বিশ্বসেরা গবেষকের তালিকায় বশেমুরবিপ্রবির দুই শিক্ষক

বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় স্থান পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) দুইজন শিক্ষক।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক বিশ্বের প্রথম সারির চিকিৎসা ও বিজ্ঞান বিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশনা সংস্থা ‘এলসেভিয়ার’ এর সমন্বিত জরিপে চলতি বছরের গত ৪ অক্টোবর (বুধবার) এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।

তালিকায় পুরো এক বছরের গবেষণা ও আরেকটি পেশাগত ভিত্তিতে সেরা গবেষক নির্ধারণ করা হয়। তালিকায় স্থান পেয়েছেন বশেমুরবিপ্রবির ফার্মেসী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম ও গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. দীপংকর কুমার।

বিশ্বসেরা গবেষক তালিকায় স্থান পেয়ে ড. মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন , বিশ্বের ২ শতাংশ বিজ্ঞানীদের তালিকায় স্থান অর্জন করতে পারাটা ভালো লাগার বিষয়।এ তালিকায় যেন শিক্ষক শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এ ব্যাপারে ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

প্রসঙ্গত, এলসেভিয়ার প্রতিবছর প্রায় দুই হাজারের উপরে জার্নাল প্রকাশ করে। প্রকাশিত জার্নালে নিবন্ধের সংখ্যা আড়াই লাখের বেশি। এর আর্কাইভে ৭০ লাখের অধিক প্রকাশনা রয়েছে।

নবীনদের পদচারণায় মুখরিত বশেমুরবিপ্রবি ক্যাম্পাস

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


বাংলাদেশের দ্রুত অগ্রসরমান উচ্চশিক্ষার অন্যতম বিদ্যাপীঠ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত মধুমতি নদীর তীরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টি ইতিমধ্যে অতিবাহিত করেছে নয়টি বছর। এরই মধ্যে ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের পদচারণা শুরু হয়েছে।

গান আড্ডা ও বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয়ে সবাই যেন ব্যস্ত। ভর্তিযুদ্ধে জয়ী যোদ্ধার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিনটি বরাবরই জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দিন। ভর্তি হওয়ার পর থেকেই সবার মনে শুরু হয়ে যায় ক্যাম্পাস নিয়ে কত স্বপ্ন, কত পরিকল্পনা।

নতুন পরিবেশ, বকিছুই নতুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন কীভাবে কাটাবে, কী কী করবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। নবীনদের বরণ করে নেওয়ার জন্য প্রবীণরাও নিতে শুরু করে প্রস্তুতি। প্রস্তুতির পর ওরিয়েন্টেশনের দিনেই সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটে। নানা আয়োজন এবং আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত স্নাতক প্রথমবর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ওরিয়েন্টেশন।

পুরো ক্যাম্পাস উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছিল। নবীন শিক্ষার্থীরা অনেক সকাল থেকেই ক্যাম্পাস প্রঙ্গণে আসতে শুরু করে। অনেক নবীনের সঙ্গে ক্যাম্পাসে আসেন তাদের অভিভাবকও। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসের প্রবীণরাও এসেছিল নানা আয়োজনে নবীনদের বরণ করে নিতে। ছেলেরা এসেছিল পাঞ্জাবি, শার্ট-কোট-টাই পরে, কেউ কেউ আবার শীতে চাদর মুড়ি দিয়ে এসেছিলেম। ছাত্রীদের কেউ কেউ এসেছিল শাড়ি পরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগ মিলে কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হয় ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠান।

নবাগত শিক্ষার্থীদের গোলাপ ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। ওই দিন পূর্ববর্তী ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদ ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান কয়ার হয়। এ সময় শিক্ষকরা তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় নবীনদের।

অনুষ্ঠান শেষে সবাই যখন বেরিয়ে আসে তখনই আনন্দের মাত্রা বেড়ে যায় বহুগুণ। সবার হাতে রয়েছে ফুল, সবাই পরিচিত হচ্ছে একে অপরের সঙ্গে। কেউ কেউ ব্যস্ত সেলফি তোলা নিয়ে। অনেকেই বসে গিয়েছিল টং দোকান কিংবা ক্যাফেতে আড্ডা দিতে। এমনি আনন্দ-উল্লাসে কেটেছে পুরোটা দিন।

