একই বিসিএস ক্যাডার হয়েছিলেন ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার স্বামী

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজে’লা নির্বাহী কর্মক’র্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম। আ’হত এই কর্মক’র্তার ওপর হা’মলার দৃষ্টান্তমূলক শা’স্তি চেয়ে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস আসোসিয়েশন সহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় থামছে না।প্রশাসন ক্যাডার সংশ্লিস্ট সহকর্মীরা স্ট্যাটাস দিচ্ছেন ফেসবুক যা তার প্রতি অবিচার নিষ্ঠুরতম হামলার প্রতিবাদ ফুটে উঠেছে লেখনীতে।

কিন্তু কেন এই হা’মলার শিকার ওয়াহিদা খানম? বিষয়টি খুঁজতে পু’লিশ-র‌্যা’­বসহ একাধিক সংস্থা ত’দন্তে নেমেছে। পূর্বশত্রুতা, কারও সঙ্গে বিরোধ, ব্যক্তিগত ইস্যু, স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ষড়যন্ত্র, চু’রি-ডা’কাতি নাকি অন্য কোনো কারণে এ ঘটনা ঘটেছে- তা বের করতে চলছে নানা তথ্য-উপাত্ত বিশ্নেষণ।

ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ছোটবেলা থেকে প্রচণ্ড মেধাবী ছিলেন ওয়াহিদা। প্রত্যাশিত ফলও পেয়েছেন জীবনের সব স্তরে। জানা যায়, উপজে’লার সর্বামঙ্গলা হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন ওয়াহিদা। পরবর্তীতে এইচএসসির গণ্ডি পেরিয়ে ২০০২-০৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ওয়াহিদা।

তার সহকর্মী ও বন্ধুদের সাথে কথা বলে জানা যায় , ৩১তম বিসিএসের মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারভুক্ত হন ওয়াহিদা। তার স্বামী মেজবাউল হোসেনও একই ব্যাচ থেকে উপজে’লা নির্বাহী কর্মক’র্তা (ইউএনও) হিসেবে কর্ম’রত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি রংপুরের পীরগঞ্জে দায়িত্ব পালন করছে। তাদের চার বছরের এক ছে’লে রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওয়াহিদা খানমের বাবার বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুরে। তবে আদিবাড়ি রাজশাহীর বাঘমা’রা উপজে’লার গণিপুর ইউনিয়নে। বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওম’র আলী শেখ মহাদেবপুর উপজে’লা বরেন্দ্র বহু’মুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অফিসে চাকরি করতেন। সে সুবাদে সেখানেই ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন তারা।

ওয়াহিদা ছাড়াও ওম’র আলী শেখের আরো চার সন্তান রয়েছে; এদের মধ্যে তৃতীয় সন্তান ওয়াহিদা।ব্যক্তিজীবনে ওয়াহিদা সবার সঙ্গে হাসিমাখা মুখে কথা বলতেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা জানা যায়, কারো ক্ষতি দেখতে পারতেন না ওয়াহিদা। যেখানেই অন্যায় দেখেছেন, সাধ্যমতো সামাল দেয়ার চেষ্টা করেছেন, প্রতিবাদ করেছেন। এমনকি করো’নাকালে তার ভূমিকা ছিল সত্যিই প্রশংসনীয়।

জয়নুল আবেদিন নামে একজন লিখেছেন, ‘দিনাজপুরে এডিসি হিসেবে কাজ করেছি। ছোট্ট বোনটার সঙ্গে অনেক স্মৃ’তি। কোন এক সময় ১৩ জন ইউ এন ও এর মধ্যে একমাত্র লেডি অফিসার ছিল প্রিয় ওয়াহিদা। সাতভাই চ’ম্পার মতো ডিসি স্যারসহ আম’রা বলতাম ছোট্ট বোনটাকে তোম’রা দেখে রাখো। আম’রা দুঃখিত, লজ্জিত তোমাকে দেখে রাখতে পারলাম না। তুমি আমাদের ক্ষমা করো। তার বাসায় বেশ কয়েকবার গিয়েছে, অনেক স্মৃ’তি। মহান আল্লাহ উত্তম হেফাজতকারী। দয়াময় প্রভু প্রিয় বোনটাকে দ্রুত পুরোপুরি সুস্থতা দান করুন, আমীন।’

