দেশে সর্দি, কাশি, জ্বরে ৫৮ জনের মৃত্যু: ভয়েস অফ আমেরিকা

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর, দেশের বিভিন্ন স্থানে গত ১৮ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত
সর্দি, কাশি, জ্বর ও গলাব্যাথা নিয়ে ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত ১৪ জেলায় ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।- ভয়েস অফ আমেরিকা।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রধান লক্ষণ সর্দি, কাশি, জ্বর ও গলাব্যাথা। বাংলাদেশে এসব লক্ষণ নিয়ে অনেকেই মারা যাচ্ছেন। কিন্তু সরকারি রোগ নির্ণয় সংস্থা-আইইডিসিআর জানিয়েছে তাদের নমুনায় এর কোন আলামত নেই। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে আইইডিসিআর।

খবরে বলা হয়েছে, মৃতব্যক্তিদের বাড়ি লকডাউন করা হলেও বলা হচ্ছে, তারা কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি। অনেকে করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন। ঢাকায় একজন স্কুল শিক্ষিকা মাহমুদা বেগমকে চারটি হাসপাতালে ভর্তি করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যেক উপজেলা থেকে দুই জনের নমুনা সংগ্রহ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে সরকারের মুখপাত্র জানান, বাংলাদেশে আরও দুই জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ৫৬ জন। ওদিকে গত কয়েকদিনে করোনায় সারাবিশ্বে বিভিন্ন দেশে ৮০ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন।

বাড়ি ভাড়া মওকুফ ও বিদ্যুৎ বিল স্থগিত: এ খবর গুজব, জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


করোনা বিস্তারের পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে বাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন বিল মওকুফের একটি খবর ছড়িয়ে পড়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে। এ ধরণের তথ্য সম্পূর্ণ গুজব বলে জানানো হয়েছে

আজ বৃহস্পতিবার (০২ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচীব ইহসানুল করীম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ব্যাংক লোন, বাড়ি ভাড়া মওকুফ, ও বিদ্যুৎ বিল তিন মাসের জন্য স্থগিত, সকল অফিসে এক মাসের ছুটি সংক্রান্ত যে গুজবটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করা হচ্ছে সেটি পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট।

আরো বলা হয়েছে, যারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন তা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

করোনা মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর গৃহীত পদক্ষেপ নিজেই কিংবা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানাবেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

‘ত্রাণ নিয়ে অনিয়ম হলে আমি কাউকে ছাড়ব না’

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


করোনার কারণে দেশে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অসহায় ও নিম্ন আয়ের মানুষদের কাছে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া সাহায্য পৌঁছে দিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে তিনি এই কাজে কোন প্রকার অনিয়ম, দুর্নীতি হলে সেটা সহ্য করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) করোনা প্রতিরোধের লক্ষ্যে দেশের ৬৪ জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে দিকনির্দেশনা দেওয়ার সম প্রধানমন্ত্রী এই সব কথা বলেন।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি ক্রান্তিকালে এই ভিডিও কনফারেন্স। এরকম পরিস্থিতি বোধহয় আমরা জাতীয় জীবনে আর কখনও দেখিনি।’

প্রাণঘাতী করোনা মোকাবেলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা অনুযায়ী শুরু থেকেই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে জানিয়ে তাতে কান না দেয়ার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাব্যবস্থা পুষিয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের টেলিভিশনের মাধ্যমে ক্লাস করানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এগুলো দেখে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে।’

স্যার, সবাই মুখোশ আর হাত-ধোয়ার ‘ঔষধ’ দেয়, পেটে দেয়ার কিছু দেয় না

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


স্থবির সারাবিশ্ব। করোনার তাণ্ডবে দিশেহারা গোটা বিশ্বের মানুষ। করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষের উপরে। এই অবস্থায় তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

করোনার মোকাবেলায় বাংলাদেশকে লকডাউন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দু’জন চলাচল নিষিদ্ধ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রয়োজনীয় কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দোকানপাট বন্ধ, যানচলাচলও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

করোনার আশঙ্কায় মানুষের স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে ফুটপাথের ব্যবসায়ী, চা দোকানদার, রিকশাওয়ালা এবং দিনমজুরদের জীবনযাত্রায়।

