‘খয়রাতি’ বলায় নিঃশর্ত ক্ষমা চাইল আনন্দবাজার পত্রিকা

ডেস্ক রিপোর্ট: সম্প্রতি বাংলাদেশকে দেয়া চীনের শুল্কমুক্ত সুবিধাকে ‘খয়রাতি’ শব্দ ব্যবহার করে ভারতের বেশ কয়েককটি সংবাদ মাধ্যম খবর প্রকাশ করে। এর মধ্যে অন্যতহম ছিল কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা।

তবে নিজেদের ভুল স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছে আনন্দবাজার কর্তৃপক্ষ।

আজ মঙ্গলবার (২৩ জুন) সংবাদমাধ্যমটি এ ক্ষমা প্রার্থনা করে।

‘ভ্রম সংশোধন’ শিরোনামে ক্ষমা প্রার্থনা করে সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে- ‘লাদাখের পরে ঢাকাকে পাশে টানছে বেজিং’ শীর্ষক খবরে (২০-৬, পৃ ৮) খয়রাতি শব্দের ব্যবহারে অনেক পাঠক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থী।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ জুন চীনের বাজারে আরও পাঁচ হাজার ১৬১টি পণ্যের শুল্কমুক্ত রফতানি সুবিধা পেয়েছে বাংলাদেশ বলে জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মাধ্যমে দেশটিতে মোট শুল্কমুক্ত পণ্যের সংখ্যা দাঁড়াল আট হাজার ২৫৬টি। এর ফলে চীনে বাংলাদেশের মোট রফতানি পণ্যের ৯৭ শতাংশই শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় এসেছে।

এরপরে ‘খয়িরাতিভ শব্দ ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে আনন্দবাজারসহ ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম। তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বিষয়টিকে তেমন পাত্তাই দেননি।

এদিকে সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, “এ বিষয়ে ভারতীয় কয়েকটি পত্রিকার প্রতিবেদন আমাদের নজরে এসেছে।
চীনের দেয়া সুবিধা সম্পর্কে যে শব্দের ব্যবহার তারা করেছে তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। তবে এর বিরুদ্ধে আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে চাই না।”

ভারত-চীন চলমান অস্থিরতা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম


গত কয়েকদিন ভারত-চীন চলমান অস্থিরতা থেকে উদ্ভুত ভারতীয় মিডিয়াগুলোর অসৌজন্যমূলক (খয়রাতি) শিরোনামে অস্থির হবার বিষয়টি সাড়া ফেলেছে!

আমি বিষয়টিতে আশ্চর্য হয়নি মোটেও। গত এক দশকে আমাদের দেশের ভারত বিদ্বেষ অবস্থা প্রকট হয়েছে,তাতে ভারত বরাবরই আবার ঘি ঢালে,এটাও এমন একটা ঘটনা।এই সব ঘটনাই কিন্তু ভারত বিরোধী মনোভাবটা আরো প্রকট হয়।

সীমান্তে মানুষ হত্যা,ক্রিকেট রাজনীতি, ভারতীয় মিডিয়ার অশোভন প্রকাশভঙ্গী, ভারতীয় মুসলিমদের উপর অত্যাচার, ভারতের দাদাগিরি মনোভাবসহ অনেক কারন আছে বাংলাদেশে ভারত বিরোধী মনোভাবের। তাছাড়া বিগত বছরগুলোতে ভারতের মানুষও একইভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে ‘ফকির/কাঙ্গালী’ মনোভাবও বেড়েছে।তাছাড়া ভারতে ধর্মীয় উগ্র পন্থানুসরণ করা রাজনীতির প্রভাব সেদেশের কূটনীতিক আচরণেও পড়েছে।প্রতিবেশী কোন দেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক এখন ভালো না।

আমার কাছে ভারতের বর্তমান অবস্থা একেবারেই নড়বড়ে। তারা যতটা না দেখায় তাদের তৎপরতায়,তাদের প্রকৃত সামর্থ্য কিন্তু এতটা না।তাছাড়া মোদী ক্ষমতায় আসার পর তেমন দূরদর্শিতা দেখায় নাই,এটাও ভারতের আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ব্যর্থতার একটা কারন।