ওয়াহিদা খানমের ব্যাচ’ম্যাটরাও ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন। ৩১তম বিসিএস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ধ’র্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আমিনুর রহমান বলেন, আম’রা এ ঘটনায় গভীরভাবে ম’র্মাহত। ঘটনায় যারাই জ’ড়িত তাদের চিহ্নিত করে শা’স্তি দিতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে আর এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। ওয়াহিদার দ্রুত সুস্থতাও কামনা করেন তারা।

প্রসঙ্গত, সফল অস্ত্র পাচারের পর আ’হত ওয়াহিদা খানমের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি কথাও বলেছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

গত শুক্রবার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতা’লে চিকিৎসক জাহেদ হোসেন বলেন, অ’স্ত্রোপচারের সময় ওয়াহিদা খানমের মা’থায় ৯টি আ’ঘাতের ক্ষত দেখা গেছে। যে হাড়টি ভেঙে ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল, তা বের করা হয়েছে। রাত দেড়টার দিকে জ্ঞান ফেরে তাঁর, কথাও বলেন। তবে তাঁর শরীরের ডান পাশ অবশ। এটি ঠিক হতে সময় লাগতে পারে বলে তিনি জানান।এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াহিদা খানমের অ’স্ত্রোপচার হয়। এতে অংশ নেন ছয়জন চিকিৎসক।

বিসিএস সিলেবাস ও প্রশ্নের মান ! অনার্স শেষ করে জীবনে ২য় বারের মতো ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি?

আবু জাফর আহমেদ মুকুল


উন্নত বিশ্বের লক্ষ্য যায় উচ্চ মাধ্যমিক তাদের বেসিক ডিগ্রি। তারা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে জব সেক্টরে প্রবেশ করে। জবের পাশাপাশি তারা জব সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিপ্লোমা করে কর্মক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা বাড়ান এবং তাদের মধ্যে মাত্র ২% থেকে ৩% বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।

মানবসম্পদ পরিকল্পনার অভাবে আমাদের দেশে দেখছি সকলকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে এরকম একটি অঘোষিত বিষয় হয়ে দাড়িঁয়েছে। যার ফলে দেশে সার্টিফিকেট সর্বস্ব ডিগ্রি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েট হয়ে বের হচ্ছে। প্রায় সকল শিক্ষার্থীরা জানে জব সেক্টরে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া কোন কাজে লাগবে না।

তাই ক্লাসের পিছনে বসে অনেক শিক্ষার্থীরা বিসিএস প্রস্তুতির জন্য ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণীর সিলেবাস অনুযায়ী MP3 গাইডগুলো মুখস্থ করে। এ যেন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স শেষ করে জীবনে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ২য় বার পড়ার মতো। নীতি-নির্ধারকরা বিসিএস পরীক্ষার সিলেবাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পড়াশুনার সাথে সমন্বয় করে আধুনিকায়ন ও সংস্কার করছেন না যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা শিক্ষার্থীদের কেবল গ্রেডের কাগজে থেকে যাচ্ছে ।

আমার কথা হলো বিসিএস পরীক্ষার সিলেবাস যদি সংস্কার করা না হয় তাহলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিলে তাদের জীবন থেকে সময় ও অর্থ বাচেঁ। আর যদি বিসিএস পরীক্ষারি সিলেবাস সংস্কার করা হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার মেজর বিষয়ের সাথে সংগতি রেখে যাতে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়।

অনেকদিন ধরে শুনছি বিসিএস পরীক্ষায় বর্তমান যে কারিকুলাম আছে, তা পরিবর্তনের জন্য শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন মহল থেকে পিএসসিকে পরামর্শে পরিবর্তন হবে। কিন্তু বাস্তবে তা দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। তবে এটি সত্যি যে, উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে আগের তুলনায় পিএসসি দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে কিভাবে স্বল্প সময়ে বিসিএস সমাপ্ত করছে, পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় প্রশ্ন প্রণয়ন, পিএসসিতে শিক্ষকদের খাতা দেখার ব্যবস্থা করা, প্রযুক্তি নির্ভর পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রশ্ন ও লিখিত পরীক্ষায় নম্বর কমানো থাকাসহ বেশকিছু বিষয় নিয়ে কাজ করছে।