দেশের এমন পরিস্থিতিতে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় দোকানপাট বন্ধ থাকায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে রাস্তাঘাট। নগরীর জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেট ঘুরে দৃশ্য দেখা যায়। তবে মাঝে মধ্যে রিক্সা চলাচল করতে দেখা যায়।

জিজ্ঞেস করলে এক রিক্সাচালক বলেন, ‘স্যার, পেট-পিঠের তো লগটাউন (লকডাউন) হয় না। রিক্সা না চালালে খাবো কি? বাচ্চা-কাচ্চা (বউ-বাচ্চা) তো না খেয়ে মরবে। হক্কলে (সবাই) খালি (শুধু) মুখোশ (মাস্ক) আর হাতধোয়ার ঔষুধ দেয়, পেটে দেয়ার মতো খাবার তো কেউ দেয় না।

খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ এখন বাহিরে কম বের হওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে ফুটপাথের ব্যবসায়ী এবং রিকশা চালকরা। গণপরিবহন শ্রমিকরাও আছে অস্বস্তিতে। সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় অন্যান্য সময়ে ক্রেতা সাধারণের চাপ থাকতো মারাত্নক রকমের ফুটপাথের অস্থায়ী দোকানগুলোতে।

হোম কোয়ারেন্টাইন শেষে ১৬তম দিনে মালয়েশিয়া ফেরত ব্যক্তির মৃত্যু

সারাদেশ টুডে


গোলাম মোস্তফা (৬০) নামে মালয়েশিয়া ফেরত প্রবাসীর যশোরে হোম কোয়ারেন্টাইন শেষে ১৬তম দিনে মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার (৩০ মার্চ) সকালে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান।

এদিকে ঝিকরগাছা উপজেলা প্রশাসন দাবি করেছে, মৃত গোলাম মোস্তফার করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ ছিল না। তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন।

মৃত গোলাম মোস্তফা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছিলেন। পাশাপাশি তিনি মালয়েশিয়া শ্রমিক পাঠানোর ব্যবসায় জড়িত ছিলেন।

উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নেছার আলী জানান, মোস্তফা মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর ব্যবসা করতেন। এ জন্য মালয়েশিয়াতে আসা যাওয়া ছিলো তার। সবশেষ তিনি গত ১৪ মার্চ মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে আসেন। এরপর থেকে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে তিনি হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন।

হোম কোয়ারেন্টাইন শেষে আজ সোমবার (৩০ মার্চ) সকালে ১৬তম দিনে তিনি বাঁকড়া বাজারের বাসা থেকে তার গ্রামের বাড়ি উজ্জ্বলপুরে যান। সেখান থেকে ফিরে এসে নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তিনি মারা যান। বিষয়টি তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে জানানো হয়। তারা জানিয়েছেন গোলাম মোস্তফা স্ট্রোক করে মারা গেছেন। অবশ্য এর আগেও তিনি দুইবার স্ট্রোকজনিত কারণে অসুস্থ হয়েছিলেন।

মৃত্যুর বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমী মজুমদার বলেন, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় গোলাম মোস্তফার করোনা আক্রান্তের কোনো লক্ষণই ছিল না। তবু মৃত্যুর পর চিকিৎসকরা তার প্রাথমিক পরীক্ষা করেছেন। স্ট্রোকজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

পরিকল্পনামন্ত্রী: “বাংলাদেশ আর পাকিস্তান হবে না”

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ “যারা পাকিস্তানীদের ভালবাসে তাদের বলছি, বাংলাদেশ আর পাকিস্তান হবে না। বাংলাদেশ; বাংলাদেশই থাকবে। ধর্মের নাম ব্যবহার করে যারা জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে তারা স্বাধীনতাবিরোধী। এ দেশকে স্বাধীন চায় না। দেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে তারা।” বলেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি ।

আজ শুক্রবার দুপুরে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউরা হলদিপুর ইউনিয়নের ভুরাখালী গ্রামের নলুয়ার হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ প্রকল্প উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ।

এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান আরো বলেন, বিএনপিসহ কয়েকটি দল ক্ষমতায় থাকলেও দেশের উন্নয়নে কোনো কাজ করেনি। দেশের দৃশ্যমান উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সারাদেশে গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। আমাদের সরকার গরীবের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী, নুরকে যারা মেরেছেন তারাই আপনার শত্রু


