নিরাপত্তা সুরক্ষা সামগ্রী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে শুরুতে মাস্ক দেওয়ার কথা থাকলেও এক বছরেও পায়নি করোনা সুরক্ষা সামগ্রী। এছাড়া গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিংবা কোন করোনা সুরক্ষা সামগ্রী এখনো দেওয়া হয়নি। এসময়ে অনেকে ওভার টাইম দায়িত্ব পালন করলেও মেলেনা ওভার টাইম ভাতা। এছাড়া পুরো ১ বছর করোনাকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন করলেও আনসার সদস্যরা পায়নি ঝুঁকিভাতা। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিরাপত্তাকর্মীরা।

কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োজিত নিরাপত্তাকর্মীদের সাথে। তারা বলেন, ক্যাম্পাস বন্ধের সাথে সাথে সবাই বাড়ি ফিরলেও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকায় তা আমরা যেতে পারিনি। আমরা ছোট চাকুরি করতে পারি, কিন্তু দায়িত্ব অনেক বড়। আপনারা চলে গেলেও আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু গত এক বছরের অধিক সময় ধরে করোনায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি আমরা। তবুও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের জীবনের সুরক্ষার জন্য মাস্ক, গ্লাভসের হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করেনি। আমরা অল্প বেতনের চাকরি করি। প্রতিদিন এগুলা কিনা ব্যবহার করা তো সম্ভব হয়না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথমদিকের লকডাউনে সুরক্ষা সামগ্রী দেয়ার কথা বলেছিল অথচ তা আমরা এখনো পায়নি। এবিষয়ে কেউ কখনো কথাও বলেনি আমাদের সাথে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আনসার সদস্য বলেন, শুরুতে মাস্ক, স্যানিটাইজার দেয়া হয়েছিল। পরে আর দেওয়া হয়নি। আমরা নিজেরা মাস্ক কিনে ব্যবহার করি।
বিশ্ববিদ্যালয় আনসার প্লাটুনের কমান্ডার আজিজুর রহমান বলেন, পূর্বে এগুলো দেওয়া হয়েছে কিনা জানিনা। তবে আমি আসার পরে দেওয়া হয়নি। তবে গতকাল একটা সভা হয়েছে নিরাপত্তা শাখার স্যারের সাথে, সেখানে সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়ার জন্য সিকিউরিটি অফিসারেরা প্রশাসনকে বলছে। তবে কোনকিছু দেওয়া হয় নাই, দিবে বলে কোন আশ্বাসও দেয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, আমি যতটুকু জানি নিরাপত্তা প্রহরীদের সেরকম কিছু দেওয়া হয়নি। শুরু থেকে দিবে বলছিল তবে দেয়নি। আমাদের পরিষদ থেকে আবেদন করব আবার।

এবিষয়ে জানতে চাইলে নিরাপত্তা শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মো. ছাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, নিরাপত্তাকর্মীদের সুরক্ষা সামগ্রী একেবারে দেয়নি বললে ভুল হবে। আমরা এক দুই বার দিয়েছে, তবে সেটা নিয়মিত দিতে পারি নি। আমরা নতুনভাবে আবার মাস্ক, স্যানিটাইজার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওভার টাইম করার পরও কেন প্রহরীরা ওভার টাইম ভাতা পাচ্ছেনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওভারটাইম নিয়ে একটু সমস্যা আছে। এখন ঘণ্টা অনুপাতে টাকা দেওয়া হবে। যেহেতু আগের নিয়মে পেমেন্ট করা সম্ভব হচ্ছেনা, তাই একটু দেরি হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট আবেদন করা আছে, প্রশাসন অনুমোদন করলে তারা একসাথে টাকা নিতে পারবে।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, সিকিউরিটি অফিসার কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী কিনে দিতে, তবে তারা তা কিনেছেন কেনা নিশ্চিত নয়। নিরাপত্তা যেহেতু জরুরি সেবার মধ্যে একটি অবশ্যই তাদের মাস্ক, স্যানিটাইজার প্রয়োজন। ওভার টাইমের টাকার বিষয়ে তিনি বলেন, আগে নিয়মবহির্ভূত ভাবে বেসিক হিসাবে ওভারটাইম দেয়া হতো, কিন্তু ইউজিসিসহ বেশীর ভাগ অফিস ঘণ্টা হিসাবে দেওয়া হবে। তারা দাবি জানিয়েছে সে বিষয়ে উপাচার্যের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ফাঁস হলো কুবির সাত শতাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য