কিন্তু সিলেবাসের আধুনিকায়ন করার পরিকল্পনা এখনও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। সেই অতীত আমলের প্রিলিমিনারি প্রশ্নের সিলেবাস নিয়ে ব্যস্ত আমরা সবাই। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশুনাকে অনার্থক ভাবছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বিসিএস প্রিলিমিনারী পরীক্ষায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য – ৩৫, English Language and Literature – 35, বাংলাদেশ বিষয়াবলি – ৩০, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি – ২০, ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব.) পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা – ১০, সাধারণ বিজ্ঞান – ১৫, কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি – ১৫, গাণিতিক যুক্তি – ১৫, মানসিক দক্ষতা – ১৫ ও নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন – ১০ সর্বমোট-২০০ নম্বর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

লিখিত পরীক্ষায় সাধারন ক্যাডারে ৯০০ নম্বর এবং টেকনিক্যাল ক্যাডারের জন্য ১১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, লিখিত পরীক্ষায় ৯০০ নম্বর থেকে যত কমানো যায় সেই চিন্তা-ভাবনা চলছে। ৯০০ নম্বর থেকে ৫০০ নম্বরে লিখিত পরীক্ষা করা হতে পারে। দীর্ঘসূত্রিতার পাশাপাশি বিদ্যমান ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় একটি নির্দিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা লাভবান হচ্ছে। যে পরীক্ষা পদ্ধতি ও সিলেবাস আছে তাতে পরীক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ প্রথম শ্রেণির বেশকিছু ভালো ক্যাডার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এসব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ক্যাডার নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়।

আমার এক পরিচিত গ্রাজুয়েট, এবার ৩৮-তম বিসিএস পরীক্ষায় ক্যাডার সার্ভিসে নিবার্চিত হয়েছে। সে বললো তোতাপাখির মতো মুখস্থ করলেই বিসিএস ক্যাডার হওয়া যায়। শুধু ভাইভার জন্য ভাল উপস্থাপনা দরকার যা ক্লাসের প্রেজেন্টেশন তাকে সাহায্য করছে। অন্য আর একজন গ্রাজুয়েট বললো, বিসিএস দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতির ব্যাপার এর সিলেবাস একাডেমিক সিলেবাস থেকে একেবারে ভিন্ন। এসব কারণে সে একাডেমিক পড়াশোনাকে গুরুত্ব না দিয়ে প্রথম বর্ষ থেকেই বিসিএসের বই নিয়ে সারা দিন পড়ে থাকতেন।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দেখলাম অনেকেই কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কতজন শিক্ষার্থী ক্যাডার হিসেবে সুপারিশ সেটা সাফল্য হিসেবে দেখাচ্ছেন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ ক্যাডারসার্ভিসের কর্মকর্তা তৈরি করা নয় বরংচ গবেষনা করা। সে গবেষনাধর্মী পড়াশুনা থেকে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন কারনে বিচ্ছিন্ন। বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়েও সৃজনশীল প্রশ্নের উপর গুরুত্ব দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় হতে পাসকৃত গ্রাজুয়েটগন যখন বিসিএস পরীক্ষা দেন তাদেরকে মুখস্থবিদ্যার উপর নির্ভর করে পরীক্ষায় উত্তীর্ন হতে হয় যা দুঃখজনক বিষয়। অথচ আমাদের পাশের দেশ ভারত ও পাকিস্থানে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সৃজনশীলপ্রশ্ন করে মেধাবৃত্তির চর্চা করা হয়।

