দিনাজপুরে লকডাউন, হাবিপ্রবির সকল পরীক্ষা স্থগিত

 

হাবিপ্রবি টুডে

দিনাজপুরে করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি হওয়ায় এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করায় হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত সকল ধরনের পরীক্ষা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা.মো: ফজলুল হক ।

এ সময় রেজিস্ট্রার জানান, দিনাজপুর সদর লকডাউনের আওতায় থাকায় ১৫-২১ জুন পর্যন্ত সশরীরে কোনো পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছি কিন্ত তিনি এ সময় পরীক্ষা না নেয়ার জন্য বলেছেন। এসময় যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখা হয় সে বিষয়েও তিনি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করছি খুব শীঘ্রই এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। ছাত্র-ছাত্রীসহ সকলকে এই সময়টা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করছি।

প্রসঙ্গত,শিক্ষামন্ত্রণালয় ও ইউজিসি অনুমোদন থাকলেও দিনাজপুর জেলা মঙ্গলবার থেকে আগামী এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করায় এই সময়ে প্রকাশিত রুটিনে কোন পরীক্ষা নিতে পারবে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে ১৫-২১ জুন পর্যন্ত পূর্ব নির্ধারিত সকল পরীক্ষাসমূহ বন্ধ থাকবে।

নবাবগঞ্জে বজ্রপাতে এক নারীসহ ২ জনের মৃত্যু

অলিউর রহমান মেরাজ
নবাবগঞ্জ দিনাজপুর প্রতিনিধি


দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে বাড়ির পাশে কাজ করার সময় বজ্রপাতে এক নারীসহ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।

আজ রবিবার বিকেলে উপজেলার দেওগাঁ ও মালদহ পশ্চিম পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ অশোক কুমার চৌহান।]

নিহতরা হলেন,উপজেলার দেওগাঁ গ্রামের মৃত খলিল্লাহ শেখের ছেলে আব্দুল হালিম (৫০) এবং মালদহ পশ্চিম পাড়া এলাকার তৈয়ব আলীর স্ত্রী সাবানা (৫০)

নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ অশোক কুমার চৌহান আরো জানান,বিকেলে মাঠে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে চুল ও শরীর ঝলসে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সাবানা এবং বাড়ির সামনে কাজ করার সময় বজ্রপাতে আহত হন আব্দুল হালিম দ্রুত তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত্যু ঘোষণা করেন।

ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার বিচার চায় ছাত্র ফেডারেশন

রাবি প্রতিনিধি


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও দিনাজপুর জেলা ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদা খানমের উপর দুর্বৃত্তদের হামলার বিচার চায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্র ফেডারেশন।

শুক্রবার (৪ই সেপ্টেম্বর) অর্থ সম্পাদক রিয়াজ হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানিয়েছে তাঁরা।

বিবৃতিতে ছাত্র ফেডারেশন রাবি শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আশরাফুল আলম সম্রাট বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদা খানমের ওপর অতর্কিত হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা রাষ্ট্রের চলমান বিচারহীনতারই ফল। এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেড়িয়ে আসতে না পারলে এমন হত্যাকান্ড নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। আমরা এই ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।

সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন বলেন, ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর ন্যাক্কার জনক এই হামলার ঘটনা সরকার এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। দেশে আজ ঘুমন্ত মানুষের নিরাপত্তা নেই। সরকার বারবার জনগনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই হামলার দায় সরকারকেই নিতে হবে। হামলার সাথে জড়িত সকলকে দ্রুত চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা সকলের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ চাই।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৩ই সেপ্টেম্বর) রাত ২ টায় দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। মাথায় গুরুতর আঘাতের ফলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাতেই তাকে রংপুরে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার নিউরো সার্জারী ইনিস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। রাতে তার মস্তিষ্কের সার্জারী করা হলেও এখন শঙ্কামুক্ত নন তিনি।

তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের (২০০৩-৪ শিক্ষাবর্ষ) প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবা ওমর আলী শেখ একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এ ঘটনায় তিনিও গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তুলনামূলক কম

তানভির আহমেদ
হাবিপ্রবি প্রতিনিধি


দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন আ’ক্রান্তের সাথে ক্রমশ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃ’তের সংখ্যা। সেই সাথে বাড়ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটির সংখ্যা।

তাই অফলাইন থেকে অনলাইনে ইন্টারনেট নির্ভর বিভিন্ন সেবার সাথে মানুষকে সুপরিচিত করেছে তুলেছে করোনাকালীন ঘরব’ন্দী এই সময়।

টেলিপ্যাথি, ই-কমার্স এর পাশাপাশি ক্যারিয়ার আড্ডা, টকশো, বিভিন্ন সভা-সেমিনার, এমনকি নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স অনলাইনে করা থেকে ক্লাস পর্যন্ত করছে মানুষ।

অনলাইন ক্লাস ধারণার সাথে এদেশের শিক্ষার্থীরা সুপরিচিত না হলেও বেশ কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করেছেন। এমনকি অনলাইনে পরীক্ষা নিয়ে সেমিস্টার শেষ করার ঘটনাও ঘটছে সেখানে।

গত ২৬ মে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান এর সভাপতিত্বে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে একটি অনলাইন সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সেশন জট কমিয়ে আনতে অনলাইন ক্লাসে চালুর বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ।

ইউজিসি জানিয়েছেন অনলাইনে ক্লাস হলেও হবেনা কোন পরীক্ষা। উক্ত সিদ্ধান্তের আলোকে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) সম্প্রতি অনলাইন ক্লাসে যাওয়ার জন্য অফিস আদেশ জারি করেছেন কর্তৃপক্ষ। এতে অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম চালিয়ে যেতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্ব-স্ব অনুষদীয় ডীনগনকে বলা হয়েছে।

অফিস আদেশ জারি হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।

বিভিন্ন বিভাগ এবং অনুষদে খোঁজ নিয়েও অনলাইন ক্লাস চালুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থী উপস্থিতির সংখ্যা তুলনামূলক কম বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ ব্যাচের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান বলেন, “ক্লাস শুরু করা প্রয়োজন, চাকুরির দিক থেকেও বয়স বাড়ছে। অনেকের মোবাইলে থ্রি জি নেটওয়ার্ক সেবা ও ডেটার দাম বেশি হওয়ায় সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে রেকর্ড ক্লাস, ভিডিও, পিডিএফ পরে দেখে নেওয়া যায়! এছাড়া আমরা বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এখন সারাদিন অনলাইনেই থাকি। করোনা পরিস্থিতি কবে নাগাত স্বাভাবিক হবে তারও ঠিক নেই। যাদের সমস্যা তাদের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেখা উচিত, যাতে শিক্ষা বৈষম্য সৃষ্টি না হয় “।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ ব্যাচের এফপিই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মিনহাজ আবিদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পর থেকে মেসে না থেকেও ৫০% মেস ভাড়া দিয়ে আসছি। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বেকার হয়ে বাড়িতে পরে আছে। এছাড়াও কিছু শিক্ষার্থীর স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ নেই। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তা করার কথা থাকলেও তা কবে করা হবে জানিনা। আমি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাবো, প্রতিটি শিক্ষার্থীকে সাথে নিয়ে ক্লাস শুরু করতে। যাদের সমস্যা আছে তাদের জন্য যেনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়”।

জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখার পরিচালক প্রফেসর ড. শ্রীপতি সিকদার জানিয়েছেন, “অনলাইন ক্লাসের উপর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের নিয়ে ইতোমধ্যে একটা প্রশিক্ষন কর্মশালা অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেশ কিছু বিভাগ অনলাইন ক্লাস শুরু করেছে। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের হাতে ছোট মোবাইল ফোন রয়েছে যার দ্বারা ক্লাস করা সম্ভব নয়।