 

কুবি প্রতিনিধি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রায় ৭২২ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য ফাঁস হয়েছে। এসব তথ্য প্রকাশ করে একটি লো-লেভেল হ্যাকিং প্ল্যাটফর্ম প্রযুক্তি বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছে। এতে ব্যবহারকারীর ফোন নম্বরসহ অ্যাকাউন্টে থাকা ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করেছে চক্রটি। বিজনেস ইনসাইডার এ তথ্য সবার আগে প্রকাশ করেছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে গত শনিবার বলা হয়।

হ্যাকিংয়ের শিকার এই ব্যবহারকারীদের নাম ঢাকার বেসরকারি ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলোজি বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীর সংগ্রহ করা তালিকা থেকে জানা গেছে। আইডি খোঁজার ক্ষেত্রে তারা ‘Comilla University, comilla university এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’ কী-ওয়ার্ড ব্যাবহার করেছে।

তথ্য ফাঁস হওয়া তালিকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট পরিচয় প্রোফাইলে উল্লেখ রয়েছে এমন ৭২২ জন ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছেন। তালিকায় ব্যাবহারকারীদের ফোন নম্বর, ফেসবুক আইডি, পুরো নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, প্রোফাইল ও কিছু ক্ষেত্রে ই-মেইল ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে। এই তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।

এ বিষয়টি নিয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রধান পার্থ চক্রবর্তীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, ‘মূলত ৩ টি কারণে ফেইসবুক হ্যাক হতে পারে। মাঝে মাঝে আমাদের কাছে অনেক লিংক আসে। সেগুলোতে ঢুকলে ক্লোন করার মাধ্যমে আমাদের তথ্য হ্যাকারদের হাতে চলে যায়। আরেকটি হচ্ছে অনেকে নিজের নামে বা ফোন নাম্বার দিয়ে পাসওয়ার্ড দেন। এতে করেও তথ্য চুরি হতে পারে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে অনেক সময় ভাইরাসের মাধ্যমে তথ্য হ্যাকারদের কাছে চলে যেতে পারে। এসব বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে। আমাদের পাসওয়ার্ড কিন্তু ফেইসবুক কর্তৃপক্ষও জানে না। আমরা নিজেরা ব্যাবহারের ক্ষেত্রে সচেতন থাকি তাহলে কোনভাবেই হ্যাকারদের কাছে আমাদের তথ্য যাবে না।’

সম্প্রতি ফাঁস হওয়া তালিকায় বাংলাদেশের রয়েছে ৩৮ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারী। বিশ্বের ১০৬ দেশের ৫৩ কোটি ৩০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর নাম রয়েছে হ্যাকিংয়ের তালিকায়। এদিকে অনেকটা বিনা খরচে এসব তথ্য অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে।

১০৬ দেশের মধ্যে এতে সবচেয়ে বেশি তিন কোটি ২০ লাখ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের। রয়েছে যুক্তরাজ্যের এক কোটি ১০ লাখ ও ভারতের ৬০ লাখ ব্যবহারকারীর গোপনীয় তথ্য।

তবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অফিশিয়াল মন্তব্য করেনি। এর আগে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার বিশ্বের বৃহত্তম এ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তথ্য ফাঁস হয়েছে।

স্মার্টফোন কিনতে ঋণ পাবে ৬৩৪ কুবি শিক্ষার্থী

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


অনলাইনে পাঠদানের জন্য স্মার্টফোন কিনতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) শিক্ষা ঋণ পাচ্ছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ৬৩৪ জন শিক্ষার্থী।

