শুভ জন্মদিন ভালোবাসার ৭৫ একর

স্বপন মাহমুদ


এ যে এক সবুজের পৃথিবী,
চারিদিকে সবুজ আর সবুজ,হঠাৎ মাঝে এক টুকরো লাল,
যা সবারই মন কেড়ে নেয়।
ঘাসফুলের মাঝে বসে প্রিয়জনের সাথে প্রতিনিয়ত বন্দী হয় হাজারো স্মৃতিকথা,গল্প এবং সৃষ্টি হয় নতুন করে ভালোলাগার,ভালোবাসার।
এখানে বৃষ্টিস্নাত কৃষ্ণচূড়ার লাল গালিচার রাজ্যে হেঁটে চলে হাজারো স্বপ্নচারী। কখনোবা ক্যাফেটেরিয়ায় বেজে উঠে গিটারের টুংটুং শব্দে বেশুর গলার চেনা-পরিচিত সব গান।

এখানে,
প্রতিদিন কৃষ্ণচূড়া সড়ক দিয়ে ডুকে,
বন্ধুর সাথে হাসাহাসিতে কিংবা ভালোবাসার মানুষটির হাত ধরে সৌন্দর্যময় এই কৃষ্ণচূড়ার লালগঞ্জে আগমন ঘটে হাজারো রঙ্গিন স্বপ্নচারীর।

ক্যাফেটেরিয়া,বিজয় সড়ক,স্বাধীনতা স্মারক,শহীদ মিনার,বকুলতলা,দেবদারু রোড,কৃষ্ণচূড়া সড়ক,শেখ রাসেল চত্বর,একাডেমিক ভবন,বোটানিক্যাল গার্ডেন ইত্যাদি সৌন্দর্যময় স্থানে প্রতিনিয়ত যে প্রশ্ন,গল্প গুলো উঠে আসে-

-বাড়ি কই?
-কোন ডিপার্টমেন্ট?
-কোন ব্যাচ?
-কেমন আছিস?
-অমুক বড় ভাইকে চিন?তোমার এলাকার
-দোস্ত,পরীক্ষা কি হবে?
-অ্যাসাইন্টমেন্ট করছিস? আমারটাও করে দেনা দোস্ত
-হতাশা চত্বর থেকে হতাশ হয়ে ফেরা
-দোস্ত কই যাস?
-সেমিনার আছে,ল্যাব আছে
-ভাই/আপু আসসালামু আলাইকুম
-তোর ডিপার্টমেন্টে জট আছে?ক্লাস হচ্ছে?
– মাঝেমধ্যে “জয় বাংলা,জয় বঙ্গবন্ধু” স্লোগান শোনা যায়
– তোর সিজিপিএ কত?
– পরীক্ষা ভালো হয়নি রে
– চল,ক্যাফেটেরিয়া যাই
-চায়ের কাপে ঝড়
– বন্ধুত্ব,ভালোবাসা
– আড্ডা,গান,গিটারের টুংটুং শব্দ।
এরকম হাজারো ছোট ছোট প্রশ্ন কিংবা গল্প শোনা যায়।

প্রতিদিনের মত,
এখানে সকাল আসে এক টুকরো সোনালী নিয়ে,হল,
শিক্ষক আবাস্থলে পাখির কিচিরমিচির শব্দ, ক্যাম্পাস-ক্যাফেটেরিয়ায় মাঝবয়সী,বৃদ্ধ,নারী,ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যায়ামের আশর,সেন্ট্রাল মাঠসহ সব মাঠগুলোতে ভরে যায় ক্রিকেট প্রেমী,ফুটবল প্রেমীদের পদচারণায়।

ক্লাস,ব্যস্ততা, অ্যাসাইন্টমেন্ট,ল্যাব,সেমিনার, ইনকোর্স,মিডটার্ম,কনসার্ট আড্ডা,গ্রুপ স্টাডি,ছাত্র আন্দোলন,রাজনীতি,ইত্যাদিতে সময় অতিবাহিত হবার পর গোধুলী আকাশে রক্তিম সূর্যের ধীরে ধীরে অস্ত যাওয়া,পাখির কিচিরমিচির শব্দ এবং সুমধুর কণ্ঠে আজানের ধ্বনিতে নেমে আসে সন্ধ্যা। এসময় দুই শ্রেণীর লোকের পদচারণা দেখা যায় ক্যাম্পাসে। একদল ক্যাম্পাসে রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে কৃষ্ণচূড়া দিয়ে আগমন করে,অন্যদল তখন ক্যাম্পাস ত্যাগ করে।
সন্ধ্যার পর- স্বাধীনতা স্মারক,বিজয় সড়ক,শহীদ মিনার,সেন্ট্রাল মাঠে হঠাৎ করেই বেজে উঠে বেশুর গলার গান এবং গিটারের টুংটুং শব্দ।সিনিয়র-জুনিয়র, বন্ধু-বান্ধবী মিলে ছোট আশর।
পার্কেরমোড়,চকবাজারে চায়ের কাপে ঝড় উঠে, সাথে পাল্লা দিয়ে নিকোটিনের ধোয়াও ভেসে বেড়ায়।

