ভাষা কাকে বলে? বাংলা ভাষার কয়টি রূপ ও কী কী?

ভাষা কাকে বলে? বাংলা ভাষার কয়টি রূপ ও কী কী?

ভাষা : বাগযন্ত্রের দ্বারা উচ্চারিত অর্থবোধক ধ্বনির মাধ্যমে মানুষের মনোভাব প্রকাশ করাকে ‘ভাষা’ বলে ৷

বাংলা ভাষার প্রকারভেদ-

প্রতিটি সচল ও শুদ্ধ ভাষার মতো বাংলা ভাষারও দুটো রূপ :
(ক) মৌখিক ও (খ) লৈখিক ৷

মৌখিক ভাষার আবার দুটো রূপ :
(ক) মান মৌখিক ভাষা ও (খ) আঞ্চলিক মৌখিক ভাষা।

লৈখিক ভাষারও দুটো রূপ :
(ক) সাধু ভাষা ও (খ) চলিত ভাষা ।

(ক) মান মৌখিক ভাষা : পরিমার্জিত ও সার্বজনীন মৌখিক ভাষাকে ‘মান মৌখিক ভাষা’ বলে ।
(খ) আঞ্চলিক মৌখিক ভাষা : বিভিন্ন অঞ্চলের কথ্যরীতির ভাষা আঞ্চলিক মৌখিক ভাষার অন্তর্ভুক্ত।

(ক) সাধু ভাষা : যে ভাষা প্রধানত তৎসম শব্দবহুল, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদসমূহ অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ অনেকটা গুরুগম্ভীর ও কৃত্রিম তাকেই সাধু ভাষা বলে ।
(খ) চলিত ভাষা : অ-তৎসম শব্দবহুলতা, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের অপেক্ষাকৃত সংক্ষিপ্ত রূপ তাকেই চলিত ভাষা বলে।

ব্যাকরণ কাকে বলে? ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করো।

ব্যাকরণ (বি+আ+কৃ+অন) শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হলো বিশেষভাবে বিশ্লেষণ ।

যে শাস্ত্রে কোনো ভাষার বিভিন্ন উপাদানের মৌল প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার-বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয় ও তার প্রয়োগবিধি বিশদভাবে আলোচিত হয়, তাকে ‘ব্যাকরণ’ বলে।

ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ব্যাকরণের সংজ্ঞার্থ দিয়েছেন এভাবে ১৮৯০-১৯৭৭), “যে বিদ্যার দ্বারা কোনো ভাষাকে বিশ্লেষণ করিয়া তাহার স্বরূপটি আলোচিত হয় এবং সেই ভাষার পঠনে ও লিখনে এবং তাহাতে কথোপকথনে শুদ্ধরূপে তাহার প্রয়োগ করা যায়, সেই বিদ্যাকে সেই ভাষার ব্যাকরণ বলে।”

ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা
এ কথা অনস্বীকার্য যে, ভাষা সম্বন্ধে পরিপূর্ণ জ্ঞান লাভ করতে সেই ভাষার ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

  • ব্যাকরণকে বলা হয় ভাষার সংবিধান, সুতরাং ভাষার মৌলিক স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ে ব্যাকরণ পাঠ অত্যাবশ্যক।
  • একটি ভাষার সামগ্রিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য সেই ভাষার ব্যাকরণ পাঠ অপরিহার্য।
  • ব্যাকরণ পাঠের মধ্য দিয়ে একটি ভাষার বিভিন্ন উপাদানের গঠন প্রকৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করা যায়।
  • ব্যাকরণ সম্বন্ধে যথাযথ জ্ঞান না থাকলে ভাষা ব্যবহারে বিশুদ্ধতা রক্ষা করা অসম্ভব।
  • একটি ভাষার উপযুক্ত প্রয়োগবিধি কেবল সেই ভাষার ব্যাকরণ পাঠের মধ্য দিয়েই অর্জন করা যায়।
  • সাহিত্যের সামগ্রিক রস আস্বাদনের জন্য ব্যাকরণ পাঠ অপরিহার্য।
  • ব্যাকরণ পাঠের মাধ্যমে ভাষার অভ্যন্তর শৃঙ্খলা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়।

সমাস নবম শ্রেণি – বাংলা ২য় পত্র

সমাস ক. দ্বন্দ্ব সমাসের খ. কর্মধারয় সমাসের গ. তৎপুরুষ সমাসের ঘ. বহুব্রীহি সমাসের

১১. দ্বিগু সমাসকে কোন সমাসের অন্তর্ভুক্ত বলে মন্তব্য করা হয়?
ক. দ্বন্দ্ব সমাসের
খ. কর্মধারয় সমাসের
গ. তৎপুরুষ সমাসের
ঘ. বহুব্রীহি সমাসের

