ক্যাম্পাস খোলার পক্ষে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষকরাও

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি: করোনাভাইরাসের টিকা নিশ্চিতকরণের পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আশ্বাসে পার হয়ে গেছে একবছর। অথচ শিক্ষার্থীরা সশরীরে এখনো ক্লাসে ফিরতে পারেন নি। করোনার ছোবল থেকে রেহাই পেলেও হতাশায় ডুবে আছেন শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।

ফলশ্রুতিতে দিনের পর দিন শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার খবরগুলো উঠে আসছে খবরের কাগজে। তাই অনতিবিলম্বে ক্যাম্পাস খুলে দেয়ার দাবিতে সারাদেশে একযোগে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

তাদের যৌক্তিক দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে ক্লাসে ফিরার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

ক্যাম্পাস না খুললে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি শিক্ষার্থীদের

লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক হাসেম রেজা বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসে। পরিবারের হাল ধরার দায়িত্বটাও তাদের উপর থেকে যায়। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে বলেই শিক্ষার্থীরা আজ মানববন্ধন করছে।

তিনি আরও বলেন, সরকার শিক্ষার্থীদের বিষয়টাকে নতুনভাবে ভেবে সময়োপযোগী একটা সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। এক্ষেত্রে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামধন্য প্রফেসর, শিক্ষাবিদরা আছেন তাদের সমন্বয়ে কমিটি করে সিদ্ধান্ত নিলে হয়তোবা আমরা ভালো আউটপুট পেতাম। অন্তত মাস্টার্স এবং অনার্স চুড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত ক্যাম্পাস খুলে দেয়া উচিত।

মি. হাসেম রেজা বলেন, অনলাইন ক্লাসে আমাদের দুইটি সেমিস্টার শেষ হয়ে যাচ্ছে। প্রথমদিকে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি থাকলেও এখন অনেক কম। এতে আমরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি। এছাড়া ইউজিসি অনলাইন পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে বলছে কিন্তু অনলাইন পরীক্ষা নেয়ার জন্যে প্রযুক্তিগত যে ক্যাপাবিলিটি দরকার তা আমাদের নাই। ক্যাম্পাস খুলে দিলে আমরা হয়তো সময় কমিয়ে সেমিস্টার বাড়িয়ে এই ক্ষতিপূরণটা পুষাতে পারতাম।

গণিত বিভাগের শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষকতা পেশায় আসলে ছাত্রদের সাথে আমাদের প্রতিনিয়ত ইন্টারেকশন হয়। যেকোনো একজন শিক্ষকের প্রিয় তালিকায় থাকে ক্লাসরুম-ল্যাব এবং শিক্ষার্থীরা। যেখানে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরতে চায়, আমরাও চাই ক্যাম্পাস খুলে দেয়া হোক। সাউথ এশিয়ার মধ্যে আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি সময় ধরে বন্ধ আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত ক্যাম্পাস খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, অবশ্যই আমরা সাধুবাদ জানাবো।’

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক সুকান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সবকিছুই খুলে দেয়া হয়েছে। যানবাহনও চলাচল করছে। শুধু শিক্ষার ব্যাপারটাই দীর্ঘদিন থেকে থমকে আছে।

মাঠ পর্যায়ের স্টেকহোল্ডার যারা আছেন, তারা শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিবাবকের সাথে এই ব্যাপারটা গুরুত্বের সাথে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করে একটা স্টাডি করলে আমাদের সঠিক সিদ্ধান্তে আসতে সুবিধা হতো। কিন্তু আমরা তেমন কিছু দেখিনি। এটা আসলেই হতাশাজনক। আমি মনে করি অতিদ্রুত শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সীমিত পরিসরে হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া উচিত।’