তালিকাভুক্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বিনা সুদে ৮ হাজার টাকা করে ঋণ দেবে ইউজিসি। এ ঋণ অধ্যায়নকাল থেকে সনদপ্রাপ্তির পূর্ব পর্যন্ত যেকোনো সময় সমান চার কিস্তিতে বা এককালীন পরিশোধ করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. আবু তাহের।

উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতিতে গত ২৫ জুন ইউজিসির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এক সভায় অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর জুলাই থেকে দেশের সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে অনলাইনে ক্লাস শুরু হয়।

এতে শিক্ষার্থীদের প্রতিবন্ধকতা দূর করার লক্ষ্যে গত বুধবার (৪ নভেম্বর) ইউজিসি’র এক ভার্চুয়াল সভায় দেশের সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪১ হাজার ৫০১ জন অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে বিনা সুদে ৮ হাজার টাকা করে ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

অধ্যাপক মো. আবু তাহের বলেন, তালিকাভুক্ত ৬৩৪ শিক্ষার্থীর প্রত্যেককে ৮ হাজার টাকা করে বিনা সুদে ঋণ দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূরক বাজেটে একটি প্রস্তাবনা ইউজিসিতে পাঠানো হবে। ইউজিসি অনুমোদন দিলেই আগামী মাসের শেষ নাগাদ শিক্ষার্থীদের আমরা ঋণ প্রদান করতে পারবো। শিক্ষার্থীরা অধ্যয়নকালীন থেকে সনদপ্রাপ্তির পূর্ব পর্যন্ত যেকোন সময়ে সমান চার কিস্তিতে কিংবা এককালীন পরিশোধ করতে পারবেন।

 

পায়ের চাপের সাহায্যে হাত জীবাণুমুক্ত করবে কুবির ফার্মেসি বিভাগের উদ্ভাবন

ডেস্ক রিপোর্ট

 


কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ হাতের ছোঁয়া ব্যতীত’ ফুট প্রেস হ্যান্ডওয়াশ ডিভাইস’ উদ্ভাবন করেছে ফার্মেসী বিভাগের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে দুই শিক্ষার্থী।

শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই ডিভাইসটি উদ্ভাবন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার ড.মোঃ আবু তাহের।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ফার্মেসী বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ কৌশিক আহমেদ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ ও উদ্ভাবক দলের সদস্যবৃন্দ।

আরও পড়ুনমানুষের ভাগোন্নয়নে জেল, জুলুমকে ভয় পায়নি বঙ্গবন্ধু: বশেফমুবিপ্রবি উপাচার্য

ফার্মেসী বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ কৌশিক আহমেদ নেতৃত্বে ডিভাইসটি উদ্ভাবনে সহায়তা করেন একই বিভাগের দুই শিক্ষার্থী কাউসার আহমেদ ও উৎপল কুমার রায়।

এ নিয়ে উদ্ভাবক দলের অন্য সদস্য উৎপল বলেন, মানুষের হাতের নাগালে নিরাপদ হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার নিশ্চিত করতেই আমাদের এই প্রচেষ্টা।

 

আরও পড়ুনকম্পিউটার চুরির ঘটনায় বশেমুরবিপ্রবির এক ছাত্রসহ ৭ জন গ্রেফতার

ডিভাইসটির বিশেষত্ব নিয়ে সৈয়দ কৌশিক আহমেদ জানান, মহামারী করোনা প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে সম্পূর্ণ হাতের ছোঁয়া ব্যতীত পায়ের চাপের সাহায্যে যন্ত্রটির মাধ্যমে হাত জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব।যন্ত্রটিতে দুইটি প্রেসর ব্যবহার করা হয়েছে যার একটির মাধ্যমে পানি ও অন্যটির মাধ্যমে হ্যান্ডওয়াশ থেকে জেল বেরিয়ে আসবে যা খুবই নিরাপদ, সহজলভ্য ও স্বল্পমূল্যে ঘরে বসেই বানানো সম্ভব।