যারা ইতিহাস মনে রাখে না, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির দায় তাদেরই’—স্প্যানিশ দার্শনিক হোর্হে সান্তাইয়ানার এই বাণী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চীন নীতির ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের সময় তাঁর দেশ যে ভুল করেছিল, তা মনে রাখার বিষয়ে তিনি উদাসীন।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু যেভাবে চীন ইস্যুতে তাঁর অতি রাশিয়া নির্ভর হয়ে ভুল করেছিলেন, মোদিও সেই একই ভুল করছেন। মোদিও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর অতি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন এবং আগামাথা না ভেবেই ধরে নিয়েছেন ভারতের কৌশলগত স্বার্থ উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বড় বান্ধব তার আর হবে না। কিন্তু ১৯৬২ সালে ভারত যেভাবে রাশিয়াকে পাশে পায়নি, এখন একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রকেও পাচ্ছে না।আর, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের অতি মেকি সম্পর্কও চীন ভালো ভাবে নিচ্ছে না।

পক্ষান্তরে,চীন ভারতের মত এত মোটা মাথার চিন্তা করে না।তারা যুদ্ধেও তাদের বানিজ্যিক কৌশল দিয়েই প্রতিবেশী ও ভারতের সাথে সম্পর্কিত দেশ সমূহকে কাছে টানার চেষ্টা করছে,তারই অংশ হিসেবে চীন বাংলাদেশকে ৯৭ শতাংশ রপ্তানিতে শুল্ক মুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছে।

আবার এটা ওপেন সিক্রেট বিশ্বব্যাংক অনেকটা যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারা প্রভাবিত, এখন ভারত হয়তো তার মিত্রের প্রভাব খাটিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের একটা আর্থিক বরাদ্দ পাইয়ে বাংলাদেশকে কাছে টানতে চাচ্ছে।
তবে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী খুব চৌকস ও কৌশলী।উনি সহজে কারো(ভারত বা চীন) ঘেঁষা কোন আচরণ প্রকাশ করবে না বলে বোধ করি।

আর, বাংলাদেশের সরকার এবং মানুষেরও উচিত ভারতের এমন উস্কানিমূলক শিরোনামে অতি উৎসাহী না হওয়া,এটা ওরা অনেকটা লিটমাস পেপারের মত ব্যবহার করে,যাতে আমাদের মনোভাব উঠে আসে।আমাদের সাবধানী হওয়া উচিৎ বলে মনে করি।

লেখক: শিক্ষাবিদ, গবেষক , বিশ্লেষক এবং ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ।

চীনে ৯ দিনে ৬৫ লাখ করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ করোনা তাণ্ডবে স্থবির সারাবিশ্ব। চীনের উহান শহরে ৯ দিনে ৬৫ লাখেরও বেশি মানুষের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছে।

করোনা প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কায় বিশ্বে দ্বিতীয় ধাপে করোনা ভাইরাসের উৎসস্থলে ব্যাপকভাবে এই পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে বেইজিং।

এ বিষয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, ১৫ থেকে ২৩শে মে পর্যন্ত উহানে ৯০ লাখেরও বেশি মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ৬৫ লাখ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শহরজুড়ে ফের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে উহানের এক কোটি ১০ লাখ বাসিন্দার সবার নমুনা ১০ দিনের মধ্যে পরীক্ষার পদক্ষেপ নেয় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় প্রায় তিন মাস কঠোর লকডাউনে ছিল উহান। এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসার পর ৮ই এপ্রিল লকডাউন তুলে নেয়া হয়। চলতি মাসের ৯ ও ১০ তারিখে একটি আবাসিক কমপ্লেক্সে নতুন করে ছয় ব্যক্তির করোন ভাইরাস ধরা পড়লে কর্তৃপক্ষ শহরের সব মানুষের নমুনা পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়।

চীন করোনা তৈরি করেছে, মিথ্যা হলে নোবেল ফেরত বললেন বিজ্ঞানী

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ “নোভেল করোনা ভাইরাস প্রাকৃতিক কিছু নয়, এটা বাদুড় থেকেও আসেনি। এটা মানুষের হাতে তৈরি। চীন এই ভাইরাসটি তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাপানের নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বিজ্ঞানী অধ্যাপক তাসুকু হনজো।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেন।