খালেদ মুহিউদ্দীন, প্রধান, ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগ


পড়ে পড়ে মার খাচ্ছেন নুরুল হক নুর, এটি মনে হয় আমাদের সবচেয়ে প্রিয় দৃশ্য৷ তিনি মার খেলে আমরা কেউ প্রকাশ্যে হাসি, কেউ মুখ লুকিয়ে৷কারণ? কারণ, তিনি যেন আমাদের মনের মতো নন, ফিনফিনে পাঞ্জাবি পরেন না, সানগ্লাস জিনস আর কেডসেও খুব মানায় না তাকে৷

তিনি শেখ হাসিনাকে মায়ের মতো বলেন আবার ড. কামাল হোসেনের পাশে গিয়ে বসে থাকেন৷ কোটা সংস্কারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে মার খেতে খেতেই দাবি আদায় করে ছাড়েন, তিন দশক পর অমিত শক্তিশালী ছাত্রলীগকে হারিয়ে জিতে নেন ডাকসু ভিপির চেয়ার৷

আমরা যারা তাকে মারি নাই, তারাও বলি মার খেতে খেতে ভিপি হয়ে গেল নুর৷ যেন মার খাওয়াই তার একমাত্র যোগ্যতা এবং অনেক দিন ধরে ছাত্রলীগ এবং ইদানীং মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ যেন দয়া করে কষ্ট করে তাকে মেরেছে৷ মেরে ভিপি বানিয়ে দিয়েছে৷ এই মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চটি একটু জানতে ইচ্ছে করে৷ সত্যানুরাগী হলে এর নাম হতে পারতো ‘নুরপ্রহার মঞ্চ’৷

কারণ, উনাকে মারা আর অপবাদ ছড়ানো ছাড়া এদের আর কোনো কাজ আছে বলে তো মনে হয় না!শুনেন, ধর্মের মতো মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে অতীতেও অপকর্ম হয়েছে, এখনো আপনারা করছেন৷ কিন্তু ভন্ড ধর্মব্যবসায়ীদের মতো আপনারা যারা মুক্তিযুদ্ধজীবী, অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধ বেচে খান, তারা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার মতো শক্তিশালী হলেও আয়ু খুব সীমিত৷ তবে এ ধরনের মঞ্চকে জানতে হলে তার অধিকারীকে চিনতে হয়, ক্ষুদ্র আমার কী আর তাকে চেনা সম্ভব হবে?

ছাত্রলীগের আলাপে ফিরে আসি৷ বুয়েট ছাত্র আবরারকে পিটিয়ে মেরেছেন বেশি দিন হয় নাই৷ সেটি একটি দুর্ঘটনা বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা, এরকম বলার সুযোগ আপনারা নিশ্চয়ই আর দিতে চান না? আপনারা নিশ্চয়ই বলতে চান, আবরারকে মারা হয়েছে, লাইনে না এলে তোমাদেরও তাই করা হবে৷

তারপর সবার পিঠ দিয়ে নেমে যাবে ভয়ের স্রোত এবং মাঠে থাকবেন শুধু আপনারা৷ তারপরও নিশ্চয়ই আপনারা থামবেন না৷ পার্থক্য, শুধু আপনারা তখন মারবেন নিজেদের৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে কেউ যদি বুঝিয়ে থাকে যে, ম্যাকিয়াভেলির প্রিন্স-এর আদলে একটা ভয়ের সংস্কৃতিতে দেশ শাসন করা সহজ, তবে তারা সফল, সন্দেহ নেই৷

তবে ইতিহাস আপনাকে সফল বলবে কিনা সে সংশয় কিন্তু রয়েই যায়৷ আমার নিবেদন, নুর নয়, যারা নুরকে মারছে তারাই আপনার শত্রু৷ সময় থাকতে তাদের চিনে রাখুন, ব্যবস্থা নিন৷

সূত্রঃ ডয়চে ভেলে।

আবরার হত্যাকাণ্ড, বিচার চায় জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক টুডেঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ নির্মমভাবে হত্যার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার চায় জাতিসংঘ।

বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস-বিস) মিলনায়তনে ডিক্যাব টকে এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো। এ বিষয়ে জাতিসংঘ থেকে একটি বিবৃতিও দেয়া হয়েছে বলেও জানান মিয়া সেপ্পো।



“এটি একটি দুঃস্বপ্ন। কোনো অভিভাবক চান না, তার সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এভাবে মারা যাক।”



আবরার ফাহাদ হত্যা সম্পর্কে মিয়া সেপ্পো বলেন, “এটি একটি দুঃস্বপ্ন। কোনো অভিভাবক চান না, তার সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এভাবে মারা যাক। এ মৃত্যুর পর মানুষের ক্ষোভ দেখেছি আমরা। এ হত্যার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার চায় জাতিসংঘ।’

এ হত্যাকাণ্ডে এর আগে বিস্মিত ও মর্মাহত হওয়ার কথা জানিয়ে বিবৃতি দেয় যুক্তরাজ্য।

ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দফতর থেকে বুধবার (০৯ অক্টোবর) দুপুরে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবাধ মতপ্রকাশের অভিযোগে বুয়েটের এক তরুণ শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘ নিন্দা জানাচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে অভিযুক্তদের বিচার না করায় বাংলাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে সহিংসতায় অনেকেই প্রাণ দিয়েছেন। জাতিসংঘের বাংলাদেশ দফতর লক্ষ্য করছে, অভিযুক্তদের ধরার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে। এর ফলে স্বাধীন তদন্তকারীরা একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে স্বচ্ছ বিচারের পথে যাবেন, যা ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সহায়ক হবে।

অপরদিকে আবরার ফাহাদ হত্যায় শোক জানিয়েছে জার্মানি। পাশাপাশি মত প্রকাশের স্বাধীনতা লঙ্ঘন শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেও মনে করেছে দেশটি। ঢাকায় অবস্থিত দেশটির দূতাবাস নিজেদের ফেসবুজ পেজে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।

প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৩ টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হল থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুমে থাকতেন। কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামের বরকত উল্লাহ ছেলে ফাহাদ বাড়ি থেকে রবিবারই হলে ফেরেন।

দ্য ক্যাম্পাস টুডে।

অসংখ্য স্বপ্নের অপমৃত্যু

অসংখ্য স্বপ্নের অপমৃত্যু
সাইফুল্লাহ মাহফুজ



আমি আর বেঁচে নাই মা।
সন্দেহে, ধোঁয়া ধোঁয়া মাঝরাতে
ওরা আমাকে পিটিয়ে মেরেছে।
বাবাকেও বলে দিও।
আমি আর বেঁচে নেই।
এখন আমি মৃত।



চড়, কিল, ঘুষি
অকথ্য, অশ্রাব্য গালাগালি
ধাতব কিছুর আঘাত
ইত্যাদি ইত্যাদি

নানাবিধ উপায় উপকরণে
তিলে তিলে
অনেকগুলো মানুষের সন্তান
আমাকে পিঁপড়ে ভেবে
পিষে মেরে ফেলেছে।



যে হল ছিল আমার বাড়ি
আমার মত মধ্যবিত্ত ছাত্রের
স্বর্গরাজ্য যে আবাস
সেইখানে ওরা আমাকে শেষ করে দিলো।

অথচ ওরা ছিল আমার ভাই।
হলের সিঁড়িতে উঠতে নামতে দেখা হতো দোতলার ল্যান্ডিং এ
সাইকেল নিতে গিয়ে সালাম ঠুকেছি অনেককে।
টিভিরুমে জড়িয়ে ধরেছিলাম একজনকে
সেবার বাংলাদেশ জেতার পরে।

ক্যান্টিনেও দেখা হত।
খাবার সময় এগিয়ে দিয়েছি ডালের গামলা।
কখনো ওদের কেউ আমাকে লবণের কৌটো এগিয়ে দিয়েছে
অথবা হলের সেলুনে অগ্রজ বলে
বেশ কয়েকবারই আমি ছেড়ে দিয়েছিলাম আমার সিরিয়াল।

এমনকি একজনকে একটি টিউশনি দিয়েছিলাম।
উনি বলেছিলেন,
বেতন পেলে আমাকে পুরাণ ঢাকায় খাওয়াবেন।
সেই দিন কখনো আসেনি।
এখন তো আর সম্ভব নয় সেসব।