কুবি ছাত্রীর শূন্য থেকে উদ্যোক্তা হবার গল্প

ফেনীর মেয়ে মৌরি বৈদ্য। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যানেজমেন্টে বিবিএ এমবিএ শেষ করেছেন। চাকরি নামক সোনার হরিণের পেছন না ছুটে চিন্তা করেছেন নিজেই কিছু করবেন। সেই চিন্তা থেকেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠা। বাসায় বসেই শুরু করেছেন অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা।

গড়ে তুলেছেন ‘মর্ত্যের অপ্সরী’ নামের প্লাটফর্ম। লক্ষ্য তাঁর বহুদূর যাবার। পড়াশোনা করে শুধু চাকরি নয়, হওয়া যায় উদ্যোক্তাও। নিজের উদ্যোক্তা হবার গল্পটাই শেয়ার করেছেন মৌরি।

‘চিন্তাশক্তি আর রুচিবোধ প্রকাশের সুযোগ নেই যেখানে সেই কাজগুলো কখনোই ভালো লাগতোনা তবুও খুব ইচ্ছে ছিলো MTO পদেই কোন ব্যাংকে জয়েন করে ৬-৭ বছর অনেক টাকা কামিয়ে বুটিক হাউজ দেবো অসাধারণ করে ।

ছোটবেলা থেকেই সাজতে যেমন পছন্দ করতাম তার চেয়েও বেশি ভালো লাগতো নিজের পছন্দে অন্যকে সাজাতে। মানে কাজিনরা, বান্ধবিরা যখন আমার পছন্দে জিনিস পরতো অন্যরকম সুখ পেতাম সত্যিকার অর্থে!

পড়াশোনার বিষয়টা বলি একটু,আমি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছি ২০১৬ সালে।ঢাবিতে ডি ইউনিটে চান্স পেয়েও পড়িনি বিবিএ এমবিএ করে ব্যাংকার হবো ভেবে।

পড়াশোনা শেষ করে ইন্টার্নশীপ এর সময় কনসিভ করি,২০১৭ সালের জানুয়ারিতে পুত্রসন্তান হয়।

পুরো ২০১৬-১৭ জার্নিটা একদম একা কষ্ট করার সময়েই টের পেয়েছিলাম সব সামলিয়ে চাকরি হয়তোবা করা হবেনা আমার,তাও আশা ছাড়িনি। অপেক্ষা করছিলাম ছেলেটা একটু বড় হলে চাকরি করবো। কিন্তু যেহেতু পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছিলাম না, প্রিপারেশন ছাড়া একটা পরীক্ষাও কখনো দেইনি।

কয়েকটা প্রাইভেট স্কুল কলেজের পরিচিত চেয়ারপার্সন অফার করেছিলেন কিন্তু সব ছিলো আমার জন্মস্থান ফেনীতে।বিবিএ ২য় বর্ষে বিয়ে হয়।তার মানে দীর্ঘ সময় বর থেকে আলাদা ছিলাম, বাচ্চাটা বাবা থেকে আলাদা থাকবে সেটা মেনে নিতে পারছিলাম না একদমই।

আমি ফেনীর মেয়ে, ছোট্ট অতি আধুনিক মফস্বল এলাকাটায় একটা সম্ভ্রান্ত শিক্ষিত পরিবারে জন্ম, যেখানে মা রিটায়ারমেন্ট এর পরেও স্কুল কর্তৃপক্ষ এক্সটানশন করিয়ে উনাকে রেখে দিচ্ছেন বছরের পর বছর উনার অসাধারণ যোগ্যতার কারনে, আর বাবা ফেনী সরকারি কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন। (এখন প্রাইভেট কলেজের প্রিন্সিপাল হিসেবে আছেন) ফেনীজুড়ে একনামেই সুপরিচিতি দু’জনেই।

এমন ঘরের মেয়ে অন্তত বিসিএস না দিয়ে চাকরি না করে ব্যবসাটা ঠিক মানা যায় না, এই কটু কথাগুলো শুনতে শুনতে এখন সয়ে গেছে আসলে।

আমি ভেবেছিলাম ৬ বছর পর যেটা শুরু করবো সেটা যদি শূন্য থেকেই চেষ্টা করা যায় ক্ষতি কি?