১২. দ্বিগু সমাসকে অনেক ব্যাকরণবিদ কোন সমাসের অন্তর্ভুক্ত করেছেন?
ক. তৎপুরুষ খ. দ্বন্দ্ব
গ. কর্মধারয় ঘ. অব্যয়ীভাব

১৩. প্রতিটি পদের অর্থ প্রাধান্য পায় কোন সমাসে?
ক. নিত্য সমাস খ. দ্বন্দ্ব সমাস
গ. বহুব্রীহি সমাস ঘ. তৎপুরুষ সমাস

১৪. ‘জমা-খরচ’ সমস্তপদটির সঠিক ব্যাসবাক্য কোনটি?
ক. জমা খরচ খ. জমাকে খরচ
গ. জমা হতে খরচ ঘ. জমা ও খরচ

১৫. কোন সমাসে সমস্যমান পদের বিভক্তি লোপ পায় না?
ক. অলুক খ. নিত্য
গ. প্রাদি ঘ. উপপদ

১৬. বিশেষণের সঙ্গে বিশেষ্যের যে সমাস হয়, তাকে কী বলে?
ক. দ্বন্দ্ব খ. বহুব্রীহি
গ. তৎপুরুষ ঘ. কর্মধারয়

১৭. কর্মধারয় সমাসের কোন পদ প্রধান?
ক. অন্যপদ খ. উভয় পদ
গ. পূর্বপদ ঘ. পরপদ

১৮. দুটি বিশেষণ পদে একটি বিশেষ্যকে বোঝালে কোন সমাস হয়?
ক. দ্বিগু খ. কর্মধারয়
গ. দ্বন্দ্ব ঘ. তৎপুরুষ

১৯. ‘নীল যে পদ্ম = নীলপদ্ম’ কোন সমাস?
ক. দ্বিগু সমাস খ. প্রাদি সমাস
গ. বহুব্রীহি সমাস ঘ. কর্মধারয় সমাস

২০. মহাকীর্তির সঠিক ব্যাসবাক্য কোনটি?
ক. মহান কীর্তি যার খ. মহা যে কীর্তি
গ. মহতী যে কীর্তি ঘ. মহান যে কীর্তি

সঠিক উত্তর
সমাস: ১১.খ ১২.গ ১৩.খ ১৪.ঘ ১৫.ক ১৬.ঘ ১৭.ঘ ১৮.খ ১৯.ঘ ২০.গ

মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষক, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা

 

বাংলা ১ম পত্র এইচএসসি- পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি

বাংলা ২য় পত্র – পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি

বাংলা ২য় পত্রের ব্যাকরণ অংশের অন্তর্গত ধ্বনিতত্ত্ব, ধ্বনির পরিবর্তন ও সন্ধি থেকে আজ নির্বাচিত কিছু প্রশ্ন দেওয়া হলো। আমরা ধারাবাহিকভাবে এ আলোচনা ও অনুশীলনী প্রকাশ করব।

১. বাংলা বর্ণমালায় মাত্রাহীন বর্ণ কয়টি?
A. ৮টি
B. ১০টি
C. ৯টি
D. ১১টি

২. কোনগুলো বর্গীয় বর্ণ নয়?
A. চ, ছ, জ,ঝ,ঞ
B. ত, থ, দ, ধ, ন
C. ট, ঠ, ড, ঢ, ণ
D. য, র, ল, শ, ষ

৩. বাক্যতত্ত্বের অপর নাম কী?
A. শব্দক্রম
B. ধ্বনিক্রম
C. পদক্রম
D. অর্থক্রম

৪. বাংলা ভাষায় মৌলিক স্বরধ্বনি কয়টি?
A. ৭টি
B. ৮টি
C. ৯টি
D. ১০টি

৫. বাংলা বর্ণমালার ‘পরাশ্রয়ী’ বর্ণ কয়টি?
A. ২টি
B. ৩টি
C. ৪টি
D. ৫টি

৬. কোনটি যুগ্ম স্বরধ্বনি?
A. উ
B. ঋ
C. এ
D. ঐ

৭. ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে কী বলে?
A. ফলা
B. কার
C. অক্ষর
D. ধ্বনিমূল

৮. তালব্য ও নাসিক্য বর্ণ কোনটি?
A. ঙ
B. ঞ
C. গ
D. ম

৯. কোনটি মৌলিক স্বরধ্বনি?
A. ঔ
B. ই
C. ঐ
D. সব কটি

১০. কোনটি ‘বিষমীভবন’-এর উদাহরণ?
A. লাফ>ফাল
B. লাল > নাল
C. কবাট>কপাট
D. লগ্ন>লগ্গ