ওদের হয়তো এসব মনে ছিল না।
আসলে ওরকম সময়ে কারো কিছু মনে থাকে না।
ওরকম সময়ে চোখে ভাসে হায়েনার হাসি
শরীরে ভর করে আসুরিক শক্তি

ধরাকে সরা মনে হয়
তাই তিলকে তাল বানাতে
লাগে না একটুকু সময়।

হিংস্রতায় কে কাকে হার মানাবে
কে কোন পোস্ট পজিশনে যাবে
তার অলীক কল্পনায়
আমি যে ওদের কত কাছের ছিলাম
তা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলো বোধ হয়।

না হলে একি ঘরে থেকে
একি টেবিলে খেয়ে
একি রিডিং রুমে পড়ে
একি ক্লাসে ক্লাস করে
এইভাবে ওরা আমাকে
একটি সাপের মতো
পিটিয়ে মারতে পারতো না।



তুমি নিজেকে সামলে নিও মা।
ছোটোনকে বলবে গনিতে মন দিতে
গণিতে ও বড্ড কাচা।

দুইয়ের সাথে দুই যোগ করে
পাঁচ বানালে চলবে কি করে?
আমার যত সার্কিট আর হাবিজাবি
বই, সব এখন থেকে ওর।

বাবাকে ওষুধ দিও নিয়ম মত।
তুমি বড় ভুলোমনা।
এবার আসার সময় নাড়ু দিতে চেয়েও
শেষ বেলায় নাকি তোমার মনে ছিল না।

যে আমি তোমাকে সব মনে করিয়ে দিতাম।
সেই আমিই এখন গত।
নিজ থেকে সব কিছু সামলে নিও।



টিউশনির টাকাটা আর পাঠানো হবে না।
তোমার নষ্ট সেলাই মেশিনটা ঠিক করে
দেখো কিছু উপরি আয় হয় কিনা।
ছোটনের মাষ্টারটা খুব ভালো।

ওকে ছাড়িও না।
আর পাড়ার মোনা কে জানিও
আমি আর কখনো আসবো না
কিভাবে এ কথা বলবে জানি না।
তবে তার একটা ব্যাখ্যা পাওয়ার অধিকার আছে মনে হয়।



কখনো যদি আমার জন্যে সংবাদ সম্মেলন ডাকে কেউ
মাইক ধরে কেঁদে ফেলো না।
শরীরের সব শক্তি কণ্ঠে এনে
দৃপ্তস্বরে মানুষকে জানিয়ে দিও

“পদ, পদবী ও পদকের মোহে
নিত্য দুর্জনের পা চেটে
স্বজ্ঞানে
সুখের নামে
অন্তহীন লোভের নরক যন্ত্রণায়
আপনারা সবাই ফেঁসে যাচ্ছেন।”

এরপর আর একটা কথাও না বলে
ফিরে এসো ঘরে।



বাবা আর ছোটনকে জড়িয়ে
অনেক বেশি করে কেঁদে নিও।
মানুষের সামনে কেঁদো না।
আসলে মানুষ কোথায়?

কে তোমাকে বুঝবে?
কত মা ই তো সন্তান হারাচ্ছে
অথবা সন্তানেরা সম্ভ্রম হারাচ্ছে
এই সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।

এজন্যে কেঁদে কেটে লাভ নেই।
অনেক কথা বলে ফেলেছি।
আসলে এ যাত্রা বেশ লম্বা।
জানিনা শেষ হবে কোথায়।

আমি এখন যাই।
আমার মতো আর অনেকে
এপারে আছে বলে মনে করি।
ওদের সাথে এখনি ভাব করি।

এপারে আমি আর মরতে চাই না।
এইপারে আমি মানুষ হতে চাই।
মানুষের মত মাতা উঁচু করে
বিশাল বিরাট একটি বিপ্লব হয়ে উঠতে চাই।



আর তাই, তুমি জেনো;
সন্দেহে, ধোঁয়া ধোঁয়া মাঝরাতে
ওরা আমাকে পিটিয়ে মেরেছে।
বাবাকেও বলে দিও।
আমি আর বেঁচে নেই মা।
এখন আমি মৃত।



৭ অক্টোবর, ২০১৯
কেলৌনা, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, কানাডা।