বায়ু দূষণের ভয়ংকর উদাহরণ ভোপালের গ্যাস দুর্ঘটনা

পরিবেশ টুডে ডেস্কঃ ভোপালে গ্যাস বিপর্যয়ের কারণে যে হাজার হাজার মানুষ অস্তিত্ব হারিয়েছিলেন তাদের সম্মান জানাতে ও স্মরণীয় করে রাখতে এবং সচেতনতার তাগিদে ভারতবর্ষে প্রতিবছরের ২ ডিসেম্বর পালিত হয় ‘জাতীয় দূষণ প্রতিরোধ দিবস’। কিন্তু শিল্পজনিত দুর্ঘটনা থেমে থাকেনি।

১৯৮৪ সালের ০২ থেকে ০৩ ডিসেম্বরের রাত্রে ভারতের মধ্য প্রদেশ রাজ্যের ভোপাল শহরে ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেড’এর কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস বেরিয়ে হাজার-হাজার মানুষ হতাহত হন: এটি ছিল বিশ্বের বৃহত্তম এবং নিকৃষ্ট শিল্প দুর্ঘটনা৷

গোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার রাত্রে একটি (এমআইসি) ট্যাঙ্কে পানি ঢুকে গ্যাস নির্গত হয়৷ এই গ্যাস এবং অপরাপর কমবেশি বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস প্রায় ১ঘণ্টা ধরে নির্গত হয়ে কারখানার কাছের বস্তিগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। বিষাক্ত গ্যাসের প্রকোপে পড়েন পাঁচ থেকে সাত লাখের বেশি মানুষ৷ মধ্য প্রদেশ রাজ্য সরকারের এফিডেভিট অনুযায়ী গ্যাসের প্রকোপে প্রাণ হারান ৩,৭৮৭ জন মানুষ – যদিও অন্যান্য সূত্র ১৬ থেকে ২৫ হাজার অবধি মানুষের প্রাণহানির দাবি তুলেছে৷ আহতের সরকারি সংখ্যা ৫ লাখ ৫৮ হাজার একশো পঁচিশ৷

বর্তমান পরিস্থিতি অনুসারে, ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি আবারও বিষাক্ত বায়ুর শহরে পরিণত হচ্ছে। ১৯৭২ থেকে চেষ্টার পরে রাষ্ট্রসঙ্ঘের উদ্যোগে ১৯৭৪ সালের পাঁচ জুন পালিত হয় প্রথম ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’। কিন্তু তার পাঁচ বছরের মাথায় আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ার কাছে থ্রি-মাইল দ্বীপে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঘটল পারমাণবিক চুল্লিঘটিত দুর্ঘটনা। যদিও তৎপরতায় বিশেষ ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছিল। আর দশ বছরের মাথায় ঘটল বৃহত্তম শিল্পবিপর্যয় ‘ভোপাল দুর্ঘটনা’।

শিল্পের অবশ্যই প্রয়োজন, তবে শিল্প ও পরিবেশের মধ্যে একটি ভারসাম্য থাকা দরকার, বিশেষ করে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে। দূষণ সম্বন্ধে এবং দূষণ সম্পর্কিত আইন সম্বন্ধে সাধারণ মানুষের সচেতনতার যেমন দরকার; তেমনই প্রয়োজন আইনভঙ্গকারীদের কড়া হাতে দমন করে তাদের জন্য দৃষ্টান্তযোগ্য শাস্তির ব্যবস্থার।