এক্ষেত্রে মঞ্জুরী কমিশন বা সরকার ‘ওয়ান স্টুডেন্ট ওয়ান ল্যাপটপ’ প্রকল্প যদি কোনভাবে শুরু করতে পারে তাহলে এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে, তাহলে শিক্ষাটাকে আমরা একটা পর্যায়ে রাখতে পারবো”

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা.মো: ফজলুল হক (মুক্তিযোদ্ধা) বলেন, “মার্চের মাঝামাঝি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ আছে। সীমিত আকারে অফিস গুলো চালু রাখা হয়েছে। হলগুলো ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। শুধুমাত্র বিদেশি শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করছেন এ মুহুর্তে। এতো লম্বা ছুটিতে শিক্ষার্থীরা কিছুটা জটে পড়েছে, এতে কোন সন্দেহ নেই। সেই জট কাটিয়ে উঠতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম কিছুটা আরম্ভ করেছি আমরা।”

স্বপ্নভূমি হাবিপ্রবি

তানভির আহমেদ


অনেকের স্বপ্নভূমি হাবিপ্রবি। সবার কাছে হাবিপ্রবি অথবা HSTU নামে পরিচিত হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্যের অগ্রযাত্রার ২০ বছরে রয়েছে ফেলে আসা হাজারো স্মৃতি। রাজধানী থেকে ৩৮৩ কি.মি. উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত উত্তরবঙ্গের একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়, যা সকলের নিকট উত্তরবঙ্গের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ নামেও পরিচিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই হাতের বামে চোখে পড়বে জিমনেসিয়াম। এর পাশেই সুউচ্চ দৃষ্টি নন্দিত ভবন যার নাম ড. এম. ওয়াজেদ মিঞা ভবন। আর ডানপাশে চোখ ধাধানো বিরল প্রজাতির উদ্ভিদে বেষ্টিত বোটানিক্যাল গার্ডেন। এর মাঝে দৃষ্টি নন্দিত ফোয়ারা চত্ত্বর বাড়িয়ে দিয়েছে গার্ডেনের শোভা। ওয়াজেদ ভবনের থেকে একটু সামনে গেলেই চোখে পড়বে প্রশাসনিক ভবন। ভবনের সামনে ও একপাশে দেখা মিলবে বাহারি ফুলের সংমিশ্রণ ও দেশি বিদেশি নানা জাতের ছোট ছোট শোভাবর্ধক গাছ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ৪টি একাডেমিক ভবন সহ ১টি নির্মাণাধীন অর্থাৎ মোট ৫টি একাডেমিক ভবন। এছাড়া অডিটোরিয়াম-১ ও আধুনিক সুবিধা সম্বলিত অডিটোরিয়াম-২, লাইব্রেরি ভবন,মেয়েদের তিনটি হল, বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আন্তর্জাতিক হল সহ মোট আটটি হল এবং নির্মানাধীন ৭২০ সিটের অত্যাধুনিক ছাত্রী হল। রয়েছে ৫তলা টিএসসি ভবন সহ আরো অনেক স্থাপনা।

এখানে প্রতিনিয়ত গল্প সাজে। ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্ন বুনে তরুন প্রজন্ম। এক দিন বড় হবে, খুব বড়! যেখানে দাঁড়িয়ে গাছের মত ছায়া দেবে নিজ পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রের মানুষগুলির। বিশেষত্ব দিবে সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের।

রাশিক হোসাইন শোভন এই তরুন প্রজন্মের একজন। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, স্বপ্ন দেখি হাবিপ্রবি কে নিয়ে, নিয়ে যেতে চাই নতুন এক উচ্চতায়। জীবন যুদ্ধে একজন সফল মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াতে চাই মানুষের। সময় ও নদীর স্রোত কাহারো জন্য অপেক্ষা করেনা। দেখতে দেখতেই একটি বছর চলে গেলো, ক্যালেন্ডারের পাতার সাথে সেমিস্টার ও পরিবর্তন হলো লেভেল ১ এর পাশে।