স্নিগ্ধ সকাল,দুপুরের ব্যস্ততা,বিকেলে আড্ডা,গোধুলী আকাশ,পাখির কিচিরমিচির,আজানের সুমধুর কণ্ঠ পেরিয়ে রাত হলে কৃষ্ণচূড়ার বৃক্ষতলে কমলা সুন্দরীগুলো যখন ল্যাম্পপোস্টের আলোয় আলোকিত হয়ে নিরবতা পালন করে,তখন শুধু রাতে হাটা ক্যাম্পাস প্রেমীরাই তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।

রাত বাড়তে থাকলে বাহিরের ভীড় কমতে থাকে, হলে জমে ওঠে আড্ডা। কেরাম আর কার্ড খেলাও জমে ওঠে। সেই সাথে ছাদে চলে গিটার নিয়ে গানের আসর। এভাবেই রাতভর চলে প্রাণের উৎসব।

এই জাদুনগরীতে রাত মানে যেন এক নতুন শুরুর গান, যে গানে আছে মায়াবী রহস্যময়তার ডাক আর তা উন্মোচনের আমন্ত্রণ। এখানকার রাতে ভয় নেই, শংকা নেই, এখানকার রাতে শুধুই মুগ্ধতা।

ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন সৌন্দর্য নিয়ে হাজির হয় বেরোবি। বর্ষার আগমন ঘটে বৃষ্টি ফোটার টুপটাপ শব্দে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি, মৃদু আবহাওয়া, হঠাৎ ঝড়ো বাতাশ তৈরি করে অসম্ভবত এক ভালোলাগার।
এখানে শরতের আগমন ঘটে আকাশের বুকে সাদা মেঘের ভেলা নিয়ে। হতাশা চত্বরে কুয়াশার আবরণে মুখ ডেকে লজ্জাবতী নারীর বেশে আগমন ঘটে হেমন্তের।অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে প্রকৃতি সাজিয়েছে ভালোবাসার এই ৭৫ একর।

হুম,এটাই আমার বেরোবি…
শুভ জন্মদিন ভালোবাসার ৭৫ একর❣️
১২ পেরিয়ে ১৩ তে পদার্পণ করল ভালোবাসার বেরোবি।

আরও পড়ুনবাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সেটাই শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থীর ‘বড় যোগ্যতা’!
যদিও এবারের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসটা পালিত হবে হৈহুল্লোর, নাচানাচি, অসাধারণ সব আয়োজন ছাড়া,
তবুও জন্মদিনে জানাই বেরোবির প্রতি ভালোবাসা
এবং আমি চাই বেরোবির এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশটা অব্যাহত থাকুক,বেরোবির সকল ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মচারী সকলেই সুস্থ ও নিরাপদে থাকুন।

স্বপন মাহমুদ
ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর

চবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন

নুর নওশাদ


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সুযোগ্য কন্যা,গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ৭৪ তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে।

জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া মাহফিল এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু এবং দেশ-জাতির কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে পূর্বাহ্নে মাননীয় উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে সাথে নিয়ে চবি বঙ্গবন্ধু চত্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

২৮ সেপ্টেম্বর বেলা ১১.৩০ টায় চবি উপাচার্য দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে কেক কেটে জন্মদিন উদযাপনের সূচনা করেন।

মাননীয় উপাচার্য বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন।

তিনি বলেন, মহাকালের মহানায়ক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি বিশ্বনেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষুদা-দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মাণের যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

এ সময় চবি সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, অনুষদসমূহের ডিনবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, রেজিস্ট্রার, কলেজ পরিদর্শক, হলের প্রভোস্টবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রী নির্দেশনা ও পরামর্শ কেন্দ্রের পরিচালক, অফিস প্রধানবৃন্দ, অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের সফলতম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিনে সশ্রদ্ধ শুভেচ্ছা

প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা


আগামী ২৮শে সেপ্টেম্বর ২০২০ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন। তাঁর এই জন্মদিনে আমাদের গভীর শ্রদ্ধা। অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে তিনি ৭৪তম বৎসরে পা রাখতে যাচ্ছেন। ১৯ বার হত্যার মুখোমুখি থেকে প্রাণ বেঁচে গিয়েছেন। তাঁর এই ৭৪তম জন্মদিনে আমাদের আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং কিছু কথা।

শিক্ষা ও ছাত্র রাজনীতি
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা, বাঙালি জাতির পিতা ও বাংলাদেশ সরকারের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। তাঁর মাতার নাম বেগম ফজিলাতুন্নেছা।

১৯৪৭ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুন্নেছার পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার বড় তিনি। তাঁর বাল্যশিক্ষার শুরু টুঙ্গিপাড়াতেই। ১৯৫৪ সাল থেকে তিনি ঢাকায় পরিবারের সঙ্গে মোগলটুলির রজনীবোস লেনের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। পরে মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে ওঠেন। ১৯৫৬ সালে তিনি টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬১ সালের ১লা অক্টোবর ধানম-ির ৩২ নম্বরের বাড়িতে থাকা শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন।

