বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ঢাবি উপাচার্যের শ্রদ্ধা নিবেদন

ডেস্ক রিপোর্ট


জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে ঢাবি প্রশাসন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

আজ শনিবার (১৫ আগস্ট) ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন তারা।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী উপস্থিত ছিলেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা, হাসপাতালে ভর্তি

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী মারধরের শিকার হয়েছেন। নিজ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

ওই শিক্ষার্থীর নাম সালেহ উদ্দিন সিফাত। তিনি ঢাবির আইন বিভাগের ছাত্র।

শনিবার (৮ আগস্ট) বিকেল ৩ টায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডুর বড়দারোগার হাট বাজারে এই ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ফেনীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা যায়, সিফাত কোটা সংস্কার আন্দোলনে গড়ে ওঠা প্লাটফর্ম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের একজন সক্রিয় কর্মী।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন।

তিনি বলেন, সীতাকুণ্ড থেকে ফেনীর উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার সময় সিফাতকে বড়দারোগার হাট বাজার থেকে তিনটি সিএনজিতে সন্ত্রাসীরা এসে তুলে নিয়ে যায়। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে সিফাতকে বেধড়ক মারধর করা হয়।

তিনি আরও বলেন, সিফাতকে মূলত চৌকাঠ দিয়ে মেরে পুরো শরীর থেঁতলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিফাতকে মারধরের পর তার ল্যাপটপ, মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। হামলার ঘটনায় সীতাকুণ্ডুর বাড়িয়া ঢালা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ জড়িত বলেও জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানী জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিফাতের ওপর হামলার ঘটনা জেনেছি। আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে আমরা প্রশাসনকে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলব।

গ্রাজুয়েশন শেষে ঢাবি ছাত্র ইলিশের কারবার করে লাখটাকা আয়

সানজিদা আরা বিথী, ঢাবি


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের ইংরেজি ভাষা বিষয়ে সদ্য স্নাতক সম্পন্ন করা টগবগে তরুণ ; স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাঁধনের একনিষ্ঠ কর্মী, বিএনসিসির ক্যাডেট সার্জেন্টসহ অসংখ্য কার্যক্রমের সাথে জড়িত ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ সিয়াম।

ইলিশের দেশ চাঁদপুর সিয়ামের বাড়ি হওয়ায় তাজা আসল ইলিশের ব্যবসায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নিল।মানুষের টিটকারিমূলক সকল কথা উপেক্ষা করে পিছপা না হয়ে জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে’ইলিশের বাড়ি’ নামক ফেইসবুক পেইজ খুলে ইলিশের কারবার শুরু করে সাহসী সিয়াম।

এই সাহসী উদ্যোক্তার বিশেষ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ক্যাম্পাস টুডের ঢাবি প্রতিনিধি সানজিদ আরা সরকার বিথী।

করোনার এই সময়ে আপনি কি ভেবে ব্যবসায়টা শুরু করলেন?

‘আমি খুবই কনফিডেন্ট একটি ছেলে।বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন করে পরিচিতি পেয়েছি। ‘বাঁধন’করে আমার নাম হয়ে গেছে রক্তচোষা।বিএনসিসি করে সার্জেন্ট, মেজর বলে ডাকে সবাই।কিন্তু অনার্স ফোর্থ ইয়ারের দিকে আমার একটিভিটি কমে গেলে একটি খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হয়।হলের অস্থিতিশীল পরিবেশ কাটিয়ে,কিছু নেগেটিভ পিপুল থেকে মুক্তি পেয়ে করোনায় বাসায় আসার পর খোলা বাতাস পেয়ে মনে হয়েছে জীবনের উদ্যম ফিরে পেয়েছি।

গ্রাজুয়েশন শেষ হয়ে গেছে সেহেতু চাকরির জন্য রাতে ঘুম হতনা।ভাবতাম কি করা যায়!ভাবতে ভাবতে ১১-১২ টা প্ল্যান রেডি করে প্রতিদিন আগাইতাম। তারপর ‘WE (Women and e-commerce forum)’ নামক গ্রুপে ফ্রেন্ডের মাধ্যমে এড হয়ে গ্রুপটা পর্যবেক্ষণ করে মানুষের বিজনেসের বিভিন্ন লেসন শুনে ইতিবাচক প্রেষনা সঞ্চয় করলাম। হলে ইলিশের মত দেখতে কি খাইতাম কোনো স্বাদ পেতাম না।সবমিলিয়ে ভাবলাম ইলিশ নিয়ে কাজ করা যায় কিনা এবং এখানে ‘WE’ এর একটা বড় অবদান আছে।’

ইলিশের কারবার শুরু করতে গিয়ে কি কি বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন?