নোবেল জয়ী বিজ্ঞানী হনজো বলেন, ‘আমি বিভিন্ন প্রাণী এবং ভাইরাস নিয়ে ৪০ বছর ধরে কাজ করেছি। কখনো ভাইরাসের এমন প্রকৃতি লক্ষ্য করিনি। এটা প্রাকৃতিক নয়, এটা মানুষের তৈরি এবং সম্পূর্ণরূপে আর্টিফিসিয়াল।’

প্রফেসর হনজো পরিশেষে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছেন, এ বক্তব্য কোনো না কোনো দিন সত্য প্রমাণিত হবে। যদি মিথ্যা প্রমাণিত হয় তাহলে তার নোবেল পুরস্কার প্রত্যাহার করে নেওয়া যাবে, এতে তার কোনো আপত্তি নেই।

নোবেল জয়ী ওই সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, ‘আমি ৪ বছর চীনের উহানের ল্যাবরেটরিতেই কাজ করেছি এবং ল্যাবরেটরির প্রতিটি স্টাফের সঙ্গেই আমার পরিচয় আছে। করোনা মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর আমি তাদের সঙ্গে ফোনে বার বার আলাপ-আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু গত তিন মাস ধরে ল্যাবরেটরির সবগুলো টেলিফোন লাইন বন্ধ পাচ্ছি। এতে আমি বুঝতে পারছি, ওই ল্যাবরেটরির কোনো টেকনিশিয়ানই আর জীবিত নেই।”

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে জেমস পি. এলিসন এর সাথে যুগ্নভাবে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পান।

হোম কোয়ারেন্টাইন শেষে ১৬তম দিনে মালয়েশিয়া ফেরত ব্যক্তির মৃত্যু

সারাদেশ টুডে


গোলাম মোস্তফা (৬০) নামে মালয়েশিয়া ফেরত প্রবাসীর যশোরে হোম কোয়ারেন্টাইন শেষে ১৬তম দিনে মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার (৩০ মার্চ) সকালে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান।

এদিকে ঝিকরগাছা উপজেলা প্রশাসন দাবি করেছে, মৃত গোলাম মোস্তফার করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ ছিল না। তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন।

মৃত গোলাম মোস্তফা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছিলেন। পাশাপাশি তিনি মালয়েশিয়া শ্রমিক পাঠানোর ব্যবসায় জড়িত ছিলেন।

উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নেছার আলী জানান, মোস্তফা মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর ব্যবসা করতেন। এ জন্য মালয়েশিয়াতে আসা যাওয়া ছিলো তার। সবশেষ তিনি গত ১৪ মার্চ মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে আসেন। এরপর থেকে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে তিনি হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন।

হোম কোয়ারেন্টাইন শেষে আজ সোমবার (৩০ মার্চ) সকালে ১৬তম দিনে তিনি বাঁকড়া বাজারের বাসা থেকে তার গ্রামের বাড়ি উজ্জ্বলপুরে যান। সেখান থেকে ফিরে এসে নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তিনি মারা যান। বিষয়টি তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে জানানো হয়। তারা জানিয়েছেন গোলাম মোস্তফা স্ট্রোক করে মারা গেছেন। অবশ্য এর আগেও তিনি দুইবার স্ট্রোকজনিত কারণে অসুস্থ হয়েছিলেন।

মৃত্যুর বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমী মজুমদার বলেন, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় গোলাম মোস্তফার করোনা আক্রান্তের কোনো লক্ষণই ছিল না। তবু মৃত্যুর পর চিকিৎসকরা তার প্রাথমিক পরীক্ষা করেছেন। স্ট্রোকজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্বনবীর নসিহত মেনে চলছে চীন

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


চীনে ছড়িয়ে পড়া রহস্যজনক প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বর্তমানে ১৩টির বেশি দেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। যার কোনো প্রতিষেধকও আবিষ্কৃত না হওয়ায় বিশ্বনবির নসিহত মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছে চীন কর্তৃপক্ষ।

ভাইরাসটি থেকে বাঁচার সাধারণ যে উপায় অবলম্বন করছে, দেড় হাজার বছর আগে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে উপদেশ দিয়ে গেছেন। হাদিসের এ আমলই অনুসরণ করছে চীন।