বাল্যকাল থেকেই রাজনীতি সচেতন শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সরকারি ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজের ছাত্রসংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর তিনি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরের বছর সভাপতি নির্বাচিত হন। শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি সকল গণআন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা সে সময় পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় বেঁচে যান। পরবর্তীকালে তিনি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ৬ বছর অবস্থান করেন। ১৯৮০ সালে ইংল্যান্ড থেকে তিনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। বাংলাদেশে রাজনীতির গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনতে ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী অসাম্প্রদায়িক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের গণমানুষের ভবিষ্যত উন্নয়নের কথা চিন্তা করে ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ই মে দেশে ফিরে আসেন।

কারাবাস
১৯৮১ সালে দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে লিপ্ত হওয়ার পরপরই শেখ হাসিনা শাসকগোষ্ঠীর রোষানলে পড়েন। তাঁকে বারবার গ্রেফতার করে কারাগারে রাখা হয়। শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য কমপক্ষে ১৯বার সশস্ত্র হামলা করা হয়। ১৯৮৩ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি সামরিক সরকার তাঁকে আটক করে ১৫ দিন কারাগারে রাখে। ১৯৮৪ সালের ফেব্রুয়ারি এবং নভেম্বর মাসে তাঁকে দুইবার গৃহবন্দি করা হয়। ১৯৮৫ সালের ২রা মার্চ তাঁকে আটক করে প্রায় ৩ মাস গৃহবন্দি করে রাখা হয়।

১৯৮৬ সালের ১৫ই অক্টোবর থেকে তিনি ১৫ দিন গৃহবন্দি ছিলেন। ১৯৮৭ সালের ১১ই নভেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করে এক মাস কারাগারে রাখা হয়। ১৯৮৯ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা আবারও গৃহবন্দি হন। ১৯৯০ সালের ২৭শে নভেম্বর শেখ হাসিনাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। ২০০৭ সালের ১৬ই জুলাই সামরিক বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে সংসদ ভবন চত্বরে সাবজেলে পাঠায়। প্রায় ১ বছর পর ২০০৮ সালের ১১ই জুন তিনি মুক্তিলাভ করেন।

মৃত্যুর মুখোমুখি
শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে উল্লেখযোগ্য হামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৮৭ সালের ১০ই নভেম্বর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনকালে তাঁকে লক্ষ্য করে পুলিশের গুলিবর্ষণ। এতে যুবলীগ নেতা নূর হোসেন, বাবুল ও ফাত্তাহ নিহত হন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাঁকেসহ তাঁর গাড়ি ক্রেন দিয়ে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ১৯৮৮ সালের ২৪শে জানুয়ারি চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিংয়ের সামনে শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে এরশাদ সরকারের পুলিশ বাহিনী লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় শেখ হাসিনা অক্ষত থাকলেও ৩০জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী শহীদ হন। লালদীঘি ময়দানে ভাষণদানকালে তাঁকে লক্ষ্য করে দুইবার গুলি করা হয়। জনসভা শেষে ফেরার পথে আবারও তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করা হয়।

১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য বারবার হামলা করা হয়। ১৯৯১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচন চলাকালে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়। ১৯৯৪ সালে ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে তাঁর কামরা লক্ষ্য করে অবিরাম গুলিবর্ষণ করা হয়। ২০০০ সালে কোটালীপাড়ায় হেলিপ্যাডে এবং শেখ হাসিনার জনসভাস্থলে ৭৬ কেজি ও ৮৪ কেজি ওজনের দুইটি বোমা পুতে রাখা হয়। শেখ হাসিনা পৌঁছার পূর্বেই বোমাগুলো শনাক্ত হওয়ায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। বিএনপি সরকারের সময় সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হয় ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট। ঐদিন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এক জনসভায় বক্তব্য শেষ করার পরপরই তাঁকে লক্ষ্য করে এক ডজনেরও বেশি আর্জেস গ্রেনেড ছোড়া হয়। রোমহর্ষক সেই হামলায় শেখ হাসিনা প্রাণে রক্ষা পেলেও আইভি রহমানসহ তাঁর দলের ২২জন নেতাকর্মী নিহত হয় এবং পাঁচ’শর বেশি মানুষ আহত হন। শেখ হাসিনা নিজেও কানে আঘাত পান।

গ্রন্থের রচয়িতা
শেখ হাসিনা বেশ কয়েকটি গ্রন্থের রচয়িতা। তাঁর গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- শেখ মুজিব আমার পিতা (২০১৫), ওরা টোকাই কেন (১৯৮৯), বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম (১৯৯৩), বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২-১৯৭৫, দারিদ্র্য দূরীকরণ : কিছু চিন্তাভাবনা (১৯৯৫), আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি (১৯৯৮), সামরিকতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র (১৯৯৪), বিপন্ন গণতন্ত্র লাঞ্ছিত মানবতা (২০০২), সাদা কালো (২০০৭), সবুজ মাঠ পেরিয়ে (২০১০), বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্যে উন্নয়ন (১৯৯৯), সহে না মানবতার অবমাননা (২০০৩), ঞযব ছঁবংঃ ভড়ৎ ঠরংরড়হ-২০২১, ), The Quest for Vision-2021, Democracy in Distress Demeaned Humanity (2003), Living in Tears (2004), Democracy Poverty Elimination and Peace (2005), Secret Documents of Intelligence Branch on Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman (Edited, 2018).

