ভার্সিটি জীবনে যে ২০ টি ভুল করবেন না

ভার্সিটি জীবনে যে ২০ টি ভুল করবেন না

১। গার্লফ্রেন্ডকে/ বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে যেখানে সেখানে ঘুরবেন না
২। পড়ার লেখার চেয়ে বন্ধু বান্দবকে প্রাধান্য দেয়া যাবেনা
৩। রুমে নয় লাইব্রেরিতে গিয়ে পড়াশুনা করুন, এতে আপনার স্টাডি সার্কেল বড় হবে
৪। সিট নয় বই কিনে পড়ুন
৫। নিজের যা আছে তার চেয়ে বেশি দেখাতে যাবেন না
৬। রাজনৈতিক বন্ধুদের সাথে বেশি হাই হ্যালো না করলেও শত্রুতা রাখবেন না

৭। নিজেকে সবার সেরা মনে করে অন্যকে ছোট করা যাবে না
৮। হলের ক্যান্টিনে বকেয়া রাখবেন না
৯। ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের সাথে দেখা হলে এড়িয়ে যাবেন না
১০। লাইব্রেরিতে পড়তে গিয়ে পড়ার চেয়ে বেশি আড্ডা দিবেন না
১১। অন্যের কক্ষে গিয়ে বেশিক্ষণ আড্ডা না দেয়াই ভালো

১২। জুনিয়রদের কাজের হুকুম না দিয়ে ভালোবাসুন, দেখবেন এমনিতেই সে আপনার প্রয়োজনে কাজে আসবে
১৩। এক শিক্ষকের বদনাম আরেক শিক্ষকের কাছে বলবেন না
১৪। দোকানে খাওয়া শেষে বিল দিতে না পারলে বলে আসুন পরে দিবেন কিন্তু না বলে আসবেন না
১৫। ধর্ম কর্ম একেবারে ছেড়ে দেয়া উচিত নয়। কারণ, দিন শেষে মনের শান্তির জন্য হলে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকা উচিত
১৬। পরীক্ষার চিন্তায় পড়াশুনা কমিয়ে দিবেন না

১৭। পরীক্ষার আগের রাতের জন্য পড়া জমিয়ে রাখবেন না
১৮। একটা কিছু হবেই, এ ভেবে ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা করা বাদ দিবেন না। প্রথম থেকে ক্যারিয়ার ভিত্তিক পড়াশুনা করতে হবে
১৯। শিক্ষকদের তোষামোদি করে ভালোবাসা নয়, মেধা দিয়ে ভালোবাসা অর্জন করুন
২০। ক্যাম্পাসে কাউকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন না

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন: To Do or Not To Do?

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্কঃ জীবন যুদ্ধের বড় অংশ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যুদ্ধ। সবার স্বপ্ন থাকে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করবে। আবার অনেকের স্বপ্ন থাকে তার পছন্দের নির্দিষ্ট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার। স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে ১০ টি কথা মেনে চলা উচিত।

১) মনে রাখতে হবে বিশ্ববিদ‍্যালয় কেবল ক‍্যারিয়ার গড়ার জায়গা না; জীবনকে উপভোগ করতে শেখার সেরা স্থান। তাই, লক্ষ‍্য রেখ যেন ৪ বছর পর একটা সার্টিফিকেটই তোমার একমাত্র অর্জন না হয়।

২) তুমি যে বিভাগে ভর্তি হয়েছ, সেই বিভাগে পড়ে ভবিষ‍্যতে কি চাকরি করবে তা নিয়ে প্রথম বর্ষে চিন্তা করে ক্যাম্পাস জীবনের আনন্দ মাটি করবে না। একটা কথা আছে- মক্কা বহুত দূর। তাই প্রথম বর্ষে যত পারো চিল করো।

৩) তোমার ক্লাসের একদল সহপাঠী থাকবে যারা সব অজুহাতে পরীক্ষা পেছানোর ধান্দায় থাকবে। তুমি নিজে সেই দলের অংশ হয়ে যেয়ো না। পরীক্ষা কালকে সকালে হোক আর ডিসেম্বর মাসে হোক, তুমি পড়বে সেই আগের রাতেই। তাই, সময়ে সময়ে সেমিস্টারের সব মিডটার্ম দিয়ে দাও।

৪) এবার আসি সিজিপিএ নিয়ে। CGPA এর পেছনে দৌড়ালে জীবনে Excellency আসবে না। তাই, Excellency অর্জনের জন‍্য পরিশ্রম দাও, দৌড়াও। CGPA দেখবে ফ্রিতে চলে আসবে।

৫) বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থী সিজিপিএ কে জীবনের সফলতাভাবে। তাছাড়া তারা জীবনের সুখ নামক ব‍্যাপারটাকে সফলতা/ CGPA দিয়ে সংজ্ঞায়িত করে, এই ধারণা মোটেই ঠিক না। তোমার জীবনের সুখ পরিমাপ করবে বিশ্ববিদ‍্যালয় জীবনে কতগুলো স্মৃতি তৈরি করেছো তা দিয়ে।

৬) সিনিয়রদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। টিপসস হলো, কোন সিনিয়রকে রাস্তায় একা পেলে ট্রিট চেয়ে বসবা। তবে, তোমার সাথে যদি আরো ১২-১৫জন থাকে তাইলে কোন লাভ নেই। সর্বোচ্চ ৩-৫ জন খাওয়ানো যায়।

৭) এবার আসি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রেম করবা কিনা? বিশ্ববিদ‍্যালয় জীবনে প্রেম না করলে ফাল্গুন, বৈশাখ, বর্ষাবরণের অনুষ্ঠানের একটা বিশেষ স্বাদ হারাবে। তাই, এখন যৌবন যার, প্রেম করার সময় তার।

৮) বিশ্ববিদ‍্যালয় লাইফে কিছু কাজ করে অর্থ-উপার্জন করতে শিখবে। সেটা যত ছোট উপার্জন হোক না কেন। বাবা-মার কাছ থেকে আর কতদিন হাত খরচ নিবে?