‘শুরু করতে গিয়ে আব্বু, বোনেরা বলেছে,’এগুলো নিয়ে কাজ করবি;এর থেকে ভালো কাপড় বিক্রয় কর!’, ‘পড়ালেখা করাইছি এজন্য?’ শুরুতে সবদিক থেকেই ডিমোটিভেশন পাচ্ছিলাম।আমি সবদিক দিয়ে ভালো সোর্স খুঁচ্ছিলাম।

আব্বুর দেখানো নানা যুক্তি শুনে পিছপা না হয়ে দিন ফিক্সড করে বিভিন্ন ইলিশের হাটে গিয়ে বাজার পর্যবেক্ষণ করে খোঁজখবর নিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনে করে ভাবলাম ইলিশ নিয়ে কাজ করা যেতে পারে; মানুষকে ভালো জিনিসটা দেয়া যাবে।’

ইলিশের সোর্স খোঁজার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

‘যার কাছ থেকে প্রথমদিন মাছ নিয়েছি সে সবকটা মাছ ভালো দিলেও সেইম সাইজের মাছ না থাকায় বলল’ একটা ছোট সাইজ মাছ চলবে!’আমি বললাম আমার কোয়ালিটি আর ওয়েটে কোনো হেরফের হওয়া চাইনা।তারপর সে অন্য জায়গা থেকে মাছ এনে দিয়ে বলল,’ আজ তো প্রথম দিন সমস্যা নাই।’ কথাটি আমার ভালো লাগেনি; হয়তো সে আমার সাথে চিট করবে এই ভেবে পরে ওনার কাছে আর গেলামনা।

এরপর ভালো সোর্স খুঁজতে খুঁজতে এলাকার পরিচিত একজনের সোর্স খুঁজে পেলাম।আসল ইলিশ দেয়ার শর্তে সেখান থেকে এখন নিচ্ছি এবং সে ও আমার ভরসা বজায় রাখছে এবং অন্যান্য সোর্স ও ম্যানেজ আছে।’

প্রথমদিকে কাস্টমার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল, কাস্টমার হতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন কি?

‘প্রথম ডেলিভারি দেই আমার বন্ধুর কাছে। দ্বিতীয় অর্ডার ছিল দুই কেজির দুইটি ইলিশ(খুবই রেয়ার,পাওয়া যায়না)এবং এক কেজির একটি ইলিশ;এক সিলেটের আপুর কাছে। ওনার সমস্যা থাকায় এডভান্স ছাড়াই মাছ কিনে আনলাম।কিন্তু পরেরদিন সকালে ওনার মামা মারা যাওয়ায় আপুটা গ্রামের বাড়ি চলে গেছে ওনি জানাল, সিলেটে আত্মীয় কেউ মারা গেলে মাছ খায়না।ওনার দিক থেকে ওনি ঠিক থাকলেও ব্যবসায়ের শুরুতেই আমি মেন্টালি বড় একটা ধাক্কা খেলাম যেহেতু চাঁদপুরের আসল ইলিশের দাম অনেক বেশি।

তারপর আব্বু ইলিশগুলা কিনে নিল।আব্বু প্রথম দিকেও আপত্তি জানালেও পরে আমাকে সাপোর্ট করেছে। এরপর আমি নিজেকে আরো গুছালো করলাম।এরপর থেকে প্রতি অর্ডারে ৫০% এডভান্স নেয়া শুরু করলাম।আলহামদুলিল্লাহ এরপর আর এ ধরনের কিছু হয়নি এবং প্রতিনিয়ত আমি উন্নত করার চেষ্টা করছি।প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্সটা কিভাবে আরো ভালো করা যায়। ‘

সাড়া পাচ্ছেন কেমন, কত টাকার মাছ বিক্রয় হলো?