পারিবারিক জীবন
স্বামী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম.এ. ওয়াজেদ মিয়া। ড. মিয়া ১৯৪২ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানার ফতেহাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালের ১৭ই নভেম্বর জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। ড. ওয়াজেদ মিয়া একজন মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে ১৯৬১ এবং ১৯৬২ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে বি.এস-সি. সম্মান এবং এম.এস-সি. ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ডের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন। প্রথিতযশা বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া ২০০৯ সালের ১০ই মে পরলোক গমন করেন। শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় একজন তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। তাঁর একমাত্র কন্যা সায়মা হোসেন ওয়াজেদ একজন মনোবিজ্ঞানী এবং তিনি অটিস্টিক শিশুদের কল্যাণে কাজ করছেন।

জননেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন বলে বাংলাদেশ বেঁচে আছে। আমরা তাঁর ৭৪তম শুভ জন্মদিনে স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি তিনি দীর্ঘজীবী হউন। শান্তিময় হোক আগামী দিনগুলো। বেঁচে থাকুন বাঙালির প্রতিটি হৃদয়ে।

তথ্যসূত্র: প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ওয়েবসাইট (https://www.pmo.gov.bd)

লেখক: উপ-উপাচার্য
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

গৌরব ও ঐতিহ্যে রাবির ৬৮ বছরে পদার্পণ

ওয়াসিফ রিয়াদ, রাবি


দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ৬ জুলাই। ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর নানা চড়াই-উৎরাই ও আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি ৬৮ বছরে পদার্পণ করেছে।

দীর্ঘ পথচলায় নিজস্ব আলোয় আলোকিত উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ এ বিদ্যাপীঠ। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে গৌরব ও ঐতিহ্যে বিশ্বময় উদ্ভাসিত আজ। দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে সোচ্চার থাকা এ বিদ্যাপীঠের জন্মদিন আজ।

প্রতিষ্ঠাপূর্বকাল থেকে শুরু করে আজকের এ অবস্থানে আসতে দীর্ঘ কণ্টকময় পথ পাড়ি দিতে হয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে। ভাষা আন্দোলনের কিছুদিন আগ থেকে যে পথের যাত্রা শুরু। ১৯৫০ সালের ১৫ নভেম্বর। রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য রাজশাহীর বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের নিয়ে ৬৪ সদস্য বিশিষ্ট এক কমিটি গঠন করা হয় এ দিনটিতে।

এরপর ১৯৫২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী শহরের ভুবন মোহন পার্কে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি শহরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজশাহী কলেজ প্রাঙ্গনে সমবেত হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ পাস করার দাবি তোলেন।

এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানাতে গিয়ে কারারুদ্ধ হন ১৫ ছাত্রনেতা। একের পর এক আন্দালনের চাপে টনক নড়ে দেশের সুধী মহল ও সরকারের। অবশেষে ১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক আইনসভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আইন পাশ হয়। বছর ৬ জুলাই অধ্যাপক ইতরাত হোসেন জুবেরীকে উপাচার্য করে বিশ্ববিদ্যালয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।

এরপর থেকেই জ্ঞান-বিজ্ঞান ও বিদ্যাচর্চার খ্যাতিতে দেশের একটি শ্রেষ্ঠ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয় এ বিশ্ববিদ্যালয়। ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষাদান, বিদ্যাচর্চা, গবেষণা ও পাণ্ডিত্যের সুখ্যাতি দেশ পেরিয়ে বিস্তৃতি লাভ করে উপমহাদেশ, ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিশ্বের আনাচে-কানাচে।

মাত্র ১৬১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে এর শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৮ হাজারের বেশি। নয়টি অনুষদের ৫৮টি বিভাগে পাঠদান করা হচ্ছে এখন। এছাড়াও রয়েছে ছয়টি উচ্চতর গবেষণা ইনস্টিটিউট, ১৩টি একাডেমিক ভবন। ১৭টি আবাসিক হল, যার মধ্যে ১১টি ছাত্র ও ৬টি ছাত্রীহল এবং গবেষক ও বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ডরমিটরি। বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমানে শিক্ষক সংখ্যা ১২৬০ জন, কর্মকর্তা রয়েছেন ৭৩৪ জন, সহায়ক কর্মচারী এক হাজার ১২ জন ও সহায়ক কর্মচারী ৬৮৯ জন। প্রতিষ্ঠার গত ৬৭ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২,৬৫০ জন শিক্ষার্থী উচ্চতর ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ১,৯৪৬ জনকে পিএইচডি এবং ৭০৪ জনকে এমফিল ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