স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে তিনি বলেন, ২০১৬ সালের এপ্রিল। এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাসায় ফেরার পর হাবিপ্রবিতে গিয়েছিলাম। আশা ছিলো ঘুরে দেখবো পুরোটা ক্যাম্পাস ঘুরে দেখবো। ৮৫ একরে কি আছে? সারাদেশের শিক্ষার্থীরা কেন আসে এখানে! তখনো একদমই মাথায় আসেনি যে, মাত্র কয়েক দিন পরে এই জায়গাই হবে আমার নিজের ঠিকানা!

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সকাল ৮ টায় ঘুম ঘুম চোখ নিয়ে উপস্থিত দেশের অন্যতম সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে, জীবনের নতুন এক অধ্যায়। নতুন সব মুখ। হাবিপ্রবি নিয়ে কল্পনাটা ছিল একটু ভিন্ন। এখানে ক্লাস করার চেয়ে ঘোরাফেরা এবং আড্ডা দেওয়া বেশি। স্কুল কলেজের মত ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই।

কিন্তু কোথায় কিসের কল্পনা, এসে দেখি এ এক নতুন জগত! প্রথম দিনের প্রথম ক্লাসেই স্যারের নিয়ম কানুন নিয়ে বিশাল এক লেকচার। ঠিক সময়ে না আসলে ক্লাস এ ঢুকতে দেওয়া হবে না। এই এই করলে এই এই শাস্তি। আবার উপস্থিতির জন্যও ৫ নাম্বার বরাদ্দ। এ কথা শুনে তো রীতিমত চোখ কপালে! সকলের মুখেই এক কথা, নিজ পরিবার ছেড়ে বিভাগের প্রতিটি শিক্ষার্থী এখানে ভাই বোনের সম্পর্কের মতো একে অপরকে নিয়েছে নিজের পরিবারের সদস্য হিসেবে। পিতামাতা তূল্য শিক্ষকও আছে আমাদের। নিজেকে কখনো একা মনে হয়না বিদ্যা অর্জনের এ পথচলায়।

বেগুনি আর হালকা নীল বাসের কথা মনে পড়তেই মনে হলো এখানে আছে কিছু সুখের স্মৃতি। ফাঁকা বাসে বসে বাসায় ফেরার পথে সম্মিলিত কন্ঠে গান গাওয়া তো ছিলো নিত্যনৈমেত্তিক ঘটনা। দিনাজপুর সরকারি কলেজের সামনে দিয়ে যখন হাবিপ্রবির লাল সাদা বাস গুলো সর্বোচ্চ গতিসীমায় চলতো, তখন কিছু অসহায় চোখ তাকিয়ে থাকতো হাবিপ্রবির বাসের দিকে। হয়তো তারাও ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে কিন্তু হাবিপ্রবিতে, কিন্তু চান্স হয়নি। চান্স পায়নি বলে হয়তো অনেক কষ্টও পেত তারা।

এত শত গল্পে স্মৃতি যে আরো আছে ফার্ট গেটের পাশে শাকিল ভাইএর দোকানে বসে চায়ের কাপে ঝড় তোলা, ওয়াজেদের ফ্লোরে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখা, টিএসসিতে কিংবা ঘুমের ঘোরে ক্লাস মিস দেওয়া, সেন্ট্রাল ফিল্ডে বসে গিটারে সুর তোলা, ফিশারিজ পুকুর পাড়ে, লিচু বাগানে জন্মদিন সেলিব্রেশন করা বাসের সিট রাখতে হুড়োহুড়ি করা এসব আমদের দৈনিক রুটিনের অংশ।