‘ঢাকায় প্রথম প্রি-অর্ডারে নয়টা জায়গায় অনেকগুলো ইলিশ বিক্রয় হয়।দ্বিতীয় প্রি-অর্ডারে চট্টগ্রামে দুইটা জায়গায় ডেলিভারি দেই।সর্বোপরি আস্তে আস্তে মানুষের বিশ্বাসটা অর্জন করতে পারছি।নিজেই ছুটে যাই মানুষের বাসায় হোম ডেলিভারি দেয়ার জন্য।অনেকেই হোলসেলে নিতে চাচ্ছে।এখন আমি প্রি-অর্ডার নিচ্ছি এবং মানুষের খুব ভালো রেসপন্স পাচ্ছি।

১১৭ কেজির আরো বেশি মাছ বিক্রয় হয়েছে।লাখ টাকার মত সেল হয়ে গেলেও প্রফিট অত বেশি না।কারন আমি কোয়ালিটিটা এনসিউর করি যেটা বাজারে করেনা ফলে কস্টটা ও বেশি।’

শেষ প্রশ্ন, ‘ইলিশের বাড়ি’নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

‘আমার’ইলিশের বাড়ি’ চাঁদপুরের তাজা ইলিশের দেশীয় ব্র‍্যান্ড হিসেবে দেখতে চাই।মানুষের মুখে যতদিন ইলিশের নাম থাকবে ততদিন ‘ইলিশের বাড়ি’র নাম ও থাকবে।

দেশের প্রতিটা জেলার মানুষ চাঁদপুরের তাজা ইলিশটা পাবে।চাঁদপুরের ইলিশের ঘ্রাণ নিয়ে কোনো প্রতারনা হবেনা এমনকি বিদেশেও পৌঁছে যাবে।ব্র‍্যান্ড হওয়ার পর ও ইলিশের কোয়ালিটি এবং মানুষের বিশ্বাস ধরে রাখব।সবাই আমার মত করে স্বপ্ন দেখেনা। আমি যেভাবে স্বপ্ন দেখি আল্লাহর রহমতে ভবিষ্যতে কোয়ালিটিটা ধরে রাখতে পারব; ভালো কিছু করতে পারব, ইনশাআল্লাহ। ‘

৮৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বাজেট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসে রেকর্ড

সানজিদ আরা সরকার বিথী, ঢাবি


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের মুলতবিকৃত বার্ষিক অধিবেশন আজ ২৩ জুলাই, বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট ৮৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে।

উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান সভাপতিত্বে এই অধিবেশনে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল, মেহের আফরোজ চুমকি,এমপি, ড. আবদুস সোবহান মিয়া এমপি, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এনাম উজ্জামানসহ ও সিনেট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সিনেটের এই মুলতবি অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) ও ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের ৮৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকার রাজস্ব ব্যয় সংবলিত প্রস্তাবিত বাজেট এবং ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের ৮৪৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট উপস্থাপন করেন। অধিবেশনে এই বাজেট গৃহীত ও অনুমোদিত হয়।

গবেষণাখাতের বাজেট থেকে কয়েকটি অনুষদের গবেষণার সরঞ্জাম কেনা এবং কয়েকটি অনুষদ-বিভাগের ল্যাবরেটরি যন্ত্রপাতি কেনা ও ল্যাব স্থাপনে ১৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে৷

এছাড়া গবেষণা মঞ্জুরী হিসেবে রয়েছে ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৬টি গবেষণাকেন্দ্রের জন্য ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, গবেষণা প্রকল্পে বিশেষ অনুদান হিসেবে ২ কোটি টাকা এবং শিক্ষকদের গবেষণা ভাতা হিসেবে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮ কোটি টাকা৷

আবার গত বছরের (২০১৯-২০ অর্থবছর) বাজেটে গবেষণাখাতে বরাদ্দের পুরো টাকাও ব্যয় করতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷

গত বছর গবেষণা খাতে ৪০ কোটি ৮০ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ হলেও সংশোধিত বাজেটে গবেষণাখাতে মোট ব্যয় দেখানো হয়েছে ৩৭ কোটি ৭২ লাখ ৮৭ হাজার টাকা৷

তবে এবছর শিক্ষকদের গবেষণা প্রবন্ধ আন্তর্জাতিক প্রকাশনা বা জার্নালে প্রকাশ করতে সহায়তার জন্য একটি নতুন খাত সৃষ্টি করে সংশোধিত বাজেটে ২০ লাখ এবং আগামী প্রস্তাবিত বাজেটে ১ কোটি টাকা রাখা হয়েছে।