বাংলা ২য় – পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি

বাংলা ২য় পত্রের ব্যাকরণ অংশের অন্তর্গত উচ্চারণ ও বানান থেকে আজ নির্বাচিত কিছু প্রশ্ন দেওয়া হলো। আমরা ধারাবাহিকভাবে এ আলোচনা ও অনুশীলনী তোমাদের জন্য প্রকাশ করব।

০১. ‘সুদৃষ্টি’ শব্দের প্রমিত উচ্চারণ কোনটি?
ক. সুদৃশিট খ. শুদৃস্টি
গ. শোদৃশিট ঘ. শুদৃশ্‌টি

০২. ‘আহ্বান’ শব্দের প্রমিত উচ্চারণ কোনটি?
ক. আহোব্বান্ খ. আহোভান
গ. আউভান্ ঘ. আওভান

০৩. ‘জিহ্বা’ শব্দের উচ্চারণ কোনটি?
ক. জিওবা খ. জিউভা
গ. জিব্বা ঘ. জিবহা

০৪. ‘অপ্রতুল’ শব্দের সঠিক উচ্চারণ কোনটি?
ক. ওপেপ্রাতুল খ. অপ্রোতুল
গ. অপ্‌প্রোতুল ঘ. অপোপরতুল

০৫. ‘অধ্যাপক’ শব্দের প্রমিত উচ্চারণ কোনটি?
ক. অদ্ধাপক খ. অদ্ধাপোক
গ. ওদ্ধাপোক্ ঘ. ওধ্ধাপোক্
০৬. ‘তীব্র’ শব্দটির সঠিক উচ্চারণ কোনটি?
ক. তীবেবা খ. তিব্‌ব্রো
গ. তিবেরা ঘ. তীব্রো
০৭. ‘অক্ষর’ শব্দের কোন উচ্চারণটি শুদ্ধ?
ক. ওক্‌খোর্ খ. অক্খোর
গ. ওক্খর ঘ. অক্খর

০৮. উচ্চারণের একককে কী বলা হয়?
ক. অক্ষর খ. অনুসর্গ
গ. উপসর্গ ঘ. ধ্বনি
০৯. ‘সন্ধ্যা’ শব্দের প্রমিত উচ্চারণ কোনটি?
ক. সন্ধা খ. শন্ধা
গ. শোন্ধা ঘ. সণ্ধা
১০. শুদ্ধ বানানে লেখা নয় কোনটি?
ক. ক্ষণজীবি খ. প্রণয়ন
গ. ধারণ ঘ. নিরীক্ষণ

১১. শুদ্ধ বানানে লিখিত শব্দগুচ্ছ কোনটি?
ক. সমীচীন, হরিতকি, বাল্মিকী

খ. সমীচীন, হরীতকী, বাল্মীকি

গ. সমীচীন, হরিতকি, বাল্মীকি

ঘ. সমীচীন, হরিতকী, বাল্মীকী

১২. কোনটি শুদ্ধ?
ক. পুননির্মান খ. পুননির্মাণ
গ. পুনঃনির্মান ঘ. পুনর্নির্মাণ
১৩. কোনটি শুদ্ধ?
ক. সৌজন্যতা খ. সৌজন্নতা
গ. সৌজন্য ঘ. সৌজন্যাতা
১৪. শুদ্ধ বানান কোনটি?
ক. মুহমহু খ. মুহুর্মুহু
গ. মূহর্মূহ ঘ. মুহর্মুহু
১৫. শুদ্ধ বানান কোনটি?
ক. পরজিবী খ. সহযোগীতা
গ. তৃর্ণভোজী ঘ. বুদ্ধিজীবী

১৬. নিচের কোন বানানটি শুদ্ধ?
ক. সৌজন্যতা খ. প্রতিযোগিতা
গ. মিতালী ঘ. সহযোগীতা
১৭. কোন বানানটি শুদ্ধ?
ক. শ্রদ্ধাঞ্জলী খ. দরিদ্রতা
গ. পরিস্কার ঘ. আবিস্কার
১৮. সঠিক বানান কোনটি?
ক. পিপিলিকা খ. পিপীলিকা
গ. পীপিলিকা ঘ. পিপীলীকা
১৯. নিচের কোন শব্দটি নির্ভুল?

