দাবি আমাদের একটাই, শিক্ষার্থী ভিসাকে জরুরী ও বিশেষ সেবার আওতায় চাই

দ্যা ক্যাম্পাস টুডেঃ চলমান লক-ডাউন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থী ভিসাকে জরুরিু ও বিশেষ সেবা বিবেচনায় নিয়ে ভিসা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য বাংলাদেশস্থ জার্মান দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহব্বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা।

আজ (সোমবার) সকাল ১১ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এই সংবাদ সম্মেলন করে ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, দুর্ভাগ্যক্রমে বিশ্বব্যাপী করোনার মহামারীর প্রভাবে বাংলাদেশস্থ জার্মান দূতাবাসে ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম প্রয়োজনের তুলনায় সীমিত হওয়ায় এবং লকডাউনের প্রভাবে দূতাবাস অফিসে শিক্ষার্থীদের ভিসা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় সহস্রাধিক আলোকিত সম্ভাবনাময়ী শিক্ষার্থীদের জার্মানিতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের বিষয়টি বর্তমানে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

গত ১ বছরে প্রায় সহস্রাধিক বাংলাদেশী শিক্ষার্থী জার্মানির বিভিন্ন পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হয়ে গত ৩ সেমিষ্টার (সামার ২০২০, উইন্টার ২০২০/২১, সামার ২০২১) অনলাইনে ক্লাস করছে (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জরিপ অনুযায়ী)। ইতোমধ্যে প্রায় প্রত্যেকেই ব্লক একাউন্টের ১১,০০,০০০/- (এগারো লক্ষ টাকা) জমা রেখেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে অনেকেই কয়েক লক্ষাধিক টাকা টিউশন ফি জমা দিয়েছে।

তাই শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থী ভিসা সাক্ষাৎকার ও ভিসা প্রাপ্তির প্রত্যাশায় থাকলেও লক-ডাউনের পূর্বে খুব অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীই দূতাবাস হতে তাদের ভিসা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পেরেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক লক-ডাউন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের কারণে অধিকাংশেরই ভিসা কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ফ্রাংকফুর্ট ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সে, জার্মানির , উইন্টার-২০ এর শিক্ষার্থী মো. শামসুল আকরাম, ও টি এইচ আমবার্গ ভাইডেন -এর সামার ২০২১ এর শিক্ষার্থী কাজী সরাফত ইসলাম, ওথ আমবার্গ উইডেন -এর সামার-২০২১ শিক্ষার্থী মো. নাজিম উদ্দিন।

তারা চরম উদ্বেগের সাথে বলেন, জার্মানিতে গত ৩ সেমিস্টার অনলাইন ভিত্তিক পাঠ্যক্রম পরিচালিত হলেও আগামী সেমিস্টার থেকে জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসরুম ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমতাবস্থায়, সর্বাত্মক স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত বাংলাদেশস্থ জার্মান দূতাবাসের কার্যক্রম পরিচালিত না হলে যথাসময়ে ভিসা পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

এমতাবস্থায়, বিশ্বাবিদ্যালয় প্রশাসন হতে শিক্ষর্থীদের ছাত্রত্ব বাতিলের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। হুমকির মুখে পড়বে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন ও ক্যারিয়ার। আশাহত হবে সহস্রাধিক পরিবার, ভেঙে পড়বে শিক্ষার্থীদের মনোবল, দেশ হারাবে সম্ভাবনাময়ী গবেষকদের।

জার্মানিতে শিক্ষা ব্যবস্থা থিওরি, প্র্যাকটিক্যাল ও ইন্টার্নশিপের সমন্বয়ে পরিচালিত হয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে থিওরি ক্লাস অনলাইনে পরিচালিত হলেও প্র্যাকটিক্যাল এবং ওয়ার্কশপ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরিচালিত হয়। প্রতিষ্ঠানে স্ব-শরীরে উপস্থিত থেকে ইন্টার্নশিপে অংশগ্রহণ করতে হয়।

তাই শুধুমাত্র থিওরি ক্লাসে অংশগ্রহণ করে একজন শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ একেবারেই ক্ষীণ। তাই শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ বিষয়ের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহনণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

লাইব্রেরিতে প্রবেশ করার সুযোগ না থাকায় রিসার্চ ভিত্তিক অধ্যয়ন থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা। এমতাবস্থায় শুধুমাত্র ভিসা জটিলতার কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময়ী মেধাবী শিক্ষার্থীরা।

বর্তমানে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অনেক শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করছে, ইন্টারনেট কানেকশনের সমস্যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ক্লাস লেকচার যথাযথভাবে বুঝতে পারছে না। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীরা তাঁদের প্রেজেন্টেশন ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মেটরি এবং স্বাস্থ্য বীমায় চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীদেরকে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বাংলাদেশ থেকে পরিশোধ করতে হচ্ছে।

এতে করে তারা প্রাপ্ত সুবিধাদি ভোগ করতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। দীর্ঘ দিন অপেক্ষার পর ভিসা সংক্রান্ত স্বাক্ষাৎকার পাওয়ার বিষয়ে ক্রমাগত অনিশ্চয়তা এবং বিলম্বের কারণে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও হতাশ হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে অনেক অভিভাবকবৃন্দ শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।

সকল বিষয় বিবেচনায় নিয়ে, সহস্রাধিক শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশ সরকার এবং জার্মান দূতাবাসের প্রতি একটাই দাবি ‘লক-ডাউন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থী ভিসাকে জরুরি ও বিশেষ সেবা বিবেচনায় নিয়ে ভিসা কার্যক্রম পরিচালনা করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা এবং গবেষণা কার্যক্রম চলমান রাখতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন’।

সংবাদ সম্মেলনে জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রায়হানুল ইসলাম, রাফি আহমেদ, শরীয়তউল্লাহ টিটু, কিশোর কুমার দেবনাথ, সুমি আক্তার, মীনা আলী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশিদের ১৩ মার্চ থেকে ভিসা দেবে না ভারত

ক্যাম্পাস টুডে ডেস্ক


আজ শুক্রবার (১৩ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বের সব দেশের নাগরিকদের ভারতীয় বৈধ ভিসা ভিসা স্থগিত থাকবে। পাশাপশি নতুন কোনো ভিসাও দেয়া হবে না।

করোনা-ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশন। বিষয়টি ঢাকায় হাইকমিশনের ওয়েবসাইটে ভিসা দেয়া বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়েছে।

তবে অফিসিয়াল, জাতিসংঘ, কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, চাকরি ও প্রকল্প ভিসা এ আদেশের বাইরে থাকবে বলে জানিয়েছে দেশটি।

ভারতের এমন সিদ্ধান্তের পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও আরও ৩টি স্থানীয় বিমান সংস্থা ভারতে বিমান চলাচল স্থগিত করেছে।

এমতাবস্থায় যদি কোনো বিদেশি নাগরিককে ‘বাধ্যতামূলকভাবে’ ভারতে যেতে হয়, তাহলে তাকে নিকটস্থ ভারতীয় মিশনে যোগাযোগ করতে বলেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।