সম্প্রতি স্কোপাস’র প্রকাশিত জরিপে গবেষণাকর্মসমূহ এবং গবেষণা সংশ্লিষ্ট পরিমিতির নিরিখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানকে আরও একধাপ এগিয়ে দিয়েছে। দেশের অন্যতম সেরা এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও অত্যাধুনিক এবং শিক্ষা ও গবেষণার মান সামনের দিকে এগিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৫০ বছর মেয়াদী মহাপরিকল্পনাকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের নেতৃত্বে এ মহাপরিকল্পনাসহ আরও বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। যার মধ্যে সাত পুকুর গবেষণা প্রকল্প, গবেষণা জালিয়াতি রোধে প্ল্যাগারিজম প্রকল্প, বিশ্ববিদ্যালয় আরকাইভস ও অনলাইনে তথ্য জমা রাখার জন্য ‘আরইউ ক্লাউড’, ব্র্যান্ডিং গিফট শপ, বিশ্ববিদ্যায়ের নিউজলেটার ‘বিদ্যাবার্তা’, বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যচিত্র, সৌন্দর্য্য বর্ধণ, ওয়েবসাইট আধুনিকীকরণ, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিস, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনের নামকরণ।

এছাড়াও একটি ২০ তলা আবাসিক ভবন, ছেলেদের ও মেয়েদের একটি করে ১০ তলা আবাসিক হল নির্মান এ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মন্তব্য করেছেন, চলমান প্রকল্পগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হবে দেশের সবচেয়ে অত্যাধুনিক ও মডেল বিশ্ববিদ্যালয়।

সুদীর্ঘ ৬৭ বছর পেরিয়ে ৬৮ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এ দেশকে দিয়েছে দিয়েছে বিশ্বের মাঝে অতুলনীয় খ্যাতি ও গৌরব। অর্জন করেছে অনেক দুর্লভ সম্মান। তৈরি করেছে দেশ-বিদেশে আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান পণ্ডিত ও গবেষক।

আজ যেমন দেশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থেকে দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ও সামনের দিকে এগিয়ে নিচ্ছেন, তেমনি বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে নেতৃস্থানে রেখে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা।

আমার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন কাকতালীয়ভাবে মিলে গেছে

ডেস্ক রিপোর্ট: আজ ১ জুলাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন। শত বছরে পা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮তম উপাচার্যের জন্মদিনও আজ।

১৯৬৪ সালের আজকের এই দিনে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালিপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান।

২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে আসছেন অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এর আগে ২০১৬ সালের ২৩ জুন থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান জানান, আজ আমার জন্মদিন সেটি আসলে মুখ্য বিষয় না। আজ ঢাবির জন্মদিন এটাই আসল বিষয়। আমার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন কাকতালীয়ভাবে মিলে গেছে।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিএ অনার্স ও এমএ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা ইন পার্সিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজবিষয়ক পোস্ট গ্রাজুয়েট সম্পন্ন করেন।

তিনি ভারতের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন কলেজের ফুলব্রাইট স্কলার এবং যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ ফেলো ছিলেন।

১৯৯০ সালে তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের লেকচারার হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৫ সালের ১৫ জানুয়ারি সহকারী অধ্যাপক, ২০০০ সালের ২ জানুয়ারি সহযোগী অধ্যাপক এবং ২০০৪ সালে তিনি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান।

২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি বিভাগীয় চেয়ারম্যান এবং ২০০৭ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কবি জসীমউদ্দীন হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৪, ২০০৫ ও ২০০৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৯ ও ২০১১ সালে সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হন।

দেশ-বিদেশে প্রকাশিত বিভিন্ন জার্নালে তার ৪২টি গবেষণামূলক প্রবন্ধ রয়েছে। অনন্য সাধারণ গবেষণার জন্য ২০০৮ সালে তিনি ‘বিচারপতি ইব্রাহিম স্বর্ণপদক’ লাভ করেন।

তিনি বিভিন্ন মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য, ন্যাশনাল কারিকুলাম কোঅর্ডিনেশন কমিটির (এনসিসিসি) সদস্য, বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (বাকবিশিস) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর আমেরিকান স্টাডিজ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর ফুলব্রাইট স্কলার্স ও ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি কংগ্রেসসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

জন্মদিনে হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত হাবিপ্রবি উপাচার্য

তানভির আহমেদ, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি


অধ্যাপক ড.মু.আবুল কাসেম। ১৯৫৩ সালের আজকের এই দিনে লালমনিরহাট জেলার বড়খাতার শেখ সুন্দর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মৌলভী নুর আহমেদ আকন্দ (মৃত) মাতা জমিরুন নেছার (মৃত)ঘরকে আলোকিত করে জন্ম নেন তিনি।এখন তিনি নিজের সেই আলোকে ছড়িয়ে যাচ্ছেন।