সিনেটের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষা ও গবেষণার উৎকর্ষ সাধন, মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে নানাবিধ কর্মপ্রয়াস ও উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। করোনাকালীন ও করোনাত্তোর সমস্যা মোকাবেলা করে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা প্রদান এবং শিক্ষা ও গবেষণার গুণগত মান নিশ্চিতকরার লক্ষ্যে স্ব স্ব অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।’

তিনি আরও বলেন,’ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে ক্রমান্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সামনের দিকে এগিয়ে যাবে । মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস এন্ড লিবার্টি’-এর জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটে প্রাথমিক বরাদ্দ রাখা হবে বলেও জানান তিনি।’

বর্ষ পরীক্ষায় ঢাবি অধিভুক্ত ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে জালিয়াতি, আটক ২

সানজিদ আরা সরকার বিথী, ঢাবি


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফেইসবুক ব্যবহার করে সম্প্রতি একটি জালিয়াতি চক্রের বিরুদ্ধে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।

এর প্রেক্ষিতে আজ বুধবার (২২ জুলাই) র‌্যাব-৩ এই চক্রের মূল হোতাসহ দুজনকে আটক করে।

এসময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, মোবাইল ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। আটককৃতরা হলেন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোঃ সাদেক মিয়া ওরফে শিশু মিয়া ছেলে মাসুম রানা রনি (২৪); হবিগঞ্জ জেলার চুনারঘাটের মোঃ বাচ্চু মিয়ার ছেলে মোঃ আব্দুর রহিম সাদেক (২২)।

এই ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আজ ২২ জুলাই শাহবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৩/২৪/৩০/৩৫ ধারায় একটি মামলা রুজু করা হয়, যার নং ২৮।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ আনে ফয়সাল মাহবুব নামে জাল একাউন্ট ব্যবহার করে জালিয়াতি চক্র সাত কলেজের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।সাত কলেজের বিভিন্ন গ্রুপে কমেন্ট করে টাকার বিনিময়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় জালিয়াত চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেক শিক্ষার্থী বিকাশের মাধ্যমে টাকা দেয়।

ঢাবির অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে এই জালিয়াতি ঘটনাতে আজ দুইজন আটক হওয়ার পর আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাবি প্রশাসন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সতর্কীকরণ করে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন এবং জালিয়াতি চক্রের ফাঁদে পা না দিতে আহবান করে বলা হয়েছে, ‘এ ধরনের জালিয়াতি যারা করবে বা যারা এর আশ্রয় নেবে তারা আইনগতভাবে অপরাধী হবে।

তাই প্রতারক চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে যেন আইনগত অবস্থার মুখোমুখি না হতে হয়, সে বিষয়ে অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের সচেতন ও সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

‘ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস ও প্রক্টরিয়াল বডি সকল জালিয়াতির ব্যাপারে সদা সক্রিয় রয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি ৭ কলেজের বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে একটি জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরে বিশাল অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।’

উল্লেখ্য, এই বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মহোদয় গত ১ জুলাই ২০২০ তারিখে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন এবং র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

সাহারা খাতুনের মৃত্যু রাজনীতিতে এক অপূরণীয় ক্ষতি: ঢাবি উপাচার্য

ঢাবি প্রতিনিধি


অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২.২৬ স্থানীয় সময় থাইল্যান্ডের ব্যাংকক বামুনগ্রাড হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।

তার মৃত্যুতে দেশের রাজনীতিঅঙ্গনে শোকের মাতম বইছে। সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

আজ শুক্রবার (১০ জুলাই) এক শোকবার্তায় ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও বর্ষীয়ান সংসদ সদস্য।’

‘তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মূল্যবোধ ধারণ করে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন।

‘ খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবাধ বিকাশে অসাধারণ অবদান রেখে গেছেন’ বলে উল্লেখ করেন ঢাবি উপাচার্য।

তিনি আরো বলেন,’ আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতা, স্বচ্ছতা, নিষ্ঠা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে জাতি একজন প্রবীণ জননেতা হারাল এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হল। বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং রাজনীতিতে অসাধারণ অবদানের জন্য তিনি দেশবাসীর কাছ স্বরণীয় হয় থাকবেন।’

তিনি মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং মরহুমার পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

কেমন আছেন ঢাবির মুহসিন হলের দৃষ্টিহীন রহিম মামা!