ক. উপর্যুক্ত খ. উপরম্নক্ত
গ. উপরিক্ত ঘ. উপরিযুক্ত
২০. নিচের কোন গুচ্ছ অশুদ্ধ বানানের দৃষ্টান্ত?
ক. আকাঙ্ক্ষা, স্বায়ত্তশাসন খ. পরিপক্ব, মরূদ্যান গ. শ্রদ্ধাঞ্জলি, মুমূর্ষ ঘ. ভিখারিনী, ত্রিভূজ

উত্তরমালা
১| ঘ. শুদৃশ্‌টি ২| গ. আউভান্ ৩| খ. জিউভা ৪| গ. অপ্‌প্রোতুল ৫| গ. ওদ্ধাপোক্ ৬| খ. তিব্‌ব্রো ৭| ক. ওক্‌খোর্ ৮| ক. অক্ষর ৯| গ. শোন্ধা ১০| ক. ক্ষণজীবি ১১| খ. সমীচীন, হরীতকী, বাল্মীকি ১২| ঘ. পুনর্নির্মাণ ১৩| গ. সৌজন্য ১৪| খ. মুহুর্মুহু ১৫| ঘ. বুদ্ধিজীবী ১৬| খ. প্রতিযোগিতা ১৭| খ. দরিদ্রতা ১৮| খ. পিপীলিকা ১৯| ক. উপর্যুক্ত ২০| ঘ. ভিখারিনী, ত্রিভূজ

রূপমূলতত্ত্ব ধ্বনিতত্ত্ব ও বাক্যতত্ত্ব

রূপমূলতত্ত্ব কি? ধ্বনিতত্ত্ব কি? বাক্যতত্ত্ব কি? আজকের এই পোস্টে রূপমূলতত্ত্ব ধ্বনিতত্ত্ব ও বাক্যতত্ত্ব কি তা জানবো।

রূপমূলতত্ত্ব কি?

রূপমূলতত্ত্ব (ইংরেজি: Morphology) নামক ভাষাবিজ্ঞানের শাখায় শব্দের (word) গঠন নিয়ে আলোচনা করা হয়।

রূপমূলতত্ত্বে শব্দের রূপ (form) ও অর্থের (meaning) মধ্যকার সম্পর্ক আলোচিত হয়। রূপমূলতাত্ত্বিকেরা শব্দকে একাধিক অর্থপূর্ণ অবিভাজ্য এককে ভাঙার চেষ্টা করেন। শব্দ গঠনকারী এই ন্যূনতম অর্থপূর্ণ এককের নাম দেয়া হয়েছে রূপমূল।

শব্দ ভাষার একটি কেন্দ্রীয় ধারণা, ফলশ্রুতিতে রূপমূলতত্ত্বের সাথে ভাষাবিজ্ঞানের অন্যান্য শাখাগুলির নিবিড় সম্পর্ক আছে। রূপমূলতত্ত্ব যেহেতু শব্দের বাহ্যিক ধ্বনিগত রূপের সাথে সম্পর্কিত, সেহেতু এটি ধ্বনিতত্ত্বের সাথেও সম্পর্কিত। এই দুই শাখার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য বিষয়গুলি রূপধ্বনিতত্ত্ব নামের শাস্ত্রে আলোচিত হয়।

রূপমূলতত্ত্ব যেহেতু শব্দের অর্থ নিয়ে আলোচনা করে, তাই অর্থবিজ্ঞানের সাথেও এর সম্পর্ক আছে। আবার রূপমূলতত্ত্বে আলোচিত সংগঠনগুলির অনেকগুলিই বাক্যের পদগুলির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের সাথে জড়িত। এই হিসেবে বাক্যতত্ত্বের সাথেও রূপমূলতত্ত্বের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। আবার রূপমূলতত্ত্বের সূত্রগুলি মেনে ভাষায় নতুন নতুন শব্দের সৃষ্টি হয় বলে অভিধানবিজ্ঞানের সাথেও শাখাটির সম্পর্ক আছে।

রূপমূলতত্ত্বের প্রধান প্রধান ধারণাসমূহ

রূপমূলতত্ত্বের প্রধান প্রধান ধারণাগুলির একটি তালিকা নীচে দেওয়া হল।
শব্দ (word)
প্রত্যয় (affix)
পশ্চাদগঠন (back formation)
যৌগীকরণ (compounding)
রূপান্তর (conversion)
অবয়বীকরণ (incorporation)
অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন (internal modification)
রূপকৌশল (morphotactics)
দ্বিত্বকরণ (reduplication)
প্যারাডাইম (paradigm)
বিভক্তি প্রকরণ (inflection)
সাধিতকরণ (derivation)
আভিধানিকীকরণ (lexicalization)
রূপমূল (morpheme)
উৎপাদনশীলতা (productivity)
প্রতিস্থাপন (suppletion)
শূন্যীকরণ (syncretism)

ধ্বনিতত্ত্ব কি?