প্লেগ বা মহামারি মূলত আল্লাহর গজব। মহামারি প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘এটি আল্লাহর গজব বা শাস্তি, যা (এ রকম শাস্তি) বনি ইসরাঈলের এক গোষ্ঠীর ওপর এসেছিল, তার বাকি অংশই হচ্ছে মহামারি। অতএব, কোথাও মহামারি দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থানরত থাকলে সে জায়গা থেকে চলে এসো না। অন্যদিকে কোনো এলাকায় এটা দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থান না করলে সে জায়গায় যেয়ো না।’ (তিরমিজি)



হজরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশে বা অঞ্চলে যদি কোনে প্রকার প্লেগ বা মহামারি জাতীয় সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সেক্ষেত্রে তোমরা যারা (ওই অঞ্চলের) বাহিরে আছ তারা ওই শহরে প্রবেশ করো না। আর যে শহরে মহামারী ছড়িয়ে পড়েছে তোমরা যদি সে শহরে বসবাস করো তবে তোমরা সে অঞ্চল বা শহর থেকে বাহির হয়ো না।’ (বুখারি, মুসলিম)



এদিকে প্রাণঘাতী এ রোগের সয়লাব ঠেকাতে চীন সরকার হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে রোগীসহ কোনো মানুষকে অন্য শহরে পাঠাবে না। আবার অন্য শহর থেকে কোনো মানুষকেও এ শহরে প্রবেশ করতে দেবে না। যাতে এ রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে না পারে। হাদিসের নির্দেশনাও এটি।

হুবেই প্রদেশে বসবাস করে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ। চীন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের আলোকে এ শহর থেকে দেশি কিংবা বিদেশি কোনো মানুষকেই এখনই স্থান ত্যাগ তথা বিদেশিদের নিজ নিজ দেশে যেতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি সরাসরি হাদিসের আমল, যা দেড় হাজার বছর আগেই ঘোষণা করেছিলেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

করোনাভাইরাস এক অজানা আতঙ্ক। রাসুলে আরাবি মানবজাতিকে সতর্ক করেছেন অন্যায়, জুলুম ও অশ্লীলতার কারণে আল্লাহ তাআলা জালেম ও অন্যায়কারীদের ওপর অপরিচিত মহামারি চাপিয়ে দেন। হাদিসে এসেছে-



রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারি আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তা ছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।’ (ইবনে মাহাজ)



চীনের করোনাভাইরাস সে রকম ইঙ্গিতই বহন করছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘করোনাভাইরাসটি সার্স বা ইবোলঅর চেয়েও অনেক বেশি বিপজ্জনক। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে চীনে সার্স (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) নামের ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে ৮ হাজার ৯৮ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল। যার মধ্যে মারা যায় ৭৭৪ জন। সেটিও ছিল এক ধরনের করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাসের লক্ষণগুলো হলো কাশি, জ্বর, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া ও নিউমোনিয়া।

তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে অপরিচিত এসব ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কেয়ামতের বার্তা দিয়ে যায়। মানুষকে সতর্ক করে যায়। হাদিসের পরিভাষায়ও এটি পরিলক্ষিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-



কিয়ামতের আগে ৬টি আলামত গণনা করে রাখো


  • আমার মৃত্যু; অতঃপর
  • বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়; তারপর
  • তোমাদের মধ্যে বকরির পালের মহামারির মতো ঘটবে মহামারি;
  • সম্পদের প্রাচুর্য, এমনকি এক ব্যক্তিকে একশ দিনার দেওয়ার পরও সে অসন্তুষ্ট থাকবে। তারপর
  • এমন সব ফেতনা আসবে, যা আরবের প্রতিটি ঘরে প্রবেশ করবে।
  • তারপর যুদ্ধবিরতির চুক্তি হবে; যা তোমাদের ও বনি আসফার বা রোমকদের মধ্যে সম্পাদিত হবে। অতঃপর তারা বিশ্বাসঘাতকতা করবে এবং ৮০টি পতাকা উড়িয়ে তোমাদের বিপক্ষে আসবে; প্রতিটি পতাকার নিচে থাকবে ১২ হাজার সৈন্য।’ (বুখারি)

আল্লাহ-তাআলা মুসলিমউম্মাহসহ পুরো মানবজাতিকে সব অপরিচিত রোগব্যাধি থেকে হেফাজত করতে অন্যায় জুলুম-অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

করোনা ভাইরাস কী? কীভাবে ছড়ায় এই ভাইরাস?