ঢেপা নদী থেকে সুখ সাগর, প্রমোদতরী থেকে দাদুবাড়ি সব যায়গায় ছিলো উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। এ বিভাগের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেনো একেকজন একেকটি অংশ এ পরিবারের। এ বিভাগের শিক্ষক নিয়ে বলতে গেলে অতুলনীয় ও অত্যন্ত বন্ধুসুলভ এককথায় এমন ছাত্রবান্ধব শিক্ষকদেরর জুরি মেলা ভার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ দিন অবধি পরিবারের একটি সদস্যকেও হারাতে চাইনা।

প্রতিদিন কতশত গল্পের জন্ম হত। কত সব চিন্তা আসতো। আড্ডায় ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দেওয়া এই বন্ধুরা শিক্ষাজীবন শেষে কে কোথায় যাবে তার কি কোনো হদিস থাকবে? গানে আড্ডায় ঘোরাঘুরি আর হালকা পড়াশুনোয় আর শত নিয়ম কানুনের বেড়াজালে ৪টি বছর পার হয়ে যাবে। শুরু হবে সমাপ্তির সূচনা।

চার বছরের এত স্মৃতি, এত সুখ দুঃখ, হাসি কান্না সব মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় বিদায় বেলায়। দীর্ঘ ৪ বছর আগে যে যাত্রার শুরু হয়েছিল, নিমিষেই তা শেষ হয়ে যাবে, ভাবতেই চোখ ছলছলায়।

আজও বেগুনি নীল রঙের সেই বাসগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকি চোখে পড়লেই। আহা… আবারো যদি ফিরে যেতে পারতাম সেই দিনগুলোতে! হয়তো এ রকম আশায় ব্যক্ত করে করে হাবিপ্রবি ছেড়ে আসা সকল শিক্ষার্থী।

বাস্তবতার জাঁতাকলে পিষ্ট প্রতিটি মানুষের মনেই থাকে জীবনে সফল হওয়ার বাসনা। সে পালে হাওয়া দেয় হাবিপ্রবি নামক এই স্বপ্ন রাজ্য। অনেক আশা আকাঙ্খা নিয়ে প্রতি বছর হাজারো শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসে। কেউ সে যুদ্ধে সফল হয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায় কেউ বা হারায়। তবে হাবিপ্রবি উজ্জল তার স্বমহিমায়।


লেখকঃ শিক্ষার্থী, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ,
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর।

ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ গেল হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর

তানভির আহমেদ, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) অর্থনীতি বিভাগের ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাহেরা ফাইয়াজ মৌ।

আজ শুক্রবার(১২জুন) সকাল ৯ টায় মৌ বাসা থেকে তার খালতো ভাইয়ের সাথে বাইকে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে।

জানা যায়, মৌ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন একটি মেসে থাকতো।মেস থেকে প্রয়োজনীয় বই এবং জিনিসপত্র নিয়ে বাইকে করে বাসাই ফেরার পথে ঢাকা দিনাজপুর মহাসড়কের মঙ্গলপুর নামক স্থানে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সাথে ধাক্কা লেগে মৌ বাইক থেকে ছিটকে পরে যায় এবং অপর একটি ট্রাকের নিচে পিষ্ঠ হয়।

এরপর আহত অবস্থায় তাহেরা ফাইয়াজ মৌকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহমান মেডিকেল কলেজে আইসিইউ তে নেওয়া হলে,কিছুক্ষণ পর কর্ত্যব্যরত চিকিৎসক ফাইয়াজ মৌ কে মৃত ঘোষণা করেন। তহেরা ফাইয়াজ মৌ এর বাসা দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জে।

এদিকে মৌ এর অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন হাবিপ্রবি পরিবারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম। তিনি তার আত্মার রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।

‘মুই তোমার এমপি বাহে, তোমাঘরে জন্য মুই খাবার আনচু’

সারাদেশ টুডে


“মুই তোমার এমপি বাহে, তোমাঘরে জন্য মুই খাবার আনচু। এ্যালা নিয়ে খাবার খায়ে আবার আরাম করি তোমারা ঘুমাও।” দেশের দুর্যোগকালে ভ্যানে করে দিন বা রাতের আধারে অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে এভাবেই খাবার পৌঁচ্ছে দিচ্ছেন দিনাজপুর-৬ আসনের সাংসদ সদস্য (এমপি) শিবলী সাদিক।