সানজিদ আরা সরকার বিথী
ঢাবি


নাম আব্দুর রহিম। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, ক্যাম্পাসের প্রিয় মুখ সকলের কাছে রহিম মামা নামেই পরিচিত। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন হলের খাবার বিক্রেতা; বয়স ৫০ এর কাছাকাছি হবে।

রহিম মামার চোখ অন্য দশজনের মতো দুচোখ স্বাভাবিক ছিল হঠাৎ জন্মের দু বছরের মাথায় চিকেন পক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে ডান চোখের দৃষ্টি শক্তি হারান। বাম চোখে ঝাপসা দেখলেও আঘাত পাওয়ার কারণে তাও দেখতে পান না।

দৃষ্টিহীন এই মানুষটিকে জীবনে অনেক সংগ্রাম করেছেন তবে দমে যাননি। সকল প্রতিবন্ধকতা জয় করে জীবন যুদ্ধে অন্ধ হয়েও সাবলম্বী হয়ে প্রমান করে দিয়েছেন যে শারীরিক কোনো প্রতিবন্ধকতাই জীবনে চলার পথে বাঁধা হতে পারে না।

নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পুঁজি করে অন্যের কাছে হাত পাতেননি তিনি, নামেননি ভিক্ষাবৃত্তিতে বরং নিজেই নিজের ভরসা হয়ে অনেক চেষ্টা এবং পরিশ্রম করে নিজের পরিবারের ভরনপোষণ নিজেই বহন করেন।

আব্দুর রহিমের জন্ম মুন্সিগঞ্জ সদর থানার মামাশার গ্রামে। রহিম মামার যখন বয়স দেড় বছর, তখন তার পরিবার জীবিকার তাগিদে রাজধানীতে পাড়ি জমায়।

বর্তমানে তারা থাকেন ঢাকার কামরাঙ্গীর চর এলাকায়। তিনি রাজধানীর অস্থায়ী প্রতিবন্ধী স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয় থেকে ১৯৮৮ সালে ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়ালেখা করে এসএসসি পাস করেন।

চাকরি করার ইচ্ছা তার কখনই ছিল না। স্বাধীন কিছু করার চিন্তা থেকে খাবার বিক্রির স্বাধীন পেশা বেছে নিয়েছেন তিনি।

কসমেটিক আইটেম বিক্রির মাধ্যমে ঢাবির ক্যাম্পাসে তিনি ব্যবসা শুরু করেন ১৯৯৬ সালে। ফেরি করে কসমেটিক আইটেম ফেরি করে বিক্রি করতেন তিনি। বাজার প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে রহিম মামা ২০০৮ সাল থেকে মুহসিন হলে খাবার বিক্রি শুরু করেন। বাসা থেকে খাবার বানিয়ে বক্সে করে প্রতিদিন সকালে হলে নিয়ে আসেন তিনি। বাসায় রান্না কাজে সহযোগিতা করেন স্ত্রী সফুরা বেগম।

এই করোনার প্রাদুর্ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ;হলগুলোও খালি সেহেতু মুহসিন হলে তার খাবার বিক্রয়ের ব্যবসায় ও বন্ধ।ফলে মুহসিন হলের সেই রহিম মামা ও ভালো নেই।

হয়তো হলের অনেক কর্মচারী অন্যান্য টুকিটাকি কাজ করে নিজেদের প্রয়োজন মিটাচ্ছেন। কিন্তু রহিম মামা অন্ধ হওয়ায় সে অন্য কোনো কাজ ও করতেও পারছেননা, অথচ মাথার উপর একটি পরিবার।

এই লকডাউনে যদিও অনেক সংগঠন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব গরীবদের সাহায্য করছে কিন্তু রহিম মামা থাকেন কামরাঙ্গীর চর যেটা বস্তি এলাকা হওয়ায় পৌঁছায়না তেমন কোনো সাহায্য।