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


সম্প্রতি চীনে নতুন করোনা ভাইরাস মহামারিতে রূপ নেয় কিনা সেই আতঙ্কে ভুগছে সারাবিশ্ব। চীনে এই ভাইরাসের কারণে দিনের পর দিন মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে; সেই সাথে বেড়েই চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। চীনের উহান শহর থেকে করোনা ভাইরাসটি প্রথম ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি শনাক্ত করেন বিজ্ঞানী লিও পুন। ভাইরাসটি কতটা ভয়ংকর এবং কীভাবে ছড়ায়, তা নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ইতোমধ্যে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।



করোনা ভাইরাস কী?


করোনা ভাইরাস হচ্ছে ভাইরাসে একটি বড় গ্রুপ। করোনা ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯-এনসিওভি। মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে এমন ৬টি করোনা ভাইরাস এতদিন পরিচিত ছিল। এখন যেগুলোতে মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে সেগুলো নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস।

করানো ভাইরাসের বিষয়ে বিজ্ঞানীরা বলছে, করোনা ভাইরাসটি হয়তো মানুষের দেহকোষের ভেতরে ইতোমধ্যে ‘মিউটেট করছে’, গঠন পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিচ্ছে এবং সংখ্যাবৃদ্ধি করছে। এ কারণে এটি আরও বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। বিজ্ঞানীরা এটাও নিশ্চিত করেছেন যে, এ ভাইরাস একজন মানুষের দেহ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে ছড়াতে পারে।



কীভাবে ছড়ায় এই ভাইরাস?


করোনা ভাইরাস তখনই সুস্থ মানুষের সংস্পর্শে আসবে যখন কেউ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসে। ভাইরাসটি কতটা সংক্রামক, তার উপর নির্ভর করে কাশি, হাঁচি বা হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি ছুঁয়েছে এমন কিছু স্পর্শ করার পর সেই হাত দিয়ে মুখ, নাক বা চোখ স্পর্শ করলে সংক্রমণ হতে পারে। এমনকি রোগীর বর্জ্য থেকে চিকিৎসকরাও আক্রান্ত হতে পারেন এই ভয়াবহ ভাইরাসে।



কীভাবে ছড়িয়েছে ভাইরাসটি?


মধ্য চীনের উহান শহর থেকে এই রোগের সূচনা। ৩১ ডিসেম্বর এই শহরে নিউমোনিয়ার মতো একটি রোগ ছড়াতে দেখে প্রথম চীনের কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

বিশেষজ্ঞরা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেননি কীভাবে এই ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্ভবত কোনও প্রাণী এর উৎস ছিল। প্রাণী থেকেই প্রথমে ভাইরাসটি কোনও মানুষের দেহে ঢুকেছে। তারপর মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়েছে। এর আগে সার্স ভাইরাসের ক্ষেত্রে প্রথমে বাদুড় এবং পরে গন্ধগোকুল থেকে মানুষের দেহে ঢোকার নজির রয়েছে।

এদিকে ভাইরাসটির ক্ষেত্রে উহান শহরে সামুদ্রিক একটি খাবারের কথা বলা হচ্ছে। শহরটির একটি বাজারে গিয়েছিল এমন ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, কিছু সামুদ্রিক প্রাণী যেমন বেলুগা জাতীয় তিমি করোনা ভাইরাস বহন করতে পারে। তবে উহানের ওই বাজারে খরগোশ, মুরগি, বাদুড়, এবং সাপ বিক্রি হতো।



ভাইরাসটির চিকিৎসা কী?


এই করোনা ভাইরাস নতুন, যার ফলে এখনো এর টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এমনকি এমন কোনও চিকিৎসাও নেই।

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. গ্যাব্রিয়েল লিউং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এ নির্দেশনায় বলছেন, হাত সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, বারবার হাত ধুতে হবে। হাত দিয়ে নাক বা মুখ ঘষবেন না, ঘরের বাইরে গেলে মুখোশ পরতে হবে।