ধ্বনিতত্ত্ব (ইংরেজি: Phonology) ভাষাবিজ্ঞানের একটি শাখা যেখানে কোন নির্দিষ্ট ভাষার ধ্বনি-ব্যবস্থা আলোচিত হয় । এতে বাক ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে সৃজিত ধ্বনির ভৌত উৎপাদন ও অনুধাবন নিয়ে আলোচনা করা হয় ।

ধ্বনিতত্ত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল একটি ভাষার স্বলক্ষণযুক্ত (distinctive) পৃথক পৃথক ধ্বনি-এককগুলি বের করা । উদাহরণস্বরূপ, ইংরেজিতে /p/ এবং /b/ দুইটি পৃথক ধ্বনি-একক । “pin” ও “bin” ন্যূনতম জোড়ে এই ঘটনাটি পরিলক্ষিত হয় , যে শব্দজোড়ে কেবল একটি ধ্বনির ক্ষেত্রে পার্থক্য ঘটেছে ।

বাক্যতত্ত্ব কি?

বাক্যতত্ত্ব (ইংরেজি: Syntax) নামক ভাষাবিজ্ঞানের শাখায় বাক্যের গঠন নিয়ে আলোচনা করা হয়। আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে একাধিক শব্দ কী নিয়মে যুক্ত হয়ে বৃহত্তর এককসমূহ (যাদের মধ্যে বাক্য প্রধানতম একক) গঠন করে এবং এই বৃহত্তর এককগুলোর বৈশিষ্ট্য কী, সেটাই বাক্যতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়।

বৃহত্তর খণ্ডবাক্য-সদৃশ (clause-like) এককে প্রদর্শিত আচরণের ওপর ভিত্তি করে শব্দসমূহের শ্রেণীবিভাগ, বাক্যের গঠনের ওপর শব্দের আভিধানিক (lexical) অর্থের প্রভাব, বিভিন্ন প্রকারের বাক্যের মধ্যকার বিধিবদ্ধ (formal) সম্পর্ক আবিষ্কার, ইত্যাদি বাক্যতাত্ত্বিকদের (syntactician) গবেষণার বিষয়।

আধুনিক বাক্যতত্ত্বে বিমূর্তায়ন (abstraction) গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারণা। ধারণা করা হয় প্রতিটি বাক্যের বহিঃস্থ ধ্বনিতাত্ত্বিক (phonetic) রূপ বা তলের (surface structure) বিপরীতে একটি গভীর সাংগঠনিক তল (deep structure) বিদ্যমান, এবং এই তলদ্বয় এক ধরনের “রূপান্তর” (transformation) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংযুক্ত।

বিশুদ্ধ তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাক্যতত্ত্বের কাজ মানুষের ভাষাবোধের একটি বিধিনির্ভর (formal) মডেল তৈরিতে সাহায্য করা। আবার শ্রেণীকরণবিদ্যার (typology) দৃষ্টিকোণ থেকে বাক্যতত্ত্বের লক্ষ্য বিভিন্ন ভাষার উপাত্ত সংগ্রহ করে তাদের মধ্যে সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য খুঁজে বের করে কিছু বর্ণনামূলক (descriptive) সাধারণ বৈশিষ্ট্য সংগ্রহ করা।

বাক্যতত্ত্বের বিধিবদ্ধ মডেল হিসেবে নোম চম্‌স্কি-র প্রস্তাবিত ‘Principles and Parameters’ মডেলটি বর্তমান বাক্যতাত্ত্বিকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়।

উপসর্গ কাকে বলে? উপসর্গ কত প্রকার ও কি কি?

বাংলা ভাষায় বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় শব্দ থেকে নতুন শব্দ তৈরি হয়। উপসর্গ নতুন শব্দগঠনের একটি প্রক্রিয়া। উপসর্গগুলো বাংলাভাষার শব্দভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করেছে। বাংলা ব্যাকরণে কিছু শব্দাংশ ব্যবহৃত হয় যাদের কোনো নিজস্ব অর্থ নেই। কিন্তু নিজস্ব অর্থ না থাকলেও এদের অর্থদ্যোতকতা আছে। অর্থাৎ এই শব্দাংশগুলি অন্য শব্দের পূর্বে বসে শব্দগুলির অর্থের সংকোচন, প্রসারণ, পরিবর্ধন, পরিবর্তন সবই করতে পারে।উপসর্গ কাকে বলে? উপসর্গ কত প্রকার ও কি কি?