রহিম মামা সম্পর্কে দ্য ক্যাম্পাস টুডেকে মুহসিন হলের আবাসিক ছাত্র আহমেদ সিয়াম বলেন, ‘১ম বর্ষ থেকেই রহিম মামাকে দেখতাম রুমের আশেপাশে ২ টি বড় বড় ব্যাগে খাবারের বাটি নিয়ে ঘুরছে। ভাবতাম হলের ক্যান্টিনের মতই নিম্নমানের খাবার হব। একদিন মামার থেকে মুরগির মাংস দিয়ে ৪০ টাকার খাবার নিলাম। খেয়ে মনে হলো, ক্যান্টিনের মান আর রহিম মামার খাবারের মান আকাশ পাতাল ব্যবধান। তারপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই তার থেকে এক বাটি খাবার নিয়ে দুপুরে খেতাম।’

সিয়াম আরও বলেন, ‘লকডাউনে মামার অর্থনৈতিক অবস্থা একটু অবনতির দিকে। সবার কাছে অনুরোধ করছি রহিম মামাকে কিছু উপহার পাঠানোর জন্য। মামা যেমন আমাদের ঘরের খাবার পৌঁছে দিতেন, আমাদেরও উচিত তার দুর্দিনে পাশে দাঁড়ানো।’

অন্যদের চোখ আছে, অভাবে কাজ করে খাচ্ছে, ত্রানের খুজেঁ চারদিকে পাড়ি জমায় কিন্তু রহিম মামা তো চোখে দেখেন না ;কোথায় যাবেন ত্রান খুঁজতে!

এমতাবস্থায় আমাদের অল্প অল্প ভালোবাসা এমন একজন ব্যক্তিত্ববান ব্যক্তির জন্য হতে পারে একটি পরিবারের আশার আলো।

আমার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন কাকতালীয়ভাবে মিলে গেছে

ডেস্ক রিপোর্ট: আজ ১ জুলাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন। শত বছরে পা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮তম উপাচার্যের জন্মদিনও আজ।

১৯৬৪ সালের আজকের এই দিনে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালিপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান।

২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে আসছেন অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এর আগে ২০১৬ সালের ২৩ জুন থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান জানান, আজ আমার জন্মদিন সেটি আসলে মুখ্য বিষয় না। আজ ঢাবির জন্মদিন এটাই আসল বিষয়। আমার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন কাকতালীয়ভাবে মিলে গেছে।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিএ অনার্স ও এমএ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা ইন পার্সিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজবিষয়ক পোস্ট গ্রাজুয়েট সম্পন্ন করেন।

তিনি ভারতের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন কলেজের ফুলব্রাইট স্কলার এবং যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ ফেলো ছিলেন।

১৯৯০ সালে তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের লেকচারার হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৫ সালের ১৫ জানুয়ারি সহকারী অধ্যাপক, ২০০০ সালের ২ জানুয়ারি সহযোগী অধ্যাপক এবং ২০০৪ সালে তিনি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান।

২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি বিভাগীয় চেয়ারম্যান এবং ২০০৭ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কবি জসীমউদ্দীন হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৪, ২০০৫ ও ২০০৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৯ ও ২০১১ সালে সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হন।

দেশ-বিদেশে প্রকাশিত বিভিন্ন জার্নালে তার ৪২টি গবেষণামূলক প্রবন্ধ রয়েছে। অনন্য সাধারণ গবেষণার জন্য ২০০৮ সালে তিনি ‘বিচারপতি ইব্রাহিম স্বর্ণপদক’ লাভ করেন।

তিনি বিভিন্ন মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য, ন্যাশনাল কারিকুলাম কোঅর্ডিনেশন কমিটির (এনসিসিসি) সদস্য, বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (বাকবিশিস) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর আমেরিকান স্টাডিজ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর ফুলব্রাইট স্কলার্স ও ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি কংগ্রেসসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

করোনায় ঢাবি শিক্ষকদের ব্যতিক্রমী আয়োজন

সানজিদ আরা সরকার বিথী


করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী সকলেই নিজনিজ গন্তব্যে অবস্থান করছে। যে ক্যাম্পাসে সকাল হলেই চায়ের গন্ধে মুহুমুহু করে, মানুষের পদচারণায় এক ভিন্নতর রূপ ধারণ করে, সেই ক্যাম্পাস আজ জনশূন্য।