আমরা Bloom Taxonomy অনুযায়ী জানি, প্রশ্ন করার জন্য ৬টি ধাপ রয়েছে যথাঃ Remembering, Understanding, Applying, Analyzing, Evaluating ও Creating. বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিমিনারী প্রশ্ন পর্যালোচনা করে দেখা যায় বেশিরভাগ প্রশ্ন Remembering ও Understanding লেভেলের। অথচ আমাদের পাশের দেশ ভারত ও পাকিস্থানের প্রশ্ন পর্যালোচনা করে দেখেছি প্রায় ৮০% এর বেশি Analyzing, Evaluating ও Creating লেভেলের প্রশ্ন এবং পরীক্ষার সময়ও বেশি। উদহারণ স্বরুপ বলা যায়, বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নঃ সাদা হাতির দেশ কোথায়? ক. থাইল্যান্ড খ. ইন্দোনেশিয়া গ. সিঙ্গাপুর ঘ. মালয়েশিয়া। অন্যদিকে ভারতের সিভিল সার্ভিসের প্রশ্নঃ হাতি সাদা হয় মূলত কোন রোগের কারনে? ক. অ্যালবিনিজম খ. লিউসিজম গ. ব্লাক কোয়াটার ঘ. ক+খ+গ। অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বলতে চাই, বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষায় যে ধরনের প্রশ্ন করা হয় তা মাধ্যমিক লেভেলের এবং মুখস্থ নির্ভর।

আর পাশের দেশগুলোতে সিভিল সার্ভিসের প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েটদের জন্য যথেষ্ট বাস্তবিক ও ইনোভেটিভ। তবে বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষায় যে প্রশ্ন করা হয় ও সিলেবাস করা হয়েছে তা একজন উচ্চ মাধ্যমিক পাসকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। তবে তা কোন মতে শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস বা পড়াশুনার সাথে কোন সংগতি নেই।

তবে এটি সত্যি যে, দক্ষ প্রশাসক তৈরিতে সকল সেক্টরে জ্ঞান ভিত্তিক জাতি গঠন করতে গবেষনা, ইনোভেশন ও সৃজনশীলতার কোন বিকল্প নেই। সকল সেক্টরে গবেষনার বাস্তবায়ন না থাকলে একটি জাতি ধ্বংস হতে পারে তা আমরা অনেকেই উপলব্ধি করতে পারছি না।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে সিলেবাস ও প্রশ্নের ধরন বিষয়ে করণীয়ঃ

১। বিসিএস প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় একজন শিক্ষার্থী যে বিষয়ে অনার্স করেছে যে বিষয়ে প্রিলিমিনারি ও লিখিত সিলেবাস অর্ন্তভুক্ত করা ।

২। বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় হতে পাসকৃত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কমপক্ষে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা অর্ন্তভুক্ত করা। যেমনঃ একজন শিক্ষার্থী যদি কৃষিতে অনার্স করে তাহলে কৃষির বিভিন্ন বেসিক বিষয়ের উপর ১০০ নম্বরের সৃজনশীল এমসিকিউ প্রশ্ন করে তার প্রয়োগিক জ্ঞান যাচাই করা।

৩। বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় একজন শিক্ষার্থীর অনার্সে পাসকৃত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যদি পরীক্ষা না নেওয়া হয়। তাহলে বিসিএস পরীক্ষায় শিক্ষাগত যোগ্যতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পাস চাওয়ার কোন অর্থই বহন করে না। সেক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিক পাসকৃত শিক্ষার্থীদের বিসিএস পরীক্ষায় সুযোগ প্রদান করা উচিত বলে আমি মনে করি ও পরর্তীতে যাতে তারা সামরিক বাহিনীর মতো উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে পারে সে নির্দেশনা প্রদান করা দরকার।

৪। দক্ষ প্রশাসক তৈরির লক্ষ্যে উপমহাদেশের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার মতো বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় ১০০% সৃজনশীল প্রশ্নকে গুরুত্ব দেওয়া ও পরীক্ষার সময় বৃদ্ধি করা ।

৫। বাংলাদেশে বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় সকল ক্যাডারের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অনলাইন আবেদনের পছন্দক্রম অনুযায়ী অনার্সের সংশ্লিষ্ট ৫টি বিষয়ে ১০০ নম্বর করে সর্বমোট ৫০০ নম্বরের পরীক্ষা গ্রহন করা। যেমনঃ একজন শিক্ষার্থী যদি কৃষির গ্রাজুয়েট হয় তাহলে ৫টি বিষয় যেমনঃ Fundamentals of Agronomy, Introductory Soil Science and Plant Pathology, Extension Communication and Innovation Management, Introduction to Floriculture and Landscaping ও Chemistry of fertilizer and Radio-trace Technique ইত্যাদি বিষয় তাঁর পছন্দক্রম অনুযায়ী লিখিত পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে।