যখন নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত ছিল দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাস ভিসি শূন্য ছিল প্রায় ৩ মাসের অধিক। ঠিক সেই সময় উন্নয়ন ও আলোর বার্তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হয়ে ক্যাম্পাসে আসেন অধ্যাপক ড.মু.আবুল কাসেম।নামটি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ হাজার শিক্ষার্থীদের কাছে প্রিয়ময়। একইসাথে শিক্ষক-কর্মকর্তা,কর্মচারীসহ সকল সহকর্মীদের কাছে।

সমস্যায় জর্জরিত ক্যাম্পাসে এসেই তিনি দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়কে আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি। সেই প্রত্যাশার কথাগুলো আজ বাস্তবায়িত। শতবাধা উপেক্ষা করে দায়িত্বের ৪ বছর শেষ হওয়ার আগেই সেশনজট অনেকটা কমিয়ে এনেছিলেন।বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারনে আবার সেই অংশে বাধার সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশামত প্রতিবছর করেছেন আন্তঃবিভাগ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,বৃক্ষ মেলা,বই মেলা,স্থাপত্য প্রদর্শনীসহ বিতর্ক প্রতিযোগিতা। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের গুনগত শিক্ষাগ্রহণে অধ্যয়নের পরিবেশ এবং লেখাপড়ার মান কে করেছেন আরও মানসম্পন্ন। বিশ্ববিদ্যালয়কে সাজিয়েছেন আধুনিক স্থাপত্য শৈলী প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংমিশ্রণে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী,কর্মকর্তাদের পরিবহনের জন্য তার মেয়াদে মাত্র সাড়ে তিন বছরে পরিবহন পুলে যুক্ত হয়েছে ১৩ টি যানবাহন । একাডেমিক ল্যাবগুলো পেয়েছে নতুন যন্ত্রপাতি,সৃষ্টি হয়ে ভার্চুয়াল ক্লাসরুম। আবাসন ও শ্রেনী সংকট কমাতে নির্মিত হচ্ছে ১০তলা বিশিষ্ট একটি একাডেমিক ভবন ও ৬ তলা বিশিষ্ট ছাত্রী হল। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের গুনগত শিক্ষাগ্রহণে অডিটোরিয়ামে করেছেন সভা- সেমিনার।

শিক্ষক,কর্মকর্তাদের আরও বেশি দক্ষ করে গড়ে তুলতে করেছেন নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। যা আগে হাবিপ্রবিতে অবহেলিত ছিল।

কৃষি গবেষণা কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে করেছেন “কৃষি,মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ গবেষণা কমপ্লেক্স” প্রতিষ্ঠা । এ গবেষণা কমপ্লেক্সে ডেইরি, পোল্ট্রি,মৎস্য, এবং শস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গবেষণা করা হয়। বৃহত্তর দিনাজপুরের কৃষক পরিবারের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে “ভ্রম্যমান ভেটেনারি ক্লিনিক” চালু করেন তিনি। কৃষক পরিবারের গৃহপালিত গবাদি পশু প্রাণীর চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে সকল সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন অত্যাধুনিক ভ্রাম্যমান ভেটেনারি ক্লিনিকটি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম বাংলাদেশে শুরু করে।

তার এই উদ্যোগের ফলে বৃহত্তর দিনাজপুরের কৃষক পরিবারগুলো অত্যন্ত উপকৃত হচ্ছে। বৃহত্তর দিনাজপুরের কৃষকদের কৃষি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন “কৃষক সেবা কেন্দ্র” । উপাচার্যের বাস্তবায়িত এই উদ্যোগও বাংলাদেশে প্রথম‌। বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের চাকরি, পিএইচডি, ফেলোশিপ, বিদেশে স্কলারশিপ ইত্যাদি সেবা এবং পরামর্শের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে “ক্যারিয়ার এডভাইজারী সার্ভিস” তিনি নিজ হাতে শুরু করেন। এই সার্ভিস এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী বৃন্দ তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সঠিক দিকনির্দেশনা পাচ্ছেন।

তাইতো মাত্র সাড়ে তিন বছরের ব্যবধানে হাজারো শিক্ষার্থীর মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন অধ্যাপক ড.মু.আবুল কাসেম। আজ ভিসি ও শিক্ষার্থীদের প্রিয় শিক্ষক ড.মু.আবুল কাসেম এর জন্মদিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ভার্চুয়াল ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন ভিসি। কেউ ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, আধুনিক হাবিপ্রবি স্বপ্নদ্রষ্টা, অনুপ্রেরনার বাতিঘরসহ নানান কথা। সবশেষে সবাই সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে ভিসিকে জানিয়েছেন জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা শুভ জন্মদিন স্যার। শুভ হোক আপনার আগামীর দিনগুলো।

সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.মু.আবুল কাসেম জানান,ছাত্র-ছাত্রীদের ভালোবাসাই আমার কাজের শক্তি।সবার শ্রদ্ধা,ভালোবাসা নিয়ে আমি আমার জীবনের বাকী সময়টুকু কাটাতে চাই। যে কয়দিন ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্বে আছি সেই কয়টা দিনকে আমি কাজে লাগাতে চাই। শিক্ষক, শিক্ষার্থী,কর্মকর্তা ও কর্মচারী সকলকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করতে চাই,হাবিপ্রবিকে আধুনিক ও আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করতে চাই।আমার এই উন্নয়নের কাজে সবাইকে আমি পাশে চাই। সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা করি।

জন্মদিনে হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ভালোবাসায় সিক্ত ইবি ভিসি

ইমানুল সোহান, ইবি প্রতিনিধি: ড. রাশিদ আসকারী। নামটি ১৬ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে প্রিয়ময়। একইসাথে সহকর্মীদেরও। নানান সমস্যার যখন জর্জরিত ছিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)।

ঠিক তখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হলেন ড. হারুন-উর- রশিদ আসকারী। এসেই দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়কে আধুনিকায়ন ও সেশনজটমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি।

সেই প্রত্যাশার কথাগুলো আজ বাস্তবায়িত। দায়িত্বের তিন বছরের মধ্যে সেশনজটমুক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়কে। এছাড়াও ক্যাম্পাসকে সাজিয়েছেন নতুনরূপে। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশামতো প্রতিবছর করেছেন বৈশাখী মেলা, বই মেলা, বিজ্ঞানমেলা সহ আন্তঃবিভাগ খেলা কিংবা বিতর্ক। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের গুনগত শিক্ষাগ্রহণে অডিটোরিয়ামে করেছেন সভা- সেমিনার।

তাইতো তিন বছরের ব্যবধানে হাজারো শিক্ষার্থীর মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন ড. রাশিদ আসকারী। আজ ০১ জুন, ভিসি ও শিক্ষার্থীদের প্রিয় শিক্ষক ড. রাশিদ আসকারীর জন্মদিন

তাইতো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ভার্চুয়াল ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন ভিসি। কেউ ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন আধুনিক ইবির স্বপ্নদ্রষ্টা, অনুপ্রেরণার বাতিঘরসহ নানান কথা। সবশেষে সবাই জন্মদিনে ভিসিকে জানিয়েছেন শুভ জন্মদিন স্যার। শুভ হোক আপনার আগামীর দিনগুলো।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে জানতে চাইলে ইবি উপাচার্য বলেন, আমার প্রতি তাদের ভালবাসা দেখে সত্যি অভিভূত হয়েছি। শিক্ষার্থীরাই শিক্ষকের প্রাণ। তাদের সবার জন্য দোয়া ও শুভ কামনা রইল। তারা নিজ গুণে গুণান্বিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবে বলে আশা করছি।

জন্মদিনের শুভেচ্ছা দুঃসাহসিক শেখ জামাল

মো. মেজবাহুল ইসলাম


বাবা, বড়ভাই বেঁচে আছেন কিনা জানেন না।গ্রেফতারের প্রায় ৫ মাস বন্দীদশায় উদ্বেগ, উৎকন্ঠায় কাটছে দিন। মনে তীব্র আগুন,বুকে অসীম দেশপ্রেম। নিজ সত্তার কাছেই মৃত্যু হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এভাবে বসে থাকা যায়না!মৃত্যু যেখানে অবধারিত নিয়ে নিলেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

৫আগস্ট, ১৯৭১ পাকিস্তানী বাহিনীর বন্দি শিবিরের কাঁটাতার পেড়িয়ে বের হয়ে আসলেন। বাতাসে লাশের গন্ধ, চারিদিকে শত্রুর স্টেনগান, মৃত্যুপুরী পেরিয়ে পালিয়ে যান ভারতের আগরতলায়।

বলছি, হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ২য় পুত্র অসীম দুঃসাহসিক তরুণ শেখ জামালের কথা।১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারে অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়।বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁর পরিবারকে ধানমন্ডিতেই কারান্তরীণ করা হয়। সেখান থেকে ৫ আগস্ট পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগদেন শেখ জামাল।

শেখ জামালকে বন্দীশিবিরে দেখতে না পেয়ে তাকে অপহরণের অভিযোগ তুলেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে। সারাবিশ্বে আলোড়ন, বিদেশি পত্রপত্রিকায় ছাপা হলো পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিবের ছেলেকে গায়েব করেছে।

বন্দীশিবির থেকে পালিয়ে শেখ জামাল আগরতলা থেকে কলকাতা হয়ে পৌঁছলেন ভারতের উত্তর প্রদেশের কালশীতে। মুজিব বাহিনীর ৮০ জন নির্বাচিত তরুণের সঙ্গে শেখ জামাল ২১ দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