এই করোনাকালীন ঢাবির অনেক শিক্ষকরাই বিভিন্ন গেস্টদের আমন্ত্রিত করে ফেসবুক লাইভে আসছেন যাতে করে শিক্ষার্থীরা ক্যারিয়ার বিষয়ক পরামর্শ পায় এবং সেভাবে নিজেদেের প্রস্তুত করতে পারে।যেমন অনেকের বিদেশে পড়ার স্বপ্ন কিন্তু সঠিক পরামর্শের অভাবে স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়।

ঢাবির অনেক শিক্ষকরাই ফেসবুক লাইভের বিভিন্ন পর্বে সফল মানুষদের আনছেন যারা নিজ নিজ জায়গায় সফল। যেমন কেউ চাকরি করতে চায় (সরকারি, বেসরকারি), কেউবা চায় বিদেশে পড়ালেখা করতে আবার কারো ইচ্ছা উদ্যোক্তা হওয়ার।

তাদের জন্য , কি করতে হবে, কিভাবে প্রস্তুত হতে হবে সকল তথ্য একেক পর্বে একেক ফিল্ডের অতিথিদের আমন্ত্রন জানিয়ে নিজে এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা আলোচনা করছেন।

কয়েকজন ঢাবি শিক্ষার্থী দ্য ক্যাম্পাস টুডেকে তাদের মতামত জানিয়েছেন:-

ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, এই কঠিন সময়ে স্যারদের এই ফেসবুক লাইভ যেন গতি হারা তরীতে পাল দেয়ার মত।আমি আমার বিভাগের শ্রদ্ধেয় নাজমুল স্যারের লাইভ দেখে সেদিন থেকেই চাকরির পড়া শুরু করে দিয়েছি।

আরেকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, আমি নিজের জীবনের লক্ষ্য ঠিক করতে পারছিলাম না। আমার বিভাগের একজন শিক্ষকের ক্যারিয়ার বিষয়ক লাইভ দেখে সেদিনই নিজের জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে ফেলেছি।

এই করোনাকালে শিক্ষকদের এমন উদ্যোগে খুবই উপকৃত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা।

ঢাবি অনলাইন ক্লাস কতটা ফলপ্রসূ হতে পারে!

সানজিদ আরা সরকার বিথী, ঢাবি


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) মানে লাল সবুজের এক টুকরা বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রায় সকল জেলার ছাত্রছাত্রীরা এই বিদ্যাপীঠে অধ্যয়ন করে।

তাই দেশের সকল অঞ্চলে নেটওয়ার্ক সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী সংশয় প্রকাশ করেছে।রীতিমতো জুলাই থেকে ঢাবিতে অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত হয়েছে সেই সিদ্ধান্তের উপর অনেক শিক্ষার্থীই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ঢাবিতে যারা লেখাপড়া করে সকলেই ধনীর দুলালি নয়;অনেকের তিনবেলা দুমুঠো ভাতের জোগাড় হয়না।এই করোনা মহামারীতে যাদের পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি কাজ হারিয়েছে তাদের পক্ষে অনলাইন ক্লাস করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ !

এক জরিপে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ ভাগ শিক্ষার্থীর অনলাইন ক্লাস করার মত এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন নেই।।তাহলে তাদের কি হবে! বিশ্ববিদ্যালয় চাইলেও শিক্ষার্থীদের এই মোবাইল সংকট থেকে বের করতে পারবেনা।।তাহলে তো প্রায় ৫০ ভাগ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাস করা থেকে বঞ্চিত।

এবার আসুন মেগাবাইটের (এমবি) বিষয়ে, ঢাবিতে অধ্যয়নরত সকল শিক্ষার্থীদের বাসায় ওয়াই-ফাই নেই।অনেক অঞ্চলে কথা বলার মত নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়না।

সেখানে অনলাইন ক্লাস কি করে সম্বব।যাদের এমবি ক্রয়ক্ষমতা আছে তারা এই যাত্রায় বেঁচে গেলেও যাদের নেই তাদের কি হবে!একদিকে শিক্ষার্থীদের সেশনজটের আশংকা অন্যদিকে দারিদ্রের কষাঘাত।

তবে, বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছিল কম টাকায় এমবি দেয়ার জন্য কোম্পানিগুলোর সাথে আলাপ আলোচনা চলছে। এখন দেখার বিষয় ঢাবির অনলাইন ক্লাস কতটা ফলপ্রসূ হয়!