মা বাবা মেনে নিতে পারছিলোনা পাবলিক থেকে পড়াশোনা করে মেয়ে জুয়েলারি বানাবে অথবা কাপড় বিক্রি করবে! প্রথমে ঝামেলা হলেও এখন বাবা নেট প্রফিট জানতে চাইলে বেশ গর্ব হয় ।

শুরুটা কঠিন ছিলো খুব।সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ছিলো যখন দেখছিলাম ব্যাচ এর সবাই জব করে,আমি পাবলিক থেকে পরে যে কাজ করবো সেটা পড়াশোনা না করেও করা যায় এই ধরনের কথা হজম করাটাও বড় চ্যালেঞ্জ।

তোমার লজ্জা লাগেনা? আসলেই চাকরি করবা না? এতো পড়ে কি লাভ? এই আজেবাজে মন্তব্য গিলে ফেলার সাহস না থাকলে এই লাইনে পা না বাড়ানোই ভালো।

খুব কেঁদেছিলাম যেদিন ২ হাত ভর্তি করে সুন্দরবন কুরিয়ারে যাওয়ার সময় মা বলেছিলো কত স্মার্টলি চলতো মেয়েটা হাতে শপিং ব্যাগ নিয়ে কেমন লাগছে এখন (ফেরিওয়ালা ভেবেছিলো হয়তো )
সীমাহীন কষ্ট পেয়েছিলাম আসলে, কারন নিজের মনের সাথে নিজেই যুদ্ধ করছিলাম আমার সিদ্ধান্ত সঠিক তো? কতটুকু যেতে পারবো এভাবে এসব কোন্দোল চলছিলো নিজের সাথেই সে সময় মায়ের এমন মন্তব্য কষ্ট দিয়েছিলো,কারন আমার মা বাবা অতি আধুনিক,আমরা ২ভাই বোন যেভাবে বড় হয়েছি অনেক উচ্চবিত্তের ঘরেও অনেক সন্তান সেই সুযোগ সুবিধে পায়নি আমি সিউর।

মাকে এখনো অনেক কষ্ট দেই ফেনীতে ডেলিভারি চার্জ নেইনা পিক পয়েন্ট আমাদের বাসা তাই মাকেই অনেক কষ্ট করে স্কুল থেকে ফেরার পথে পার্সেল নিয়ে বাসায় যায়।হিসেব রাখে আবার সেই টাকা পাঠায় ।

আরেকবার ভার্সিটির প্রিয় ম্যাম অনেক কেনাকাটা করার পরে একদিন বলেছিলেন মৌরি আপনার প্রোফাইল এর সাথে এটা যাচ্ছেনা আপনি ভালো জব পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন, অনেক খারাপ লেগেছিলো আবারো চিন্তাভাবনা টালমাটাল অবস্থা কি যে করি!

২০১৮ এর এপ্রিলে শুরু করি ফেনী থেকেই। জুয়েলারি মেটারিয়াল কিনলাম, নিজেদের মধ্যেই শুরু করলাম বিক্রয়। প্রথম ক্লায়েন্ট কাজিন ঝুমুদি, বান্ধবিদের মধ্যে আফরিন।ওদের দারুন উৎসাহ না পেলে ধরে রাখতেই পারতাম না।পরে দেখলাম বাচ্চার জন্য জুয়েলারি বানাতে পারছিনা,শুরু করলাম কাপড়ের ব্যবসা ছোট মামা থেকে এনে বিক্রয় করতাম।

এরপর প্রতিবেশি, বান্ধবীরা, কাজিনরা কেনা শুরু করলো,নিজের উপর আস্থা এলো। এরপর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এর টিচার থেকে শুরু করে পরিচিত অপরিচিত অনেকেই।

আমি নিজের একটা অবস্থান তৈরী করতে চাইতাম সবসময়, ক্যাম্পাসে সুপরিচিত ছিলাম বলে হয়তো বিষয় টা পজিটিভ হলো। খুব কম ইনভেস্টমেন্ট দিয়ে শুরু করে রিইনভেস্ট করে করে এতোটুকু এসেছি বাকিটা আপনাদের দোয়া আর আশির্বাদ।

