ঝড়-তুফানের সময় পড়ার দোয়া

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা অযথা কাউকে শাস্তি দিতে চান না; বরং মানুষের উপর যে বিপদ আসে, তা তাদের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ। ঝড়-তুফানের সময় পড়ার দোয়া.

প্রাকৃতিক দুর্যোগ- যথা ঘূর্ণিঝড়, শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি বা খরা, ভূমিকম্প, দুর্ভিক্ষ, মহামারি, অগ্নিকাণ্ড, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, বরকত-শূন্যতা প্রভৃতি মানুষেরই কর্মের ফল। ধর্মীয় ও নৈতিক অবক্ষয়ে পৃথিবী ভারাক্রান্ত। ঝড়, ভারী বর্ষণ, সাইক্লোন, খরা, শৈত্যপ্রবাহ এরই পরিণাম।

পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে- ‘তোমাদের ওপর যেসব বিপদ-আপদ নিপতিত হয়, তা তোমাদেরই কর্মফল। তিনি অনেক গুনাহ মাফ করে দেন’। (সূরা: আশ্-শূরা, আয়াত: ৩০)

‘আর যখন তোমাদের ওপর মুসিবত এলো, যার দ্বিগুণ তোমরা ঘটিয়েছ, তখন তোমরা বললে, এটা কোত্থেকে এলো! (হে নবী) আপনি বলে দিন, এ তো তোমাদের পাপ থেকেই; নিশ্চয় আল্লাহ সব বিষয়েই সর্বশক্তিমান’। (সূরা: আল ইমরান, আয়াত: ১৬৫; মারেফুল কোরআন: ৬৭৫৩)

‘মানুষের কৃতকর্মের কারণে স্থলে ও সমুদ্রে ফ্যাসাদ প্রকাশ পায়, যার ফলে আল্লাহ তাআলা তাদের কিছু কৃতকর্মের স্বাদ তাদের আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে’। (সূরা: রুম, আয়াত: ৪১)

গুনাহ বেশি হলে সবকিছু থেকে বরকত উঠে যায়। ফ্যাসাদ শুরু হয়ে যায়। বিপদ ও বালা-মুসিবত একের পর এক আসতেই থাকে। যুগে যুগে মানুষকে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন আজাব-গজব দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন, সতর্ক করেছেন। ঝড়-তুফানের সময় পড়ার দোয়া

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান, মাল ও ফল-ফলারির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা নিজেদের বিপদ-মুসিবতের সময় বলে ‘নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী’, তাদের ওপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও রহমত এবং তারাই হেদায়াতপ্রাপ্ত।’ (সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৫৫-১৫৭)

ঝড়-তুফানের সময় পড়ার দোয়া: اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা’।

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদের থেকে ফিরিয়ে নাও, আমাদের ওপর দিয়ো না’। (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি) ঝড়-তুফানের সময় এ দোয়া বেশি বেশি পড়তে হবে।

উল্লেখ্য, প্রচণ্ড ঝড়ের সময় আজান দেওয়া সুন্নত।

অভাব মোচনের দোয়া

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসয়ালুকা মিন ফাদলিকা ওয়া রহমাতিকা; ফা-ইন্নাহু লা ইয়ামলিকুহা ইল্লা আনতা।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার দয়া ও অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। কেননা কেবল আপনিই দয়া ও অনুগ্রহ করার ক্ষমতা রাখেন।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে একজন অতিথি এলেন। তিনি তার স্ত্রীদের কাছে খাবারের জন্য সংবাদ পাঠালেন। কিন্তু কারও কাছে খাবার পাওয়া গেল না। তখন তিনি উল্লিখিত দোয়া পাঠ করেন। অতঃপর তাকে ভুনা গোশত হাদিয়া দেওয়া হলো। এটা আল্লাহর দয়া, আমরা তার অনুগ্রহের অপেক্ষা করছি। -সুনানে তাবারানি : ১০৩৭৯