কিন্তু জামালের এই খবরটা সঙ্গত কারণেই একেবারে চেপে যায় স্বাধীন বাঙলা প্রবাসী সরকার, কারণ এই ইস্যুতে প্রবাস সরকার এবং ভারত সরকারের তীব্র চাপে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচণ্ড বেকায়দায় পড়েছিল পাকিস্তান সরকার।২ডিসেম্বর লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকায় মুক্তিযুদ্ধের যেসব আলোকচিত্র আসে তার একটিতে সীমান্তের ১০ মাইল ভেতরে একটি রণাঙ্গনে সাবমেশিনগানধারীদের একজন হিসেবে ছবি ওঠে জামালের।

রণাঙ্গনে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামাল, ক্যাম্পে বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ নাসেরের উদ্দীপনামূলক ভাষণ মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক অনুপ্রাণিত করেছিল।দেশ স্বাধীন হলে যুদ্ধের পোশাকেই যুদ্ধের ফ্রন্ট থেকে শেখ জামাল ঢাকায় ফেরেন ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর। বড় বোন শেখ হাসিনা, ছোট বোন শেখ রেহানা ও ছোট ভাই শেখ রাসেলের সে কী আনন্দ!

ওই দিনই বিকেলে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কাদের সিদ্দিকী বীর-উত্তম আয়োজিত স্বাধীন বাংলায় ঢাকার পল্টনে প্রথম জনসভায় উপস্থিত ছিলেন তিনি। ১৯৭৪ সালের ২৯ শে জানুয়ারী যুগ্লোশোভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো ঢাকায় রাষ্ট্রীয় সফরে আসলে শেখ জামালের সেনাবাহিনীর প্রতি তীব্র আগ্রহ দেখে তাঁকে যুগ্লোশোভিয়ার সামরিক একাডেমীতে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দেন।

১৯৭৪ সালের বসন্তে ঢাকা কলেজের ছাত্র জামাল যুগোস্লাভিয়ার মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু একেবারে ভিন্ন পরিবেশ, প্রতিকূল আবহাওয়া আর ভাষার অসুবিধার কারণে সেখানকার প্রশিক্ষণের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো শেখ জামালের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ছিল। এই পরিস্থিতিতে মার্শাল টিটো শেখ জামালকে ব্রিটেনের স্যান্ডহার্স্টে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পরামর্শ দেন।

স্যান্ডহার্স্টের শর্ট সার্ভিস কমিশনের সুকঠিন গ্র্যাজুয়েট কোর্সটির মেয়াদ ছিল প্রায় ছয় মাস (৩ জানুয়ারি থেকে ২৭ জুন ১৯৭৫)। ৪০০ জন ক্যাডেটের মধ্যে বিদেশি ক্যাডেটদের সংখ্যা ছিল ৩০। স্যান্ডহার্স্ট একাডেমি থেকে ফিরে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের পোস্টিং হলো ঢাকা সেনানিবাসস্থ দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে।ক্যাপ্টেন নজরুলের অধীনে শেখ জামালের রেজিমেন্টজীবনের হাতেখড়ি হলো ‘কম্পানি অফিসার’ হিসেবে। ইউনিটে যোগদানের দিন সেনাবাহিনীর খাকি ইউনিফর্ম পরে বাড়িতে ফেরেন শেখ জামাল।

মুগ্ধ চোখে স্মার্ট এক আর্মি অফিসারকে দেখেন পিতা শেখ মুজিব ও মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। ১৪ আগস্ট রাতে ব্যাটালিয়ন ডিউটি অফিসার হিসেবে ক্যান্টনমেন্টে আসেন তিনি। একজন সুবেদার বলেন, ‘স্যার, অনেক রাত হয়েছে; আজ রাতে ইউনিটেই থেকে যান।’ কিন্তু রাতে আর সেনানিবাসে থাকা হয় না শেখ জামালের। তিনি ফিরে আসেন ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে। বাংলাদেশের কলঙ্ক ‘ঘাতক দল’ ততক্ষণে প্রস্তুতি।


লেখকঃ সহ সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।

‘বেগম রোকেয়ার দেখানো স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছি’

জাতীয় টুডেঃ দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বেগম রোকেয়া নারীদের নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছি। বেগম রোকেয়া তার বইয়ে লিখেছিলেন, নারীরা একদিন লেখাপড়া শিখে জজ, ব্যারিস্টার হবে। শুধু জজ-ব্যারিস্টার নয়, নারীরা এখন সর্বত্র দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে।

সোমবার সকালে রাজধানীতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠান
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বেগম ফজিলাতুনন্নেসা ইন্দিরা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন্নাহার।

এসময় সমাজে নারীদের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সমাজের অর্ধেক মানুষ নারী। সেই নারীদের বাদ দিয়ে অর্থাৎ একটি অঙ্গকে বাদ দিয়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। বর্তমানে নারী পুরুষ সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করছে, এ কারণে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেল। বেগম রোকেয়ার কর্মে ও আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আজকের নারীরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবেন।

বর্তমান সরকার নারীকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরের জন্য জাতীয় কৌশল, নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সনদ ও উন্নয়ন এজেন্ডা অনুযায়ী বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।