করোনাকালে খুব বেশি সেল না হলেও,বেঁচে থাকলে আমি জানি আবার জমবে মেলা যদি সততা ধরে রাখতে পারি বরাবরের মতো।অনেক কিছু লেখার একটাই উদ্দেশ্য, জীবনে হতাশ হওয়া যাবেনা।গর্ব করে বলতে হবে আমি যাই করিনা কেনো যে পথেই হাঁটিনা কেনো সফল হতে জানি।

কর্মজীবী মায়ের সন্তানকে দেখার কেউ না থাকলে মা আর সন্তান দুইজনেরই কষ্ট,সব ব্যালেন্স করতে গিয়ে আমার মাকেও অনেক কষ্ট করতে হয়েছিলো তবুও শান্তি একজন বিশ্বস্ত সাহায্যকারী ছিলো আমাদের বাসায় ২০ বছর যা এই যুগে মেলা দুষ্কর।

তাই সব মিলিয়ে মাতৃত্বকেই প্রাধান্য দিয়ে ৬ বছর পরে যা শুরু করতাম তা শূন্য থেকেই শুরু করলাম।এখনো আমার সন্তানের কথা মাথায় রেখে আমার অনেক কাজই করা হচ্ছেনা, বাঁধা আসে তবে মস্তিষ্ক কে অলস করে রাখলে হতাশার জন্ম নেয়, তাই সকল নারীদের বলবো ইনকাম্বেন্ট হতে হবে।বর থেকে ফোনে রিচার্জ করে দাও এটা বলতে যদি সংকোচ হয় তারমানেই আপনি আয় করার প্রয়াসী,এই সংকোচবোধের যোগ্যতাকে পুঁজি শুরু করে দিন আজকেই।

আমার জন্য সবাই আশির্বাদ করবেন যেনো নিজের পছন্দে সবাইকে সাজাতে পারি।

কুবি আইটি সোসাইটির নেতৃত্বে শিহাব-রাশেদ

কুবি প্রতিনিধি


কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক একমাত্র সংগঠন ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটি’র ২০২০ কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা করেছে।

নতুন কমিটিতে সভাপতি পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলোজি বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. শিহাব উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে একই বিভাগের ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ রাশেদুল হাসান দায়িত্ব পেয়েছেন।

শনিবার সংগঠনটির ফেইসবুক পেইজে লাইভ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।

নব গঠিত কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে আছেন ইশতিয়াক আহমেদ (ইংরেজি-১১), রাকিব মিয়া( সিএসই-১১), শাহাদাত হোসাইন (আইন-১১)। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন আকিব হাসান (আইসিটি-১২), নাজমুল আলম হৃদয় (প্রত্নতত্ত্ব-১২)। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আছেন নাজমুল ইসলাম নাইম (আইসিটি-১২), আসমা আক্তার মুক্তা (নৃবিজ্ঞান-১২), ফরহাদ আহমেদ (আইসিটি -১২), যোগাযোগ ও মিডিয়া সম্পাদক মো. আল আমিন(এমসিজে-১১)। অর্থ সম্পাদক অর্পিতা সাহা (আইসিটি -১২)। দপ্তর সম্পাদক সাদিয়া আফরিন জেরিন (আইসিটি-১২) প্রচার সম্পাদক মেহেনিগার আলম (আইসিটি-১৩)।

এছাড়াও কার্যকরী সদস্য পদে আছেন আরো ছয়জন সদস্য।

বিদায়ী কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ফাহমিদ হাসান অনিক ও সাধারণ সম্পাদক মো. শিহাব উদ্দিন এ কমিটি ঘোষণা করেন।

ফেসবুক লাইভে অতিথি হিসেবে ছিলেন আইসিটি বিভাগের শিক্ষক মো. রাকিব হাসান এবং সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সায়েদ মাখদুম উল্লাহ।