৯) যত-বেশি নিজের ব‍্যক্তিগত যোগাযোগ সৃষ্টি করো। চাকরির বাজারে তোমার CGPA এর চেয়ে এখন পরিচিতি দরকার। সবাই চায় পরিচিত যোগ‍্য মানুষকে নিতে। তাই, বলবো শুধু যোগ‍্য হয়ে লাভ নেই।

১০) তোমার বিভাগের প্রত্যেক অনুষ্ঠানেই আয়োজক / পারফরমারের ভূমিকা পালন করবে। আমাদের বিভাগের সবাই বইয়ের পোক। কেউই আহামরি নাচ-গান-অভিনয় পারে না। সবাই তোমার মত! তাই, লজ্জা না পেয়ে সবাই যা করছে তাতে অংশগ্রহণ করো। বিভাগের প্রতি তাহলে একটা ভালোবাসা তৈরি হবে।

নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের গল্প

মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই যখন দেখি আমার পাশের বেডের ছেলেটার সব মিলিয়ে মাসিক খরচ মাত্র ৩০০০ টাকা । আর এই ৩০০০ টাকা কোথা থেকে আসে জানেন ? ওই দূরে কোন একটি বাসার কোন এক ছাত্র কে পড়িয়ে।

ছেলেটার বাসা সেই নিভৃত পল্লীতে । বাবা গরিব কৃষক । মাঝে মাঝে যখন ভর্তি ফি কিংবা অন্য কারনে বেশি টাকার প্রয়োজন হয় ছেলেটা বেশ ইতস্তত করে দরিদ্র পিতার কাছে টাকা চাইতে । বাবা হয়তো বাড়ীর কোন একটা ছাগল বিক্রি করে টাকাটা পাঠায় । ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে । একদিন নিশ্চয়ই ছেলে বড় অফিসার হবে, সেদিন হয়তো এই দুর্দিন থাকবে না । এজন্যে কষ্ট করে টাকা পাঠাতেও কষ্টটাকে কষ্ট মনে হয়না পিতার ।

ছেলেটার শার্ট মাত্র দুইটা । সেই দুইটা শার্ট চলছে বহুদিন । বন্ধুরা সবাই যখন এদিক সেদিক ঘুরাফেরা করে তখন মাঝে মাঝে রাস্তায় সবাই মিলে এটা সেটা খায় । তাকে অনেকেই সাধাসাধি করে , সে নানা অজুহাত দেখায় । বিলাসিতা করার তার সুযোগ নেই । সন্ধ্যা হয়ে গেলে মাঝে মাঝে ছেলেটা একা একা হাটতে বের হয় । ক্যাম্পাসের নানা ধরণের মানুষগুলোর উচ্ছাস আর হাসিমুখ দেখে নীরবে । ক্যাম্পাসে এসে ছেলেটার মাঝেমাঝে মনে হয় আহা মানুষের জীবনগুলো কত আনন্দের ।৫ টাকার একটা পাকোড়া খেয়ে মাঝে মাঝে চলতে হয় তাকে । বন্ধু , বড় ভাই গুলো এতো ভালো কেন ? এদের জন্য মাঝে মাঝে জীবন দিতে ইচ্ছা হয় ছেলেটার ।

গ্রাম থেকে আসা ছেলেটার মুখের ভাষা থেকে আঞ্চলিকতার ছাপ গুলো ধীরে ধীরে মুছে যেতে থাকে । বাবা মাঝে মাঝে মোবাইল ফোনে জানতে চায় ছেলের কোন সমস্যা আছে কিনা । ছেলেটা হাসে আর বাবাকে আশ্বাস দেয় “না বাজান সমস্যা নাই”

একদিন কথাচ্ছলে যখন জানতে চাইলাম জীবনের লক্ষ্য কি ? ছেলেটা ফিক করে হেসে দিলো । শুধু বলল, আপাতত পরিবারটাকে একটা শক্ত অবস্থানে নিয়ে যেতে চায় । আমি জানি, এই ছেলেটা একদিন অনেক বড় হবে ।
“দেশে এখনো এরকম বিদ্যাপীঠ আছে যেখানে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে দরিদ্র ছেলেরা এসে পড়তে পারে । এটি না থাকলে যে কি হতো”।

যখন খুব হতাশ হয়ে পড়ি , জীবন নিয়ে শঙ্কাগ্রস্থ হই তখন এই বন্ধুগুলোর দিকে তাকাই । কত সংগ্রাম করছে তারা জীবনে দাঁড়ানোর জন্য । মাঝে মাঝে নিজেকে নিয়ে গর্বও হয় যে আমি এরকম ফাইটারদের সাথে পড়াশোনা করি । আশা ফিরে পাই এই ভেবে যে এদের দেখে হয়তো একদিন কিছু একটা তো হতে পারবো ।

এই ছেলেটার গল্পটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকের জীবনের সাথে মিলে যাবে , জীবন যুদ্ধের এই গল্প গুলো লেখা হয় ছোট ছোট রুমে কিছুটা সময় নিয়ে, এ ধরনের গল্পগুলো সব অপ্রকাশিত থাকে যায় কিন্তু যেদিন প্রকাশিত হবে, সেদিন ওই ছেলেটা অনেক বড় হয়ে যাবে।


গল্পটি ফেসবুক পেজ “বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস” থেকে নেওয়া।