এভাবে এই শব্দগুলি বাংলা ভাষায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন শব্দ তৈরিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে। এই অর্থবিহীন শব্দাংশগুলোকে উপসর্গ বলা হয়। তবে কোন উপসর্গগুলি কোন শব্দের সঙ্গে যুক্ত হবে সে বিষয়ে বাংলা ব্যাকরণে রয়েছে সুনির্দিষ্ট নিয়ম ও বিধিমালা। এই পোস্টে বাংলা ভাষায় প্রচলিত উপসর্গের সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ও প্রয়োগবিধি আলোচনা করা হয়েছে।

উপসর্গ কাকে বলে ?
উপসর্গ হলো কতগুলো বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি। যা স্বাধীন পদ হিসেবে বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে না, ধাতু বা শব্দের পূর্বে বসে নতুন শব্দ গঠন করে, তাদের উপসর্গ বলা হয়। উপসর্গ কাকে বলে? উপসর্গ কত প্রকার ও কি কি?
অন্যভাবে বলা যায়, বাংলা ভাষায় যেসব অব্যয়সূচক শব্দাংশ ধাতুর পূর্বে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে বিভিন্ন অর্থের সৃষ্টি করে, তাকে উপসর্গ বলে।
বাংলা ব্যাকরণে কতগুলো অব্যয়বাচক শব্দাংশ আছে যার নিজস্ব কোন অর্থ নেই কিন্তু অন্য শব্দের পূর্বে বসে সেই শব্দটিকে নতুন শব্দে পরিণত করে, এগুলোকেই উপসর্গ বলে।

যেমন- উপ + হার = উপহার, বি + হার = বিহার, প্র+ হার = প্রহার ইত্যাদি; এখানে উপ, বি, এ হলো উপসর্গ।

উপসর্গ শব্দের পূর্বে বসে শব্দের অর্থকে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে। ফলে বাংলা ভাষার শব্দগঠনে উপসর্গের ভূমিকা রয়েছে।

উপসর্গ ব্যবহারের ফলে শব্দে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হয়।
১. নতুন শব্দ গঠন করে।
২. শব্দের অর্থের পরিবর্তন ঘটায়।
৩. অর্থের বিশিষ্টতা দান করে।
৪. অর্থের সঙ্কোচন ঘটায়।
৫. অর্থের সম্প্রসারণ ঘটায়।

নিচের উদাহরণ দিয়ে দেখানো হল উপসর্গগুলো কিভাবে নতুন শব্দ তৈরি করে:
প্র + ভাত = প্রভাত > সম্পূর্ণ ভিন্নার্থক শব্দ
প্র + গাঢ় = প্রগাঢ় > অর্থের সম্প্রসারণ
অপ + মান = অপমান > সঙ্কোচন
কদ + বেল = কদবেল > বিশিষ্টতা
পরি + পূর্ণ = পরিপূর্ণ > পূর্ণতাজ্ঞাপক।

একই শব্দ ভিন্ন উপসর্গ ব্যবহারে কিভাবে নতুন শব্দ গঠন করে নিচে দেখুন :
প্র + হার = প্রহার
বি + হার = বিহার
উপ + হার = উপহার
পরি + হার = পরিহার
অনা + হার = অনাহার

উপসর্গের বৈশিষ্ট্য :-

উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই কিন্তু অর্থদ্যোতকতা আছে। অর্থাৎ কোনো শব্দ বা পদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এরা সংযুক্ত শব্দ বা পদের অর্থের নানারকম পরিবর্তন ঘটায়। নিচে উপসর্গের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য দেয়া হলো
১. উপসর্গের নিজস্ব কোনো অর্থ নেই।
২. এরা নতুন অর্থবোধক শব্দ তৈরি করে।
৩. উপসর্গগুলো বদ্ধরূপমূল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৪. উপসর্গগুলো অর্থের সংকোচন, অর্থ পরিবর্তন, অর্থের প্রসার ঘটায়।
৫. এগুলো নামবাচক ও কৃদন্ত শব্দের পূর্বে বসে।

উপসর্গ কত প্রকার ও কি কি ?
তিন প্রকার উপসর্গ ব্যবহৃত হয়। এ তিন প্রকার উপসর্গ হলো
ক. তৎসম বা সংস্কৃত উপসর্গ
খ. বাংলা উপসর্গ ও
গ. বিদেশি উপসর্গ।

সংস্কৃত উপসর্গ কাকে বলে?
যে সংস্কৃত অব্যয়বাচক শব্দাংশগুলো শব্দের পূর্বে বসে শব্দের অর্থের পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করে এই শব্দাংশগুলোকেই সংস্কৃত উপসর্গ বলে।
বাংলা ভাষায় মোট কুড়িটি সংস্কৃত উপসর্গ রয়েছে। এগুলো হল: প্র, পরা, অপ, সম, নি, অব, অনু, নির, দূর, বি, অধি, সু, উৎ, পরি, প্রতি, অভি, অতি, অপি, উপ, আ।

বাংলা উপসর্গ কাকে বলে?
যে বাংলা অব্যয়বাচক শব্দাংশগুলো শব্দের পূর্বে বসে অর্থবোধক নতুন শব্দ গঠন করে তাকে বাংলা উপসর্গ বলে।
খাঁটি বাংলা উপসর্গ মোট ২১টি। উপসর্গগুলো হল: অ, অনা, অঘা, অজ, আ, আড়, আন, আব, ইতি, উন, কদ, কু, নি, পাতি, বি, ভর, রাম, স, সু, ব, হা।