৬। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে লিখিত পরীক্ষার প্রত্যেকটি বিষয় গুচ্ছ অনুযায়ী সাজানো দরকার। যাতে আবেদনের সময় একজন পরীক্ষার্থী তার লিখিত পরীক্ষার পছন্দক্রমগুলো টিক দিতে পারে।

৭। টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ক্যাডারদের বিসিএস এ অর্ন্তভুক্ত না করে উপমহাদেশের দেশগুলোর মতো সরাসরি ভাইভার মাধ্যমে নিয়োগের ব্যবস্থা প্রয়োজন।

৮। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য Computer Science Engineering (CSE), Electrical and Electronics Engineering (EEE) ও Information Technology (IT) গ্রাজুয়েটদের জন্য সরকারি চাকুরিতে নতুন করে Information and communications technology (ICT) ক্যাডার এবং দক্ষ প্রশাসনের জন্য লোকপ্রশাসন বিষয়টি শিক্ষা ক্যাডারে অর্ন্তভুক্ত করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, লোকপ্রশাসনের এ বিষয়টি শিক্ষা ক্যাডারে অর্ন্তভুক্ত করা নিয়ে প্রফেসর ড. আবুল কাশেম মজুমদার ও বিভাগীয় প্রধান ড. জেবউননেছা, লোক প্রশাসন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ‘বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন উন্নয়ন অধ্যয়ন কেন্দ্র’ নামে কাজ করছে যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

৯। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করে সকল ক্যাডারের সুযোগ-সবিধা সমান নিশ্চিত করে যে বিষয়ের গ্রাজুয়েট সে বিষয়ে কাজ করার নিশ্চয়তা প্রদান করা সংবিধান অনুযায়ী সকলের রাষ্ট্রীয় কর্তব্য বলে মনে করি।

১০। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর অফিস একত্রে বসে ঠিক করতে হবে দেশের মানব সম্পদ পরিকল্পনা। আমাদের দেশের বেসিক মানসম্মত শিক্ষা কী অনার্স বা উচ্চ মাধ্যমিক হবে? বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ধরনের ছাত্ররা পড়বে? কারা প্রশাসক হবে এবং কারা শিক্ষক ও গবেষনায় যাবে? এগুলো নিয়ে সামগ্রিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আশা করি, বিশ্বয়ানের এ যুগে দক্ষ প্রশাসক এবং দক্ষ নেতৃত্বের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জনপ্রশাসন উপদেষ্টা মহোদয়, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী মহোদয়, শিক্ষা মন্ত্রী ও উপমন্ত্রী মহোদয় ও সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান উপরোক্ত বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি ।

লেখকঃ শিক্ষাবিদ, গবেষক, বিশ্লেষক, ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞ এবং গবেষণায় প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশীপ প্রাপ্ত।

বিসিএস লিখিত পরীক্ষার ফল জানা হল না আবিদুলের

ববি টুডে: ৪০ তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষার ফল জানা হল না বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী আবিদুল ইসলাম।

সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বরিশাল নগরীর ১২ নং ওয়ার্ডের নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

তিনি দূরারোগ্য স্কোলিওসিস সংক্রমণে ফল প্রকাশের আগেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী আবিদুল ইসলাম সম্মান শ্রেণিতে ভর্তির পরপরই স্পষ্ট হতে থাকে স্কোলিওসিস রোগের।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, স্কোলিওসিস হচ্ছে মূলত জন্মগত রোগ। এটি মানবদেহের মেরুদণ্ড বাকা করে ফেলে। বয়সের সাথে সাথে তা ক্রামাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে। এতে ফুসফুসে প্রভাব পড়ে। সঠিক চিকিৎসা না পেলে রোগী মৃত্যুবরণ করেন।

উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের তার সতীর্থরা জানিয়েছেন, রোগে আক্রান্ত হলেও অত্যান্ত মেধাবী ছিলেন আবিদুল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চাঁদা তুলে তার চিকিৎসার সহায়তাও করেছিলেন। তিনি প্রতি পরীক্ষায় ভালো করতেন।

আবিদুলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেঠেন উপাচার্য ড. ছাদেকুল আরেফিন।

শিক্ষক বহিষ্কার ও বিসিএস শিক্ষা সমিতির উদাসীনতা

প্রফেসর ড. শেখ মকছেদুর রহমান


করোনা ভাইরাসে আতঙ্কিত হয়ে ডাক্তারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ফেসবুকে লেখার জন্য সরকারি কলেজের দু’জন শিক্ষক ময়মনসিংহের জনাব কাজী জাকিয়া ফেরদৌসী ও বরিশালের জনাব সাহাদাত উল্লাহ কায়সার’ কে বরখাস্তের ঘটনায় আমরা মর্মাহত।

শিক্ষা প্রশাসন কতৃক বরখাস্তের এ অন্যায় আদেশের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের জন্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, মাননীয় শিক্ষা-উপমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফোরাম বিবৃতি দিয়ে এ অন্যায় আদেশ প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছে, এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে ফোরামকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এখন আমার প্রশ্ন হলো, সরকারি কলেজ শিক্ষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও যৌক্তিক দাবী আদায়ের সংগঠন ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি’ নির্বিকার কেন? সমিতি কি কোন প্রতিবাদ করবে না? বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ ক্যাডাদের সংগঠন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি কি এ অন্যায় আদেশ মেনে নিবে?

যদি এ আদেশ প্রত্যাহারের জন্য সমিতি থেকে উদ্যোগ না নেয়া হয় তবে সমিতি থাকার কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। সবাইকে যদি আমলাদের ভয়ে গা বাচিয়ে চলতে হয়, উচিৎ কথা বলতে ভয় লাগে তবে সংগঠনের দরকার কী? দু-একজন এ অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাচ্ছে, আমার দৃষ্টিতে এটা মোটেই পর্যাপ্ত নয়, সবাইকে একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ জানাতে হবে।

যতদূর জানি শিক্ষকদের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাচ ভিত্তিক ফোরাম আছে কিন্তু কোন ফোরাম থেকেও কোন টু শব্দ নেই। ফোরাম কি শুধু নেতা সেজে ঢাকায় থাকার ধান্দায়? নাকি অন্য কোন উদ্দেশ্য?

মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি মহোদয়কে বলছি, শুনেছি আপনার পদটি সচিবের পদমর্যাদায় উন্নীত করা হয়েছে। আপনার সাথে এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রনালয় কতৃপক্ষের কি কোন আলোচনা হয়েছে? আপনি নিশ্চয় কলেজ শিক্ষক, তাই কলেজ শিক্ষকদের স্বার্থ দেখা উচিৎ। আপনাকে মেরুদন্ড শক্ত করতে হবে।

পরিশেষে বলতে চাই, বিসিএস ক্যাডার অফিসারদের শাস্তি দিতে হলে মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লাগে। নজিরবিহীন দ্রুততার সাথে শাস্তির আদেশ জারির পেছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে কিনা সেটা ভেবে দেখা দরকার।


লেখক: প্রফেসর ড. শেখ মকছেদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ,

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে নিয়োগ পাচ্ছেন ৭৩১ জন (তালিকাসহ)

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


৩৭তম ও ৩৯তম বিশেষ বিসিএস (ডাক্তার) থেকে নন-ক্যাডার থেকে ৭৩১ জনকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি। ৩৭তম বিসিএস থেকে ১৬৭ জন ও ৩৯তম বিসিএস থেকে ৫৬৪ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করবে পিএসসি। এর মধ্যে ৩৭তম বিসিএস ছিল সাধারণ বিসিএস ও ৩৯তম বিসিএস ছিল চিকিৎসকদের বিশেষ বিসিএস।

১২ ফেব্রুয়ারি, বুধবার বিশেষ সভা শেষে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে পিএসসি।

৩৭তম তালিকা দেখতে ক্লিক করুন
৩৯তম তালিকা দেখতে ক্লিক করুন

এ বছরের এপ্রিলের প্রথমদিকে ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে । তবে মার্চে ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা (ঐচ্ছিক) শুরুর চিন্তা-ভাবনা করছে পিএসসি।