আনন্দ উচ্ছ্বাসের সঙ্গে জানান, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত। এই প্রতিষ্ঠানের অংশ হতে পেরে আমরা সবাই গর্বিত। ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে চাই। পাশাপাশি যেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখেছি, সেটা অর্জন করতে চাই।

বশেমুরবিপ্রবি: ক্যাম্পাসে প্রথম বর ও কনের গায়ে হলুদ

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি


বাঙালি সংস্কৃতির বহুল প্রচলিত উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উৎসব গায়ে হলুদ। গায়ে হলুদ মূলদ একটি মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান, যা প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত। বাঙালী বিয়ের যে কয়টি পর্ব পালিত হয় তাঁর মধ্যে অন্যতম বর্ণিল ও বর্নাঢ্য পর্বটিই হচ্ছে গায়ে হলুদ। গায়ে হলুদ আয়োজন ঘিরে থাকে নানান পরিকল্পনা ও উচ্ছ্বাস!

আগের দিনে বাড়ির উঠোন কিংবা ছাদেই সেরে ফেলা হতো গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। শামিয়ানা টানিয়ে বর-কনের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবরা হৈচৈ করে হলুদ মাখিয়ে গায়ে হলুদের আনুষ্ঠানিকতা সারতো। গত কয়েক বছরে নগর সভ্যতায় রেস্তোরাঁর হল, কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করে গায়ে হলুদের আয়োজন করতে দেখা গেছে।

তবে সম্প্রতি গায়ে হলুদের আয়োজনে দেখা গিয়েছি নতুন এক ব্যতিক্রমী। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের গায়ে হলুদের আয়োজন হয়েছে তাদের ক্যাম্পাসেই। এমনই এক ভিন্নধর্মী গায়ে হলুদের স্বাক্ষী হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকপাড়ে একদল তরুণ-তরুণীর হলদে শাড়ি-পাঞ্জাবিতে চোখ আটকে যাচ্ছে পথচারীদের। সবাই একটু-আধটু উঁকি দিয়ে দেখছে, কি হয়! ক্যাম্পাসে গায়ে হলুদের আয়োজন যে বশেমুরবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবারই প্রথম। বাঁশের ডালা, কুলা, চালুন ও মাটির সরা, ঘড়া, মটকা দিয়ে বিয়ের বাড়ির আমেজ তৈরির মধ্য দিয়ে বশেমুরবিপ্রবি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স এর শিক্ষার্থী জুয়েল এবং চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশার গায়ে হলুদ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গায়ে হলুদের এ আয়োজন বর এবং কনের পরিবারের লোকজন কেউ করেননি। বিয়ের অনুষ্ঠানে সব বন্ধুরা উপস্থিত থাকতে পারবেনা বলেই ক্যাম্পাস এমন ভিন্নধর্মী এ গায়ে হলুদ আয়োজনের আয়োজন করে তাদের সহপাঠীরা।।

চিরাচরিত গায়ে হলুদের নিয়মের মতই হলুদ, মেন্দি মাখিয়ে সম্পূর্ণ করা হয়েছে সকল আনুষ্ঠিনকতা। হলুদে তাদের বন্ধুরা সহ অংশ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের খবরে সরগরম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট প্লাটফর্মগুলো।

এ ভিন্নধর্মী আয়োজন নিয়ে আশার বন্ধু রাফি জানান ‘বিয়েতে সবার পক্ষে আশার বাড়িতে যাওয়া সম্ভব না তাই বান্ধবীর বিয়ের মজা করার জন্য ক্যাম্পাসে এই হলুদের ব্যতিক্রমী আয়োজন। আমরা সব বন্ধু-বান্ধবীরা মিলে এই আয়োজন করেছি, এই আয়োজনে আমাদের বিভাগের সকল সিনিয়র এবং জুনিয়ররা সহযোগীতা করেন।’

কনে আশার কাছে ক্যাম্পাসে গায়ে হলুদ আয়োজনের অনুভূতি জানতে চাইলে উচ্ছ্বসিত কন্ঠে তিনি বলেন, ‘নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। ক্যাম্পাসে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হবে কখনও ভাবিনি। আমি অনেক বেশি আনন্দিত। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’