বিদেশি উপসর্গ?
যে সব বিদেশী উপসর্গ শব্দের পূর্বে বসে নতুন শব্দ গঠন করে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত এই উপসর্গসমূহকে বিদেশী উপসর্গ বলে।
বাংলা ভাষায় বহু বিদেশী উপসর্গ রয়েছে।

পরিশেষে বলা যায়, উপসর্গগুলোর নিজস্ব কোন অর্থ বাংলা উপসর্গ কাকে বলে? বাংলা উপসর্গের বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ? কিন্তু শব্দের পূর্বে বসে শব্দের অর্থের পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে। ফলে একই শব্দ থেকে বিভিন্ন শব্দ তৈরি হয়। ফলে ভিন্নার্থক এবং বিশিষ্টার্থক নতুন নতুন শব্দ তৈরি করে বাংলা ভাষার শব্দ ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। এজন্যেই বলা হয়, “উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই কিন্তু অর্থদ্যোতকতা আছে।” উপসর্গ কাকে বলে? উপসর্গ কত প্রকার ও কি কি?

বাংলা উপসর্গ কাকে বলে? বাংলা উপসর্গের বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ?

বাংলা উপসর্গ কাকে বলে? বাংলা উপসর্গের বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ?

বাংলা উপসর্গ কাকে বলে?

বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডারের বহু অসংস্কৃত শব্দে সংস্কৃত উপসর্গের মত কতগুলো অব্যয়বাচক শব্দাংশ শব্দের আগে ব্যবহৃ হতে দেখা যায়। এই শব্দাংশগুলোর স্বতন্ত্রভাবে তেমন কোন অর্থ প্রকাশ করে না; কিন্তু অর্থযুক্ত শব্দের পূর্বে বসে নতুন শব্দ গঠন করতে সাহায্য করে। এই অব্যয়বাচক শব্দাংশগুলোকে বাংলা উপসর্গ বলে।

যে বাংলা অব্যয়াবাচক শব্দাংশগুলো শব্দের পূর্বে বসে অর্থবোধক নতুন শব্দ গঠন করে তাকে বাংলা উপসর্গ বলে।
যেসব অব্যয় জাতীয় শব্দ বা শব্দাংশ বাংলা শব্দের পূর্বে বসে নতুন শব্দ গঠন করে তাদেরকে বাংলা উপসর্গ বলা হয়।

বাংলা উপসর্গের বৈশিষ্ট্য-

১. বাংলা উপসর্গগুলোকে খাঁটি বাংলা উপসর্গ নামে অভিহিত করা হয়।
২. বাংলা ভাষায় কিছু অব্যয় জাতীয় শব্দ স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হয় না।
৩. এগুলো সাধারণত নাম শব্দের পূর্বে যুক্ত হয়।

৪. এদের খাঁটি বাংলা উপসর্গ বলা হয়।

বাংলা উপসর্গ একুশটি। এগুলি হলো – অ, অঘা, অজ, অনা, আ, আড়, আন, আব, ইভি, ঊনা, কদ, কু, নি, পাতি, বি, ভর, রাম, স, সা, সু, হা।

১. অ-অকাজ তার এরকম অকাজ আমি পছন্দ করি না।
২. আ-আগাছা আগাছা পরিষ্কার মানুষ রোবট আবিষ্কারের কথা ভাবছে।
৩. অনা-অনাবৃষ্টি : এবার অনাবৃষ্টির কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
৪. আন-আনকোরা রহমান সাহেব আজ আনকোরা পাঞ্জাবি পরে অফিসে যাচ্ছে।
৫. অজ-অজপাড়াগাঁ অজপাড়াগাঁয়ের মুস্তাফিজুর রহমান এখন ক্রিকেটের বিস্ময়।

৬. পাতি-পাতিনেতা পাতিনেতারা এখন দলের জন্য হুমকিস্বরূপ।
৭. নি-খরচা কাজের জন্য টাকা প্রয়োজন হয়, নিখরচে চলে না।
৮. রাম-রামছাগল তার মত রামছাগল দিয়ে এরূপ মহৎ কাজ অসম্ভব।
৯. বি-বিকল এই গাড়ির ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেছে।
১০. হা- হাভাতে হাড়- হাভাতের দল এখানে এসেছে আমাকে ভীষণ বিপদে ফেলেছে।

রূপমূলতত্ত্ব কি

রূপমূলতত্ত্ব কি? রূপমূলতত্ত্ব হল ভাষাবিজ্ঞানের একটি শাখা যা শব্দের গঠন এবং অর্থের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে। বাংলা রূপমূলতত্ত্বে, বাংলা ভাষার শব্দগুলিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়:

মূল শব্দ: মূল শব্দগুলিকে আরও ছোট শব্দে বিভক্ত করা যায় না। যেমন: “পড়া”, “লেখ”, “ভালো”
সমাস শব্দ: সমাস শব্দগুলি দুটি বা ততোধিক শব্দের সংযোগে গঠিত হয়। যেমন: “পড়াশোনা”, “লেখাপড়া”, “ভালোবাসা”
উপসর্গ শব্দ: উপসর্গ শব্দগুলি মূল শব্দের আগে যুক্ত হয়ে নতুন অর্থ প্রকাশ করে। যেমন: “অতি + বৃষ্টি = অতিবৃষ্টি”, “উপ + প্রচার = উপপ্রচার”

মূল শব্দ

মূল শব্দগুলি বাংলা ভাষার সবচেয়ে মৌলিক অংশ। এগুলিকে আরও ছোট শব্দে বিভক্ত করা যায় না। মূল শব্দগুলিকে তাদের অর্থের ভিত্তিতে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন:

নাম শব্দ: নাম শব্দগুলি কোনো ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, গুণ, অবস্থা ইত্যাদিকে নির্দেশ করে। যেমন: “ছাত্র”, “বই”, “ঘর”, “সুন্দর”, “হাস্য”
ক্রিয়া শব্দ: ক্রিয়া শব্দগুলি কোনো কাজ, অবস্থা বা ঘটনাকে বোঝায়। যেমন: “পড়া”, “লেখ”, “আসা”, “যাওয়া”, “হওয়া”
বিশেষণ শব্দ: বিশেষণ শব্দগুলি কোনো নাম শব্দের গুণ, অবস্থা বা পরিমাণকে বোঝায়। যেমন: “বড়”, “ছোট”, “সুন্দর”, “ভাল”, “খারাপ”
সর্বনাম শব্দ: সর্বনাম শব্দগুলি কোনো নাম শব্দের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়। যেমন: “আমি”, “তুমি”, “সে”, “এটা”, “ওটা”
অব্যয় শব্দ: অব্যয় শব্দগুলি কোনো নাম, বিশেষণ বা ক্রিয়া শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে বাক্যের অর্থকে পরিবর্তন করে। যেমন: “এটা”, “সেটা”, “তাই”, “না”, “হ্যাঁ”

সমাস শব্দ

সমাস শব্দগুলি দুটি বা ততোধিক শব্দের সংযোগে গঠিত হয়। সমাস শব্দগুলিকে তাদের অর্থের ভিত্তিতে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন:

দ্বন্দ্ব সমাস: দ্বন্দ্ব সমাস হল দুটি সমপর্যায়ের শব্দের সংযোগে গঠিত সমাস। যেমন: “পড়া + শোনা = পড়াশোনা”, “লেখ + পড়া = লেখালেখি”
কর্মধারয় সমাস: কর্মধারয় সমাস হল একটি শব্দের দ্বারা অন্য একটি শব্দের কর্মের সম্পর্ক প্রকাশ করে গঠিত সমাস। যেমন: “পড়া + যায় = পড়াশোনা”, “লেখ + যায় = লেখালেখি”
অব্যয়ীভাব সমাস: অব্যয়ীভাব সমাস হল একটি শব্দের দ্বারা অন্য একটি শব্দের অবস্থা বা গুণের সম্পর্ক প্রকাশ করে গঠিত সমাস। যেমন: “অতি + বৃষ্টি = অতিবৃষ্টি”, “উপ + প্রচার = উপপ্রচার”
উপসর্গ শব্দ

উপসর্গ শব্দগুলি মূল শব্দের আগে যুক্ত হয়ে নতুন অর্থ প্রকাশ করে। উপসর্গ শব্দগুলিকে তাদের অর্থের ভিত্তিতে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন:

অব্যয়ীভাব উপসর্গ: অব্যয়ীভাব উপসর্গগুলি মূল শব্দের অবস্থা বা গুণের সম্পর্ক প্রকাশ করে। যেমন: “অতি + বৃষ্টি = অতিবৃষ্টি”, “উপ + প্রচার = উপপ্রচার”
কারক উপসর্গ: কারক উপসর্গগুলি মূল শব্দের সাথে একটি নির্দিষ্ট কারকের সম্পর্ক প্রকাশ করে। যেমন: “অভি + লেখক = অভিলেখক”, “উপ + লেখক = উপলেখক”
অনুকারী উপসর্গ: অনুকারী উপসর্গগুলি মূল শব্দের সাথে একটি অনুকার প্রকাশ করে। যেমন: “অনু + বল = অনুবল”, “উপ + বল = উপবল”

বাংলা রূপমূলতত্ত্ব একটি জটিল বিষয়।