করোনার তাণ্ডবে সারাবিশ্ব এখন স্থবির। সেই সাথে বাংলাদেশে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। দেশের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কর্মহীন থাকা অসহায় মানুষের খোঁজ নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছেন এমপি শিবলী সাদিক।

জানা যায়, ব্যক্তিগত তহবিল থেকে হিলি হাকিমপুর, বিরামপুর, নবাবগন্জ ও ঘোড়াঘাট উপজেলায় ৪০ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা করছেন এই মানবতার ফেরিওয়ালা এবং সংসদ সদস্য।

দুর্যোগকালে খাবার পেয়ে এলাকার আদিবাসী গ্রামের স্বনালী দির্গ্যা জানান, “মুই ভাববারই পারনাই এমপি মোর বাড়িত আসি খাবার দিবে। (আমি ভাবতেই পারিনি এমপি আমার বাড়িতে এসে খাবার দিবেন)। করোনার ভয়ে হামরা ঘর থেকে বাইরত যাবার পারছি না। (করোনার ভয়ে আমরা ঘরের বাহিরে যেতে পারছি না)। ছোয়ালগুলাও কান্দোচে।( সন্তানগুলো কাদতেছে)। চাল,ডাল,লবণ পেয়ে ভালোই হইলো। ইশ্বর তোমাঘরে আরো বড় মানুষ করুক।’(সৃষ্টিকর্তা আপনারে আরো বড় মনের মানুষ করুক)।

সাংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন, ‘আমি খোঁজ নিয়েছি। অনেক মানুষ আছে অভাবের কারণে তাদের উঁনুন জ্বলেনি। ঘরের বাইরে করোনা আর ভেতরে ক্ষুধা। অনেকের শিশুরা ছিল অভুক্ত। তাদের হাতে কিছু খাবার তুলে দিতে পেরে নিজের ভালো লাগছে। অনেক মানুষ আছে খাবার পেয়ে একটা আনন্দের হাসি সারা জীবনে মনে রাখর মতো।’

সাংসদ সদস্য আরো জানান, ‘আমি যখন খাবার নিয়ে গ্রামে যাই তখন গ্রামের মানুষগুলো অনেকেই ঘুমিয়ে ছিল। করোনার বিস্তারে কর্মহীন মানুষগুলো ঘরে বন্দি তখন তাদের করোনার চেয়েও ভয়াবহ হয় ক্ষুধা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে রাতের আধারে তাদের খাবারে পৌঁছে দেবার চেষ্টা করেছি।’

নিখোঁজের একদিন পরে কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর মারুফ আহমেদ মুন্না নামে কলেজ ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার (০৫ অক্টোবর) দিবাগত রাতে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার উত্তর গোপালপুর সংলগ্ন ঘাট থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।দিনাজপুরের হাকিমপুরের ঘাসুড়িয়া সীমান্ত এলাকায় শাখা যমুনা নদীতে বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে নেমে তলিয়ে যায় মুন্না।

মৃত মারুফ আহমেদ মুন্না (১৮) হাকিমপুর উপজেলার নন্দীপুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে। মুন্না রংপুর আইডিয়াল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’র ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্র।

এ বিষয়ে হাকিমপুর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, “পূজার ছুটিতে বন্ধুদের সঙ্গে বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন মুন্না। গত ৪ অক্টোবর সকালে গ্রামের মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলা শেষে ঘাসুড়িয়া সীমান্তের শাখা যমুনা নদীতে বন্ধুদের সাথে গোসল করতে গিয়ে তীব্র স্রোতে তলিয়ে যায় মুন্না। পরদিন ৫ অক্টোবর দিবাগত রাতে স্থানীয়দের খবর পেয়ে মুন্নার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।”

দ্য ক্যাম্পাস টুডে