অপ্রিয় ভালোবাসা

সিনাত আরা – রাত ৯টায় একটা মেসেজ পেয়ে থমকে যাই। যেখানে লেখা, আমি রাজু। আপাতত বেকার তবে কিছু একটা করার চেষ্টা করছি। আমার বাসা নাভারণ তবে থাকি না সেখানে।

পড়াশোনা শেষ করেছি। আমি মদ পান করি মাঝে মাঝে এবং খুব পছন্দের সাথে সিগারেট খাই। পরিবারে সবাই থাকলেও আমি পরিবারের বাইরে থাকতে পছন্দ করি। সেদিক দিয়ে বলতে পারেন আমি একা।
আমি আমার মতো থাকতে পছন্দ করি। আপনার যদি ভালো লাগে তাহলে আমরা কিছুদিন কথা বলে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারি তবে সেটা অবশ্যই পালিয়ে।
আমি একটা মাত্রিমনিয়াল সাইটে বিয়ের বায়োডাটা দিয়েছিলাম। সেখানে দেখে যোগাযোগ করেছে।

তবে এমন প্রস্তাব পাব কখনো চিন্তা করিনি। আমি মদ খাওয়াতো দূরের কথা সিগারেট খাওয়া লোক পর্যন্ত দেখতে পারি না। সে আবার ফ্যামিলি পছন্দ করে না। তার মেসেজ পেয়ে প্রথমে মনে হয়েছিল বিয়ে তো দূরের কথা সামনে পেলে গোটা চারেক থাপ্পড় মারতাম।
ঠিক দুইদিন পরে কি মনে করে রিপ্লাই করলাম

তারপর মাঝে মাঝে কথা হতো।
রাজুর সব কথা কেমন যেন অদ্ভুত। তার কখনো মনে হয় সারাবিশ্বের মানুষ মেরে ফেলি আবার মনে হয় সে কিছুদিন পরে নিজেকে মেরে ফেলবে। এরকম হাজারও কথা। কেমন যেন তাকে জানার আগ্রহ বাড়ে। একটু একটু করে কথা আগাতে থাকে। সে একটা বিজনেস দাঁড় করাতে চেষ্টা করে। সেখানে আমি ও যোগ দেই।

রাজু হঠাৎ একদিন বলে বসে, ‘চলো প্রেম করি।’
এমন একটা মানুষকে আর যাই হোক ভালোবাসা যায় না। তারপরও সময় চাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার। রাজু বলে, ‘তাড়াতাড়ি জানিও।’
তারপর কি মনে করে ‘হ্যা’ বলি। মনে বিশ্বাস ছিল, প্রেম হলেও এই মানুষ সংসারি হবে না। প্রেম তো করাই যায় কিছুদিন। এভাবে কিছুদিন কাটতে থাকে।

তারপর আসে সেই ক্ষণ যা আমি কখনোই আশা করিনি। রাজু একদিন বলল, ‘চলো বিয়ে করি।’
আমি আবার সময় চাই তিন মাস। প্রথমদিকে রাজি হলেও পনের দিনের মাথায় গিয়ে রাজু বলে, তিন মাস থাকতে পারবে না। দ্রুত বিয়ে করবে।

এমন একটা মানুষকে বিয়ে করার কথা ভাবতে গেলেই আমার গা শিউরে ওঠে। কিছুতেই মনকে বোঝাতে পারি না। এদিকে রাজু বলে, “হয় বিয়ে করো না হয় ‘না’ বলো। কিছু একটা করো।”
আমি না বলতে পারি না, মায়া লাগে। এদিকে আবার পালিয়ে বিয়ে করতে হবে। কেউ থাকতে পারবে না। রাজুর পরিবার বলতেও কিছু নাই। কি করব ভেবে পাই না। শেষমেষ মায়া কাটাতে না পেরে দুজনে বিয়ে করে ফেলি।

আশ্চর্যের বিষয় হলো এই মানুষটা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা মানুষ। যেটা সে বিয়ের আগে বলেছিল তার সাথে কোনো সম্পর্ক নাই তার। রাজু আর আমি, সুখে দুঃখে ভেসে চলেছি দুইটা বছর। এভাবে চলতে চাই আরো বহু বছর..

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে হুমকি!

ইবি প্রতিনিধি: প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হুমকির শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রী। অভিযুক্ত ফারুক হোসেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার (১১ মে) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ফারুক হোসেন নামের (আইডি নাম: Faruk Hossain বিপ্লবী) একজন ছাত্র নিজেকে মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে আমাকে ইনবক্সে প্রপোজসহ নানা বাজে টেক্সট দিয়ে এবং ক্যাম্পাসে সরাসরি বিরক্ত করে আসছেন। আমি তার কু–প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রায়ই আমার পিছু নিয়ে বাজে মন্তব্য করতেন। বিষয়টি আমি আমার বন্ধু বান্ধবীদের জানাই। এরপরই ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যায়।

সম্প্রতি তিনি আবারো এমন কাজ করেন। আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় উনি আমার ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। এবং আমার ক্ষতি করার হুমকি ধামকি দেন। ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক নেতা এবং বড় ভাইদের ভয় দেখিয়েছেন।

এরপরে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমার ছবি দিয়ে ফেক আইডি খুলেছেন এবং ফটোশপে আমার ছবি বিকৃতি করে আমার পরিচিত বন্ধু-বান্ধব, ভাইয়া আপুদের রিকুয়েষ্ট দিচ্ছেন। আমাকে অশ্লীল ছবি এবং ভিডিও পাঠিয়েছেন।

এই কর্মকাণ্ডে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি এবং একইসাথে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি উক্ত ব্যক্তির কুপ্রস্তাব, হুমকি এবং মানসিক ও সামাজিকভাবে লাঞ্ছিতের ঘটনার প্রতিকার চাচ্ছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত ফারুকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সিনিয়র ও জুনিয়র মেয়েদের নানা ভাবে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। ২০১৯ সালে বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে ম্যাসেঞ্জারে হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

২০২০ সালে ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের এক ছাত্রীকে ম্যসেঞ্জারে উত্তক্ত করেন ফারুক। এর আগে কয়েকজন ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযুক্ত ফারুকের হেনস্তার বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন।

এছাড়াও বাংলা, ইংরেজি, আরবি ভাষা ও সাহিত্য, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, সোশ্যাল ওয়ার্কসহ বিভিন্ন বিভাগের অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থীর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রীদের নানা ভাবে উত্যক্ত করে আসছে। বিভাগের বড় আপু থেকে শুরু করে জুনিয়র মেয়েদের নানা ভাবে হেনস্তা করে সে। তার ছাত্রত্ব বাতিল করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে একাধিকবার কল করেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। কাল ভিসি স্যারের সাথে এ নিয়ে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’